আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন এর কিছু সহজ বিষয় নিয়ে । যারা এই ব্যাপারে একদম নতুন হয়ত তারা উপকৃত হবেন আশা করি।আজকের পর্বে আমি শুধুমাত্র সার্চ ইন্জিন এর টার্মগুলোর সাথে আপনাদের পরিচিত করব। পরবর্তী পর্বে আরো টিপস নিয়ে কথা বলব।
সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন কি?
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) হচ্ছে এমন এক ধরনের পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা, যাতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের সার্চ রেজাল্টে ওয়েবসাইটি অন্য সাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে প্রদর্শিত হতে পারে। এই ধরনের সার্চ রেজাল্টকে Organic বা Natural সার্চ রেজাল্ট বলা হয়। সার্চ রেজাল্টের প্রথম পৃষ্ঠায় দশটি ওয়েবসাইটের মধ্যে নিজের ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসাই সবার লক্ষ্য থাকে। এর কারণ হিসেবে দেখা যায় ব্যবহারকারীরা সাধারণত শীর্ষ দশের মধ্যে তার কাঙ্খিত ওয়েবসাইটকে না পেলে দ্বিতীয় পাতায় না গিয়ে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করে পুনরায় সার্চ করেন। শীর্ষ দশে থাকার মানে হচ্ছে ওয়েবসাইটে বেশি সংখ্যক ভিজিটর পাওয়া আর বেশি সংখ্যক ভিজিটর মানে হচ্ছে বেশি আয় করা। এজন্য সবাই মরিয়া হয়ে নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সাথে অনেক বিষয় জড়িত। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে প্রথমেই সাইটের জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড (Keyword) বা শব্দগুচ্ছ বাছাই করতে হয়। কিওয়ার্ড বাছাই করার পূর্বে সময় নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হয় যাতে এর প্রতিদ্বন্ধী কম থাকে। ধরা যাক অনলাইনে গেম খেলার একটি সাইটের জন্য যদি “Play Online Game” কিওয়ার্ড বাছাই করা হয়, তাহলে এই শব্দ দিয়ে গুগলে সার্চ করলে ১.৬ কোটি সাইটের ফলাফল হাজির হবে। তাদের মধ্যে হাজারও জনপ্রিয় সাইট পাওয়া যাবে যেগুলোকে অতিক্রম করে প্রথম পাতায় আসাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কিওয়ার্ডের সাথে আরো কয়েকটি শব্দ যদি যোগ করা যায় তাহলে দেখা যাবে প্রতিদ্বন্ধী ওয়েবসাইটের সংখ্যা কমে আসবে। কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণার জন্য সবচেয়ে ভাল হচ্ছে গুগল এডওয়ার্ডের কিওয়ার্ড টুলটি - https://adwords.google.co.uk/select/KeywordToolExternal ।
অন পেজ অপটিমাইজেশন:
সাইটের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড বাছাইয়ের পর এর বিভিন্ন অংশে এই কিওয়ার্ডটির প্রতিফলন থাকতে হয়। প্রথমত ওয়েবসাইটের ডোমেইন নামে যদি বাছাইকৃত কিওয়ার্ডটি থাকে তাহলে সবচেয়ে ভাল। দ্বিতীয়ত HTML এর title ট্যাগে কিওয়ার্ড থাকা উচিত। সাইটের title ট্যাগটি ঠিকভাবে সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অংশটি একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সেই পৃষ্ঠায় কি তথ্য রয়েছে তা নির্দেশ করে। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওয়েবসাইটের “description” meta ট্যাগ। এর মাধ্যমে ওই পৃষ্ঠার সারমর্ম লেখা হয়, যা সার্চ ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে সেই পৃষ্ঠা ইন্ডেক্সিং এ সহায়তা করে। এই ধরনের পদ্ধতিকে On Page Optimization বলা হয়।
পেজরেংক:
PageRank বা সংক্ষেপে PR হচ্ছে গুগল কর্তৃক ব্যবহৃত এক ধরনের লিংক এনালাইসিস এলগরিদম, যা দ্বারা একটি ওয়েবসাইট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নির্ধারণ করা হয় এবং সার্চের ফলাফলে এটিকে প্রধান্য দেয়া হয়। গুগলের কাছে যে ওয়েবসাইট যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার পেজরেংক তত বেশি হয়ে থাকে এবং সার্চের ফলাফলে সেটি তত সামনের দিকে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সর্বোচ্চ পেজরেংক হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ন পেজরেংক হচ্ছে ০। গুগল টুলবারের সাহায্যে একটি সাইটের পেজরেংক জানা যায়। টুলবারটি এই সাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে – http://toolbar.google.com।
