বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলে আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। তো বন্ধুরা, আমরা সকলেই নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। স্মার্টফোনে কিংবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবচাইতে প্রয়োজনীয় বিষয়টি হচ্ছে ইন্টারনেট কেনা। এবার সেটি হতে পারে মোবাইল ডাটা অথবা ওয়াইফাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট।
আমরা যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি তারা নিয়মিতই বিভিন্ন ইন্টারনেট প্যাক কিনে থাকি। আমরা যখন কোন টেলিকম কোম্পানির সিম ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি তখন তাদের কাছ থেকে আমাদের চড়া মূল্যে ইন্টারনেট কিনে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমরা যদি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করি তবে সেটি হয় আনলিমিটেড। অর্থাৎ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এখানে আমরা আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি। যেখানে সিম কোম্পানির কাছ থেকে আমাদের মেগাবাইট কিনতে অনেক টাকা খরচ হয় সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে যা হয় খুবই কম পরিমাণে এবং সেটি হয় আনলিমিটেড।
তবে আপনি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেন সেটি কি আসলেই আনলিমিটেড? আপনাকে আনলিমিটেড বলা হলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কিন্তু আনলিমিটেড নয়। এখানে ব্যাপারটি অনেক কঠিন এবং হাস্যকর হয়ে গেল না? আমরা তো এতদিন জেনে এসেছি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সেটি আনলিমিটেড ভাবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু আজকে আমি বলছি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আনলিমিটেড নয়। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেন আনলিমিটেড নয় সে বিষয়টি সম্পর্কে টিউনের কোন একটি পর্যায়ে আলোচনা করব।
এছাড়া আজকের এই টিউনে আপনারা জানতে পারবেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডাটা কেনার ক্ষেত্রে মোবাইল ডাটার মূল্য কেন বেশি হয়। এছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কেন কম টাকা খরচ হয়। তো, এসব বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সহজভাবে আপনাদের কে বোঝানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। তাই আপনি যদি আমার এই টিউনে নতুন হয়ে থাকেন তবে উপরের ফলো বাটন এ ক্লিক করে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকুন। তবে চলুন আজকের টিউনটি শুরু করা যাক।
যদি আমাদের দেশে মোবাইল ডাটা এর মূল্য বিবেচনা করা যায় তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যেখানে মোবাইলটা কেনার ক্ষেত্রে প্রতি জিবি তে গড়ে ৬ টাকা করে, সেখানে বাংলাদেশে প্রতি জিবি ৫২ টাকা করে, যে হিসাবটি কিছুদিন আগের। আমি এখানে দুই দেশের ইন্টারনেট এর মূল্যের পার্থক্য করছি না। এক্ষেত্রে ধরুন, আমাদের দেশেতেই ছয় টাকাতে ১ জিবি করে ইন্টারনেট দিল দেশের টেলিকম অপারেটররা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এটি যদি আমরা ওয়াইফাই বা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর সঙ্গে তুলনা করি তবে সেটি হয়ে যায় অনেক কম পরিমাণ।
যেখানে আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ৫০০-৭০০ টাকাতেই আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি পুরো এক মাস জুড়ে। কিন্তু এই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মাসজুড়ে কিন্তু আনলিমিটেড নয়। এটির একটি লিমিট রয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেন আনলিমিটেড নয় এই বিষয়টি আমাদের মাথায় আসেনা কিংবা আসলেও সেটি কোন কাজের নয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেন লিমিটেড।
দেখুন, আপনি যেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিয়েছেন সেটি হতে পারে 10MBps এবং সেটির মাসিক বিল দিতে হয় ৮০০ টাকা। এখানে ইন্টারনেট নেবার ক্ষেত্রে টাকাটি কিন্তু কোন ব্যাপার না। 10MBps স্পিডের ইন্টারনেট নিলে এখানে আপনি সেকেন্ডে 10 মেগাবাইট পর্যন্ত ডাউনলোড করতে পারবেন। এখানে আপনি কিন্তু এর চাইতে বেশি পরিমাণ স্পিডে ডাউনলোড করতে পারবেন না। আবার এমনও হতে পারে যে এর চাইতে আপনি আরো কম স্পীড পেতে পারেন।
এবার আপনি যদি এই স্পিড নিয়ে ১ ঘন্টা পুরো ব্যবহার করেন তবে ১০×৬০×৬০=৩৬০০০ পর্যন্ত মেগাবাইট ব্যবহার করতে পারবেন। এইবার আপনি যদি এই স্পিডে সারাদিন ডাউনলোড করেন তবে ২৪ ঘন্টায় ৮৬৪০০০ এমবি এবং এক মাসে ২৫, ৯২০, ০০০ এমবি ব্যবহার করতে পারবেন। এবার এটিকে যদি আপনি জিবিতে কনভার্ট করেন তবে সেটি হয় ২৫৩১২ জিবি। আপনি কিন্তু চাইলেও 10MBps স্পিড দিয়ে এর চাইতে বেশী জিবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এবার থেকে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও কিন্তু আনলিমিটেড নয়, বরং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও একটি লিমিট রয়েছে।
তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে স্পিড নেওয়া হয় তাতে সেই স্পিডে সেই পুরো মেগাবাইট ব্যবহার করার সুযোগ হয় না। কেননা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এটি সবসময় আনলিমিটেড ই মনে হয় এবং চাহিদা অনুযায়ী ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। এখানে আমাদের লক্ষ্য থাকে না যে 25 হাজার জিবি আমাদেরকে শেষ করতেই হবে। যাই হোক, তবে এই বিষয়টি আমরা নিশ্চয় বুঝতে পারলাম যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও আনলিমিটেড নয়। বরং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর যে লাইন নেওয়া হয় তাতে যে স্পিড থাকে সেটিই বরং আমাদেরকে লিমিটেড করে দেয়।
আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের বেশিরভাগই মোবাইল ডাটার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। যেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে ইন্টারনেট ইউজার থাকে খুবই সামান্য পরিমাণে। আর এর ফলে মোবাইল অপারেটররা ও তাদের মনের মতো একটি অ্যামাউন্ট দিয়ে রাখছে ইন্টারনেট কেনার ক্ষেত্রে। ফলে বাধ্য হয়েই বেশি দামে মোবাইল ডাটা কিনে নিয়ে আমাদেরকে ব্যবহার করতে হয়। বরং এখানে বাধ্য বললেও ভুল হবে, বরং এখানে আমরা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ইন্টারনেট কিনে নিয়ে ব্যবহার করছি।
মোবাইল ডাটা কিনে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের মাথায় একটি চিন্তা চলে আশাকরি তখন সেখানে অপারেটররা একটি নির্দিষ্ট স্পীড দিয়ে দেয়, যেখানে আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর মতো দ্রুতগতিতে চালাতে পারি না। আমরা সকলেই জানি যে বাংলাদেশের ইন্টারনেট এর গতি কতটা উন্নত।
বেশি টাকা দিয়ে ঠিকই ইন্টারনেট কিনতে হয়, কিন্তু সেটি স্পিড থাকে অনেক কম। বিশেষ করে যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করেন তাদের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট স্পীড তো KB এর ঘরেই রয়েছে, গ্রামাঞ্চলে যেখানে এমবিপিএস এর ঘরে এখনো উঠতে পারেনি ইন্টারনেট স্পিড। তবে শহর অঞ্চলে এই গতিটা কিছুটা স্বাভাবিক, তবে বাংলাদেশে মোবাইল ডাটার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে ঝামেলা একটা পোহাতেই হয়। যেখানে এটা কিন্তু আমাদের জন্য একটা খারাপ ব্যাপার। উল্টোদিকে আমরা যখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করি তখন সেটিতে সকল জায়গায় সমান স্পিড পাওয়া যায়।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে গ্রামে-গঞ্জে, শহর অঞ্চলের সকল জায়গায় একই স্পিড পাওয়া সম্ভব। যেখানে 5mbps, 10mbps, 20mbps স্পিড এর সকল লাইন নেওয়া যায়। তো, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডাটার এই পার্থক্যের কারণ কি এবং এটি কেন ঘটে এই বিষয় সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানা উচিত। আজকের এই টিউন এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
মোবাইল ডাটা এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদেরকে যে বিষয়টি ভাবতে হবে তা হলো, এর সেটআপ এবং রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজের ব্যয় নিয়ে। আমরা যে ইন্টারনেট প্লান মোবাইলে কিনে ব্যবহার করি সেটি হোক গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল কিংবা বাংলালিংক সেখানে তাদের একটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় রয়েছে। আমরা যে টেলিকম এর সেবাই ব্যবহার করি না কেন তাদের প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার কর্মী কাজ করে থাকে। যেখানে তাদেরকে প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ বেতন দিতে হয়। এখানে আমি বলছি না যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইন নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনো কর্মী থাকেনা।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেবার ক্ষেত্রেও তাদের কর্মী থাকে। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কর্মী সংখ্যা অনেক কম থাকে এবং এটি হয় টেলিকম কোম্পানির চাইতে অনেক কম পরিমাণে। যেখানে কোনো একটি এলাকার জন্য টেলিকম অপারেটর এর লোকবল থাকে হাজার বা কয়েকশো পরিমাণে সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে থাকে মাত্র কয়েকজন। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর তুলনায় অন্যান্য ক্ষেত্রেও মোবাইল টেলিকম এর ব্যয় অনেক বেশি।
একটি টেলিকম অপারেটরকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইড করতে হলে তাদেরকে সেই এলাকায় টাওয়ার স্থাপন করতে হয়। এক্ষেত্রে টাওয়ার স্থাপন করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন পড়ে এবং যে জায়গায় টাওয়ারটি স্থাপন করা হয় সেই জায়গার মালিক কে প্রতিমাসে বা বাৎসরিক নির্দিষ্ট একটি অংকের টাকা পে করতে হয়। এছাড়া কোন জায়গায় সেটা নির্ধারণ করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার এবং অনেক লোক বল এর প্রয়োজন পড়ে সেগুলোর সেটআপ করতে। এছাড়া পুরো নেটওয়ার্কটি কে পরিচালনা করার জন্য আলাদা আলাদা কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ার থাকে। যেখানে কিন্তু অনেক টাকা খরচ হয়।
এটা কিন্তু একটি প্রধান কারণ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর চাইতে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ার পেছনে। যেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন কোন লোকবলের দরকার পড়ে না। যেখানে শুধুমাত্র একটি প্রধান কেন্দ্র থেকে গ্রাহকের বাড়ি পর্যন্ত ইন্টারনেট লাইন এর মাধ্যমে সংযোগ দেওয়া হয় এবং সেখানে সে চিরস্থায়ীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকে। এখানে ইন্টারনেট লাইন নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে কাউকে কোনো টাকা দিতে হয় না এবং যার বাড়িতে রাউটারের স্থাপন করার মাধ্যমে তাকে সার্ভিস দেওয়া হয় তাকেও কোন বিল দিতে হয় না, বরং উল্টো আরো তাদেরকেই টাকা পরিশোধ করতে হয়। যেই ধাপটি ছিল মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ার প্রথম এবং প্রধান কারণ।
এছাড়া নির্দৃষ্ট অপারেটরের সেবা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে গ্রাহকগণ অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। আর তাই মোবাইল টেলিকম সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য দরকার পড়ে কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধির। যেখানে প্রত্যেকটি টেলিকম এর বিপুল পরিমাণ সদস্য থাকে যারা কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। যেটি কিন্তু ওয়াইফাই এর ক্ষেত্রে বেশি থাকে না। সেখানে কোন একটি প্রতিষ্ঠান গুটিকয়েক লোকজন থাকে যারা গ্রাহককে সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।
এ দিক থেকে বিবেচনা করলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে খরচ অনেক কম হয়। আর তাই ধরেই নেওয়া যায় যে, সকল দিক বিবেচনা করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর চাইতে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ায় স্বাভাবিক।
আপনারা হয়তোবা ভাবছেন যে, তরঙ্গ কেনার খরচ আবার কি? আমরা অনেক সময় শুনে থাকি যে এই ফ্রিকুয়েন্সিতে ডাটা ট্রান্সফার হচ্ছে, রেডিও ম্যাগনেটিভ ওয়েভ এর সাহায্যে। কিন্তু এই ফ্রিকুয়েন্সির জন্য ও তাদেরকে অর্থ খরচ করতে হয়। মোবাইল অপারেটররা কোন ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করবে এর জন্য তাদেরকে নিদিষ্ট একটি ফ্রিকোয়েন্সি কিনতে হয়। এই তরঙ্গ গুলো কিভাবে কিনতে হয়?
আমরা জানি যে, বিপিএল কিংবা আইপিএল খেলার সময় ক্রিকেটারদের কে নির্দিষ্ট একটি দলে কিনে নিতে হয়। সেরকমভাবে তরঙ্গকে ও কোম্পানিরা কিনে থাকে সরকারের কাছ থেকে। এখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিটিআরসি প্রত্যেক বছর নিলামের মাধ্যমে প্রত্যেক অপারেটরের কাছে তরঙ্গ বিক্রি করে। আর এর জন্যই মোবাইল অপারেটররা কোটি কোটি টাকা খরচ করে থাকে। তরঙ্গ কেনার ক্ষেত্রে ও কিন্তু কোম্পানিকে একটি বিশাল পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয় সরকারকে।
কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের নেওয়ার ক্ষেত্রে এই ঝামেলাটি কিন্তু নেই। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে হলে শুধুমাত্র বিটিআরসির কাছ থেকে একটি লাইসেন্স নেয়ার মাধ্যমে নিজ এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করা যায়। এখানে প্রতিবছর আলাদা করে তরঙ্গ কিনতে হয় না, বরং এখানে লাইসেন্স করার মাধ্যমে অল্প টাকায় ব্যবসা শুরু করা যায়। যে কারণে এখানে অল্প টাকা তে আনলিমিটেড ইন্টারনেট দেওয়া যায় খুব সহজেই।
আমরা সকলেই শুনেছি যে স্মার্টফোনে GSM, WCDMA, LTE, HSPA ইত্যাদি এইসব গুলো হচ্ছে কোয়ালকম কোম্পানির বিভিন্ন রকমের টেকনোলজি। এই টেকনোলজি গুলো কোয়ালকম কোম্পানি প্যাটেন করে রেখেছে। আমরা যখন নতুন স্মার্টফোন তিনি তখন সেখানে এসব টেকনোলজি এর নাম কিন্তু লেখা থাকে। এসবের মানে হচ্ছে আমরা যখন 2G, 3G, 4G যেটাই ব্যবহার করি না কেন এর জন্য আমাদের মোবাইলের চিপসেট এর মধ্যে এমন বিষয় দেওয়া থাকে যেন মোবাইল টাওয়ারের সেই ফ্রিকোয়েন্সি গুলো সে ধরতে পারে। আর এজন্য কিন্তু মোবাইল অপারেটরদেরকে তাদেরকে টাকা দিতে হয়, যাতে করে তারা তাদের ফোনে এসব টেকনোলজি ব্যবহার করে।
তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা নেই। এখানে সেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রোভাইডার কে কাউকে আলাদাভাবে টাকা পরিশোধ করতে হয় না। যে কারণে মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ এর চাইতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের খরচ অনেকাংশে হ্রাস পায় এবং মোবাইল অপারেটরদের চাইতে কম খরচে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব হয়।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর চাইতে মোবাইল ডাটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ার পেছনে সবচাইতে বড় কারণ এটি। মোবাইল ডাটার দাম সবচাইতে বেশি হবার পেছনে যে বিষয়টি কাজ করে তা হচ্ছে নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন এর ব্যয়। যেটি মোবাইলে ডাটা এর দাম বাড়ার পেছনে সবচাইতে বড় কারন। এখানে নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন বলতে 2G থেকে 3G কিংবা 3G থেকে 4G-তে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা। তবে আমাদের দেশে যে নেটওয়ার্কের অবস্থা তাতে করে আমরা বুঝতেই পারিনা যে নেটওয়ার্ক কতটা আপগ্রেড করা হলো।
আমাদের নেটওয়ার্ক টিকে ২জি থেকে ৪জি তে উন্নতি করলেও এখনো আমরা বুঝতেই পারিনা যে আসলে নেটওয়ার্কটি কতটা উন্নতি করা হলো। আমাদের মনে হয় যে নেটওয়ার্কটি মনে আগের মতোই রয়েছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে এই সমস্যা বেশি হয়। কিন্তু নতুন করে যখন কোন টেকনোলজি আসে তখন আবার নতুন করে পুরো টাওয়ার কে ঢেলে সাজাতে হয়। এক্ষেত্রে টাওয়ার এর সমস্ত যন্ত্রাংশগুলোকে কিন্তু আবার নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য পাল্টানোর দরকার পড়ে। এক্ষেত্রে সেই মোবাইল অপারেটরকে কিন্তু একটি বিশাল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়।
কিন্তু এক্ষেত্রে যদি আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর কথা চিন্তা করি তবে তাদেরকে কিন্তু নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়না। তারা একবার যদি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইন টানতে পারে তবে তারপর আর তাদের কোনো রক্ষণাবেক্ষণ এর খরচা হয় না। যদিও মাঝে মাঝে ইন্টারনেট লাইনে ছিঁড়ে যেতে পারে যদি সেগুলো উপর দিয়ে থাকে। তবে এটি হয় খুবই কম পরিমাণে। যেখানে সাধারন ঝড়-ঝাপটায় লাইন ছিড়ে গেলে সেখানে অল্প টাকাতেই সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা যায়।
এছাড়া যদি কোনো ব্যবহারকারী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইন এর স্পিড বাড়াতে হয় তবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে স্পিড বাড়িয়ে দিলেই চলে। এখানে আলাদা করে কোনো ইন্টারনেটের লাইন কিংবা রাউটার কেও পরিবর্তন করতে হয় না। যেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন দেবার ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার এর লাইন ব্যবহার করা হয়। যেটিকে একবার মাটির নিচ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে টানার পর পরবর্তীতে আর সেটি পরিবর্তন করতে হয় না। ফলে তাদের ইন্টারনেটের লাইনও থাকে অনেক দীর্ঘস্থায়ীভাবে।
কিন্তু অন্যদিকে যদি নতুন প্রযুক্তি চলে আসে তবে মোবাইল টাওয়ারকে আপগ্রেড করার জন্য প্রায় সমস্ত যন্ত্রাংশগুলো আবার পরিবর্তন করতে হয়। যেখানে কিন্তু অপারেটরদের একটি বিশাল পরিমাণ অর্থ চলে যায়। যেখানে নতুন প্রযুক্তি আসার অর্থ হচ্ছে 3G থেকে 4G কিংবা 4G থেকে 5G-তে নেটওয়ার্ক কে উন্নতি করা। যেখানে প্রত্যেকটি প্রযুক্তি এর উন্নতি করার জন্য তাদেরকে আলাদা আলাদা যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়। এখানে অপারেটর থেকে ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট স্পিড বাড়িয়ে দেওয়া যায় না। ব্যবহারকারী ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর জন্য তাদেরকে নতুন করে আবার সকল যন্ত্রাংশ গুলো নতুনভাবে স্থাপন করতে হয়।
যে যন্ত্রপাতিগুলো প্রথম স্থাপন করার জন্য তাদেরকে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হয়। এখানে শুধুমাত্র কোন একটি এলাকায় নেটওয়ার্ক কে তারা সম্প্রসারণ করে থাকে না, বরং তারা দেশের প্রায় সমস্ত এলাকার নেটওয়ার্ক গুলো আবার নতুন করে আপগ্রেড করে। এই বিনিয়োগের টাকাগুলো তারা পরবর্তী সময়ে গ্রাহকের কাছ থেকে তুলে থাকে। আর পরবর্তী সময়ে যখন গ্রাহকদের কাছ থেকে এই বিনিয়োগ-এর টাকাগুলো তুলবে তখন সেটি পরিমাণে অনেক বেশি হয়ে থাকবে। কেননা তাদের আগে বিনিয়োগ করার উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে লাভ করার।
মোবাইল ডাটার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আরও একটি কারণ হতে পারে এর বিজ্ঞাপণ দেবার খরচ। আমরা সকলেই জানি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বিজ্ঞাপণ দেখানো হয় না, যেমনটি টেলিকম অপারেটর এর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। যদিও বর্তমানে কিছু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক পরিধি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকছে। কিন্তু সেটি অন্যসব টেলিকম অপারেটর এর চাইতে অনেক কম। টেলিকম অপারেটররা তাদের ইন্টারনেট, মিনিট এবং বান্ডেল প্যাক গুলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকে।
অপারেটরদের এসব খাতে বিজ্ঞাপণ দেওয়ার ফলে একটি বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে যায়। এক্ষেত্রে তারা যদি কোন একটি সেলিব্রিটি কে দিয়ে তাদের বিজ্ঞাপনটি করিয়ে নেয় তবে সেখানেও কিন্তু তাদের একটি বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে যায় যেমনটি কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে হয় না। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট যেহেতু একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হয়ে থাকে সে জন্য এটি সে এলাকায় মৌখিক প্রচার এর মাধ্যমেই সবচাইতে বেশি পরিমাণে জনপ্রিয়তা পায়। এক্ষেত্রে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন সবার মাঝে পৌঁছে দেবার জন্য আলাদা করে সে এলাকার মানুষের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অন্য কোন প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপণ দিতে হয় না।
যেহেতু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট এলাকাজুড়ে ব্যবসা পরিচালনা হয়, সেজন্য এখানে বিজ্ঞাপণ এর দরকার পড়ে না। তবে বর্তমানের শহর এলাকায় মানুষের কাছে নিজেদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর কথা তুলে ধরার জন্য অনেকেই বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকে সেই এলাকার মানুষকে লক্ষ্য করে। কিন্তু অন্যদিকে টেলিকম অপারেটর এর ক্ষেত্রে সেটি হয় পুরো দেশব্যাপী। যেখানে টিভি, ইউটিউব, ফেসবুক, রেডিও ইত্যাদি সকল মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে নিজেদের সেবাকে পৌঁছে দেবার জন্য। যেখানে প্রত্যেকটি মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দেওয়ার জন্য তাদেরকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়।
মোবাইল অপারেটররা বিজ্ঞাপণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে কতটা পরিমাণে টাকা খরচ করে তার কোন লিমিট নেই। তবে এ খাতে তারা অনেক বিশাল পরিমাণ অর্থ খরচ করে থাকে। তারা যে বিজ্ঞাপণ এর জন্য এসব মাধ্যমে খরচ করে, আর এটি হয় আমাদের পকেট কেটেই। তারা বিজ্ঞাপণ এর পেছনে যে পরিমাণ টাকা খরচ করে সেই টাকাটি আমাদের কাছ থেকেই আবার তুলে নেয়। বলতে গেলে তারা বিজ্ঞাপণের টাকা নিজেরা বিনিয়োগ করে সেই টাকাটি পরবর্তীতে আমাদের কাছ থেকে আবার তুলে নেয় এবং যে কারণে মোবাইল ডাটা এর দাম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর চাইতে অনেক বেশি হয়।
যেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শুধুমাত্র রাউটার থেকে কিছু দূর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় সেখানে মোবাইল ডাটা দিয়ে ইন্টারনেট পুরো দেশ জুড়ে ব্যবহার করা যায়। কোন একটি অপারেটর এর মোবাইল ডাটা দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে সেটি দিয়ে যেকোনো জায়গায় থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় ঘরে কিংবা বাহিরে, যদি সেই জায়গায় নেটওয়ার্ক কোয়ালিটি ভালো হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ওয়াইফাই ব্যবহার করলে রাউটার থেকে শুধুমাত্র কিছু দূরে সিগনাল পাওয়া যায়। যে কারণে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শুধুমাত্র ঘরের ভিতরে থেকেই ব্যবহার করা সম্ভব। যেটি আমাদের অনেক সময় একঘেয়েমি লেগে থাকতে পারে।
এছাড়াও যদি কোন সময় বাড়ির বাইরে যাবার প্রয়োজন পড়ে তখন সেখানে আমরা ওয়াইফাই ইন্টারনেট এর সিগনাল পাবো না। এক্ষেত্রে বাড়ির বাহিরে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হবে। যেখানে পুরো দেশ জুড়ে অপারেটরদের অসংখ্য টাওয়ার রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গ্রাহক সেবা দিয়ে থাকে। যেখানে আপনি একটি টাওয়ার এর এলাকা থেকে অন্য একটি এলাকায় গেলে সেখানে সেই টাওয়ারটি আপনাকে সার্ভিস দিবে। মোবাইল টাওয়ারের মতো এই সুবিধাটি কিন্তু আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে পাচ্ছি না।
পুরো দেশ জুড়ে এভাবে করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার কারণে আপনার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারে অতিরিক্ত টাকা নিতে পারে মোবাইল অপারেটররা। এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, যদি কোন কারণে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইনটি ছিড়ে যায় তবে সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে অভিযোগ করার মাধ্যমে সেটি আবার জুড়ে নিতে হবে কিংবা তারাই এসে আবার সংযোগ দিয়ে দিবে। কিন্তু মোবাইল টাওয়ার এর ক্ষেত্রে তারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেখানে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ সিগন্যাল এর মাধ্যমে আপনাকে সেবা দিয়ে থাকে যেখানে অপটিক্যাল ফাইবারের মতো তার ছিঁড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া টাওয়ার গুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সর্বদা বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে আপনি দেশের সব প্রান্তে থেকেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারেন।
এই বিষয়টিকে আমরা ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং ডেক্সটপ কম্পিউটারের সঙ্গে তুলনা করতে পারি। যেমনভাবে ল্যাপটপ কম্পিউটার এর দাম অনেক বেশি হয় এবং এটিকে আমরা যে কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু ডেস্কটপ কম্পিউটার এর চাইতে ল্যাপটপ এর পারফর্মেন্স একই কনফিগারেশনে কিছুটা কম হয়। কিন্তু ল্যাপটপ কম্পিউটার এর দাম হয় ডেস্কটপ কম্পিউটার এর চাইতে বেশি পরিমানে। তবে এখানে যা সুবিধা তাহলো, এটিকে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় এবং মোবাইল এর মত আলাদা ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যায়।
অপরদিকে ডেস্কটপ কম্পিউটার কে শুধুমাত্র ঘরের ভেতরে থেকে কিংবা অফিসে থেকে ব্যবহার করতে হয়। এখানে এটিকে যেকোনো জায়গায় যেকোন সময় পরিবহন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবে এটি ল্যাপটপ কম্পিউটার এর চাইতে কাজে অনেকটা ফাস্ট হয়। একইভাবে আমাদের মোবাইল ডাটা এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর বিষয়টি তুলনা করা যায়। যেখানে মোবাইল ডাটা দামে অনেক বেশি হলেও এটিকে যেকোনো জায়গায় নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ব্যবহার করা যায়।
অপরদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শুধুমাত্র ঘরের ভিতর থেকে কিংবা অফিসে থেকে ব্যবহার করতে হয়, যেখানে মোবাইল ডাটার মত সুবিধা পাওয়া যায় না। এদিক থেকে দামে বেশি হলেও মোবাইল ডাটা আমাদের জন্য অনেক উপকারী। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ঘরে থেকে ব্যবহার করলেও এখানে ডেক্সটপ কম্পিউটারের মতো স্পিড অনেক বেশি পাওয়া যায়। যেখানে মোবাইল অপারেটররা একটি লিমিটেড স্পিড দেয়, সেখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রে আনলিমিটেড ইন্টারনেট এবং সেইসঙ্গে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা ও পাওয়া যায়।
তো বন্ধুরা, আপনারা যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন তারা নিশ্চয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডাটা দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করার পার্থক্য বুঝতে পারেন। যেখানে মোবাইল ডাটা তে আমাদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলেও পুরো দেশ জুড়ে আমরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেট সেবা পেতে পারি। অপরদিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দামে অনেক সস্তা এবং আনলিমিটেড হলেও এটি আমাদেরকে ঘরের ভিতর থেকে ব্যবহার করতে হয়। মোবাইল ডাটা এর দাম কেন এত বেশি হয় সেই বিষয়টি আপনারা হয়তোবা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন। যদি আপনারা বুঝতে পারেন যে মোবাইল ডাটা এর দাম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এর দাম এর চাইতে কেন বেশি হয়, তবে টিউনমেন্ট করে জানাবেন এবং সেইসঙ্গে টিউনটি ভাল লাগলে জোসস করবেন।
আর যদি টিউনটি আপনার কাছে খারাপ লেগে থাকে তবে আমাকে ফলো করে রাখবেন। কেননা ভবিষ্যতে তো আপনাদের জন্য আরো ভালো কোন টিউন আসতেও পারি। আর যদি ভালো লেগেই থাকে তবে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।
মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে মেগাবাইট আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর এর মত। যেটি না হলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা অসম্ভব। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ইন্টারনেট কিনতে হয়। ইন্টারনেটে যেখানে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় কাজটিই করে থাকি। তবে আমাদের এটি মনে হতে পারে যে, মেগাবাইট এর দামের তুলনায় সার্ভিস হয়তোবা অনেক কম পাচ্ছি।
আর এটি মনে হবারই কথা। মোবাইল অপারেটররা ও চায় যে তাদের গ্রাহকেরা সন্তুষ্ট থাকুক। যদি সকল জায়গায় তাদের নেটওয়ার্ক ভাল পায় তবে এমনিতেই তাদের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসার পরিধি ও বেড়ে যাবে। যে বিষয়টি নিয়ে তারা প্রতিনিয়ত এই কাজ করে যাচ্ছে। তবে আমাদের এটাই প্রত্যাশা যে তারা যেন ইন্টারনেট এর সার্ভিস এর তুলনায় দাম ঠিক করে দেয়। যাতে করে আমাদের আর কোন অভিযোগ থাকবে না।
তো বন্ধুরা আজ তবে এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তীতে আপনাদের সামনে আরো নতুন কোন টিউন নিয়ে ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)