السلام عليكم আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি সাইটের সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা।আশা করি সবাইএক প্রকার কুশলেই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ আমিও ভাল আছি। চলছে ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসের মাস। ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা আমাদের প্রাণের প্রিয় বাংলাদেশকে স্বাধীন হিসেবে পেয়েছি। বিশ্বের বুকে আমরা এখন স্বাধীন ও গর্বিত জাতি। প্রত্যেক বাঙ্গালীর জীবনে এক স্মরণীয় দিন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে টিটির পক্ষ হইতে সবাই কে অগণিত সালাম ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। আজকের টিউনে আপনাদেরকে মোবাইল রিভিউ নিয়ে তথা প্রযুক্তি ভাবনা আলোকপাত করতে যাচ্ছি। যেখানে নিজেরা একটু চিন্তাশক্তি দ্বারা পরিমাপ করলে সহজেই বুঝতে পারব সত্যিই মোবাইল প্রযুক্তি নতুন বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কি!
এক দশক আগেও দেশবাসী ভাবতে পারেনি, মোবাইল ফোনই একদিন ক্যামেরার উষ্ণ জমিন টুকুর গর্বিত মালিক হয়ে যাবে। একই কায়দায় হাতঘড়িও এখন মোবাইল প্রযুক্তির কাছে আচ্ছা করে খাবি খাচ্ছে। এর পরের পালা কি ল্যাপটেপর? টেক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মোবাইল অচিরেই এ হাইটেক ডিভাইসটিরও ভাত মারবে। কারণ এক সময়কার রেফ্রিজারেটরের সমান আকৃতির কম্পিউটার হাফ সেঞ্চুরি পেরুতেই ডেক্সটপে রূপ নিয়েছে। কিন্তু মোবাইল আগ্রাসনে ওটা এখন ল্যাপটপে পরিণত হয়ে 'জাত' ধরে রাখতে চাইছে। ল্যাপটপ নোটবুকের ব্যানারে বনে গেছে সুদৃশ্য পাম-টপে। কিন্তু ল্যাপটপের ফাংশান আর অনুভূতি যদি পামটপে মেলে, তাহলে খবর দেখছি এখন ল্যাপটপেরও। টেক বিশেষজ্ঞরা অন্ত এটাই ধারণা করছেন।
ওই ডিভাইসটিকে আপনি কি বলবেন? যাতে রয়েছে একটি সুদৃশ্য স্ক্রিন, একটি পরিমিত কীবোর্ড, কন্টাক্ট, ইমেইল আর ডকুমেন্টের মতো ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের জম্পেশ স্টোরেজ, আঙ্গুলের আলতো ছোঁয়ায় অডিও-ভিডিও ফাইল খোলার চৌকস সামর্থ্য, গেমস আর স্প্রেডশিট প্রোগ্রাম, রয়েছে যোগাযোগের অনন্য উপাদান। উত্তরটা অনেকের জিভের ডগায় লাফাবে। এক নিঃশ্বাসে হয়তো কেউ কেউ বলবেন, কেন কম্পিউটার! জনাব, হিসেবে ভুল হচ্ছে। কারণ ওটা যে মোবাইল ফোন - ডাহা আধুনিক। প্রযুক্তিবিদরা কম্পিউটারের জায়গা জাদুঘরে আগে ভাগে বুকড করে রাখতে চাইছেন।
১৯৮৩ সালে আমেরিটেক মোবাইল কমিউনিকেশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বব বারনেট এর নাতিকে টেলিফোন করেন। তবে এটি কোন সাধারন ফোন ছিল না। কারন ফোনটি তিনি করেছিলেন শিকাগো শহরের একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের পাশে রাখা একটি ক্রাইসলার গাড়ি থেকে। এটিই ছিল বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিকভিত্তিক মোবাইল ফোন। তথাপি ডঃ মার্টিন কুপার এবং জন ফ্রান্সিস মিচেলকে প্রথম মোবাইল ফোনের উদ্ভাবকের মর্যাদা দেয়া হয়। তাঁরা ১৯৭৩ সালের এপ্রিলে প্রথম সফলভাবে একটি প্রায় ১ কেজি (২।২ পাউন্ড) ওজনের হাতে ধরা ফোনের মাধ্যমে কল করতে সক্ষম হন।
(ডঃ মার্টিন কুপার)
সম্প্রতি শোনা গেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন নির্মাতা নকিয়া একটি সুপার স্মাটফোন তৈরি করতে যাচ্ছে একই সঙ্গে নাম লিখাতে যাচ্ছে মিনি ল্যাপটপ নির্মাতাদের তালিকায়ও। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা ধারনা করছেন, এর মাধ্যমে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের মধ্য যে পার্থক্য আছে তা পুরোপুরি মুছে যাবে। অ্যাপল এর আইফোন এবং রিসার্চ ইন মোশন এর ব্লাকবেরি সারা বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। এই গুলো এতই শক্তিশালী আর কার্যকরযে ব্যবহারকারীরা ইমেইল চেক করা থেকে শুরু করে ফুটবল খেলার সর্বেশেষ স্কোর দেখার জন্যও এইগুলো ব্যবহার করছেন। হাতের কাছেই ল্যাপটপ কম্পিউটার পড়ে আছে, কষ্ট করে সেটির ডালাটা ওপেন করার প্রয়োজন মনে করছেন না।
নতুন নতুন প্রযুক্তিকে বিশ্বের মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে অ্যাপল এর বিশেষ সুনাম আছে মোবাইল টেকনোলজির বাড় বাড়ন্ত দেখে তারা বছর দুয়েক আগে একটি জুয়া খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। মিউজিক প্লেয়ার আইপডের আদলে তৈরি করে আইফোন। আর এভাবেই তারা পা রাখে মোবাইল টেলিফোনির জগতে। সে থেকে আজ অবদি আইফোনের ইতিহাস এক যুগান্তকারী সাফল্যোর ইতিহাস।এ পর্যন্ত অ্যাপল প্রায় ৩ কোটি আইফোন বিক্রি করেছে। এর মধ্য কেবল যুক্তরাজ্যেই বিক্রি করেছে প্রায় ২০ লাখের মত ফোন। ২০১৫ এর এপ্রিল থেকে জুনু পর্যন্ত অ্যাপল কোম্পানীর রেকর্ড পরিমান প্রায় সোয়াশো কোটি ডলারের মুনাফা করার পেছনে আইফোন অত্যন্ত ভূমিকা রেখেছে। অ্যাপলের সাফল্যে দেখে ডেল এর মত বিশ্ব সেরা আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও স্মাটফোনের মার্কেটে প্রবেশ করার পরিকল্পনা ঘোষনা করেছে।। ডেলের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ডেল এর আগে মোবাইল ফোনের ব্যবসায় নাম লেখানোর ঘোষনা দিয়েছিলেন। কারন হিসাবে তিনি নকিয়ার বিশাল মার্কেট শেয়ারকে ভাঙ্গাকে একটি প্রায় অসম্ভব কাজ বলে স্বীকার করেছিলেন। যদিও নোকিয়া মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছে।সাধারন মেবাইল ফোনের মার্কেটের বড় বড় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নকিয়া, মটোরোলা, সনি এরকিসন, এলজি এবং স্যামস্যাং প্রচন্দভাবে চেষ্টা করছে স্মাটফোনের বাজারে দাপট দেখানোর। ফলে বাজারে প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ব্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের সেটের রকমারি। বর্তমানে বেশ কিছু পত্রিকা ও অললাইন মারফত দেখেছি যে, মোবাইল কোম্পানী গুলো অনেকটাই একচেটিয়াভাবে মার্কেটে টিকে থাকার জন্য প্রতিনিয়তই নতুন মডেলের, নতুন প্রযুক্তিসমূহ আপডেট করছে। এমনকি তাদের বাজারজাতকৃত পন্যও প্যাটেন্ট আইন জুড়ে দিয়েছে যাতে অন্য কোম্পানী গুলো সেটগুলো সকল ডিজাইন করার চেষ্টা না করে। যদি ডিজাইন মিলে যায় তাহলেতো প্যাটেন্ট আইনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খেসারত দিতে হয় পরাজিত মামলাতে। পূর্বে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান স্যামস্যাং ও নোকিয়াকে এরুপ জরিমানা গুনতে হয়েছিল।
এতক্ষণ উপরোক্ত আলোচনা হইতে বুঝতে পারলাম বীরদর্পে মোবাইল যন্ত্রাংশ ও মার্কেট সম্প্রসারনের কথা! এবার এক নজরে জেনে নেওয়া যাক ল্যাপটপের সমমানে স্মাটফোনগুলো দ্বারা কি কাজ করতে পারছি-
প্রায় প্রতিটি স্মাট ফোনেই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার হচ্ছে। সম্প্রতি আধুনিক স্মার্ট ফোনে উইন্ডোজ ১০ অপারেট করা যাচ্ছে। তার মানেটা হচ্ছে স্মাটফোনই চাহিদা মিটাচ্ছে ল্যাপটপের! তাহলে এটাকে মিনি ল্যাপটপ বলতে দোষ কোথায়? একটি স্মাট ফোনে উইন্ডোজ অপারেটিং ব্যবহার করাটার মানে হচ্ছে আপনি ল্যাপটপে যে কাজ গুলো করতেন তা এখন স্মার্ট ফোনেই ব্যবহার করা যাবে।
বর্তমানের স্মার্ট ফোনের তৈরি কৌশল অনেকটাও ল্যাপটপের মত। যেমন: স্মার্ট ফোনটি মাডারবোর্ডের মতই সার্কিট ডিজাইনে চলছে।যদিও সব কিছু সেট করে পোশাক পরিধান হিসাবে তা ক্যাসিংয়ে আবদ্ধ করা হয়। সার্কিটে রম, প্রসেসর, মেমোরি চিপ ব্যবহার হচ্ছে যে গুলো কাজে কার্যকারিতার প্রমাণ পাচ্ছি। সুতরাং প্রযুক্তির আপডেট অনুযায়ী বেশ কিছু বিষয় সেখানে যোগ হতে পারে
দেখা যাচ্ছে ল্যাপটপ/পিমির হার্ডডিস্ক স্মার্ট ফোনে ব্যবহার করা জন্য সাটা পোর্ট স্মার্ট ফোনে যুক্ত হবে। ফলে তখন আপনার হার্ডডিস্কটি একসেস করতে পারবেন।
রমের মতই র্যাম অন্তভূক্তকরন করা হবে। ফলে পিসির মতই স্মার্টফোনের গতি দিক আরও বৃদিধ পাবে।
অনেকেই বলবেন! আপনার কথা তো বুঝলাম। কিন্তু স্মাটফোনে তো আর টাইপের কাজ করা যাবে না।কেন কাজ করা যাবে না ভাই? বর্তমানে টাচ স্কীন প্যাডের মারফতে তো টাইপ করা যায়। হ্যা বলতে পারেন যে, পিসির মত কীবোর্ড/মাউস ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। সমস্যা নাই পরবর্তী জেনারেশনে দেখবেন যে, স্মাট ফোনে বাড়তি ইউএসবি পোর্ট যুক্ত করবে যেখানে পিসির মতই এই সব ডিভাইস কানেক্ট করতে পারবেন।
এটি এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে আপনার কন্ঠস্বর শুনেই ডিভাইসটি সহজেই ডিটেকশন করতে পারবে এর মূল মালিক আপনি। ফলে যদি ফোন সেট হারিয়ে গেলেও অন্য কেউ ব্যবহার করার সুযোগ পাবে না। তথাটি টাচ স্কীনের পাশাপাশি কণ্ঠ স্বরের মাধ্যমেই মোবাইল ডিভাইসটি পরিচালনা করতে পারবেন। যদিও প্রযুক্তিটি নিয়ে গবেষনা শুরু হয়েছে ও বাজারে আসকে ২/৩ বছরের বেশী সময় লাগতে পারে।
স্মার্ট মোবাইল মোবাইল ফোনে বাড়তি এক রকম পর্দা দেওয়া হবে যেখানে আপনি ল্যাপটপ সাইজের পর্দার মতই ব্যবহার করতে পারবেন। সেটিতে ব্লুটুথের সাহায্য কাজ করবে। পর্দাটি ইচ্ছমতো ভাজ করে পকেটে রাখা যাবে। যদিও স্যামস্যাং সম্প্রতি ঘোষনা করেছে তারা এই রকম ডিসপ্লে তৈরির কাজ শ্রীঘই শুরু করবে।
হ্যা এক সময় দেখা যাবে যে মোবাইল চার্জ দেবার প্রয়োজন নাই। কেননা, আপনার বাসার বৈদ্যুতিক বাতির আলো কিংবা সৌর আলোর স্পর্শ পাইলেই মোবাইল চার্জ হয়ে যাবে। অর্থাত স্মার্ট ফোনে এক রকম সেন্সর ব্যবহার করা হবে যেটা আপনাকে অটোমেটিক চার্জ হতে সাহায্য করবে।ৎ
উপরোক্ত আলোচনা হইতে কি বুঝলেন? বর্তমানে মোবাইল প্রযুক্তি এতটা দ্রুতভাবে বিকাশমান হচ্ছে যে, ল্যাপটপের চাহিদাগুলো অনেকটাই পূরন করতে সম্ভব হচ্ছে। তথাপি ল্যাপটপের বিক্রয় হইতে স্মার্ট মোবাইল ফোনের বিক্রয় হার অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং স্মাট ফোনের দামও বেশ সাশ্রয়ী। মোবাইলে ফোনে প্রতিনিয়তই আপডেট হিসাবে যে টেকনোলজির পরীক্ষা চলছে তাতে মনে হয় এক সময় ল্যাপটপ প্রস্ততুতকারক প্রতিষ্ঠান যেমনঃ এসার, গিগাবাইট, তোশিবা, এইচপি আলাদাভাবে স্মাট ফোন তৈরির কারখানা ওপেন করবে। বর্তমানে জানেন তো বাজারে কিন্তু আসুসের ট্যাব ও স্মাট ফোন পাওয়া যায়। সুতরাং আসুসের মত অন্য প্রতিষ্ঠানেরা বোধ হয় স্মাট ফোন তৈরির দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকবেনা।হয় নিজেরা তৈরি করবে নতুবা নোকিয়ার মত অন্য কোন ভেন্ডরের সাথে যৌথ মূলধন কারবারে অংশ নিবে। টিউনটি আমার কল্পনা এবং বেশ কিছু মোবাইল সাইটের রিভিউ অনুসারে আলোকপাত করলাম। তারপরেও আপনাদের মতামত থাকতেই পারে। পরিশেষে আবারো সবাইকে শুভেচ্ছ। ভাল থাকবেন। -আল্লাহ্ হাফেজ-
আমি এএমডি আব্দুল্লাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 157 টি টিউন ও 1046 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
সম্মানীয় ভিজিটর বন্ধুগন! সবাইকে আন্তরিক সালাম ও ভালবাসা। আশা করি ভাল আছেন। পর সংবাদ যে, আমরা একটি ব্লগ সাইট তৈরি করেছি। সাইটটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তি, শিক্ষা, কম্পিউটার বিষয়ক যেমনঃ অনলাইন ইনকাম, ফ্রিল্যান্স, টিউটোরিয়াল, মুভি, গেমস, সফটওয়্যার, ভ্রমন, ইতিহাস, ভূগোল, কার্টুন, ধর্ম, টেক সংবাদ, এবং সংবাদপত্র ফিউচার...
অসম টিউন, চালিয়ে যান ।