সাধারনত আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই মনে করি যে ব্লুটুথ শুধুমাত্র একটি ধীরগতির ফাইল ট্রান্সফার মাধ্যম যার মাধ্যমে একটি ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসে ছবি, গান, ভিডিও বা অন্য কোন ফাইল শেয়ার করা যায় এবং কোন ওয়্যারলেস স্পিকার বা হেডফোনে মিউজিক প্লে করা যায়। এছাড়া ব্লুটুথের সাহায্যে স্মার্টওয়াচের মত ডিভাইসে নোটিফিকেশন শেয়ারও করা যায়। কিন্তু ওয়েব ব্লুটুথ একটু অন্য ধরনের ব্লুটুথ। এই ওয়েব ব্লুটুথ নিয়েই আজকের টিউনটি। চলুন জানা যাক ওয়েব ব্লুটুথ সম্পর্কে।
সহজ কথায় বলতে হলে, ওয়েবে যে ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয় সেটাই ওয়েব ব্লুটুথ। ওয়েব ব্লুটুথ ফিচারটি গুগল ক্রোম ব্রাউজারে আগে থেকেই আছে। এই ফিচারটি ব্যবহার করে আপনি গুগল ক্রোমে ভিজিট করা কোন ওয়েবসাইটে আপনার ডিভাইসের ব্লুটুথ ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন।
আপনার ভিজিট করা কোন ওয়েবসাইট আপনার ডিভাইসের ব্লুটুথ ব্যবহার করবে এটা শুনলে প্রথমেই যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটি হচ্ছে আপনার প্রাইভসি এবং সিকিউরিটি। কিন্তু ওয়েব ব্লুটুথে এই ধরনের কোন ইস্যু নেই। কারন, কোন ওয়েবসাইট যদি আপনার ডিভাইসের ব্লুটুথ ব্যবহার করতে চায় তাহলে প্রথমেই ওয়েবসাইটটি আপনার কাছে ব্লুটুথ ব্যবহারের পারমিশন চাইবে এবং আপনি যদি এলাউ করেন তবেই ওয়েব ব্লুটুথ কাজ করবে। তাই যেসব ওয়েবসাইটকে আপনি ট্রাস্ট করেন না সেসব ওয়েবসাইটে আপনি সহজেই ওয়েব ব্লুটুথ ফিচারটি অফ করে দিতে পারবেন।
তো কি কি কাজে আপনি ওয়েব ব্লুটুথ ব্যবহার করবেন ? বা কি কি কাজ আপনি সহজে করতে পারবেন ওয়েব ব্লুটুথ দিয়ে ? সত্যি কথা বলতে, এটি ব্যবহার করে আপনি অনেক কিছুই করতে পারবেন। আবার চাইলে কিছু অসাধারন কাজও করতে পারবেন। কেমন হয় যদি আপনার বাসার লাইট বাল্বগুলো আপনার চারপাশের আবহাওয়ার সাথে মিল রেখে তাদের লাইট এর রঙ পরিবর্তন করে ? তাও শুধুমাত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ব্রাউজারের একটি এপিআই ব্যবহার করে ? অথবা একটি নতুন মুভির ওয়েবসাইট আপনার ব্লুটুথ স্পিকারের সাথে কানেক্টেড থেকে আপনার মুভি দেখার সময় আরো ইমারসিভ সাউন্ড প্রোডিউস করে আপনার মুভি দেখার মজা আরো বাড়িয়ে দেয় ? এই সব ধরনের আইডিয়াই ওয়েব ব্লুটুথের কনসেপ্ট।
এছাড়া আরো ভাল একটি ব্যবহারিক উদাহরণ দেয়া যায়। বিভিন্ন ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তাদের ভিজিটরদেরকে সরাসরি ওয়েবক্যামের মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে তাদের শারীরিক সমস্যা বা অসুস্থতা নিয়ে কথা বলার সুবিধা দেয়। এই বিষয়টিতে ওয়েব ব্লুটুথ অনেক বেশি হেল্পফুল হতে পারে। ওই ওয়েবসাইটটিকে আপনি ব্লুটুথ ব্যবহার করার পারমিশন দিলে আপনি আপনার স্মার্টওয়াচ বা ফিটনেস ব্যান্ড এর ব্লুটুথ ব্যবহার করে আপনার হার্টরেটের অবস্থা জানাতে পারবেন ডাক্তারকে অথবা একটি ব্লুটুথ থার্মোমিটার ব্যবহার করে আপনার দেহের তাপমাত্রাও জানাতে পারবেন। এই ধরনের আরো বিভিন্ন ধরনের কাজকে আরো অনেক বেশি সহজ করবে ওয়েব ব্লুটুথ।
ওয়েব ব্লুটুথ এখনই গুগল ক্রোম ব্রাউজারের একটি বড় ফিচার যা এন্ড্রয়েড (৬.০+), ম্যাক ওএস এবং ক্রোম ওএস ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে সহজেই। যদিও এই ফিচারটি এখনো পর্যন্ত সবক্ষেত্রে ব্যবহার করার মত উপযুক্ত হয়ে ওঠেনি। আশা করা যায় খুব দ্রুত ওয়েব ব্লুটুথের সম্পূর্ণ ডেভেলপমেন্ট শেষ হবে এবং এটা সবক্ষেত্রে ব্যবহারের মত উপযোগী হয়ে উঠবে। আইওএস এবং উইন্ডোজ ডিভাইসে এখনও ওয়েব ব্লুটুথের ফিচারটি ডেভেলপ করা হয়নি। আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যেই উইন্ডোজ এবং আইওএসেও এই ফিচারটি দেখা যাবে।
ওয়েব ব্লুটুথ এর এক্সপ্লেনেশন এবং আরও অনেক সুবিধা নিয়ে গুগলের নিজের তৈরি করা এই অফিশিয়াল ভিডিওটি দেখতে পারেন বিষয়টি আরো ভালভাবে বোঝার জন্য।
তো এই ছিল ওয়েব ব্লুটুথ এবং এর সুবিধা। আজকের মত টিউনটি এখানেই শেষ করছি। আশার করি টিউনটি আপনাদের ভাল লেগেছে। টিউন সম্পর্কে কোন ধরনের কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। ভাল থাকবেন।
You can contact me on : Facebook
আমি সিয়াম একান্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 40 টি টিউন ও 82 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সিয়াম রউফ একান্ত। অনেকে সিয়াম নামে চেনে আবার অনেক একান্ত নামে। যাইহোক, পড়াশুনা একেবারেই ভাল লাগেনা আমার। ভাল লাগার মধ্যে দুইটা জিনিস , ফটোগ্রাফি আর প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির প্রতি ভাললাগা থেকেই টেকটিউন্স চেনা এবং টেকটিউন্সে আইডি খোলা। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়......