আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে। আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে ডিপ্রেশনের কিছু কারণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো তাই আপনারা দয়া করে সম্পূর্ণ টিউন টি ভালোভাবে পড়ে নিবেন।
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি ডিপ্রেশনে পরে তরুণ/তরুণীরা। এর কারণ হিসাবে জানতে চাইলে অনেক কারণ আমাদের সামনে আসে তবে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্য তরুণ কিংবা তরুণীরা অনেক বেশি ডিপ্রেশনের ভুক্তভোগী হচ্ছেন। ডিপ্রেশন কিন্তু একটি ভয়াবহ বিষয়। যারা ডিপ্রেশনের শিকার হন তাদের সঠিক পরামর্শ না দিলে এক পর্যায়ে তারা তাদের জীবন নিতেও দ্বিতীয় বার ভাববেন না। তাই ডিপ্রেশনের ব্যক্তিদের সঠিক পরামর্শ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে ডিপ্রেশন কেনো হয় এর কারণ, ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জেনে নিই। তো আমরা বিষয়গুলো আলোচনা করবো নম্বর দিয়ে এবং সেই একই নম্বর এর নিচে সেই ডিপ্রেশনের বিষয় এর মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই আপনারা দয়া করে দেখে নিবেন। তো চলুন আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।
বর্তমান সময়ে তরুণ কিংবা তরুণীরা সবচেয়ে বেশি ডিপ্রেশনের শিকার হন তাদের পরিবার বা ফ্যামিলির চাপের কারণে। যদিও বা শুনতে খারাপ লাগছে, তবেই এটাই সত্যি। সত্যিকে আপনি কখনো উল্টাতে পারবেন না। চলুন একটা উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক। একটা ছেলে সবেমাত্র ২২ বছরে পা দিয়েছে ইন্টার পাশ করেছে কিন্তু সে এখনো কেনো বাড়িতে বসে আছে? সে কেনো ইনকাম করে না? কেনো সে চাকরি পায় না? পাড়া প্রতিবেশীর একই কথা সারাজীবন বাড়িতেই বসেই খাবি নাকি? ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব এর কারণে যখন ছেলেটা একটা ছোটখাটো চাকরির জন্য চেষ্টা করে তখন সে চাকরিও পায় না। এইতো এই সময়েই একটা ছেলে কিংবা মেয়ে ডিপ্রেশনের শিকার হয়। তারা যখন নিয়তির কাছে হেরে যায় তখন তারা চায় দুনিয়ার এই কঠিন নিয়ম থেকে মুক্তি পেতে। তখন তারা হুট করেই একটা ভুল স্বিধান্ত নিয়ে ফেলে।
এই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই তার পিতা মাতার অবদান এর কোন তুলনা নেই। এই ডিপ্রেশন থেকে একমাত্র তার বাবা-মা তাকে মুক্ত রাখতে পারে। ছেলে চাকরি পায় না ছেলে বাড়িতে বসে খায়। এসব নিয়ে তাকে সবসময় কথা শুনাবেন না। আপনি চেষ্টা করবেন তার মনের কথা বুঝতে। আপনি যদি একজন বাবা কিংবা মা হন আপনার উচিত সকল বিষয় বিবেচনা করা করা। আপনার ছেলে কিংবা মেয়েকে এই সময়ে সার্পোট দিন। পাড়া-প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে কথা বলুন। আপনার ছেলেকে সান্ত্বনা দিন তাকে বুঝিয়ে বলুন নরম গলায়। পিতা বা মাতা হিসাবে আপনি যদি এটি করতে পারেন কেবল মাত্র তবেই আপনার ছেলে কিংবা মেয়ে এই পারিবারিক ডিপ্রেশন নামক কথাটি থেকে মুক্তি পাবে।
ডিপ্রেশনের আরো একটি কারণ হলো হতাশা। ক। কেউ চাকরি করে, কেউ ব্যাবসা করে, কেউ বা আবার পড়াশোনায় এখন ব্যস্ত। মূলত এসব লোকের মাঝে তাদের বর্তমানে স্টাজিগুলোর কারণেই হতাশা নেমে আসে। আপনি চাকরি করেন কিন্তু বেতন বাড়ছে না, সংসার চলছে না, পরিবারের মানুষ খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আপনি ব্যাবসা করেন কিন্তু আপনার ব্যবসায় লাভ হচ্ছে না লসের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে এটির কারণে আপনার মাঝে হতাশা সৃষ্টি হবে। আপনি ছাত্র/ছাত্রী সারাদিন প্রচুর পড়াশোনা করেন কিন্তু রেজাল্ট ভালো হয় না। এইজন্য হতাশায় পড়ে যান এসব কারণের জন্যও কিন্তু ডিপ্রেশন হতে পারে। সন্দেহ না অনেকে এসব কারণে চিরোদিনের জন্য বিদায় ও নিয়েছেন।
আপনি কখনো অনেক বেশি বেশি চাইবেন না। আল্লাহ যা দিয়েছেন তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। আপনি যখন বেশি চাইবেন কিন্তু পাবেন না তখনি ডিপ্রেশনে পড়ে যাবেন। রিজিকের মালিক আল্লাহ খেয়ে পড়ে বেচে থাকলেও আলহামদুলিল্লাহ বলুন। পড়াশোনা মনোযোগী হন ইনশাআল্লাহ পরের বার আরো ভালো রেজাল্ট হবে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন আল্লাহ যা দিবে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। কখনো অনেক বেশি বেশি পাওয়ার লোভে পরবেন না।
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে কমন একটি বিষয় হলো এই রিলেশন এর কারণে তরুণ কিংবা তরুণীরা মারাত্বকভাবে ডিপ্রেশনের শিকার হচ্ছেন। একটা ছেলে একটা মেয়েকে অনেক ভালোবাসে কিংবা মনে করুন একটা মেয়ে একটা ছেলেকে অনেক ভালোবাসে ৬ মাস সম্পর্কের পর মেয়েটা হঠাৎ কথা বলা বন্ধ করে দেয় কিংবা মেয়েটার অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যায় অথবা মেয়েটা আপনার থেকেও ভালো কাউকে পেয়ে যায় তাই হয়ত যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেয়। আপনি তার কারণে প্রতিরাত কেঁদে বালিশ ভিজান। ডিপ্রেশনে পড়ে যান। নিজের বাবা- মাকে কষ্ট দেন। একবারও নিজের কথা ভাবেন না। একসময় কষ্টের কাছে হার মেনে নিয়ে অনেকেই জীবনের ইতি টেনে নেয়। এটি কিন্তু একটি ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ মনে রাখবেন ❝আত্মহত্যা মহাপাপ❞ এরা কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এটি মূলত খুব সহজ একটি কাজ। একমাত্র মা এবং প্রিয় বন্ধুরাই পারে তার এই চরম ডিপ্রেশন নামক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে। আপনার পাশে আপনার বন্ধু যদি এমন কষ্ট পেতে থাকে তাকে নিয়ে আপনি ঘুরতে যান হয়ত সে যেতে চাইবে না কিন্তু তাকে একপ্রকার জোর করেই নিয়ে যান। তার সাথে মজা করুন গল্প করুন। এই গল্পের ফাঁকে তাকে বলুন, বোঝান যে মেয়েটি তাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারলে সে কেনো তাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবে না। তাকে বোঝান এখন সে কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু মেয়েটি এই সময়েই অন্য একটি ছেলের সাথে ঠিকই হাসতে হাসতে সময় পার করে দিচ্ছে। তাকে আপনার সমস্ত দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করুন। ইনশাআল্লাহ একবার সে বুজে গেলে সেও একটি নতুন দূনিয়া খুঁজে পাবে। সেও হাসি খুশিতে বন্ধুত্বের মাঝে বেঁচে থাকতে শিখে যাবে।
মাদক চরম আর ভয়াবহ একটি বস্থুর নাম। আমরা সবাই জানি মানবজীবনে মাদকের প্রভাব কতটা খারাপ। বর্তমান সমাজে প্রায় ৯০% ছেলে এবং ৩০% মেয়েই এই মাদকের ভয়ংকর নেশায় নেশাগ্রস্ত। মাদকের নেশার কারণে এদের মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকে। এরা সময় মতো মাদক কিংবা যে নেশায় নেশাগ্রস্ত সেই জিনিস না পেলে এরা মারাত্মক ভাবে ডিপ্রেশনে পড়ে যায়। এমন অবস্থায় এরা নিজেদের ক্ষতি করতেও পিছপা হন না। মাদক এর কারণে ডিপ্রেশন হলে এই ব্যক্তিদের মাদক ছাড়ানো বেশ কষ্ট কর তবে চেষ্টা করলে সম্ভব।
আসুন আমরা সবাই ❝মাদককে না বলি, মাদক এড়িয়ে চলি❞ এটি আমাদের জন্য শুধু ডিপ্রেশনের কারণ নয় এটি আমাদের জীবনের জন্যও হুমকি। আপনার সমস্যা আপনাকেই সমাধান করতে হবে। আপনি নিজে চাইলেই মাদক নেশা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। হয়ত একটু কষ্ট হবে। তবে আপনি চাইলে আমি গ্যারান্টি আপনি নিশ্চিত পারবেন। সফল হবেনই ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা বেশি নেশাগ্রস্ত লোকদের ২/৩ মাসের কোর্স এ নেশা ছাড়িয়ে দেন। বেশি সমস্যা দেখলে আপনি তাদের সহায়তা নিতে পারেন।
তো বন্ধুরা এই ছিল আজকের বিষয় ডিপ্রেশন কেনো হয় ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়। আশাকরি টিউন টি আপনাদের সবার অনেক অনেক ভালো লেগেছে। দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন টিউন নিয়ে ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।
সুন্দর