লিংক নিরাপদ কিনা তা যাচাই করার সেরা ৫ টি সাইট!

টিউন বিভাগ ইন্টারনেট
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

যারা ফেইসবুক বা অন্য যেকোন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন তারা কখনও ইনবক্সে লিংক পান নি এমন কখনও হয় নি। আর আমরা যারা প্রযুক্তি নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকি তারা তো একরকম এই লিংক দেয়া-নেয়া নিয়েই পড়ে থাকি। বন্ধু ল্যাপটপ কিনবে। আপনার কাছে পরামর্শ চাচ্ছে। ধরিয়ে দিলেন কয়েকটি সেরা কনফিগারেশনের ল্যাপটপের কিছু লিংক। ক্যামেরার ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটে। শুধু তাই নয় স্মার্টফোনসহ যত ইলেকট্রনিক পণ্য রয়েছে সকল ক্ষেত্রেই আমরা লিংক প্রদান করে থাকি। ব্যাপারটা বেশ সুবিধাজনক মনে হচ্ছে, তাই না?

কিন্তু না। এর বাইরেও লিংক নিয়ে বেশ জটিলতা আছে। এই লিংকই অনেক সময় স্পামিং ও স্ক্যামিং এর কাজে ব্যবহার হয়।

ধরুন, কোনো হ্যাকার আপনার কোনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে চায়। সে আপনাকে ইনবক্সে একটা লিংক দিলো। আর আপনি সেটাতেই ক্লিক করলেন। এভাবে আপনি নিজের অ্যাকাউন্ট হারাতে পর্যন্ত পারেন। হ্যাকাররা অনেক শক্তিশালী হয়ে থাকে।

এক্ষেত্রে লিংক দুইভাবে পাঠানো হয়।

এক, ওয়েবসাইটের কোনো এক পেইজের হুবহু বড় লিংক পাঠানো হয়। এখানে বেশ কয়েকটি স্ল্যাশ (/) থাকে যা দিয়ে মেইনপেজ ও সাবপেইজগুলো আলাদা করা থাকে। আবার, ওয়েব অ্যাড্রেসটা ছোট করেও পাঠানো যায়।

অ্যাড্রেস ছোট করে পাঠালে যে জটিলতাটা হয় তা হলো, আপনার বোঝার কোনো উপায় থাকবে না যে এটা কোনো নিরাপদ ওয়েবসাইট নাকি আপনি ম্যালওয়্যার বা ম্যালিসিয়াস দ্বারা আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন। আর ঠিক একারণে এসব সাইটে ঢোকার আগে ইউ আর এল-গুলো চেক করার প্রয়োজন পড়ে যে সেগুলো সত্যই নিরাপদ কোনো ওয়েবসাইট কিনা।

হ্যাঁ বন্ধুরা, আজকে আপনাদের সেরকমই কিছু সাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো যেগুলো দিয়ে আপনি  অনায়াসে যেকোন লিংক পরীক্ষা করতে পারবেন। এর মাধ্যমে স্পামিং, স্ক্যামিং অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১. এ ভি জি থ্রেটল্যাবস (AVG Threatlabs)

এটি হলো অনিরাপদ লিংকগুলো চেক করার জন্য সেরা একটি টুল। এটি যেকোন লিংক যাচাই করতে পারে যে ওয়েবসাইটির লিংকটিতে কোনো ম্যালওয়্যার আছে কিনা। আপনাকে শুধু একটিমাত্র কাজ করতে হবে। আর তা হলো ইউ আর এল'টি বসাতে হবে এবং রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

অনলাইন সিকিউরিটির জগতে এ ভি জি বেশ বড় একটি নাম এবং খুবই সুপরিচিত একটি নাম। আর এভাবেই তারা তাদের নাম ধরে রেখেছে। এর রেজাল্টে আপনি কোনোরকম চিন্তা ছাড়াই ভরসা করতে পারেন। এছাড়াও এদের ভিতরে আরো অনেক অপশন আছে যার মাধ্যমে আপনি অনেক ওয়েবসাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন।

২. ক্যাস্পারস্কি ভাইরাস ডেস্ক (Kaspersky VirusDesk)

আপনি যদি কোনো লিংক সম্পর্কে বিশ্বের অন্যতম সিকিউরিটি ফার্ম ক্যাস্পারস্কি'র কাছ থেকে জানতে চান তাহলে আপনি অনায়াসে তাদের ক্যাস্পারস্কি ভাইরাস ডেস্ক এর উপর নির্ভর করতে পারেন। এটি দুইভাবে কাজ করে থাকে। এটি শুধু সন্দেহজনক ওয়েবসাইটই পরীক্ষা করে না, অনেক সন্দেহজনক ফাইলও স্ক্যান করে। আর এটি খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়।

আপনি যদি ক্যাস্পারস্কি ভাইরাস ডেস্ক ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে আপনার ইউ আর এলটি বসিয়ে স্ক্যান করতে হবে। খুবই দ্রুতই আপনি জানতে পারবেন ইউ আর এল টি নিরাপদ কিনা। এমনকি কোনো ইউ আর এল সম্পর্কে আপনার সন্দেহ এরপরেও থেকে গেলে, আরো গভীরভাবে স্ক্যান করারও অপশন পাবেন। এমনকি খোঁজার পর আপনাকে ফলাফলটা মেইল করে জানাবেও।

৩. স্ক্যান ইউ আর এল (ScanURL)

সন্দেহজনক লিংক চেক করার আরো একটি উপায় হলো স্ক্যান ইউ আর এল। এটি একটি নিরাপদ এইচ টি টি পি এস কানেকশানের মাধ্যমে আপনার অনুসন্ধানকে সম্পন্ন করে থাকে। আর এই সাইটটি একটি স্বাধীন ওয়েবসাইট। যদিও সার্চ রেজাল্ট স্ক্রিনটিতে বিজ্ঞাপণ থাকে, তারপরও এর ফলাফলগুলো সত্যিই দারুণ। যাইহোক, ফলাফলগুলো থেকে আপনি সহজেই জানতে পারবেন লিংকটিকে প্রবেশ করা আপনার উচিত হবে কিনা। সাইটটি অনিরাপদ হলে আপনাকে সেখানে আপনাকে প্রবেশ না করার জন্য বার্তা দেবে। অনেকগুলো সাইটই এভাবে চেক করতে পারবেন। এমনকি খুব সহজেই রেজাল্ট লিংক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।

৪. ফিশট্যাংক (PhishTank)

অনান্য সাইট যেখানে ম্যালওয়ার আছে কিনা সেটা যাচাই করবে, ফিশট্যাংক যাচাই করে সাইটটি ফিশিং সাইট কিনা। কিন্তু কাজের প্রক্রিয়া সেই আগের গুলোর মতোই। কোনো ইউ আর এল ফিশিং মনে হলে সেটি প্রবেশ করান আর চেক করুন। যদি সাইটটি আগেই তাদের লিস্টে থাকে তাহলে দ্রুতই ফলাফল পাবেন। আর তা না হলে আপনাকে একটি ট্র্যাকিং নাম্বার দেয়া হবে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে ফিশিং লিংক এত দ্রুত চেক করা বেশ কঠিন। কারণ, একইসাথে এটি ম্যালওয়্যারও চেক করে। এটা আসলে একজনকে ফিশিং সাইট চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। কারণ, ফিশিং সাইট হিসেবে কোনো লিংক সন্দেহ হলে, এর সম্পর্কে কিছু জ্ঞান আগেই আপনার থাকবে। আর এই সাইট আপনাকে সেই তথ্যটাই নিশ্চিত করবে। আর আপনি যদি হাতখোলা স্বভাবের হন, তাহলে সাইটিতে কনট্রিবিউটও করতে পারবেন।

৫. গুগল ট্রান্সপ্যারেন্সি রিপোর্ট (Google Transparency Report)

যদিও গুগল বিশ্বের বড় কোনো প্রাইভেসি সচেতন প্রতিষ্ঠান না, তারপরও লিংক চেক করার জন্য এদেরও একটি সার্ভিস চালু আছে।  এটিতেও আপনি শুধুমাত্র ইউ আর এল বসালেই আপনি তা সম্পর্কে ফলাফল পাবেন। যার ফলে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন সাইটটিতে ঢোকা আপনার উচিত হবে কিনা।

শুধু ম্যালওয়্যারই নয়, একই সাথে গুগল আপনাকে ফিশিং সাইট সম্পর্কেও তথ্য দেবে। পরিশেষে, টেকটিউনস হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার এক সুবিশাল প্ল্যাটফর্ম। প্রতিনিয়তই থাকবেন নতুন নতুন জ্ঞানের মধ্যে। জানবেন অজানাকে। তবে হ্যাঁ। শুধু জেনেই বসে থাকবেন না। এই জ্ঞানগুলো ছড়িয়ে দিন তাদের নিকট যাদের কাছে এই টিউনগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয় না। জ্ঞান নিজের কাছে রাখার জিনিস না। ছড়িয়ে দিন আশেপাশে যারা আছে সবার মাঝে। প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন। টেকটিউনসের সাথে থাকুন।

আজকের মতো এ পর্যন্তই। সামনে আবারও হাজির হবো নতুন কোনো তথ্য নিয়ে। আর টিউনটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। টিউন বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে টিউমেন্ট বক্সে প্রশ্নটি করুন। এছাড়াও ফেইসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

ফেইসবুকে আমি: Mamun Mehedee

 

Level 2

আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস