হ্যান্ডসেটের ব্যাটারি বিস্ফারণের শিকার আপনি নিজেও হতে পারেন, আসুন একটু সতর্কতা অবলম্বন করি।

আসা করি আল্লাহর রহমতে সকলে সুস্থ ও সুন্দর আছেন। এখনকার দিনে প্রায় সব মানুষের হাতে হ্যান্ডসেট দেখতে পাওয়া যায়, এটি আমাদের কাজে অনেক বেশি সাহায্য করে বলে এটি এত বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। আবার কিছু ভূলের জন্য এটি আপনাকে মারতে পযর্ন্ত পারে। আর আজ এরাকম একটা বিষায় আপনাদের যানাবো। যে কি ভাবে হ্যান্ডসেট ব্যাটারি বিস্ফরন হয়ে সে আপনাকে কি করতে পারে এবং সেটা থেকে কিভাবে সার্তক হওয়া যায়।

কখন বিস্ফোরণ হতে পারে :

এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি বিস্ফরণ ঘটেছে চার্জের সমায়। তবে বিস্ফরণের ঘটনা গুলোতে দেখাযায়, শুধু চার্জে দেওয়ার সময় নয় যে কোন সময়েই বিস্ফরণ হতে পারে। সেটা কোন কল দেওয়ার সময়, হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে কথা বলার সময়, ব্যবহার না করে রেখে দেওয়া হয়েছে এমন সময়েও বিস্ফোরণ হতে পারে

বিস্ফোরণের কারণ :

আমাদের ফোনের ব্যাটারি প্রায় সবারই কম বেশি গরম হতে দেখা যায়। এটি নেট ব্রাউজিং, ভিডিও দেখা, গেমস খেলা সহ এ ধরণের প্রোগ্রাম চালালে ফলে গরম হয়ে থাকে। বয়স প্রাপ্ত ব্যাটারির ক্ষেত্রে সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। প্রত্যেক ব্যাটারিতে "+" এবং "-" আছে, আর দীর্ঘদিন ক্রমাগত গরম হওয়ার ফলে "+" এবং "-" সেল গুলোর মধ্যে যে অন্তরক থাকে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শর্ট সার্কিট হয়েথাকে। ব্যাটারির সাধারনত কভার দ্বারা ঢাকা থাকে, কভার অংশটি উপরের দিকে থাকায় ভেতরের চাপে সহজেই কভার খুলে যায় এবং উত্তপ্ত ব্যাটারি অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে আগুন লাগতে দেখা যায়। এছাড়া হ্যান্ডসেট তৈরির সময় ত্রুটি থাকলেও বিস্ফোরণ হতে পারে। তাই বলা চলে কেবলমাত্র ব্যবহারের ওপর হ্যান্ডসেটের বিস্ফরণ নির্ভর করে না। তবে মূল কারণ হিসাবে ব্যাটারির শর্ট সার্কিট কে দায়ি করা যায়।

   উদাহরন হিসাবে একদিন ডিসকভারি চ্যানেলের "Man vs Wild " দেখার সমায় দেখেছিলাম বিয়ার গ্রিলস প্রচন্ড ঠান্ডায় টিকে থাকার জন্য হ্যান্ডসেটের ব্যাটারিতে শর্ট সার্কিট করিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ছিলেন।

বিস্ফোরণের পরিণতি :

 

সাধারণত বিস্ফরণে নানা মাত্রায় আহত হওয়ার খবর শোনা গেছে। তবে হ্যান্ডসেট বিস্ফরণের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে মৃত্যু। চীন, ভারত, নেপাল ও যুক্তরাজ্যে মোবাইল ফোন বিস্ফরণে ব্যবহারকারী নিহত হওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হয়েছে। সাধারণত কথা বলার সময় হ্যান্ডসেটটি বিস্ফরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া আপনার ঘর এমনকি পুরো বাড়িটি পুড়িয়ে দিতে পারে একটি ছোট্টো ব্যাটারি।

বিস্ফোরণ নিয়ে কিছু তথ্য :

যে কোন ব্র্যান্ডের মোবাইলেই বিস্ফরণ হতে পারে। অনেকেই আবার মনে করেন, কতগুলো নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেটে বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে, ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভূল। এখনও পর্যন্ত মোবাইল বিস্ফরণের তথ্য বিশ্লেষণে করলে দেখা যায় নোকিয়া, স্যামসাং, অ্যাপল, মটরোলার মতো কোম্পানীর মোবাইল হ্যান্ডসেটেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আবার নিদিষ্ট করে বলা যাবে না যে কোন মডেলের বিস্ফরণ হতে পারে, বিস্ফোরণ হওয়া না হওয়া হ্যান্ডসেটের মডেলের ওপর নির্ভর করে না। এমনকি কমদামি বেশিদামি যে কোন হ্যান্ডসেটেই বিস্ফরণ হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও পর্যন্ত নোকিয়া ১২০৪ মডেলের হ্যান্ডসেট থেকে শুরু করে অ্যাপেলের আই ফোন পর্যন্ত বিস্ফরিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কিছু সতর্কতা :

কিছুদিন আগে আমরা শুনেছিলাম মোবাইল হ্যান্ডসেট বিস্ফরণে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আহত হয়। তার হাতে ছিলো সিম্ফনি কোম্পানির একটি ফোন হঠাৎ করেই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফরিত হয়। এ সময় সেট ফেটে গিয়ে ব্যাটারি দিয়ে আগুনের ফুলকির মতো বের হতে থাকে। এখানে আমারা সিম্ফনি কে দায়ি করব না, এটি সব কোম্পানির ক্ষেত্রে হতে পারে। আজকাল অনেকেই আবার হ্যান্ডসেট বিস্ফোরণের ঘটনাকে গুজব বলে মনে করে আসছেন। কিন্তু বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই হ্যান্ডসেট বিস্ফোরণে হতাহতের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

কি করবেন দেখুন

★ কাস্টমার কেয়ার থেকে জেনে নিন আপনার হ্যান্ডসেট ওভার পাওয়ার কনজিউম করছে কিনা। যদি করে ব্যাটারির ওয়ারেন্টি মেয়াদ শেষে পাল্টে ফেলুন, এমনকি ব্যাটারি অনেকক্ষণ চার্জ ধরে রাখলেও।

★ চার্জে দিয়ে গেমস খেলা, ভিডিও দেখা, কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। নিতান্ত প্রয়োজনে কথা বলার সময় হেডফোন ব্যবহার করুন এতে ভালো হবে।

★ ফোন সেট বন্ধ করে অথবা এয়ারপ্লেন মডে রাখে চার্জ দিন এতে ঝুকি কমবে সাথে দ্রুত চার্জ হবে। শরীর হতে দূরে রাখুন।

★ চার্জরত অবস্থায় স্কিন নিচের দিকে রাখুন। কোন অবস্থা তাতে সেট বালিশের নিচে বা অন্য কিছু চাপা দিয়ে রাখবেন না।

★ পকেটে বা ব্যাগে রাখার সময় স্কিন সাইড শরীরের দিকে রাখুন।

★ মাঝে মধ্যে ব্যাটারির অংশে স্পর্শ করে তাপমাত্রা দেখে নিন। ১০৩°/১০৫°F এর বেশি তাপমাত্রা হলে কিছু সময়ের জন্য সেট বন্ধ করে রাখুন। ব্যাটারি খুলেও রাখতে পারেন।

★ সর্বোপরি জরুরী মূহুর্তে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ঝুঁকি মোকাবেলা করুন।

যানি আমি যা বলছি আমি নিজেও এতো কিছু মানতে পারব না। তবে আপনি অবশ্যয় মানার চেষ্টা করবেন এতে আপনার ভালো হবে। আর সব সমায় ইলেক্টনিক জিনিস পত্র ব্যবহারের সমায় সাবধান থাকবেন। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। যদি টিউনে কোথাও ভূল করি অবশ্যয় ধরিয়ে দিবেন। সকলের সুস্থ কামনা করে এখানে শেষ করলাম।

Level 0

আমি ব্লগার তিতাস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 15 টি টিউন ও 16 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

i am solo


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

খুবই সতর্কতামুলক পোস্ট ভাই।

দারুন, আর সময়োপযোগী পোস্ট । ধন্যবাদ ।

সবার জানা উ‌চিৎ।

সতর্কতামূলক পোস্ট। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ॥

Level New

Good Post

পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাই কে ধন্যবাদ

ভয় পাচ্ছি তো ভাই।

ভয় লাগলেও তথ্য গুলো কাজে দিবে । ধন্যবাদ…

Good and thanks for the warning