ভার্চুয়ালাইজেশন সিস্টেম কি বা কেন?

-বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম-

টিউনের শুরুতে সবাইকে জানাই সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা। আমার টিউনে কোন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আপনারা হয়ত টিউনের হেডিং দেখে বুঝে গেছেন কি নিয়ে টিউন হবে। আমি অনেক বেশি জানি না তবে যেটুকু জানি তা সবার কাছে শেয়ার করতে চাই। কথা না বাড়িয়ে আসল টিউনে আসা যাক।

ভার্চুয়ালাইজেশন সিস্টেম কি বা কেন?

ভার্চুয়ালাইজেশন হল এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে আপনি একটি ফিজিক্যাল কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম মধ্যে মাল্টিপুল (ভিন্ন ভিন্ন)  অপারেটিং সিস্টেম পরিচালনা করতে পারা। যেটা দৃশ্যমান কিন্তু আপনি ধরতে পারবেন না তবে কাজ করতে পারা যায় এমন। স্টোরেজ, সার্ভার, অপারেটিং সিস্টেম, নেটওয়ার্ক ও অ্যাপ্লিকেশন এসব ক্ষেত্র গুলোতেই ভার্চুয়ালাইজেশন প্রয়োগ সম্ভব। বর্তমানে আমরা ক্লাউড নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছি সেটা কি? সেটা একটা ভার্চুয়ালাইজেশন প্রযুক্তি। ক্লাউড নিয়ে পরে একটি টিউন করব তখন বিস্তারিত আলোচনা করব।

এখন মনে হতে পারে আমরা কেন ব্যবহার করব?

বর্তমানে আমাদের চাহিদা এত বেশি যে প্রযুক্তিবিদরা তার চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। কেননা একটি সময় আমরা ওয়েব সাইট কি বা নিজের একটি ওয়েব থাকবে কল্পনা করতাম কিন্তু আজ প্রযুক্তি আমাদের হাতের নিকট এনে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কাজের পরিধি বেড়ে গেছে তার সাথে আমাদের চাহিদা।

বুঝতে পারেছেন না কি সব বলে যাচ্ছি?

আশাকরি সেই এন্ড্রয়েড আবার কম্পিউটার ব্যবহার করা যায় কিসের মাধ্যমে বুলুস্ট্যাক। এটা এক ধরনের ভার্চুয়ালাইজেশন। একদিকে কম্পিউটার অন্য দিকে এন্ড্রয়েড ব্যবহার।

কি আর একটু সহজ হলে ভালো হত? যেমন আমরা হার্ডডিস্ক মধ্যে পার্টিশন করে থাকি ভিন্ন ভিন্ন ড্রাইভ নামে আসলে কি আমরা হার্ডডিস্ক কেটে করে থাকি? না। আমরা ভার্চুয়ালাইজেশন হিসাবে ভিন্ন ভিন্ন পার্টিশন করে থাকি। এটা এক ধরনের ভার্চুয়ালাইজেশন।

এবার যদি আপনি বুঝতে না পারেন তাহলে বলব আর সামনে দিকে যাইয়েন না।

আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশুনা করি তাদের প্রায় বিভিন্ন প্রোজেক্ট করতে হয় এই জন্য ব্যবহার করতে হয় আমাদের শখের কম্পিউটারটা। কিন্তু সমস্যা হল আপনার প্রজেক্ট যদি করতে হয় অন্য কোন অপারেটিং সিস্টেমে তাহলে সমস্যা হয় তখন। কেননা আমাদের বাসার কম্পিউটারটা প্রায় সবার থাকে উইন্ডোজ ভিত্তিক। তখন আপনি কি করবেন? আপনি কি আপনার অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তন করবেন কয়েক দিনের জন্য? অবশ্যই না। সেক্ষেত্রে আমরা ভার্চুয়ালাইজেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি।

সুবিধা সুমুহঃ

১। একটি মেশিনের মধ্যে আলাদা আলাদা ভিন্ন ভিন্ন মেশিন বানানো। আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোজেক্ট বানানোর জন্য উবন্তু ইন্সটল করা বা কালি লিনাক্স চালানো। এক সাথে অনেক গুলো মেশিন চালানো।

২। প্রোটেকশনঃ অনেক সময় অনেক কোড বা সফটওয়্যার আসল মেশিনে ব্যবহার না করে  ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করে চেক করা জেতে পারে যে কোন কোড সমস্যা এসে কিনা।

৩। কোন সফটওয়্যার ফার্মে আসল মেশিনে কখনো তাদের কোড অ্যাপ্লাই করে না। কেননা যদি সমস্যা হয় তাহলে আবার অপারেটিং সিস্টেম দিতে হতে পারে বা সফটওয়্যার জন্য অন্য অপারেটিং সিস্টেম লাগতে পারে সে ক্ষেত্রে কি করবে?

ক্লাউড হোস্টিং এ ঠিক এভাবে করেই আপনাকে হোস্টিং স্পেস দেয়া হয়। আপনি যখন কোন ভিপিএস হোস্ট সার্ভিস নিচ্ছেন আপনাকে একটি নতুন আইসোলেটেড সিস্টেম দেয়া হচ্ছে। আপনার কি মনে হয় আপনাকে তারা একটি নতুন পিসি দিয়েছে? না, মোটেই না। এতে করে তাদের ৫০ হাজার ইউজারদের জন্য ৫০ হাজার পিসি লাগতো। আবার একটা পিসিতে একটা ওএস এর সাথে আরেকটা ওএস বুট করাও যেতো না। এ সমস্যা দূর করার জন্যই আপনাকে তারা ভার্চুয়াল পিসি দেয়, যেখানে তারা তাদের মুল পিসির অরিজিনাল ওএস এর উপরেই আপনার পছন্দের ওএস দিয়ে দেয় যেটা দিয়ে আপনি ভিপিএস রান করবেন। অর্থাৎ একটা পিসির হার্ডওয়্যার বা ইনফ্রাস্টাকচারের মধ্যেই অনেকজন হোস্টিং স্পেস পায়, যাদের আলাদা আলাদা ওএস, আলাদা সফটওয়্যার, আলাদা ভার্সন থাকে। তাদের মাঝে কোন কনফ্লিক্ট ও হয় না।

হোস্টিং এর মূল পিসির হার্ডওয়্যারে যে ওএসটা থাকে তাকে বলা হয় “হোস্ট ওএস” আর তার উপরে ভার্চুয়ালাইজেশনে যে নতুন ওএস দেয়া হয় তাকে বলে “গেস্ট ওএস”। ভার্চুয়াল পিসিকে “ভার্চুয়াল মেশিন” বলে। কখন কোন ভার্চুয়াল মেশিন তৈরি হবে, ডিলেট হবে ইত্যাদি কাজ করে “হাইপারভাইজর” নামক একটা সফটওয়্যার সিস্টেম।

আরো অনেক সুবিধা পাবেন যখন আপনি নিজে ব্যবহার করবেন বা করেছেন।

কিভাবে ব্যবহার করব?

বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ভার্চুয়ালাইজেশন সিস্টেম নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ উইন্ডোজের হাইপারভি (Hyper-V), লিনাক্স এর কেভিএম(KVM), Citrix, EMU, VMware Vsphere, VirtualBox.

হাইপারভি ও কেভিএম ম্যানেজ করার জন্য ভার্চুয়াল ম্যানেজার ব্যবহার করা হয়। তবে আপনি ভিএমওয়্যারে ও ভার্চুয়ালবক্সে অনা আয়েশে ব্যবহার করতে পারেন। এই জন্য আপনাকে টুলস গুলো ডাউনলোড করে নিতে হবে। এইখানে সব টুলস কিন্তু ফ্রি না কিছু টাকা দিয়ে কিনতে হয়।

ওয়েব সাইটে গিয়ে ডাউনলোড করতে যদি কষ্ট তাহলে  আমি লিঙ্ক শেয়ার করে দিব। আপনারা সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিবেন। ইন্সটল করে নিবেন  যদি ইন্সটল করতে সমস্যা হয় তাহলে আমার অন্য টিউনটি দেখে নিতে পারেন।

আমি আগেই বলেছি আমরা লিনাক্স নিয়ে সিরিজ টিউন করব। তাই আগেই আমাদের ব্যবহৃত সকল টুলস গুলো আপনাদের পরিচয় করে দিচ্ছি যাতে করে টিউন করার সময় বুঝতে সহজ হয়। আমার মত আপনিও ল্যাব বানাতে পারেন। এর পর আমরা ইন্সটল ও কিভাবে সেটিং করতে হয় আমরা জানব। ভালো থাকবেন সবাইকে ভালো রাখার চেষ্টা করবেন। আল্লাহ্‌ হাফেজ।

Level 0

আমি মোনারুল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 50 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস