ফ্রিল্যান্সিং থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করার জন্যে যে ৭ টি কাজ আপনিও শিখতে পারেন!

ফ্রিল্যান্সিং থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করার জন্যে যে ৭ টি কাজ আপনিও শিখতে পারেন!

আশাকরি সকলেই অনেক ভালো আছেন। আমি আর জে রোহান বরাবারের মতো আবারো আছি আপনাদের সাথে দেখা হলো আরেকটি নতুন টিউন নিয়ে। আসলে ফ্রিল্যান্সিং থেকে বিপুল পরিমাণ আয় করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। দক্ষতা আপনার জিবনের সকল কর্ম ক্ষেত্রে জরুরি। ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম কোনটিই কিন্তু নয়। তবে, ফ্রিল্যান্সিং থেকে বিপুল পরিমাণ আয় করতে হলে ভাল কিছু বিষয়ে দক্ষতা অর্জণ করা আবশ্যক।

ফ্রিল্যান্সিং মানে হল ঘরে বসে বিপুল পরিমাণ টাকা উপার্জন। ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি শুনলে সাধারণত মাথার মধ্যে লাখ টাকার স্বপ্ন চলে আসে। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে এগুলো কোন চাপাবাজী বা রূপকথা নয় বরং বাস্তব। এই সব বিপুল পরিমাণ টাকার স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজন আপনার বিপুল পরিমাণ সঠিক কাজে দক্ষতা।

বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ কোন কাজে দক্ষ না হয়েই টাকার লোভে ফ্রিল্যান্সিং করতে বসে যায়। এ-সব মানুষ নিজের ক্ষতি তো করেই, পাশাপাশি ক্ষতি করে দেশের এবং অন্যান্য দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের। এদের দারা অবনতি ছাড়া উন্নতি কোনদিন সম্ভব নয়। তাই সবার আগে দক্ষ হওয়াটা বেশি প্রয়োজন।

ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করার জন্য কোন কাজগুলো শেখা জরুরি! কোন কাজ গুলো করলে আমি বেশি টাকা ইনকাম করবো? এ-রকম চিন্তা যদি আপনার মাথায় আশাকরি টিউন টি আপনার চাহিদা পূরণ করতে পারবে।

1. প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ

বর্তমান সময়ে প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট-প্লেসের অনেক জনপ্রিয় কাজ প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। এই খাতে কাজের পরিমাণ অনেক বেশি আর চাহিদাও অনেক বেশি। তবে, এই প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ খাতে এখনো দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের অনেক অভাব। যেহেতু প্রোগ্রামিং তুলনামূলক কঠিন একটি কাজ, তাই সবাই এই দক্ষতাটি অর্জন করতে পারে না।

ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে একজন প্রফেশনাল প্রোগ্রামারের প্রতি ঘণ্টার হায়ার ইনকাম কমপক্ষে 150 ডলার, যার বাংলাদেশের মূল্য প্রায় 14 হাজার টাকা। বর্তমান সময়ে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ কে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয়। যেমন –

  • ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
  • গেম ডেভেলপমেন্ট
  • ডাটা সায়েন্স
  • ডাটাবেজ

প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ বেশ মজার একটি বিষয় আর অনেক দামি একটি স্ক্রিল। আপনি যত বেশি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ জানবেন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট-প্লেসে আপনার চাহিদা তত বেশি থাকবে।

এবার মূল কথায় আসা যাক, সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন এবং বিপুল পরিমাণ আয়ের কাজ প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। কিন্তু, প্রোগ্রামিং বেশ কঠিন একটি বিষয়। তাই, আপনার ধৈর্য্য আর পরিশ্রম করার ক্ষমতা না থাকলে এই দিকে না আসাই ভাল। কারন আপনার ধৈর্য্য আর পরিশ্রম করার ক্ষমতা না থাকলে এখানে আপনার ব্যার্থতা ১০০% নিশ্চিত।

২. ডিজাইন

সৃজনশীল এর সময় অসাধারণ একটি পেশা ডিজাইন। ডিজাইনের ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক বিস্তৃত। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু হল –

  • ইউআই/ইউএক্স
  • ইলাস্ট্রেশন
  • লোগো ডিজাইন
  • ফটো এডিটিং
  • প্রোডাক্ট প্যাকেজিং
  • মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন

পৃথিবীতে কোন মানুষ সৃজনশীল হয়ে জন্ম নেয় না। অনুশীলন আর পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হয়। আপনার মধ্যে যদি ডিজাইনের প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে এই স্কিল আপনার জন্য। তাছাড়া আজকাল গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। সুতরাং, আপনি আজিই শুরু করতে পারেন।

৩. ভিডিও এডিটিং

ইউটিউব এর নাম আপনারা সবাই নিশ্চয়ই শুনেছেন। ইউটিউব আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রভাবে ভিডিও এডিটিং এখন অনেক জনপ্রিয় একটি স্কিল। সময়ের সাথে সাথে ফ্রিল্যান্স ভিডিও এডিটরের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। বর্তমানে অধিকাংশ কোম্পানি তাদের ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির জন্য ফ্রিল্যান্সার ভাড়া করে থাকে।

একটি পরিসংখ্যান এর হিসাব করা দেখা যে শুধু মাত্র আমেরিকাতে একজন ফ্রিল্যান্স ভিডিও এডিটরের প্রতি বছরের আয় প্রায় ৭২ হাজার মাকিন ডলার। অপরদিকে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে এর পরিমাণ হবে প্রায় 1.2 লক্ষ ডলারের বেশি হয়েছে।

৪. মার্কেটিং

এই নামটার মাঝে কিছু আজাইরা পেচ আছে। আপনি হয়তো নাম টা শুনের ভাববেন। এত্তো কষ্টে করে শেষে কিনা দোকান দিবো। আরে ভাই দারান মার্কেটিং মানে দোকানে দোকানে গিয়ে পণ্য বিক্রি করা নয়। এটা মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত কিছু বিষয়, বিষয়গুলো হল –

  • স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • ইউটিউব মার্কেটিং
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • এসইও
  • ব্রান্ড স্ট্রাটেজি
  • মার্কেটিং কনসালটেন্ট

এই মার্কেটিং করা কিন্তু প্রোগ্রামিংয়ের শিখার মত তেমন কঠিন কোন বিষয় নয়। মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেক বেশি। কেননা প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট লাগে। তাই, এই সেক্টরে কাজের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি চাইলে একটি ওয়েবসাইট খুলে আজিই মার্কেটিং করা শুরু করতে পারেন।

৫. রাইটিং

রাইটিং শব্দ শুনেই হয়তো আপনি ভাবলে ধুর ধুর কি আজাইরা, একদম যা তা ব্যাপার। তবে রাইটিং শব্দ শুনে নাক সেঁটকানোর মতো কিছুই কিন্তু নেই। নিয়ম মাফিক আমার এটাকে 1 নাম্বারে দেয়া উচিত ছিল। কারন রাইটিং মানে কেবল লেখালিখি নয়। একেকটা আর্টিকেল লেখার একজন রাইটার কে কিওয়ার্ড রিসার্চ থেকে শুরু করে পাঠকের চাহিদার সকল দিকগুলো বিবেচনায় করে মাথায় রাখতে হয়। এছাড়া, কোম্পানির ব্রান্ডিং এবং লেখাকে অনেক কষ্ট করে এসইও ফ্রেন্ডলি করতে হয়।

যদিও বর্তমানে এই রাইটিংয়ের উপর ফ্রিল্যান্সিং জব পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে, ভাল লেখক হলে আপনাকে জব লেস থাকতে হবে না। আপনি চাইলে নিজস্ব ব্লোগ খুলে সেই ব্লগে লিখেও মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করতে পারবেন।

রাইটিংয়ের আরেকটি সেরা বিভাগ হল কপিরাইট রাইটার। এ ধরনের রাইটার ব্যক্তিরা সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের যেমন পেজ, ডিসক্রিপশন, প্রোডাক্ট, সার্ভিসের লেখাগুলো লিখে থাকে। এদের প্রতি ঘণ্টার রেট প্রায় 200 ডলার। আপওয়ার্কে এরকম সেরা অনেক কপিরাইটার রয়েছে। খেয়াল করে দেখুন, এদের প্রতি ঘণ্টার রেট সর্বনিম্ন 15 ডলার এবং সর্বোচ্চ প্রায় 150 ডলার।

৬. ভয়েস প্রদান

শুলেই একটু নড়েচড়ে বসছেন তাই না। আসলে আপনার গলার কণ্ঠ যদি শ্রুতিমধুর হয়, তাহলে এই কাজটি আপনার জন্য অনেক কাজের হবে। বিভিন্ন মাকেট প্লেসে ভিডিও কন্টেন্টের মত অডিও কন্টেন্ট এর এখনো বেশ চাহিদা সম্পন্ন। বেশ কিছু সেক্টরে ভয়েসের প্রয়োজন হয়।

যেমন –

  • টেলিভিশন / চলচ্চিত্র / শর্ট ফিল্মের চরিত্রে
  • রেডিও বিজ্ঞাপণ
  • অডিও বুকস
  • পডকাস্ট
  • গেম
  • ইভেন্টের ধারাভাষ্য

আপনি হয়তো জেনে অবাক হয় যাবেন যে একজন ভাল মানের ভয়েস প্রদানকারী ব্যক্তি প্রায় 1 হাজার ডলার চার্জ প্রদান করে থাকে প্রতি ঘণ্টার ভয়েজ প্রদান এর জন্য। এই খাতে আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের কাজ করেন, তাহলেও আপনি প্রতিমাসে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।

তবে এই সেক্টরে কিছু সমস্যা ও আছে। এই সেক্টরে কাজ করতে হলে প্রথম দিকে আপনাকে অনেক টাকা ইনভেস্ট করতে হবে। আমি আপনাকে ইনভেস্ট করতে বলছি না। সম্পুর্ন নিজ দায়িত্বে ইনভেস্ট করবেন। প্রধানত খুব ভাল মানের রেকর্ডিং স্টুডিও এবং ট্রেনিং প্রাপ্ত দের এই কাজের দিকে এগানো উচিত।

৭. কোচিং

কি ব্যাপার মাথায় ঢুকলো না নাকি। আরে থামেন আমি বুজিয়ে দিচ্ছি। এই কোচিং হলো ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ের আরেকটি মাধ্যম। আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ, সে বিষয়ে অন্যকে শিক্ষা দিতে পারেন। শেখানোর বিষয় অনেক কিছু হতে পারে।

যেমন –

  • স্কাইপের মাধ্যমে গান শেখানো।
  • বিভিন্ন বিদেশী ভাষা শেখানো।
  • ক্লাসের হোম-ওয়ার্ক সমাধান ইত্যাদি।
  • ডায়েট কন্ট্রোল ও নিউট্রেশন প্লান।

আপনি সকল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট-প্লেসগুলো একটু ঘুড়ে দেখলেই বুঝবেন, যে মানুষ আসলে কি চাচ্ছে। মানুষের চাহিদা কোনটাতে বেশি। এমনকি অনলাইনে উপরে উল্লেখিত স্কিলগুলো শেখাতে পারবেন আপনি।

অনলাইনে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং করা। আর ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করাও রয়েছে অসংখ্য উপায় যেখান আমি খুঁজে বের করছি মোট ৭ টি ইনকামের সেরা উপায়। এই ৭ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করলাম।  সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন এবং সহজ কাজগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখন আপনার দায়িত্ব এখান থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার কোন কাজটি করতে ভালো লাগবে তা নির্বাচন করএ কাজে লেগে পড়া আপনার দায়িত্ব।

ধন্যবাদ।

Level 2

আমি আর জে রোহান। , Gaibandha। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস