বর্তমান আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে অভূতপূর্ব ও বিষ্ময়কর আবিষ্কার কোনটি বলুন তো? হয়তো অনেকেই এক বাক্যে বলে উঠবেন কম্পিউটার। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই আধুনিক যুগে যে বিষয়টি ছাড়া আমরা চলতে পারিনা তা হচ্ছে ইন্টারনেট। কিন্তু আমরা অনেকেই ইন্টারনেট সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখিনা। কিভাবে এটি কাজ করে এটাও জানিনা। ইন্টারনেটের রয়েছে বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা। আজকে আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
ইংরেজি শব্দ International এবং Network শব্দ দুটি থেকে ইন্টারনেট কথাটির উৎপত্তি হয়েছে৷ অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনালের 'ইন্টার' এবং নেটওয়ার্কের 'নেট' যুক্ত হয়েছে নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে ইন্টারনেট।
তাই যে নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনালি কাজ করে তাকেই বলা হয় ইন্টারনেট। এই নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত। আবার অনেকে একে ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্ক হিসেবেও অভিহিত করে থাকেন। ইন্টারনেট হচ্ছে কতগুলো নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত নেটওয়ার্ক। এই ব্যাবস্থায় অগণিত নেটওয়ার্ক রাউটারের মাধ্যমে একসাথে জুড়ে দিয়ে জালের মতো সৃষ্টি করা হয়েছে।
ইইন্টারনেটের শাব্দিক বিশ্লেষণ তো জানা হলো। এটি হচ্ছে অনেক গুলো নেটওয়ার্ক এর সম্মিলিত রুপ। রাউটার ব্যবহার করে নেটওয়ার্কগুলোকে যুক্ত করার ব্যাবস্থা করা হয়। বিভিন্ন আইপি অ্যাড্রেস ও প্রটোকলের সমন্বয় করে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট তৈরি হয়।
ইন্টারনেট জালের মতো পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। তাই একে আন্তর্জাতিক ভাবে বিস্তৃত জাল বা নেটওয়ার্ক বলা হয়ে থাকে। এটুকু থেকে হয়তো বুঝে গিয়েছেন ইন্টারনেট আসলে কি?
ইন্টারনেট এবং www কে অনেকে একই মনে করে থাকেন। কিন্তু এই দুটি বিষয় আসলে এক নয়। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এর সমন্বয়ে কম্পিউটার গুকোর মধ্যে আন্তর্জাতিক তথ্য ও যোগাযোগ করার ব্যাবস্থা হলো ইন্টারনেট। কিন্তু www হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত একটি পরিষেবা মাত্র।
বিভিন্ন কাগজপত্র বা অন্যান্য সম্পদ সংগ্রহের জন্য হাইপারলিংক বা ইউ আর এল দ্বারা সংযুক্ত একটি ব্যবস্থা হচ্ছে www. তাই ইন্টারনেট এবং www কে আমরা একই মনে করলেও এরা আসলে ভিন্ন দুটি বিষয়।
ইন্টারনেট হচ্ছে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা এবং www হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যিমে প্রাপ্ত একটি সার্ভিস বা পরিষেবা। আশাকরি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
শুরুতেই আমরা আলোচনা করেছি যে, ইন্টারনেট হচ্ছে অনেকগুলো নেটওয়ার্ক এর সংযুক্তি। তাই কয়েকটি রাউটারের মাধ্যমে এসব নেটওয়ার্ক কে একসাথে যুক্ত করতে হয়। এরপর প্রতিটি নেটওয়ার্ক কে আইপি অ্যাড্রেস সেট প্রদান করা হয়।
প্রতিটি নেটওয়ার্ক আইডিকে আবার একটি করে ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস প্রদান করা হয়৷ এরপর বিভিন্ন প্রটোকলে যুক্ত করতে হয়।
রাউটার এই নেটওয়ার্ক গুলোকে একসাথে জুড়ে দেয়। আর এভাবে কম্পিউটার অথবা নেটওয়ার্ক আইডি থেকে আমরা পুরো বিশ্বে ইন্টারনেটের সেবা পেয়ে থাকি। আশাকরি একটি সাধারণ অনুমান আপনি করতে পেরেছেন।
কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যায় তা হলো, ইন্টারনেটের সাথে নেটওয়ার্ক আইডিগুলো ফিজিক্যালি কিভাবে যুক্ত করা হয়ে থাকে? নেটওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত করার জন্য প্রত্যেকটি মোবাইল ও কম্পিউটারে একটি করে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা নিক কার্ড অবশ্যই থাকতে হবে৷ ইন্টারনেট সংযোগ দিতে হলে তাই সবার আগে আপনার প্রদত্ত ডিভাইসটিতে নিক কার্ড ইন্সটল করে রেখে দিতে হবে।
এরপর এক প্রান্তে একটি 'কেবল' মডেম ডি এস এল মডেম বা রাউটারের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং অপর প্রান্ত নিক কার্ডের সাথে জুড়ে দিতে হবে৷
এভাবে একটি নেটওয়ার্ক আপনার কম্পিউটারে যুক্ত করা হলো৷ এখন যদি আপনার নেটওয়ার্ক কে অপর কোনো নেটওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত করতে চান তাহলে আরেকটি রাউটারের দরকার হবে৷ এখন কম্পিউটার বা মোবাইলের ডাটা কানেকশন চালু করে দিলেই ইন্টারনেট ইউনিভার্সেট সাথে সংযুক্ত হয়ে যাবেন।
এখন আপনি মনে মনে ভাবতে পারেন আমার মোবাইলে তারের সংযোগ ছাড়াই কিভাবে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত আছে? এই প্রশ্নের উত্তর হলো, ইন্টারনেট কানেকশন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই আইএসপি বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আর আপনার হয়ে এই কাজটি করে দেয় বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি, যেমনঃ এয়ারটেল, বাংলালিংক ইত্যাদি।
আর এজন্য আমাদের টাকা প্রদান করতে হয়। যাকে আমরা ইন্টারনেট প্যাকেজিং ক্রয় বলে থাকি। আশাকরি এখন আপনি মোটামুটিভাবে সবকিছু বুঝে গিয়েছেন। আজকে এ পর্যন্তই। ধন্যবাদ।
আমি মেহেদী হাসান শাওন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।