আইফোন সংক্রান্ত অনেকেরই কিছু ভ্রান্ত ধারনাঃ
ক. ইউটিউব থেকে ডাউনলোডকৃত ভিডিও ফাইল আইফোনে নেয়াঃ অনেকেই অভিযোগ করেন যে অনেকসময়ই ইউটিউব থেকে ডাউনলোডকৃত ভিডিও ফাইল আইফোনে যায় না। আপনি যদি .mp4 এক্সটেনশানের ফাইল ঠিকঠাকমতো আইটিউনসের সাথে সিংক করাতে পারেন, তাহলে ফাইল যাবে না ফাইলের বাপ যাবে। এখন তো ফায়ারফক্সের অনেক এড অন আছে যেগুলো দিয়ে আপনি সরাসরি .mp4 ফাইলই ইউটিউব থেকে নামাতে পারবেন, আইফোনের জন্য আলাদা করে আর কনভার্ট করতে হবে না।
যে সব কারনে আইফোনে ভিডিও ফাইল সিংক হয় না, মানে আইফোনে যায় নাঃ
১) ভিডিও এক্সটেনশান .mp4 না হলে।
২) ফাইলের ডেসটিনেশন এড্রেস ঠিক না থাকলে। মানে আইফোনে নেবার পর হাডডিস্ক থেকে ফাইল অন্য কোন ফোল্ডারে মুভ করা যাবে না। মুভ করলে ফাইল যাবে না।
৩) iTunes এর সাথে আইফোন কানেক্ট করার পর ডিভাইসে গিয়ে Sync Movies অপশনটি সিলেক্ট করা না থাকলে।
৪) আইফোনে পর্যাপ্ত পরিমান ফাকাঁ জায়গা না থাকলে।
৫) আইফোনের নতুন ওএসগুলোতে মুভি আর হোম ভিডিও এর জন্য আলাদা আলাদা ট্যাব রাখা হয়েছে। যেমনঃ আমি দেখেছি যে, ইউটিউব থেকে নাটক ডাউনলোড করলে সেটা আইফোনের হোম ভিডিও ট্যাবের অধীনে থাকে। কারন, ফাইলের সাইজ ছোট এবং ভিডিও ফ্রেম কম থাকার কারনে আইফোন সেটাকে মুভির কাতারেই ফেলে না, বরং ঘরের ভেতর হ্যান্ডিক্যাম দিয়ে ধারন করা ভিডিও মনে করে। সুতরাং, সিংক শেষ হবার পর মুভি ট্যাবে আপনার ভিডিও ফাইলটি না পেলে হোম ভিডিও ট্যাবে খোজঁ করুন।
খ) অনেকে মনে করেন, জেইলব্রেক করা ছাড়া আইফোনের অপারেটিং সিন্টেমের ভেতরে ঢোকা যায় না। যারা এটা মনে করেন তারা ভুল জানেন। iFunbox নাম একটা ছোট্ট থার্ড পার্টি সফটওয়্যার আছে যেটা দিয়ে আপনি জেলব্রেক ছাড়াই আইফোনের সিস্টেম ফাইলে এ্যাকসেস করতে পারবেন এমনকি যে কোন গেইম বা এ্যাপের ব্যাকাপ ম্যানুয়ালি নিয়ে আইফোন ফরম্যাট দিয়ে আবার সেগুলোকে রিস্টোর করতে পারবেন। আমি নিজের হাতে এটা ট্রাই করে দেখেছি।
গ) অনেকে মনে করেন, আইটিউনস ছাড়া আইফোনে ফাইল নেয়া যায় না। তারা ভুল জানেন। আইটিউন ছাড়ও DiskAid এর মতো অনেক সফটওয়্যারের সাহায্যে ডাটা সিংক করা যায়। এমনকি আপনার আইফোনের এসএমএসের ব্যাকাপও নিতে পারবেন। [তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আইটিউনসই প্রেফার করি কারন ডিস্কএইডের ট্রায়াল ভার্সনে অনেক ফিচার পাবেন না। অপরদিকে আইটিউনস বিনামূল্যেই ফুল ভার্সন নামাতে পারবেন।]
ঘ) ডাউনলোডকৃত ফাইল নতুন করে ওএস সেটাপ দেবার পর রিডাউনলোড করা যায় না, প্রথম থেকে করতে হয়ঃ এটাও ভুল ধারনা। এটা একটু বুদ্ধি খাটালেই করতে পারবেন। ধরুন আপনি এ্যাপ স্টোর থেকে বেশ বড় সাইজের একটা এ্যাপ বা মুভি নামাচ্ছেন। নতুন করে উইন্ডোজ সেটাপ দেবার আগে, যে ড্রাইভে আইটিউন সেটাপ দেয়া আছে সেখানে গিয়ে আইটিউনসের ডাউনলোড ফোল্ডারটিকে পুরোটা কপি করে অন্য কোথাও ব্যাকাপ নিয়ে রাখুন। তারপর ইউন্ডোজ সেটাপ দেবার পর আইটিউন সেটাপ দিন। এবার আইটিউনসের ডাউনলোড ফোল্ডারটি মুছে দিয়ে আপনার ব্যাকাপ রাখা ফোল্ডারটি এখানে এনে রাখুন। এরপর আইটিউনস চালু করে মেনু থেকে এ্যাভেলেবল ডাউনলোডে গিয়ে দেখুন যে উইন্ডোজ সেটাপ দেবার আগে ওটা যেখানে ছিলো, এখনো সেখানেই আছে। এখন বাকী অংশ থেকে ডাউনলোড হওয়া শুরু হবে, আবার প্রথম থেকে নতুন করে নামাতে হবে না।
ঙ) ওএস আপডেট দিয়েছেন, এখন ব্লুটুথ এবং ওয়াই ফাই কাজ করছে না? কোন সমস্যাই না। বাসায় ইলেকট্রিক হেয়ার ড্রায়ার আছে? থাকলে ওটা দিয়ে আইফোনটিকে হিট দিন। টানা দু মিনিট হিট দেবার পর একটা ম্যাসেজ দিবে এই ছবিটার মতো।
এরপর আইফোন রিস্টার্ট করুন। এবার সেটিংসে গিয়ে ওয়াই ফাই চালু করেন দেখবেন সব কিছু ঠিক ঠাক মতো কাজ করছে। ব্লুটুথও।
সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=nj10bz5bI6A, https://www.youtube.com/watch?v=RmOS_FyQx5k এবং http://iphone4s-wifi-victims.blogspot.com/
[অনেকে ভয় পাচ্ছেন যে হিট দেবার কারনে আইফোনের সার্কিটের সোল্ডারিং গলে যেতে পারে তাদের বলতেছি এই ভয় নাই। কারন আইফোনের এক্সটেরিয়ের ওভার হিট কনজাম্প করার জন্য বিশেষভাবে বানানো হয়েছে, এটা আপেলের সাইটেই লেখা আছে। তবু সাবধানাতার জন্য হিট দেবার পর ফ্যান বা কুলারের নীচে কয়েক মিনিট রাখা যেতে পারে। আমি এই পদ্ধতিতে প্রভূত উপকার পেয়েছি, এ পদ্ধতি কাজ না করলে আসলে আমার আর কিছু করার থাকতো না, প্রচুর দাম দিয়ে মোবাইল কোম্পানির নেট ইউজ করা ছাড়া। সবশেষে বলছি, এই টিপস নিজ দায়িত্বে প্রয়োগ করবেন। ফোনের কোন ঝামেলা হলে আমি দায়ী নই]
চ) ফোন হারিয়ে বা চুরি গেলে প্রথমেই কি করবেন? আপনার আইফোনের IMEI নাম্বার নিয়ে থানায় গিয়ে জিডি করুন। পুলিশকে ভদ্র ভাবে অনুরোধ করে বুঝিয়ে বল্লে হারানো আইফোন ফিরে পাবার রেকর্ডও আছে। IMEI নাম্বার ফোনের ভেতরেই পাবেন। বক্স বা রিসিট হারাইলেও সমস্যা নাই। Settings > General > About > IMEI Number নীচের দিকে। ফোনও যদি হারায় যায় তাহলেও সমস্যা নাই, যদি একবারো ফোনটাকে আইটিউনসের সাথে সিংক করে থাকেন। পিসিতে আইটিউন চালু করুন। তারপর iTunes > Edit > Preferences > Devices > এরপর ডিভাইস সিলেক্ট করে রাইট ক্লিক করলে IMEI & Serial Number দুটাই দেখাবে।
ছ)
এই ভ্রান্ত ধারনার লিষ্ট ভবিৎষতে ক্রমাগত আপডেট হতে থাকবে...
আমি প্রলয় হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অনলাইনে লেখালেখির শুরুটা ২০০৬ এর নভেম্বর থেকে। নিয়মিত লেখার শুরু আরো ১ বছর পরে। তারপর আর থেমে থাকিনি। একের পর এক লিখে গিয়েছি বাংলাদেশের স্বনামধম্য সব কয়টা বাংলা ব্লগ সাইটে, মিউজিক ফোরামে, ফ্লিকরে, ফেসবুক আর টুইটারে। এখনো লিখে চলেছি, আজীবনই লিখে চলার ইচ্ছে আছে। কারন লেখালেখি করে হয়তো পেট চালাতে...
ভাইয়া আমিও আইফোনকে অন্যরকম লাইক করি তবে কা কিছুটা শো-পিস টাইপের।
যেই সেটে ব্লু-টুথ দিয়ে মিডিয়া ফাইল পাঠাতে নাকানি-চুবানী খেতে হয়(ওয়াইফাই দিয়ে ফাইল পাঠানোর কথা বাদ ই দিলাম), ঐ সেট আসলেই বাংলাদেশের জন্য ব্যবহার উপযোগী নহে। ফাইল পাঠানো নিয়ে কেনই বা কাহিনী করতে হবে, ফাইল ওপেন করা নিয়ে কাহিনী করলে না হয় মেনে নিতাম। শর্তটা কিছুটা এরকম “তোমাকে আমি ফাইল ঢুকাতেই দিব না, ওপেন করবা কেমনে?”।।
–আমি জানি না আপনি কোথায় বর্তমানে বসবাস করছেন, যদি বাংলাদেশে হয়ে থাকেন তবে আমি ব্যাথিত, আর যদি বাহিরে হয়ে থাকেন তবে প্লিজ বাংলাদেশে এসে আইফোন নিয়ে পোষ্ট করবেন। শুধুমাত্র কল করা ও সাধারন গান শুনার জন্য আমরা এখানে(বাংলাদেশে) এখনও নকিয়া সস্তা ৩০০০-৫০০০টাকার সেট পছন্দ করি। আর ভাল ক্যামেরা, বড় স্ক্রিনে হাই কোয়ালিটি গেম খেলা, ওয়াটার প্রুফিং, রুট করে সেটের সমগ্র ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়া, ফাইল এক মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে পাইরেসি করা, যেকোনো সাইট থেকে যেকোনো এক্সটেনশানের ফাইল ডাউনলোড করা, মেনুয়াল্লি পোর্ট ওপেন করে ওয়াই-ফাই জোন তৈরী করা, এসএমবি শেয়ারদ্বারা কম্পিউটারের ফাইল সরাসরি মোবাইলে ওপেন করা এতসব ফিচার ছাড়া আমরা কিছুতেই ৩০/৪০/৪৫হাজার টাকা খরচ করতে রাজি নই, সামর্থও হয় নাই।।
–মনে কিছু নিবেন না। আইফোন অবশ্যই দারুন সেট, তবে তা আমাদের দেশের “সাধারন” যুবক-যুবতীদের জন্য আদর্শ সেট নয়, আপাত দৃষ্টিতে আগামী ১-২বছরেও হতে পারছে না।