অ্যাপেলের প্রতিটি ডিভাইস মানে এবং গুণে এবং স্টাইলে সব সময়েই সেরা বলে অ্যাখায়িত করা হয়। তবুও কিছু কিছু ম্যাকবুকের ক্ষেত্রে এই টেকজায়ান্ট কোম্পানিটি বিশেষভাবে নজর দিয়ে থাকেন। তারা চেষ্টা করেন কিছু বিশেষ ফিচার যুক্ত করতে, যেটা সব কাজের জন্য ব্যবহার উপযোগী ডিভাইস তৈরী করতে। এই ল্যাপটপগুলো একদিকে যেমন দেখতে সুন্দর, সহজে বহনযোগ্য অন্যদিকে আধুনিক ফিচারগুলো সব কাজে সহজেই করতে সাহায্য করে।
এই ম্যাকবুকে আছে আধুনিক এম ওয়ান চিপ আর বেশ শক্তিশালী প্রসেসর ৮-কোর CPU এবং একটি ৮-কোর GPU। যদিও ম্যাকবুকের কালার সাধারণ গ্রে আর অ্যাশ হয়, তবু এটি দেখতে বেশ উজ্জ্বল আর নজর কাড়া। নিজের প্রয়োজন আর ব্যক্তিত্ব অনুসারে, ম্যাকবুকের স্টোরেজ আপগ্রেড করে নিতে পারবেন। চলুন দেখে কি রয়েছে MacBook Air & MacBook Pro (2022) এ।
২০২২ এ প্রকাশিত ম্যাকবুক সিরিজের MacBook Pro & MacBook Air মডেলগুলিতে প্রসেসর দেওয়া হয়েছে শক্তিশালি M1 Chip। ম্যাকবুক pro এবং ম্যাকবুক air দুইটি মডেলই প্রদান করা হয়েছে অ্যাপেলের লেটেস্ট M1 chip তবে প্রাইস এর ভিত্তি করে পরিবর্তন করা হয়েছে প্রসেসরও। ভেরিয়েন্ট বা বাজার মূল্য ভেদে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে M1, M1 Pro, M1 Max, M1 Ultra প্রসেসর ভেরিয়েন্টগুলো। চলুন সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক কি কি বিশেষ বৈশিষ্ট্য পেতে চলছে ইউজার এই প্রসেসর ভেরিয়েন্টগুলোর মধ্যে। প্রথমে কথা বলা যাক কোর সংখ্যা নিয়ে, অ্যাপেলের M1 চিপটিতে দেওয়া হয়েছে ৮টি কোর যার প্রথম চারটি Performance এবং অপর চারটি Efficiency cores।
ঠিক একইভাবে M1 Pro ভেরিয়েন্টটিতে দেওয়া হয়েছে ৮ থেকে ১০টি কোর দেওয়া হয়েছে, যেটির Performance কোর ৬টি অথবা ৮টি এবং Efficiency cores ২টি। অপরদিকে এদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকা M1 Max এ দেওয়া হয়েছে সর্বমোট ১০টি কোর যার পারর্ফমেন্স কোর ৮টি এবং ইফিসিয়েন্সি কোর ২টি। CPU তে তেমন তফাৎ না দেখা গেলেও অনেকটা তফাৎ করে দেয় এর জিপিউ সেকশন। অ্যাপেলের M1 চিপটি সর্বমোট জিপিউ কোর দেওয়া হয়েছে ৭-৮টি। অপরদিকে M1 Pro ভেরিয়েন্টটিতে দেওয়া হয়েছে ১৪ - ১৬ কোর। এদের থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে M1 Max, যেটিতে প্রদান করা হয়েছে ২৪ -৩২ কোর যা এদের মধ্যে অনেকটা তফাৎ সৃষ্টি করে দেয়। এছাড়াও এর ট্রান্সিসটর সেকশনটিতেও লক্ষ করা যায় ভিন্নতা। M1 এ ট্রান্সিটর এর পরিমান রয়েছে ১৬ বিলিয়ন যেটি M1 Pro তে ৩৩.৭ বিলিয়ন এবং এদের সবসময় এগিয়ে থাকা M1 Max রয়েছে ৫৭ বিলিয়ন। প্রসেসরটির সব দিক বিবেচনার পর বলা চলে এর পাওয়া খুব কঠিন। এবং আপনার যদি প্রসেসর প্রধান পছন্দ হয়ে থাকে এর থাকে ভালো পছন্দ আর কোনোটি হবে না বলে আমি মনে করি
অ্যাপেলের নতুন ম্যাকবুক Pro & ম্যাকবুক Air সিরিজগুলোতে ডিসপ্লে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Diagonal এবং XDR ডিসপ্লে এবং মডেল অথবা ভেরিয়েন্ট ভেদে অ্যাপেল প্রদান করেছে ভিন্ন ভিন্ন স্ক্রিন সাইজ। অ্যাপেলের প্রসেসর এর পর তাদের ডিসপ্লে সেকশনটা শক্তিশালি বলে গন্য করা হয়। এইবারে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক অ্যাপেলের প্রদানকৃত ম্যাকবুক Pro & ম্যাকবুক Air ডিসপ্লে সম্পর্কে। অ্যাপেল তাদের ম্যাকবুক সিরিজটিকে দুইটি ভাগে বিভক্ত বা প্রকাশিত করেছে একটি air অপরটি pro। অ্যাপেলের ম্যকবুক air এ ডিসপ্লে হিসেবে তারা ব্যবহার করেছে Diagonal ডিসপ্লে যেটি IPS এর আগ্রেড ভার্সন বলা যায়। এবং এই সিরিজের সবগুলো ভেরিয়েন্টই দেওয়া ১৩.৩ ইঞ্চির একটি ডিসপ্লে। তবে অপরদিকে ম্যকবুক Pro এর ডিসপ্লে সেকশন এ Diagonal সাথে আরো যুক্ত করা হয়েছে XDR ডিসপ্লে, ভেরিয়েন্ট এবং প্রাইস ভেদে এই ডিসপ্লেটিও দেওয়া হয়েছে সিরিজটিতে। এই ডিসপ্লেটি OLED থেকেই উন্নতমানের বা আপগ্রেডেড ডিসপ্লে। ম্যাকবুক প্রো সিরিজটিতে ভেরিয়েন্ট ভেদে প্রদান করা হয়েছে ১৩, ১৪ এবং ১৬ ইঞ্চির ডিসপ্লে। অ্যাপেলের ডিসপ্লে সেকশনটি নিয়ে তেমন অভিযোগ না থাকলেও অবশ্যই ক্রয়ের পূর্বে অন্যান্য মডেলের সাথে বিবেচনা করে নেওয়া পরামর্শ দিতে আমি পছন্দ করবো।
অ্যাপেলের প্রধান সেকশনগুলোর মধ্যে আরেকটি হচ্ছে ব্যাটারি যেটির কথা না বলেই নয়। এটিকে গুরপূর্ণ বলার কারন হলো লক্ষ করলে দেখবেন যে অ্যাপেল সব দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও এবং ভালো পারর্ফম করা সত্ত্বেও তারা ব্যাটারি সেকশনে কিছুটা পিছিয়ে আছে অন্যান্য ব্রান্ড থেকে। অনেক সময় ধরে অ্যাপেল এর ডিভাইসগুলোতে এই সমস্যাটি দেখা যাচ্ছে। যার ফলে কোনো ইউজার অ্যাপেলে স্থান্তর করার পূর্বে একবার ভালোভাবে ভেবে দেখতে হয় এই সেকশনটা নিয়ে। তবে অ্যাপেলের প্রকাশিত নতুন MacBook pro & MacBook Air সিরিজগুলোর মধ্যে এই সমস্যাটি তেমন লক্ষ করা যায় নি। এই দুইটি সিরিজে সর্বনিম্ন ব্যাটারি প্রধান করা হয়েছে 49.9 wh যেটি ম্যাকবুক air ব্যবহার করা হয়েছে অন্যদিকে সর্বচ্চো ব্যাটারি সার্পোট দেওয়া হয়েছে 100 wh যেটি Macbook Pro M1 Max 16 Inch এ। অ্যাপেলের 49.9 wh ব্যাটারিটি আপনাকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত সার্পোট বা ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম এবং অপরদিক 100 wh ব্যাটারিটি আপনাকে ২১ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ দিবে। ভেরিয়েন্ট এবং প্রাইস ভেদে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়েছে সিরিজ দুইটিতে। আপনার বাজেট অনুসারে আপনি ঠিক করতে আপনার সেরা ভেরিয়েন্টটি।
আজকের আলোচিত MacBook Pro & MacBook Air সিরিজ দুইটির সব দিক বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাবো যে এই প্রাইস রেঞ্জে থাকায় অন্যান্য মডেল থেকে পিছিয়ে নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। আর সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং ক্রেতাদের মূল আকর্ষন এর প্রসেসর সেকশনে যেখানে দেওয়া অত্যান্ত শক্তিশালি M1 Chip। আমার পরামর্শ থাকবে এইটাই থাকবে যে যদি আপনি ওফিসিয়াল কাজের জন্য ভালো একটা খুঁজে থাকেন এবং ব্যাটারির তুলনায় পারর্ফমেন্সটাই প্রধান বিষয় হয় তবে এর বিকল্প আর কোনোটি হবে আপনার জন্য। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের মতামত আমাকে জানাবেন।
-
সৌজন্যে: MC Solution BD
আমি রাকিব আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।