সর্বনাশের আগেই ফেসবুকে বন্ধু হতে সাবধান ৷

‘বেশ মিষ্টি লাগছে।’
ফেসবুকে মেসেজটা পেয়ে ভালই লাগল সৃজার।
নিশ্চয়ই কিছু ক্ষণ আগে টিউন করা ‘সেলফি’র
প্রশংসা।
‘লাল জুতোটা দারুণ মানিয়েছে।’
এ বার শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত
বয়ে গেল। জুতোর কোনও ছবি তো টিউন
করেনি! মেসেজটা যে পাঠিয়েছে তার সঙ্গে
দেখাও হয়নি! তা হলে? ফেসবুকের এই ‘বন্ধু’ কি
তাকে ‘ফলো’ করছে? কিন্তু সৃজা কোথায় আছে,
সে খবর জানছে কী করে?
সৃজার সন্দেহটা সত্যি প্রমাণ হতে সময় লাগল
না। সত্যিই একজন পিছু নিয়েছিল। আর সৃজার
হালহদিশ পাচ্ছিল ফেসবুকের লোকেশন থেকে।
‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে
মেয়েদের ‘স্টক’ করা বা পিছু নেওয়ার অনেক
অভিযোগ আমরা পাই।
অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে ‘স্টক’
করার সমস্যাটা আরও প্রবল। এমনিতেই তো
অনেক চোখ তাঁদের দিকে। তার উপর সোশ্যাল
মিডিয়ায় উপস্থিতি তো এখন তাঁদের কাজেরই
একটা অঙ্গ। আমার কাছে তো ফ্যানরাই সব।
কিন্তু তাঁদেরও তো বুঝতে হবে সবার একটা
স্পেসের দরকার। অনেকে সেটা মানে। অনেকে
সেটা মানে না। তখন খুব খারাপ লাগে। ছবি
মর্ফ করে বিভিন্ন সাইটে দেওয়ার মতো জঘন্য
কাজ তো আছেই। ফেসবুক-ট্যুইটারে বাজে
বাজে টিউমেন্ট। আর এই তো দু’দিন আগে রাত
তিনটের সময় একজন পনেরো বার মিসড কল
দিল। শেষে বিরক্ত হয়ে কল ব্যাক করাতে বলল,
‘কেমন আছ?’ এটা খুব বিরক্তিকর। আমার তো
মনে হয়, যারা এটা করে তারা মানসিক ভাবেই
অসুস্থ, বলছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী মিমি
চক্রবর্তী।
মানসিক ভাবে ‘স্টকার’রা যে সুস্থ নয়, সে কথা
বলছিলেন কলকাতার মনস্তত্ত্ববিদ জয়র়ঞ্জন
রাম। তাঁর কাছেও এমন অনেক পেশেন্ট আসে,
যারা ভুগছে সেলিব্রিটি ইরোটোম্যানিয়া’য়।
বললেন, ট্যুইটার-ফেসবুকের আগে তো
সেলিব্রিটিদের এত কাছাকাছি যাওয়ার
কোনও প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু এখন চাইলেই যে
কেউ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে
কমিউনিকেট করতে পারেন। আর
সেলিব্রিটিরাও তো ফ্যানবেসের সঙ্গে
দিব্যি টুইটারে ইন্টার্যাক্ট করেন। এই
পেশাদার কথাবার্তাকে অনেক ফ্যান বড় বেশি
করে ভেবে ফেলেন। সমস্যা শুরু হয় সেখান
থেকে। আমার কাছে এক পেশেন্ট এসেছিল, যে
মনে করত তার সঙ্গে এক অভিনেতার ‘কসমিক’
যোগ রয়েছে।
সাইবার স্টকিং যদি একটা দিক হয়, তবে আর
একটা দিক হলো ‘সাইবার বুলিং’ বা সাইবার
জগতে কারওকে হয়রানি করা। তসলিমা
নাসরিন বাস্তব জীবনে যেমন হয়রানির শিকার
হয়েছেন নানা সময়ে, তেমনই তাঁকে সম্মুখীন
হতে হচ্ছে অনলাইন হয়রানিরও। আমি আর
এগুলো নিয়ে তেমন ভাবি না, জানেন।
বাস্তবেও তো এমন অনেক হয়রানির শিকার
হয়েছি। ডেথ থ্রেট পেয়েছি। ভার্চুয়াল
ওয়ার্ল্ড তো আর সমাজের বাইরে না।
সেখানেই বা পাব না কেন! এই তো ক’দিন আগে
আইএস থেকে থ্রেট পেলাম। আমি এখন ঠিক
করেছি অচেনা ব্যক্তিদের আর ফেসবুকের
লিস্টে রাখব না। নেগেটিভ জিনিসগুলো জীবন
থেকে বাদ দিলেই আসলে সমস্যার অর্ধেক
সমাধান হয়ে যায়, ফোনে বলছিলেন লেখিকা।
পুলিশও কিন্তু সেটাই বলছে। আইন যতই থাক,
নিজের সাবধানতাই সবার আগে। বেশির ভাগ
ক্ষেত্রেই এ রকম ঘটনা ঘটে সচেতনতার
অভাবে। একটা কথা মনে রাখা দরকার,
ভার্চুয়াল জগতের কাউকে বিশ্বাস করা উচিত
নয়। আপনি তো শুধু তার ছবি দেখতে পাচ্ছেন।
কিন্তু সেই প্রোফাইল পিকচারের আড়ালে
আসলে যে কে আছে, জানছেন কী করে?
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে কখনওই নিজের
ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। নিজের
প্রধান মেল আইডি, ফোন নম্বর না দিতে
পারলেই ভাল হয়। আর পরিচিত ব্যক্তি ছাড়া
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করবেন না,
জানান কলকাতার পুলিশের যুগ্ম কমিশনার
(অপরাধ) দেবাশিস বড়াল।
‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র গান ছিল না, ‘হাত
বাড়ালে বন্ধু পাওয়া যায় না/ বাড়ালে হাত
বন্ধু সবাই হয় না।’ গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের
কথাটা কিন্তু ‘ভার্চুয়াল’ জগতের ক্ষেত্রেও
সত্যি। সাবধান। ফ্রেন্ডলিস্টে ফের একবার
চোখ বুলিয়ে নেবেন নাকি! আনন্দবাজার

আরও বিজ্ঞান প্রযুত্তি সম্পর্কে টিউনস পেতে
আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থকুন ৷
আমাদের ফেজবুক পেজে এখানে ক্লিক করুন

Level 2

আমি রক স্টার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 21 টি টিউন ও 32 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস