একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে সব থেকে বেশি পরিমানে ব্যবহার করা হয় “Windows Operating System“. তাই, ল্যাপটপ কেনার আগেই দেখতে হবে যে সেখানে আপনাকে latest Microsoft Windows OS দেয়া হয়েছে কি না। বর্তমানে latest Windows OS বলতে রয়েছে “Windows 10“. এবং, ধ্যান রাখবেন আপনার ল্যাপটপে যাতে পুরোনো উইন্ডোস ভার্সন যেমনWindows 7 বা Windows 8 দেয়া না থাকে। এতে কিন্তু আপনার ল্যাপটপের performance এ অনেক পরিবর্তন আসবে। কারণ, উইন্ডোস এর পুরোনো ভার্সন গুলির তুলনায় windows 10 অনেক উন্নত মানের এবং বিভিন্ন বিষয়ে এই ভার্সনে অনেক ধরনের improvements (উন্নতি) করা হয়েছে। তাই, নিজের ল্যাপটপ অধি দ্রুত এবং ফাস্ট ভাবে কাজ করার জন্য এবং তার কর্মক্ষমতা (performance) ভালো রাখার জন্য, Microsoft windows এর কিছু লেটেস্ট ভার্সন যেমন “Windows 10 pro“, “Windows 10 home” বা “Windows 10 professional” আপনার ল্যাপটপে দেয়া থাকতে হবে।
বেশিরভাগ বাজেট ল্যাপটপে low quality বা low resolution display দেয়া থাকে। এই ধরনের ডিসপ্লেতে ১৩৬৬*৭৬৮ বা এর থেকেও কম resolution দেয়া থাকে যেখানে আপনি অধিক স্পষ্ট বা ক্লিয়ার ডিসপ্লে পাবেননা। হে, সাধারণ কাজ করার জন্য এই ধরনের ডিসপ্লে সেরা। কিন্তু, movies দেখার সময় বা games খেলার সময় আপনারা সেই মজাটা পাবেননা। তাই, ল্যাপটপ কেনার আগেই দেখবেন, সেটা যাতে Full HD (1920 x 1080) বা 1080p resolution ডিসপ্লের থাকে। এতে, আপনারা অনেক high quality HD display পাবেন যেখানে ভিডিও দেখে, গেম খেলে বা কাজ করে অনেক আনন্দিত হবেন। তাছাড়া, আপনার বাজেট যদি অল্প বেশি, তাহলে আরো অধিক ভালো display quality বা resolution থাকা ল্যাপটপ নিতে পারেন। যেমন, Retina display (2304×1440), QHD(2560 x 1440) বা 2K. এই ধরনের অধিক হাই কোয়ালিটি ডিসপ্লে থাকা ল্যাপটপের দাম কিন্তু অধিক হতে পারে।
Laptop screen size এর ব্যাপারে বেশি কিছু বলবোনা। কারণ, এই ব্যাপারে সম্পূর্ণটাই আপনার নিজের চাহিদাটাই ওপরে নির্ভর করবে। তবে, আমি বিভিন্ন size এর laptop ব্যবহার করেছি। এবং, যারা ল্যাপটপে অধিক কাজ করেন এবং laptop নিয়ে অধিক ব্রাহ্মণ (travel) করেন তাদের জন্য ১২ থেকে ১৩ ইঞ্চের সাইজের ল্যাপটপ সেরা বলে মনে করি। কারণ, ১২ থেকে ১৩ ইঞ্চি সাইজ এর ল্যাপটপ অনেক হালকা হয় এবং সহজেই যেকোনো জায়গাতে নিয়ে যাওয়াটাও সম্ভব। এই ধরনের স্ক্রিন সাইজ থাকা ল্যাপটপ সামান্য ছোট থাকবে। তাছাড়া, আপনি যদি movies দেখার জন্য বা games খেলার জন্য ল্যাপটপ কিনছেন, তাহলে ১৫ ইঞ্চের ল্যাপটপ আপনার জন্য সেরা হবে। ১৫ ইঞ্চের সাইজ থাকা ল্যাপটপ লোকেদের মধ্যে অনেক প্রচলিত এবং যদি আপনি একটি বড়ো স্ক্রিন চাচ্ছেন, তাহলে এই সাইজ আপনার জন্য সেরা। তবে মনে রাখবেন, এই ১৫ ইঞ্চের সাইজ থাকা ল্যাপটপ গুলি কিন্তু অল্প বেশি ভারী থাকবে এবং সব সময় নিজের সাথে বহন করাটা আপনার জন্য অসুবিধের কাজ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শেষে, যদি আপনি ল্যাপট কেবল high end games খেলার জন্য বা movies দেখার জন্য নিচ্ছেন এবং আপনি আপনার ল্যাপটপ একি জায়গায় রেখে দিবেন বা বহত করবেননা, তাহলে ১৭ থেকে ১৮ ইঞ্চের ল্যাপটপ নিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এই সাইজ থাকা ল্যাপটপ কিন্তু অধিক বেশি ভারী থাকবে। এবং, একে বহত করাটা আপনার জন্য কিন্তু অনেক কষ্টকর হতে পারে। তাই, ল্যাপটপ সব সময় ১৩, ১৪ বা ১৫ ইঞ্চের স্ক্রিন সাইজের নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
ল্যাপটপ মানেই হলো, কোনো নির্ধারিত জায়গা ছাড়া তাকে ব্যবহার করা। এবং, এই ক্ষেত্রে সব সময় বিদ্যুৎ এর সাথে সংযোগ করে ল্যাপটপ চলানোটা কিন্তু সম্ভব না। তাই, আপনি কাজ করার জন্য ল্যাপটপ কিনছেন বা বিনোদন (entertainment) এর জন্য, আপনি অবশই চাইবেন যে, আপনার ল্যাপটপ প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছাড়াই কেবল তার ব্যাটারির ব্যাকআপ এর সাহায্যে চলতে পারে। এবং তাই, ভ্রমণ করার সময় বা অন্য যেকোনো সময় বিদ্যুতের সংযোগ ছাড়াই কেবল ব্যাটারি ব্যাকআপ দিয়েই যাতে ল্যাপটপ ৭ থেকে ৮ ঘন্টা আপনি চালাতে পারেন, সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। এবং তার জন্য, ল্যাপটপ কেনার আগেই তার ব্যাটারী ব্যাকআপ এর বিষয়ে অবশই জেনেনিবেন। এই ব্যাপারে কিন্তু আগেই জেনে রাখাটা আপনার জন্য অনেক জরুরি।
ল্যাপটপের কীবোর্ড ও টাচ প্যাড কিন্তু অবশই দেখে নিবেন। অনেক সময়, ল্যাপটপ কেনার আগে এই ব্যাপারটা লোকেরা দেখেননা এবং পরে কীবোর্ড এবং টাচ প্যাড নিয়ে অনেক বড়ো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই, কীবোর্ড এর কোয়ালিটি কিরকম, বাটন গুলি সহজে আপনার হাথে আসছে কি না, বাটন এর কোয়ালিটি কিরকম এবং টাচ প্যাড টি সুবিধের কি না, সেগুলি সব দেখে নিবেন।
আপনার ল্যাপটপের CPU বা Processor এর ওপরেই ল্যাপটপের কর্ম ক্ষমতা নির্ভর করে। আমাদের মধ্যে ৭০ % লোকেরা ল্যাপটপ কেনার সময় তাতে থাকা প্রসেসর (processor) ব্যাপারে কোনো ধরনের যাচাই করেননা। এবং, কমজোর বা লো কোয়ালিটি প্রসেসর হওয়ার ফলে আমাদের ল্যাপটপ দ্রুত বা ফাস্ট ভাবে কাজ করেনা। মনে রাখবেন, আপনার ল্যাপটপের CPU বা processor যত ভালো মানের থাকবে, ততটাই দ্রুত এবং ভালো performance আপনি পাবেন। মনে রাখবেন, আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে থাকা processor সব সময় dual core বা তার থেকে বেশি core যেমন quad core হলে ভালো performance পাবেন। Single core এর processor থাকা ল্যাপটপ কখনোই কিনবেননা। যদি আপনার ল্যাপটপে Intel Atom, Intel Pentium, Intel celeron dual core বা AMD A6 processor দেয়া থাকে, তাহলে সাধারণ word processing, লেখা লেখির কাজ, সাধারণ সফটওয়্যার এর ব্যবহার, normal quality videos দেখা এবং internet browsing করার জন্য এই CPU যথেষ্ট। আপনার বাজেট (budget) যদি অল্প বেশি এবং আপনি একটি High performance laptop কিনতে চাচ্ছেন, তাহলে Intel Core i5, Intel Core i3 বা AMD Ryzen series processors থাকা laptop কিনতে পারেন। ভালো ভালো graphics থাকা games খেলা, Full HD Video দেখা, Video editing এবং কিছু ভারী ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করার সাথে সাথে multi-tasking করাটা এই ধরনের প্রসেসর সহজে করতে পারে। তাই, যত বেশি ভালো মানের CPU বা processor আপনার ল্যাপটপে থাকবে, ততটাই শক্তিশালী এবং দ্রুত ভাবে laptop কাজ করবে। তাছাড়া, যত নতুন generation এর processor হবে তার performance ততটাই বেশি ভালো হবে এবং কম battery power ব্যবহার করবে। তাই, সব সময় latest generation processor দেয়া আছে কি না সেটাও জেনেনিবেন।
একটি ল্যাপটপ দ্রুত ভাবে কাজ করার জন্য এবং সময়ে সময়ে হ্যাং (hang) না হয়ে মসৃণ (smooth) ভাবে কাজ করার জন্য, ল্যাপটপে থাকা RAM এর গুরুত্ব অনেক বেশি। মনে রাখবেন, যত বেশি RAM আপনার ল্যাপটপে থাকবে, ততটাই বেশি কাজ করার ক্ষমতা তার হবে। অধিক RAM এর ফলে Hang free এবং lag free performance আপনারা পাবেন। RAM বেশি থাকার ফলে, আপনার ল্যাপটপ অনেক দ্রুত ভাবে কাজ করবে, সহজে এবং জলদি জলদি যেকোনো প্রোগ্রাম প্রসেস করবে, হ্যাং (hang) হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি কমে যাবে এবং সহজে multi-tasking করা যাবে। তাই, ধ্যান রেখে minimum 4GB থেকে 8GB র ভেতরে যাতে RAM আপনার ল্যাপটপে থাকে, সেটা অবশই জেনেনিবেন। শেষে, মনে রাখবেন RAM এর frequency এবং DDR range যত বেশি থাকবে, তার কর্মক্ষমতাও কিন্তু ততটাই বেশি হবে। সেজন্য, laptop এর RAM যাতে DDR 3 বাDDR 4 range এর থাকে। বর্তমান কিন্তু DDR 4 এর যুগ। এবং এই ধরনের RAM কিন্তু সবচেয়ে advanced এবং দ্রুত ভাবে কাজ করে।
এমনিতে আপনি ল্যাপটপ কেনার পর সাধারণ কিছু movies, games, software, music বা photo ল্যাপটপে রাখেন। তাছাড়া, Windows OS install করার জন্য আমাদের কিছু জায়গার প্রয়োজন হয়। তাই, এসব সাধারণ জিনিসের জন্য 500 Gb storage বা Hard disk থাকলেই যথেষ্ট। তবে, অধিক বেশি GB র games বা movies অধিক পরিমানে ল্যাপটপে রাখার জন্যে, 1TB hard disk যথেষ্ট থেকেও বেশি। যেহেতু, ল্যাপটপে আমরা desktop PC র মতো আলাদা ভাবে extra storage বা hard disc লাগাতে পারিনা, তাই প্রথমেই একটি বেশি storage space থাকা ল্যাপটপ কেনাটাই ভালো হবে। যেমন, 1TB hard disk. Storage এবং hard-disk এর সাথে জড়িত আরো একটি বিশেষ কথা রয়েছে। আজকাল, উন্নত মানের Hard disk বেরিয়ে গেছে। এবং, যেগুলিকে SSD (Solid state drive) বলা হয়। এই ধরনের SSD hard disk সাধারণ HDD storage গুলির থেকে অনেক বেশি উন্নত এবং দ্রুত ভাবে কাজ করে। তবে, SSD hard disk গুলির দাম কিন্তু সাধারণ Hard Disk গুলির তুলনায় অনেক বেশি। তাই, অধি বেশি প্রয়োজন এবং বাজেট থাকলেই এই ধরনের SSD storage থাকা ল্যাপটপ নিবেন। তাছাড়া, সাধারণ 1TB hard disk আপনার জন্য এমনিতে যথেষ্ট হবে।
সব গুলি বিষয়ে ধ্যান দেয়ার পর, ল্যাপটপের কিছু সাধারণ features এবং functions গুলির ওপরে নজর দিতে হবে। প্রথমেই দেখবেন, যাতে আপনার বেঁচে নেয়া ল্যাপটপে USB 3.0 port রয়েছে কি না। এই ধরনের USB Port গুলিতে pendrive বা অন্য external storage এর মাধ্যমে অনেক দ্রুত ভাবে file transfer বা গ্রহণ করতে পারে।
দ্বিতীয়তে, DVD writer আছে কি না সেটাও দেখতে হবে। হে, আজকাল একটি dvd disc অনেক কম ব্যবহার হয়। কিন্তু, আমি মনে করি ল্যাপটপে একটি dvd drive থাকাটা অনেক জরুরি। কারণ এর ফলে সহজেই একটি bootable disc দিয়ে windows format দিতে পারবেন। তাছাড়া, বিভিন্ন hardware এর driver software install করার জন্য আপনাকে DVD disc দেয়া হয়। এবং, dvd drive না থাকলে আপনি সেগুলি ল্যাপটপে ইনস্টল করতে পারবেননা। তবে হে, অনলাইন driver software download করে install করতে পারবেন যদিও, সবাইর পক্ষ্যে সঠিক ভাবে এই কাজ করাটা সম্ভব না। তাই, মনে করে দেখবেন যে আপনার ল্যাপটপে একটি DVD drive আছে তো।
এমনিতে আমি জানি, আপনারা একটি ল্যাপটপ কেনার আগেই, laptop এর brand নিয়ে অবশই ভাববেন। কিন্তু তাও বলে দেই, কম দামের চক্করে যেকোনো বা যেই সেই কোম্পানির ল্যাপটপ নিবেননা। এর বিশেষ কারণ হলো warranty তে প্রভাব। একটি ভালো ব্র্যান্ড যেমন, acer, asus, Dell, Lenovo এগুলির ল্যাপটপ ভালো হওয়ার সাথে সাথে এগুলির service center জেকোনো জায়গায় পেয়ে যাবেন। তাই, warranty কালের ভেতরে যেকোনো সময় আপনার ল্যাপটপ খারাপ হয়ে গেলে অনেক সহজেই ফ্রিতেই নিজের ল্যাপটপ ঠিক করিয়ে নিতে পারবেন। এবং, ভালো ভালো ব্র্যান্ড এর ল্যাপটপ কোম্পানির service center গুলির কাজ ও প্রতিক্রিয়া (response) অনেক ভালো। তাছাড়া, ভালো ব্র্যান্ড (brand) সবসময় বিশ্বাসী থাকে এবং ল্যাপটপের hardware parts গুলি যে অরিজিনাল এবং ভালো মানের তার ভরসা থাকে। তাই, নিজের জন্য একটি ল্যাপটপ বেঁচে নেয়ার আগে তার ব্র্যান্ড ও কোম্পানিতে অবশ্যই নজর দিবেন।
শেষ কথা, মনে রাখবেন, ল্যাপটপের Processor এবং RAM যত বেশি উন্নত, ভালো এবং বেশি ফ্রিকোয়েন্সির হবে,
আপনার ল্যাপটপ ততটাই বেশি ভালো performance দিয়ে কাজ করবে।
আশা করি আপনারা টিউনটি থেকে উপকৃত হবেন। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে টিউমেন্ট করে জানাবেন।
আর আমার ওয়েবসাইটটি ভিসিট করবেন off-light.com
আমি মারুফ হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।