National Institute for Healthcare Research-এর ডেভিড বি লারসন (David B. Larson) ও তাঁর সঙ্গীদের দ্বারা পরিচালিত একটি জরিপ থেকে বেরিয়ে এসেছিল আগ্রহ-উদ্দীপক তথ্য। তাঁরা দেখতে পান, যারা নিয়মিত চার্চে যাতায়াত করেন, তাদের আর্টেরিওস্কেলেরোটিক (arteriosclerotic) হৃদরোগ হবার সম্ভাবনা, যারা অনিয়মিত চার্চে যাতায়াত করেন তাদের তুলনায় মাত্র ষাট শতাংশ। অন্যদিকে, নিয়মিত চার্চে যাতায়াতকারী মেয়েদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সেসব মেয়ের তুলনায় অর্ধেক যারা নিয়মিত চার্চে যাতায়াত করেন না। লারসন ও তাঁর সঙ্গীরা ওই জরিপ থেকে আরও আবিষ্কার করেন যে, যেসব ধূমপায়ী নিজেদের জীবনে ধর্মকে খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না, তাদের নরমাল ডায়াস্টলিক প্রেসার রিডিং (normal diastolic pressure readings) থাকার সম্ভাবনা সেসব ধূমপায়ীর তুলনায় সাতগুণেরও কম যেসব ধূমপায়ী ধর্মকে নিজেদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। -(দেখুন, Patrick Glynn, God: The Evidence. পৃষ্ঠা-৮০-৮১)।
প্রশ্ন হচেছ: কেন এমন হয়? বস্তুবাদী মনোবিজ্ঞানীরা একে সাধারণভাবে ব্যাখ্যা করবেন “মনোবৈজ্ঞানিক কারণ” (psychological cause) হিসেবে। এ-ধরনের ব্যাখ্যানুসারে (স্রষ্টায়) বিশ্বাস মানুষের মনোবল বৃদ্ধি করে এবং এর ফলে সে মনোদৈহিক সুবিধা লাভ করে। এ ব্যাখ্যায় হয়তো খানিকটা সত্য আছে, তবে আমরা বিষয়টার একটু গভীরে তাকালেই আরও অধিক নাটকীয় কিছু দেখতে পাবো আসলে, স্রষ্টায় বিশ্বাস মানুষের মনোবল বৃদ্ধিতে যতটা প্রভাব ফেলতে পারে, অন্য কোনো জিনিস ততটা পারে না। ধর্মীয় বিশ্বাস ও দৈহিক স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্ক নিরূপণের লক্ষ্যে গবেষণা করে Harvard Medical School-এর Dr. Herbert Benson কিছু আগ্রহ-উদ্দীপক ফলাফল পেয়েছেন। বেনসন কোনো ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না। কিন্তু তিনি গবেষণায় প্রমাণ পান যে, স্রষ্টায় বিশ্বাস ও প্রার্থনা মানুষের স্বাস্থ্যে্যর ওপর যতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, ততটা ইতিবাচক প্রভাব অন্য কোনো কিছুই ফেলতে পারে না। তিনি বলছেন: (গবেষণা করে আমি এ-সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে স্রষ্টায় বিশ্বাস মানুষের মনকে যতটা প্রশান্ত করে, ততটা প্রশান্ত অন্য কোনো ধরনের বিশ্বাস করতে পারে না। " - (দেখুন, Herbert Benson ও Mark Stark-এর লেখা গ্রন্থ Timeless Healing, পৃষ্ঠা ২০৩)।
মানুষের মন ও দেহের সঙ্গে স্রস্টার প্রতি বিশ্বাসের এই বিশেষ সম্পর্ক কেন? আগেই বলেছি, হার্বার্ট বস্তুবাদী গবেষক ছিলেন। অথচ তিনিই এই প্রশ্নের জবাবে বলছেন: মানুষের মন ও দেহকে স্রস্টার জন্যই একসূত্রে বাধা হয়েছে।
<span;>(দেখুন, Timeless Healing, পৃষ্ঠা- ১৯৩)।
এ সত্য-যা চিকিৎসাজগত ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছে-কুরআনে প্রকাশ করা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। কুরআন বলছেঃ আল্লাহ তথা স্রস্টার স্মরণেই কেবল অন্তর শান্তি পেতে পারে। ”-(কুরআন, ১৩: ২৮)। যাঁরা স্রষ্টায় বিশ্বাস করেন; তাঁর উপর আস্থা রাখেন এবং তাঁর কাছে নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য প্রার্থনা করেন—তাঁরা দৈহিক ও মানসিক দিক দিয়ে অন্যদের তুলনায় অধিকতর স্বাস্থ্যবান হন। কেন হন? কারণ ওসব করবার মাধ্যমে তাঁরা তাদের প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ করেন। বলাবাহুল্য, মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক যে-কোনো দার্শনিক ব্যবস্থা সবসময়ই মানুষের জন্য যন্ত্রনা, দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা বয়ে আনে।
একজন ধার্মিক ব্যক্তির মনে শান্তি বিরাজ করেন। এ-শান্তির উৎস হলেন স্রষ্টা নিজে। আর ধার্মিক ব্যক্তি স্রস্টার সন্তুষ্টির জন্যই কাজ করেন। অন্যভাবে বললে, ধার্মিক ব্যক্তি বিবেকের ডাক শোনার পুরষ্কার হিসেবে লাভ করেন ওই শান্তি। এখানে বলে রাখা ভাল যে, একজন ধার্মিক লোক কেবল শান্তির জন্য বা ভাল স্বাস্থ্যের আশায় ধর্মীয় জীবন যাপন করেন না। কেবল এ-ধরনের ইচছা মনে পোষণ করে ধর্ম-কর্ম করলে কেউ সঠিক অর্থে শান্তি পেতে পারে না। স্রষ্টা জানেন একজন কী প্রকাশ করে বা মনের গভীরে কী গোপন করে। স্রস্টার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হয়ে এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে একনিষ্ঠভাবে ধর্মীয় বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমেই কেবল একজন প্রকৃত শান্তি পেতে পারে। স্রষ্টা বলছেন: “তুমি একনিষ্ঠ হইয়া নিজেকে ধর্মে বা দীনে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে-প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করিয়াছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নাই। ইহাই সরল ধর্ম, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। ”-(কুরআন, ৩০: ৩০)।
বিভিন্ন আবিষ্কারের আলোকে আমরা সংক্ষেপে ওপরে যে-সত্য তুলে ধরলাম, আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা সে-সত্যকে স্বীকার করতে শুরু করেছে।
তাইতো পেট্রিক গ্লাইন বলছেন: “সাম্প্রতিককালের চিকিৎসাবিদ্যা (medicine) স্পষ্টতই নিখাঁদ বস্তুগত (meterial) চিকিৎসার বাইরেও যে চিকিৎসা পদ্ধতি থাকতে পারে তা স্বীকার করতে যাচ্ছে। "-(Patrick Glynn, God: The Evidence. পৃষ্ঠা-৯৪)।
আমি Sk Shakib। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।