বাংলাদেশের অতি পরিচিত কয়েকটি রোগ [পর্ব-০২] :: ঠোঁটের ঘা, মুখের দূর্গন্ধ, জিহ্বার প্রদাহ

প্রিয় টেকটিউনস বন্ধুরা সবাই নিশ্চয় প্রতিপালকের অশেষ কৃপায় ভালোয় আছেন। বরাবরের মতো আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাংলাদেশের অতি পরিচিত কয়েকটি রোগ [পর্ব-০২] নিয়ে কথা বলবো।

তো চলুন আজকে আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাই।

ঠোঁটের কোণায় ঘা (Angular Stomatitis)

স্বাস্খ্য বিধি না মেনে চলার কারণে অপরিষ্কার মুখে ক্যানডিডা অ্যালবিকানস এবং স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস জীবাণুর সংক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। এছাড়াও পেটের অসুখ, অপুষ্টি এবং কোবালামিন (ভিটামিন বি-১২), নিয়াসিন (বি-৩), থায়ামিন/এনিউরিন (বি-১), ফলিক অ্যাসিড (বি-৯), অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন সি)-এর অভাবে এ রোগ দেখা দেয়। অনেকেরই ঠোঁটের কোণায় ঘা হয়ে থাকে এবং ব্যথা হয়। বিশেষ করে শীতকালে এ রোগ বেশি দেখা যায়। রোগী কিছু খেতে গেলে লালা ঝরে। সাধারণতঃ গরম বা ঝাল যুক্ত খাবার খেতে পারে না।

লক্ষণ ও উপসর্গ (Sign & Symptom)

  • ঠোঁট লাল হয়ে ফেটে যায়,
  • দুই ঠোঁটের কোণায় ঘা হয়, কস্ পড়ে এবং হা করা যায় না,
  • ঠোঁটের ভেতরের অংশও লাল হয়ে যায়।

পরামর্শ

  1. ঠোঁটের কোণায় ঘা হলে ঢেকি ছাঁটা চাল, ডাল, গম জাতীয় খাবার, পুঁই শাক, কলমী শাক, কালো কচু শাক, কলিজা, দুধ, ডিম, পাকা কাঁঠাল, বিভিন্ন প্রকার ফল খেতে হবে,
  2. উক্ত খাবার গুলিতে ভিটামিন-বি বেশি পাওয়া যায়। এ খাবার গুলো নিয়মিত খেলে ঠোঁটের কোণায় ঘা হয় না,
  3. মুখের যত্ন নেয়া দরকার। নিয়মিত রাতে খাবারের পর দাঁত ব্রাশ করা এবং ঘা অবস্থায় কুসুম গরম লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করতে হবে,
  4. খাঁটি মধু চেটে খাওয়া ফলপ্রদ,
  5. বেশি বেশি প্রোটিন, গরুর মাংস, খাসীর মাংস, মুরগী, মাছ, বীজ জাতীয় খাবার যেমন- ডাল, বরবটি, সয়াবিন, বাদাম খেতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।

মুখের দূর্গন্ধ (Bad Breath/Foul Smell)

বিভিন্ন জীবাণুর (ব্যাকটেরিয়া) কারণে বিশেষ করে Streptococcus mutans ব্যাকটেরিয়ার কারণে দাঁতের ফাঁকে প্লেক জমে, যার ফলে মুখে দূর্গন্ধ হয়। কোন কোন সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে হয় এবং অনেক সময় মাড়ির প্রদাহ হওয় কিংবা সঠিক নিয়মে উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার না করার কারণেও হয়ে থাকে। মনে রাখা প্রয়োজন যে, মুখের লালা রসে থাকে Streptococcus saliverin. যা আমাদের বন্ধু ব্যাকটেরিয়া। এরা মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং মুখে দূর্গন্ধ হতে দেয় না। এভাবে এরা মুখ গহ্বরের পরিবেশের ভরসাম্য রক্ষা করে। তাই আমাদের সে সকল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে যা বেশি পরিমাণে লালারস উৎপাদন করে। যেমন- দই, আনার, ক্যানবেরি, ধনিয়া পাতা, সবুজ শাকসব্জি ইত্যাদ্।

 

 

পরামর্শ

  • আহারের পর এবং শয়নকালে সঠিক নিয়মে উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যে এবং বদ হজম যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

জিহ্বার প্রদাহ (Glossitis)

জিহ্বার প্রদাহ ভিটামিন বি-২, নিয়াসিন, ভিটামিন সি ঘাটতি জনিত একটি রোগ। যা মুখের ঘায়ের সাথে একই সময়ে কিংবা পৃথকভাবে প্রকাশ পায়। সাধারণতঃ ধারাল দাঁতের ঘর্ষণে এবং পুরে গেলে এ রোগ দেখা যায়। আবার কখনও তীব্র জ্বর, জল বসন্ত, ধূমপান, সিফিলিস এবং অতিরিক্ত মদ্যপানেও এ রোগ হয়। কখনও কখনও ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, মারাত্বক রক্তস্বল্পতা, অপুষ্টি জনিত রক্ত স্বল্পতায় ভুগলেও এ রোগ হয়।

লক্ষণ

  • জিহ্বায় ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং কখনও কানে ব্যথা হয়। সেই সাথে জ্বরও থাকে। রোগী ব্যথায় কথা বলতে পারে না।
  • জিহ্বা ছিলে লালচে রং ধারণ করে।
  • অনেক সময় লালা ক্ষরণ করে।
  • খাদ্য খেতে অসুবিধা হয় এবং ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

তো টেকটিউনস বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে আগামী কোনো পর্বে সে পর্যন্ত দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

Level 1

আমি Abdur Rashid। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস