প্রাক কথনঃ প্রথম পর্বে উবুন্টু কী এবং কেনো উবুন্টু নিয়ে আলোচনা করেছিলাম । সেটা ছিল উবুন্টু/লিনাক্স মিন্ট সিরিজের শূন্যতম টিউন । এপর্ব থেকে শুরু হচ্ছে আসল টিউটরিয়াল । উবুন্টু/লিনাক্স মিন্ট ইন্সটল করার জন্য আপনার উবুন্টু/লিনাক্স মিন্টের সিডি বা বুটেবল পেনড্রাইভ ব্যবস্থা করতে হবে । এ পর্বে তাই নিয়ে আলোচনা হবে । একটা জিনিস সবাই খেয়াল রাখবেন - উবুন্টু আর লিনাক্স মিন্ট যেহেতু একই জিনিস তাই উবুন্টুর মোটামুটি সব টিউটরিয়াল আপনি লিনাক্স মিন্টের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন । যারা ইন্টারনেট থেকে মিডিয়া কোডেক ডাউনলোেডর এর ঝামেলায় যেতে চান না এবং প্রায় উইন্ডোসের মত দেখতে একটা অপারেটিং সিসটেম চান তাদের জন্য লিনাক্স মিন্টই উপযুক্ত ।
আমি ধাপে ধাপে দুটাই বলতে চেষ্টা করব ।
যেহেতু ডাকযোগে আসে তাই খেয়াল রাখবেন যেনো পরিচিত ঠিকানা হয় , আপনার ঠিকানা যদি বেশী কঠিন হয় তবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সেটা নাও পৌছাতে পারে 😐
আরেকটা জরুরি বিষয় হল - যদি আপনার বন্ধু বা অন্য কেউ আগেই সিডি সংগ্রহ করে থাকেন তাহলে পুনরায় সিডি সংগ্রহ না করে সেটা ব্যবহার করাই উচিত । আপনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি সিডি আনান তার মানে দাড়ায় আরেকজন ( যার সত্যি সিডি দরকার ) তিনি সিডি পাবেন না ।
শুধু মাত্র উবুন্টুই এমন সিডি পাঠানো হয় লিনাক্স মিন্ট সিডিতে আনতে হলে আপনাকে পে করতে হবে ।
এটা সবচেয়ে উত্তম পথ আমার মতে । এখানে চারটি ধাপ-
উবুন্টুর নতুন সংস্করণ ডাউনলোড করে নিতে পারেন এখান থেকে আর লিনাক্স মিন্ট পাবেন এখানে । তবে বাংলাদেশের দুর্বল নেটের কারণে অনেক সময় এই ডাউনলোড করাপ্টেড হয়ে যেতে পারে । সেক্ষেত্র আমার পরামর্শ থাকবে টরেন্ট দিয়ে ডাউনলোড করা । উবুন্টুর নতুন ভার্সনের টরেন্ট পাবেন এইখানে আর লিনাক্স মিন্টের এখানে । আর টরেন্ট ক্লায়েন্ট হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন মিউ-টরেন্ট - পাবেন এইখানে । আর যদি সরাসরি ডাউনলোড করেও ফেলেন তাহলেও সমস্যা নাই - কিভাবে করাপ্টেড ফাইল ঠিক করতে হয় তা দেখিয়েই দিচ্ছি 🙂
আর আপনার বন্ধুর কাছে যদি আইএসও ইমেজ থাকে তবে তা আপনি এমনিতেই সংগ্রহ করতে পারেন । আর যদি আইএসও ইমেজ না থাকে কিন্তু সিডি থাকে তবে সেক্ষেত্রে সিডি থেকে একটা আইএসও বানিয়ে নিতে পারেন । এজন্য এখানে থেকে Free DVD ISO Maker নামিয়ে নিন ( মাত্র ১ মেগা সাইজ ) । ইন্সটল করে সিডি ড্রাইভে উবুন্টুর সিডিটা রেখে প্রোগামটা খুলুন । next দিয়ে কোথায় সেভ হবে তা দেখিয়ে দিন । ব্যস ! পেয়ে গেলেন iso ইমেজ 🙂
ডাউনলোড করা ফাইল ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয় MD5 Sum চেক । এটা প্রত্যেক ফাইলের ক্ষেত্র ইউনিক একটা সংখ্যা ।
** ubuntu-10.04-desktop-i386.iso এর md5 sum - ubuntu-10.04-desktop-i386.iso
** Linux Mint 9 "Isadora" - Gnome CD (32-bit) এর md5 sum - 288f3e04eec1facd9c39e783e3379ab7
md5 Sum চেক করার জন্য এখান থেকে WinMd5Sum Portable টা ডাউনলোড করে নিন । সেটা যেকোন যায়গায় এক্রট্রাক্ট করুন । প্রোগ্রামটা চালিয়ে আপনার আইএনও ইমেজটা দেখিয়ে দিলেই md5 sum বের করে দিবে 🙂
এখন কথা হল যদি ফাইলটা করাপ্টেড হয়ে যায় তখন কী করতে হবে ? আবার ডাউনলোড ! না , তার আর দরকার নেই । আপনি ফাইলটা ঠিক করে নিতে পারেন - এজন্য লাগবে মিউ টরেন্ট সফ্টওয়্যার , উবুন্টু বা লিনাক্স মিন্টের টরেন্ট ফাইল ( বড়জোড় ৪০ কেবি হবে 🙂 ) । উবুন্টুর জন্য উবুন্টুর টরেন্ট ফাইল , মিন্টের জন্য মিন্টের টরেন্ট ফাইল ।
আমাদের কাজ প্রায় শেষ । এবার একটা ব্ল্যান্ক সিডিতে আপনার আইএসও ফাইলটা বার্ন করে নিন । খেয়াল রাখবেন - আইএসও বার্ন করা আর অন্য ফাইল বার্ন করার মাঝে সামান্য পার্থক্য আছে । Nero দিয়ে কাজ করলে আপনি Backup অংশে Burn an image এ গিয়ে আইএসও ফাইলটা দেখিয়ে দিতে হবে । অন্যভাবে করলে হবে না কিন্তু !
নেরো না থাকলে সবচেয়ে ভালো হয় Free DVD ISO Burner ব্যবহার করলে । ইন্সটল করে অপেন করলেই আপনাকে iso ইমেজটা দেখিয়ে দিতে বলবে । এরপর Next বাটন চাপলেই আইএসও টা সিডিতে বার্ন হয়ে যাবে ।
ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো আপনার বুটেবল উবুন্টু / লিনাক্স মিন্ট ইন্সটলেশন ডিস্ক 🙂
অনেকের সিডি রাইটার নাও থাকতে পারে , তাছাড়া সিডিতে রাইট করার সময় কারেন্ট চলে যাওয়া সহ আরও নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটতে পারে - যাতে হয়ত সিডিটা ড্যামেজড হযে যেতে পারে । সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় যদি পেন-ড্রাইভকে বুটেবল করে নেয়া হয় । বারবার ব্যবহার করা তো যায়ই , পেনড্রাইভ থেকে ইন্সটলেশনও অনেক দ্রুত হয় । আমার পিসিতে পেন-ড্রাইভ থেকে ইন্সটল হতে মাত্র ৮ মিনিটের মত লাগে !
বুটেবল পেনড্রাইভ বানানোর জন্য একটা চমতকার টুল - ইউনেটবুটইন । ডাউনলোড করুন এখান থেকে । ইন্সটলের দরকার নেই , ডাবল ক্লিক করে ফাইলটা চালাবেন , চিত্রের মত iso অংশে আপনার Iso ইমেজটা দেখিয়ে দেবেন ।
ড্রাইভের যায়গায় আপনার পেনড্রাইভ সিলেক্ট করে দিবেন ( সাধারণত সিলেক্ট করাই থাকে ) । Ok করলেই বুটেবল পেনড্রাইভ তৈরি হয়ে যাবে।
কাজ করার আগে পেনড্রাইভটা একবার ফরম্যাট করে নিবেন ।
তো হয়ে গেল 🙂 আগামী পর্বে থাকছে ইন্সটলেশনের ধারাবাহিক বর্ননা ।
ভালো থাকবেন ।। লিনাক্সের জয় হোক 🙂
আমি জামাল উদ্দিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 194 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
লিনাক্স নিয়ে আমার আগ্রহের কমতি নেই। টিউটোরিয়ালটি সেই আগ্রহ আর বেশি বাড়িয়ে দিল। নতুন ব্যবহারকারিরা লিনাক্স ইন্সটল করতে ভয় পায়। তাই ইন্সটলেশন প্রক্রিয়াটির বর্ণনাটি যেন নতুনরা বুঝে বুঝে করতে পারে। সেদিকে খেয়াল রেখেন। পরবর্তি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।
জামাল উদ্দিন ভাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।