টরেন্ট তো আমরা সবাই চিনি। প্রত্যেকদিন বিভিন্ন টরেন্ট সাইট থেকে বিভিন্ন সফটওয়্যার, গেমস, মুভি, গান, ভিডিও আরো অনেক কিছুই ডাউনলোড করি। আমরা অনেকে আবার টরেন্টের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে, কোনকিছু ডাউনলোড করার কথা শুনলে প্রথমেই আমরা টরেন্ট সাইটে সার্চ করি (যেটা আমি সবসময় করি)।
আমরা তো বিভিন্ন টরেন্ট সাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড করি যেমন, 1337x, The Pirate Bay, CrazyHD, Kickass Torrents (RIP) ইত্যাদি আরো অনেক অনেক সাইট, যদিও আমার পারসোনাল ফেভারিট হচ্ছে 1337x।
যাইহোক, আমার আজকের টিউনটি এই টরেন্ট বিষয়েই। নির্দিষ্ট করে বলতে হলে, প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকার নিয়ে। অনেকেই হয়ত জানেন এটার বিষয়ে, আবার অনেকে কিছুই জানেন না। যারা জানেন না, তারা এই টিউনটি সম্পূর্ণ পড়বেন।
আর যারা আগে থেকেই জানেন তারাও ইচ্ছা হলে পড়ে দেখতে পারেন। তো আর ভূমিকা না করে এবার শুরু করা যাক টিউনটি।
প্রথমে জানা যাক বিটটরেন্ট ট্র্যাকার জিনিসটি আসলে কি। এরপরে আসা যাবে প্রাইভেটের ব্যাপারে। বিটটরেন্ট ট্র্যাকার হচ্ছে একটি সার্ভার যেটি টরেন্ট ডাউনলোড এবং আপলোড এর মধ্যে সম্পর্কটি নিয়ন্ত্রন করে। সাধারন বিটটরেন্ট ট্র্যাকার এবং প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকারের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, প্রাইভেট ট্র্যাকাররা নিয়ন্ত্রন করে যে কে কে তাদের এই সার্ভার ব্যবহার করবে আর কে কে করবে না। আপনি হয়ত দেখে থাকবেন যে কিছু কিছু টরেন্ট সাইটে আপনি সরাসরি গিয়ে ফাইল সার্চ করে সাথে সাথেই ডাউনলোড করতে পারেন। এক্ষেত্রে আলাদা কোন পারমিশন বা আলাদা কোন স্টেপের দরকার হয়না। আর কিছু কিছু টরেন্ট সাইটে আপনি সরাসরি গিয়েই ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন না। যেসব সাইটে আপনি সরাসরি গিয়ে ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন না, এটাই হচ্ছে প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকার।
এসব সাইট থেকে আপনাকে কোন টরেন্ট ডাউনলোড করতে হলে আপনাকে সাইটটির ফাইলগুলো এক্সেস করার জন্য আলাদা পারমিশন বা আলাদা ইনভাইটেশনের প্রয়োজন হবে। এই ইনভাইটেশনটি আপনাকে করবে ওই সাইটের অন্যান্য ইউজাররা বা মেম্বাররা। ইনভাইটেশন না পেলে আপনি কিছুতেই ওই টরেন্ট সাইটের কোন ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন না।
এসব সার্ভার থেকে ফাইল ডাউনলোড করতে হলে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে ফাইল ডাউনলোড করতে হয়। যেমন :
এসব সাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড করার সময় আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে আপনার আপলোড-ডাউনলোড Ratio। অর্থাৎ, অন্যান্য টরেন্ট সাইটের মত আপনি শুধুমাত্র টরেন্ট ডাউনলোড করে ডিলিট করে দিতে পারবেন না। আপনাকে ফাইলটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফাইলটি রেখে দিতে হবে এবং সিড করতে হবে যাতে অন্যান্য ইউজাররা ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারে এবং আপনার Ratio হাই থাকে। এই ধরনের অনেক টরেন্ট সাইট কম Ratio এর ইউজারদেরকে নির্দিষ্ট সময় পড়ে ব্যানও করে দিতে পারে।
এই টরেন্ট সাইটে যদি আপনি কাউকে ইনভাইট করতে চান সেক্ষেত্রেও আপনাকে কিছু রুলস মানতে হবে। যেমন, আপনি যাকে ইনভাইট করবেন সে যদি এই সাইটটির কোন ধরনের ক্ষতিসাধন করে বা সার্ভারে কোন আপত্তিকর কনটেন্ট আপলোড করে, তাহলে তার কিছুট ইফেক্ট আপনার ওপরেও পড়তে পারে। আপনার ইনভাইট করা ইউজার যদি কোন খারাপ কাজ করে, তবে অনেকক্ষেত্রে আপনাকেও ব্যান করা হতে পারে।
এই ধরনের টরেন্ট সাইটে আপনি চাইলেই নিজের ইচ্ছামত সবকিছু আপলোড করতে পারবেন না। যেহেতু এটি একটি বৃহৎ কমিউনিটি, তাই আপনাকে এখানে ফাইল আপলোড করার সময় অবশ্যই ফাইলের কোয়ালিটি, ফাইলের মান, নিরাপত্তা এবং ফাইলটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সিড করা নিশ্চয়তা ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করেই আপলোড করতে হবে।
এসব রুলস প্রত্যেকটি প্রাইভেট ট্র্যাকারের ক্ষেত্রে একই এমনটা নয়। বিভিন্ন প্রাইভেট টরেন্ট সাইটের জন্য বিভিন্ন রুলস রয়েছে যা প্রত্যেকটি সাইটের জন্য নির্দিষ্ট। উপরে যে তিনটি রুলের কথা লিখলাম সেগুলো এই ধরনের সাইটগুলোর কিছু সাধারন নিয়ম-কানুন। আর প্রত্যেকটি সাইট তাদের এর নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস। অর্থাৎ কেউ এই নিয়ম-কানুন না মানলে তারা প্রত্যেককেই সাইট থেকে ব্যান করে দিতে পারে।
এখন আপনি যেহেতু জানেন যে প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকার জিনিসটি কি, এখন হয়ত আপনি ভাবছেন যে আপনার কি এটা ব্যবহার করা উচিৎ? আর ব্যবহার করলেও বা আপনি কি কি সুবিধা পাবেন? তো, এই ধরনের প্রাইভেট টরেন্ট সাইট ব্যবহার করলে আপনাকে যেমন বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে, ঠিক তেমনি আপনি বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত সুবিধাও পাবেন এসব সাইটে যেগুলো আপনি অন্যান্য টরেন্ট সাইটে পাবেন না। সাধারনত আপনি এই ধরনের সাইটে কি কি সুবিধা পাবেন সেগুলো হচ্ছে ঃ
এসব সাইটে আপনি আপনি যেসব টরেন্ট ফাইল পাবেন সেসব সাধারনত অন্যান্য সাধারন টরেন্ট সাইটের থেকে আরো অনেক উন্নতমানের এবং নিরাপদ। এসব সাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড করার সময় সাধারনত আপনাকে ফাইলের কোয়ালিটি এবং নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোন চিন্তা করতে হবেনা। যদিও সবসময় এটার ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়।
এসব সাইটের রুলসের কারনে এবং ফাইলের কোয়ালিটির কারনে অনেক বেশি ফাইল ডাউনলোড করা হয়। এবং প্রত্যেকটি ইউজার তাদের Ratio বাড়ানোর জন্য প্রত্যেকটি ফাইলই অনেক সময় ধরে সিডিং করে। তাই প্রায় অধিকাংশ ফাইলেরই সিডার এবং লিচার অনেক বেশি থাকে। তাই ফাইল ডাউনলোড করার সময় আপনি সাধারনের থেকে অনেক বেশি ডাউনলোড স্পিড পাবেন। অনেকসময় আপনি অবিশ্বাস্য রকমের ফাস্ট ডাউনলোড স্পিডও পেতে পারেন যদিও প্রত্যেকবার তার ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা নেই।
যেহেতু এই ধরনের টরেন্ট সাইটের ইউজার তুলনামুলকভাবে কম এবং ইনভাইট সিস্টেম হওয়ার কারনে এই কমিউনিটির প্রত্যেকটি ইউজার একে অপরের সাথে যথেষ্ট বন্ধুসুলভ এবং হেল্পফুল। অন্যান্য ইউজারদেরকে সাহায্য করা, ফাইল সিড করে রাখা এবং প্রশ্নের উত্তর দেয়া এসব দিক থেকে এই কমিউনিটির প্রত্যেক ইউজার যথেষ্ট হেল্পফুল।
আপনার যদি টরেন্ট ডাউনলোড করার সময় এই ধরনের সুবিধাগুলোর দরকার হয়, তবে আপনার জন্য প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকার ইউজ করা সবথেকে ভাল হবে।
তো এই ছিল প্রাইভেট বিটটরেন্ট ট্র্যাকার এবং এর সুবিধা অসুবিধা। আশা করি এই টিউনটি থেকে কেউ নতুন কিছু জানতে পারেছেন। আজকের মত টিউনটি এখানেই শেষ করছি। টিউন সম্পর্কে কোন ধরনের কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। ভাল থাকবেন।
আমি সিয়াম একান্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 40 টি টিউন ও 82 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সিয়াম রউফ একান্ত। অনেকে সিয়াম নামে চেনে আবার অনেক একান্ত নামে। যাইহোক, পড়াশুনা একেবারেই ভাল লাগেনা আমার। ভাল লাগার মধ্যে দুইটা জিনিস , ফটোগ্রাফি আর প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির প্রতি ভাললাগা থেকেই টেকটিউন্স চেনা এবং টেকটিউন্সে আইডি খোলা। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়......
যদিও আমি পার্সোনালি টরেন্ট ইউজ করি না, তারপরেও সিয়াম সাহেব দারুণ টিউন করেছো ব্রাদার 🙂
নেক্সট টাইম টরেন্ট প্রাইভেসি অ্যান্ড সিকিউরিটি নিয়ে টিউন কামনা করছি 🙂
~ধন্যবাদ 🙂