আসসালামু আলাইকুম।
একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি, বলুন তো, বর্তমানে গুগল ক্রোমের পর কোন ব্রাউজার সবচেয়ে জনপ্রিয়? ফায়ারফক্স? নাহ, উত্তর ভুল! আমিও জেনে বেশ অবাক হয়েছি, বর্তমানে (সেপ্টেম্বর, ২০১৭ অনুযায়ী, সূত্র: উইকিপিডিয়া) ফায়ারফক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা গুগল ক্রোম ব্যবহারকারী সংখ্যার ৬ ভাগের ১ ভাগ এবং অবস্থানের দিক দিয়ে তৃতীয়! :O গুগল ক্রোমের ব্যবহারকারী সংখ্যা যেখানে মোট ব্যবহারকারী সংখ্যার ৫৭%, সেখানে ফায়ারফক্স ব্যবহার করে মাত্র ৯.১%। ১৩.২% নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আপেলের থুক্কু অ্যাপলের সাফারি। ২০১০ সালের জানুয়ারীর পর থেকেই ফায়ারফক্সের জনপ্রিয়তা ক্রমেই হ্রাস পেয়েছে। তখন ক্রোমের মাত্র ৬.৪%, আর ফায়ারফক্সের? ৩২.৯%। তখন অবশ্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারই ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়, ব্যবহারকারী ছিল ৫০.৬%। তবে এরপর ক্রোমের ইউজার উচ্চহারে বেড়ে যেতে থাকে এবং বাকিরা ইউজার হারাতে থাকে।
(দ্রষ্টব্য: উপরের তথ্যগুলো মূলত W3Counter এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী উইকিপিডিয়ায় অন্তর্ভুক্ত। অতএব, তথ্য পুরোপুরি সঠিক না হওয়াই স্বাভাবিক, তবু কিছুটা ধারণা তো পাওয়া যায়ই!)
কিন্তু ক্রোমের এই সিংহাসন অটুট থাকবে কিনা তা এবার প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে নতুন ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম। এতদিন, ফায়ারফক্স ব্রাউজারটির পুরনো আমলের চেহারা, ধীর গতি আর অধিক রিসোর্স ব্যবহারের জন্য ক্রমবনআয়ে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তারা রিলিজ করেছে ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম, যেটির রয়েছে মডার্ন লুক, পূর্বের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ গতি এবং লো রিসোর্স ইউজেজ, যা বলা হচ্ছে গুগল ক্রোম অপেক্ষা ৩০% কম। কেবল কথায় নয়, ব্যবহারকারীরাও এই নতুন সংস্করণ নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। তারা জানাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষেই এটিতে বেশ ভাল গতি পাওয়া যাচ্ছে।
আরো দেখুন: উম্মুক্ত হল উবুন্টু ১৭.১০, এসেছে অনেক পরিবর্তন!
এটি এমন এক ব্রাউজার যা গুগল ক্রোমের মডার্ন ডিজাইনকে ওল্ড বানিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় নিঃসন্দেহেই বলা যায়, পিসির জন্য এটিই এখন সবচেয়ে সুন্দর আর আধুনিক ব্রাউজার।
ফায়ারফক্সের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এর প্রাইভেসী। ফায়ারফক্সের একটা স্লোগান হল, Built for people, not for profit. গুগল ক্রোমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও, গুগলের মালিকানাধীন এই ব্রাউজারটির প্রাইভেসী নিয়ে যথেষ্টই প্রশ্ন আছে। কিন্তু ওপেন সোর্স ফায়ারফক্স এদিক দিয়ে সেরা! তাছাড়া, নিরাপত্তার দিক দিয়েও এটি যথেষ্ট উন্নত। যেটা, ফায়ারফক্স ব্যবহারের অন্যতম কারণ। এই ভার্সনেও সেই নিরাপত্তা আর প্রাইভেসী নিয়ে ফায়ারফক্স রাখবে নিশ্চিন্ত।
এই ভার্সনে ব্যবহৃত হয়েছে শক্তিশালী, নতুন ইঞ্জিন, যা দিবে ঝড়ো পারফর্ম্যান্স!
উন্নত ও দ্রুততর পেজ লোডিং আগের চেয়ে কম রিসোর্সে!
গর্জিয়াস ডিজাইন আর স্মার্ট ফিচার, আরো উন্নত ব্রাউজিংয়ের জন্য।
তবে এর আড়ালে বাদ পড়ে গেছে লিগ্যাসি অ্যাডঅন, ফলে পুরনো প্রযুক্তির কিছু অ্যাডঅন আর ফায়ারফক্স সাপোর্ট করবে না। তবে আশার কথা হল, এগুলোর অনেকগুলোই ফায়ারফক্স এক্সটেনশনে আসতে শুরু করেছে।
আরো দেখুন: গিম্প: ফটোশপের সেরা বিকল্প
ফায়ারফক্সের নতুন ডিজাইন আর ফিচার বেশ পছন্দ হয়েছে ব্যবহারকারীদের, যা গুগল ক্রোমের জন্য অশনিসংকেত। ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম মডার্ন ক্রোমকে করেছে প্রাচীন আর প্রাচীন ফায়ারফক্স এখন সর্বাধুনিক। কিন্তু তবু, ক্রোমকে ছাড়িয়ে যাওয়া ফায়ারফক্সের ক্ষেত্রে সহজ হবে না। ত্রোমের ব্যবহারকারী সংখ্যা অনেক এবং এটা গুগলের মালিকানাধীন। তবে সম্ভবত, গুগল ক্রোমকে ফায়ারফক্স কোয়ান্টাম ভালভাবেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারছে। প্রতিউত্তরে গুগল যদি ক্রোমকে আরো এগিয়ে নিতে না পারে, তাহলে তাদের পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা ভালভাবেই আছে। আর এজন্য ফায়ারফক্সকেও অব্যাহত রাখতে হবে উন্নতির ধারা। তবে গুগলও নিশ্চয়ই চেষ্টায় ক্রুটি করবে না। তাই এই প্রশ্নের উত্তর জানতে তাকিয়ে থাকতে হবে ভবিষ্যতের দিকে!
আরো দেখুন: প্রকাশিত হল উবুন্টু ১৮.০৪ এর কোডনেম ও রিলিজ ডেট!
আল্লাহ হাফেজ!
আমি তাহমিদ হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 288 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।