বাংলাদেশে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ফোরজি সেবা চালু হচ্ছে না। চালু না হওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ফোরজি সম্পর্কিত বিটিআরসি প্রদত্ত নীতিমালার কিছু বিষয় নিয়ে মোবাইল অপারেটরদের আপত্তির সুরাহা না হওয়ায় ফোরজি নীতিমালা বা গাইডলাইনটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সরকারী সূত্রে জানা গেছে, বিটিআরসি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নির্দেশে দেশীয় মোবাইল ফোন অপারেটরদের উত্থাপিত দাবীসমূহ বিচার বিশ্লেষণ করে ফোরজি নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন এনেছে। এখন নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট উত্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেয়ার পর মোবাইল ফোন অপারেটরদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরী কমিশন (বিটিআরসি) তরঙ্গ নিলাম আহবান করবেন। এ জন্য বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন। যদিও ডাক ও টেলিযোগযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বরাবরই বলে আসছিলেন এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ফোরজি চালু হবে।
তাছাড়া তারানা হালিম সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে যান বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোথা থেকে উৎক্ষেপন করা হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে। এজন্য নীতিমালাটি চূড়ান্ত করতে বেশ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সমস্ত জটিলতা ও প্রক্রিয়া শেষ করতে করতেই এ বছর চলে যাবে। তাই আগামী বছর জানুয়ারী কিংবা ফেব্রুয়ারীর আগে ফোরজি সেবা চালু হবার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না বিটিআরসি কর্মকর্তারা। অর্থাৎ গ্রাহকগণ ফোরজি সেবা পাবেন আগামী ফেব্রুয়ারীরর পর। উল্লেখ্য যে, যে নীতিমালাটি নিয়ে এতো বিতর্ক সেই নীতিমালাটি বিগত ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে গৃহীত হয়েছিল।
সংশোধিত নীতিমালায় কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে, সে সম্পর্কে তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেছেন, নীতিমালায় বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে নীতিমালাটির ব্যাপারে মোবাইল অপারেটররা ২৪ টি দাবী উত্থাপন করেছেন। তার ভিত্তিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এবার ফোরজি নীতিমালায় সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
*** ১ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের জন্য তরঙ্গ রুপান্তর ফি ৭.৫ মিলিয়ন ডলার নির্ধারিত ছিল। এক্ষেত্রে এখন ৩ থেকে ৫ মিলিয়ন নির্ধারনের কথা রয়েছে।
***আগে নির্ধারন করা ছিল ফোরজি লাইসেন্সের জন্য আবেদনপত্র ফি ৫ লাখ টাকা, লাইসেন্স অধিগ্রহণ ফি ১৫ কোটি টাকা এবং বাৎসরিক লাইসেন্স নবায়ন ফি ৭.৫ কোটি টাকা মোবাইল অপারেটরগণ পরিশোধ করবেন। এর মধ্যে সংশোধিত নীতিমালায় লাইসেন্স অধিগ্রহণ ফি ১০ কোটি টাকা এবং বাৎসরিক লাইসেন্স নবায়ন ফি ৫ কোটি টাকা মোবাইল অপারেটরগণ পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছে।
*** মোবাইল অপারেটরদের লাইসেন্সের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে ১৫০ কোটি টাকা।
***১৮০০ ব্যান্ডে প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম বা তরঙ্গের জন্য ভিত্তি মূ্ল্য আগেরটাই স্থির আছে, এ ক্ষেত্রে দিতে হবে ৩০ মিলিয়ন ডলার।
***৯০০ ব্যান্ডে প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম বা তরঙ্গের জন্য ভিত্তি মূ্ল্য ১০ মিলিয়ন ডলার থেকে এখন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মিলিয়ন ডলার।
চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোরজি চালু হ্ওয়া নিয়ে সারা বছরই ব্যাপক উন্মাদনা ছিল সরকারী মাধ্যমে, মোবাইল অপারেটর ও গ্রাহকদের মধ্যে। ডিসেম্বরে চালু হবে এ খবরে রবি- এয়ারটেল ও গ্রামীন ইতিমধ্যেই গ্রাহকদের মোবাইল সিম পরিবর্তন করে ফোরজি সিম দেয়া শুরু করেছে। এখন দেখা যাক সত্যিকার অর্থে গ্রাহকরা কবে থেকে ফোরজি সেবার আওতায় আসেন। যদিও থ্রিজির সত্যিকার স্পিড না পাওয়ায় ফোরজি সেবা দ্বারা কতটুকু লাভবান হবেন সে ব্যাপারে গ্রাহকদের মধ্যে বেশ সংশয় ও বিতর্ক রয়েছে।
আজ বিদায় নিচ্ছি। সামনে আবার নতুন কোনো টিউন নিয়ে হাজির হওয়ার প্রত্যাশা রাখছি। প্রযুক্তি বিষয়ক খবরাখবর জানতে সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন এখানে
আমি মোঃ তৌফিক রায়হান ভূঁইয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, আমি মোঃ তৌফিক রায়হান ভূঁইয়া।আমি বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ বাংলা প্রযুক্তির সোশ্যাল নেটওয়ার্কের এর সাথে যুক্ত হয়েছি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করতে। আর যতটুকু জানি তা সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে।