এ বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে সারা বছর ধরেই নজর ছিল ক্রেতাদের, কারন বাজারে আসছে শো অফ ফোন অর্থাৎ আইফোন সিরিজ iPhone 14, iPhone 14 Pro Plus, iPhone 14 Pro Max and iPhone 14 Pro। ডিসপ্লে, ক্যামেরা, আই ও এস, কিছু ফিচার এর তারতম্য বাদ দিলে প্রতিটি মোটামুটি একি মানের। iPhone 14 Pro Max অন্যতম আকর্ষন ছিল এতে নাকী সিম ট্রে নাই, অথচ ডুয়েল সিমের ফোন এটি।
সব জল্পনার কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফোনটি রিলিজ পেল সেপ্টেম্বরের দিকে। কী ছিল সেই অজানা সিমের রহস্য? কেমনই বা এবারের আইফোনের ফিচারগুলো? যদিও দাম একটু বেশি এই ফোনের, তবুও অ্যাপেল প্রেমী দের হাতে শোভ পেতে শুরু করেছে iPhone 14 Pro Max এবং iPhone 14 Pro এর নতুন ফোনগুলো।
২০০৫ সাল থেকে অ্যাপেল আইফোন তৈরির জন্য কাজ শুরু করে, ২০০৭ সালে প্রথম ফোন রিলিজ করা হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর নানা সিরিজের নানা ভ্যারিয়েন্টে প্রতি বছর নিত্য নতুন ফোন বাজারে আনছে প্রতিষ্ঠানটি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারে এসেছে iPhone 14 Pro Max এবং এই সিরিজের অন্য ফোন। ফোন ছাড়াও ম্যাকবুক, অ্যাপেল ওয়াচ, ম্যাক টিভি, ম্যাক পিসি সহ নানা পণ্যের বাজারে রাজত্ব করে যাচ্ছে অ্যাপেল। iPhone 14 Pro Max এর ফোনটি আপেলের ৩৩ অথবা ৩৪ নম্বর আইফোন। ঠিক কী কারনে এই ফোনগুলো নিজেদের অবস্থান এত দিনেও ধরে রেখেছে জানেন?
এর কোয়ালিটি এবং দুর্দান্ত ফিচার iPhone এর তুমুল জনপ্রিয়তার কারন। একদিকে যেমন দীর্ঘস্থায়ী, অন্যদিকে এর ক্যামেরা কোয়ালিটি ফোনটি কে টেকপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছে। আর তাই সামর্থ্য থাকলে বা না থাকলেও iPhone 14 Pro Max এর নিউজ রিলিজের খবর এর জন্য অপেক্ষা ছিল বছর ধরে।
৬’৭ ইঞ্চির ডিস্প্লের এই iPhone 14 Pro Max এর অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পাচ্ছেন আই ও এস ১৬। ডিস্প্লের রিফ্রেশ রেট ১২০ হার্য। সর্বোকালের সর্বোসেরা ফোন বলা হচ্ছে এটি। ডায়মন্ড আইল্যান্ড নামে আছে টপ নচ, যদিও কিছু অংশ খানিকটা ১৩ সিরিজের মডেলের মত।
রেয়ার ক্যামেরতে পাচ্ছেন যথাক্রমে ৪৮ এম পি, ১২ এম পি এবং ১২ এম পি এর তিনটি ক্যামেরা। ফ্রন্টেও আছে ১২ এম পি এর ক্যামেরা। সেলফি তোলা হবে এখন আরো স্মুথ আর ব্লার ফ্রি। এছাড়াও ভিডিও কলিং কিংবা মিটিং এ পাবেন অন্যরকম এক অনুভূতি। রেয়ার ক্যামেরাতে আছে হরেক রকম মোড। ভ্লগিং করতে চাইলে iPhone 14 Pro Max হতে পারে আপনার সহজ আর সেরা বন্ধু।
iPhone 14 Pro Max এ আছে আলাদা চারটি ভ্যারিয়েন্ট। ১২৬ জিবি, ২৫৬ জিবি, ৫১৬ জিবি আর ১ টেরাবাইট। দামের তারতম্যের কারন ও হবে এই ভ্যারিয়েন্টগুলো। প্রতিটি ফোনের ওজন মোটামুটি ২৪০ গ্রাম। এখন পর্যন্ত চারটি ভিন্ন কালারের ফোন দেখা গেছে। সিলভার, গোল্ড, ডিপ পার্পল, স্পেস ব্ল্যাক এই চার কালারে ম্যাট গ্লাসের সাথে আছে স্টেইনলেস ডিজাইন।
iPhone 14 Pro Max ফোনগুলোতে আছে A16 Bionic চিপসেট, সাথে আছে ৬ কোর সি পি ইউ। যাতে ফোন হ্যাং করা কিংবা একাধিক কাজ একসাথে করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হবে না বলেই ধারনা।
অত্যাধুনিক অডিও সিস্টেম এবং ভিডিও সিস্টেমের জন্য অ্যাপেল ইন হাউজ টিম বেশ কাজ করেছেন। গান শোন, মিটিং করা, ফেইস টু ফেইস ভিডিও কল করা, এই সব ব্যাপারে কোন ধরনের বাগস পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত। হাতের মোবাইলেই এখন টিভি কিংবা ল্যাপটপ বা হোম থিয়েটারের মত অনুভূতি পাবেন।
সিম ট্রে নিয়ে একটা গুজব শোনা গেছে, যার সমাধান অ্যাপেল নিজেই দিয়েছে। iPhone 14 Pro Max এ আছে ই সিমের ব্যবস্থা। অর্থাৎ ছোট্ট চিপের বদলে আপনার সিম হবে ইলেক্ট্রনিক। ব্যবহার করতে পারবেন ডুয়েল সিম।
যদিও এবারেও ব্লুটুথের দেখা মেলেনি iPhone 14 Pro Max, তবে সিরি কিংবা ওয়াইফাই এর লেটেস্ট ড্রাইভার, ফেইস আইডি, অ্যাপল স্টোর, অ্যাপল ক্লাউড সহ, এর সকল সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
যে কোয়ালিটি টিম অ্যাপেল এর ফোন তৈরির পেছনে, কোয়ালিটি এসুরেন্সের পেছনে কাজ করে যায় নিরলস, তাদের মতে, এরকম দূর্দান্ত ফোন এর আগে বাজারে আসে। সর্বোকালের সেরা এই ফ্ল্যাগশিপ মডেলের ব্যাটারিও উচ্চক্ষমতার। তাদের মতে, এক বার চার্জ দিলে, প্রায় ২৪ ঘন্টা বেশ ভালো ভাবে ব্যাক আপ দেবে।
iPhone 14 Pro Max এ আছে ইমার্জেন্সি এস ও এস এর সুবিধা অন্য সকল স্মার্টফোনের মতই। অর্থাৎ বিপদে পড়লে আপনার কাছের মানুষের কাছে ম্যাসেজ পৌছে যাবে।
মাত্র ১ মাস আগে রিলিজ পাওয়া এই iPhone 14 Pro Max এবং সিরিজের অন্যফোনে ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ও খুব বেশি হয়নি। এর কয়েকটি কারন হল, সব দেশে এখন ও পৌছায়নি এই ফোনগুলো।
আর দ্বিতীয় কারন হল এর উচ্চমূল্য। যত উন্নতমানের ড্রাইভারস, ফিচারস, ক্যামেরা বা সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে, তাতে করে হয়তো ডিভাইসের মূল্য ঠিক আছে।
বাংলাদেশ এর হিসেবে, iPhone 14 Pro Max এর মূল্য শুরু হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজারের উপর থেকে। আনঅফিশিয়ালি কিনতে চাইলে কিছু কমে পেতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি কিংবা আনলকের ক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা হবে, তাছাড়া নকল হবার সম্ভাবনা থাকে। আনঅফিসিয়ালি ফোনের ক্ষেত্রে দাম খুব যে কম হবে, সেটা কিন্তু না। আনঅফিশিয়ালি ফোনের ক্ষেত্রে দাম টা ১ লাখ ২০ হাজারের থেকে শুরু হতে পারে।
এ ধরনের হাই কোয়ালিটি-টপনচ এবং ফ্ল্যাগশিপ মডেলের ক্ষেত্রে ভেরিফাইড এবং অথোরাইজড শপ থেকে কেনার অনুরোধ রইল। বাংলাদেশ এ অ্যাপেল এর রিয়েল স্টোর না থাকলেও অথোরাইজড শপ রয়েছে বেশ কিছু। কেনার আগে যাচাই করে এর পর iPhone 14 Pro Max নিজের হাতে নিতে পারেন।
তবে কেনার আগে ব্যবহারকারীর ইউজার ফিডব্যাক দেখে নিতে পারেন। যদিও ই সিমের ব্যাপারে বেশ ক্ষুব্ধ হতে দেখা যাচ্ছে। আবার অন্যদিকে আমাদের দেশে ই সিমের প্রচলন এখন ও সেভাবে চালু হয়নি। তারপরও অপেক্ষা করতে থাকুন, কয়েকদিনের মধ্যেই ফোনটির রিভিউ হাতে চলে আসবে। iPhone 14 Pro Max হাতে নিতে চাইলে টাকা জমানো শুরু করে দিতে পারেন।
আমি রাকিব আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।