ব্যাকলিংক:
ব্যাকলিংক (BackLink) লিংক হচ্ছে একটি সাইটের পেজরেংক বাড়ানোর মূল হাতিয়ার। একটি ওয়েবসাইটের কোন পৃষ্ঠায় যদি অন্য একটি সাইটের লিংক থাকে তাহলে দ্বিতীয় সাইটের জন্য এই লিংককে বলা হয় ব্যাকলিংক বা ইনকামিং লিংক। আর প্রথম সাইটের জন্য এই লিংকটি হচ্ছে আউটগোয়িং লিংক, অর্থাৎ এই লিংকে ক্লিক করে ব্যবহারকারী দ্বিতীয় সাইটে চলে যাবে। এইভাবে একটি ওয়েবসাইটের যত বেশি ব্যাকলিংক থাকবে সেই ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারী আসার প্রবণতা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনের রোবট প্রোগ্রাম সেই সাইটকে খুব সহজেই খুজে পাবে। ব্যাকলিংক বাড়ানোর অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পদ্ধতি হচ্ছে,
• লিংক বিনিময়: এটি হচ্ছে ভাল পেজরেংকের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে নিজের ওয়েবসইটের লিংক বিনিময়, অর্থাৎ অন্য ওয়েবসাইটের লিংক নিজের সাইটে যোগ করা এবং সেই সাইটে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করানো। এজন্য সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের এডমিনিস্ট্রেটরের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে লিংক বিনিময়ের প্রস্তাব জানানো হয়। আবার লিংক আদান প্রদানের জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লিংক বিনিময়ে আগ্রহী ওয়েবসাইটের ঠিকানা পাওয়া যায়।
• ফোরামে পোস্ট করা: এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ভাল পেজরেংকের ফোরামের Signature এ নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করতে হয়। তারপর সেই ফোরামে নতুন কোন পোস্ট করলে বা অন্যের পোস্টে মন্তব্য দিলে লিংকটি সেই পৃষ্ঠায় প্রদর্শিত হয়।
• আর্টিকেল জমা দেয়া: ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে নিজের সাইটের কোন লেখা সেই সাইটগুলোতে জমা দেয়া যায় এবং সেই লেখার মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে নিজের সাইটের লিংক দিয়ে ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।
• ডাইরেক্টরীতে জমা দেয়া: বিভিন্ন ওয়েব ডাইরেক্টরী রয়েছে যেখানে বিনামূল্যে নিজের সাইটের তথ্য এবং লিংক জমা দেয়া যায়।
• অন্যের ব্লগে মন্তব্য দেয়া: অন্যের ব্লগে মন্তব্য দিয়ে এবং সাথে নিজের সাইটের লিংক যুক্ত করেও ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।
পরবর্তী পর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ SEO এবং ব্যবহার নিয়ে বলব।
বিশেষ সংযোজনঃ পরবর্তী পর্ব ( সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন পর্ব- ০২) পরতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন ( পর্ব- ০২)
লেখাটি ভালো লাগলে আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক করুনঃ https://www.facebook.com/comjagat
লেখা সবগুলো ব্লগ পরতে চাইলে ভিজিট করুন এই লিঙ্কে : http://blog.comjagat.com/author/blogger/
লেখাঃ সংগৃহীত
আমি কমজগৎ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 57 টি টিউন ও 17 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Computer Jagat has been involved with the ICT movement here in Bangladesh for more than a period of two decades. During this period we have been able to create a set of records for which we feel proud of.
ভাল লাগলো পড়ে। ভালো পোস্ট 😀