থ্রিজি, ৪জির পর এখন চলছে ৫জি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা। মাত্র পাঁচ বছর আগে ৪জি নেটওয়ার্ক উপযোগী স্মার্টফোন বাজারে বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এখনই ওয়্যারলেস শিল্পে ৫জি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। মোবাইল ফোন অপারেটর, স্মার্টফোন চিপ নির্মাতা, নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো ৫ জি বা পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে। সিএনএন সম্প্রতি ৫জি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্মার্টফোনের পর্দায় নেটওয়ার্ক সংকেতের চিহ্ন হিসেবে ৫জি দেখার আগে ওয়্যারলেস শিল্পকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বাধা পেরোতে এবং ৫জির বিষয়টি পরিষ্কার হতে হবে। এখন পর্যন্ত ৫জি কেমন হবে, এর অর্থ কী হবে, কখন সহজলভ্য হবে—এ বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে মানুষের ভিডিও দেখার হার বাড়তে থাকায় ৫জির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন এ শিল্পসংশ্লিষ্ট গবেষকেরা। টেলিকম প্রকৌশলীরা ৫জি নিয়ে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করায় ৫জির বিষয়টি ধীরে ধীরে সামনে চলে আসছে।
৫জি কী?
ইংরেজিতে টুজি, থ্রিজি, ৪জি বা ৫জিতে ব্যবহৃত ‘জি’ অর্থ জেনারেশন বা প্রজন্ম। ৫জি হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের ওয়্যারলেস বা তারহীন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি। অবশ্য এর মান এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল অপারেটর এটিঅ্যান্ডটি নেটওয়ার্ক অপারেশনসের প্রেসিডেন্ট বিল স্মিথ বলেন, ২০১৮ সাল নাগাদ ৫জির সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হতে পারে। ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) ৫জির মান নির্ধারণ করবে। কোন প্রযুক্তিকে ৫জি বলা যাবে বা কোন বৈশিষ্ট্য থাকবে বা এর গতি কেমন হবে—এই মান তা ঠিক করবে।
তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা এখনই ৫জি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করতে পারেন। তাঁদের মতে, শক্তি সাশ্রয়ী, দ্রুতগতির ও স্মার্ট হবে ৫জি। এতে নতুন তারহীন প্রযুক্তির পণ্য বাজারে পাওয়া যাবে। এতে আরও দ্রুতগতির স্মার্টফোন, স্মার্ট বাড়িতে ব্যবহৃত পণ্য ও দীর্ঘস্থায়ী প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করা যাবে।
৫জির গতি কেমন হবে?
৪জির চেয়ে ৪০ গুণ দ্রুতগতির হবে ৫জি, যাতে থ্রিডি মুভি ৬ সেকেন্ডেই ডাউনলোড করা যাবে। ৪জিতে একটি থ্রিডি মুভি ডাউনলোড করতে ৬ মিনিট সময় লাগে। তবে পরীক্ষাগারের ফল আর বাস্তবের ফলের মধ্যে পার্থক্য থাকে। পরীক্ষাগারে ভালো ফল পাওয়া গেলেও বাস্তবে গতি অনেক কম পাওয়া যায়।
বর্তমানে ৫জি নিয়ে কাজ করছে ফিনল্যান্ডের নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান নকিয়া। নকিয়ার কর্মকর্তাদের মতে, ৫জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাস্তবে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ মেগাবিট পর্যন্ত গতি পাওয়া যেতে পারে, যা ৪জির সর্বোচ্চ গতির চেয়ে চার গুণ দ্রুত।
৫জির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হবে কম সময়ে নির্দেশ গ্রহণ করে নেটওয়ার্কে তা সম্পাদন করা। এতে দ্রুত ওয়েবসাইট, অ্যাপ, ভিডিও, বার্তা লোড ও আদান-প্রদান করা যাবে।
৫জি কীভাবে কাজ করবে
বেশ কিছু নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ৫জি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ৭৩ হাজার মেগাহার্টজের মতো তরঙ্গ নিয়ে ৫জির পরীক্ষা চালাচ্ছে। বর্তমানে মোবাইল অপারেটরদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ৭০০ মেগাহার্টজ থেকে ৩ হাজার ৫০০ মেগাহার্টজে সীমাবদ্ধ। উচ্চ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সংকেতের সুবিধা হচ্ছে এতে দ্রুতগতিতে তথ্য স্থানান্তর করা যায়। এর অসুবিধা হচ্ছে, এটি বেশি দৈর্ঘ্য অতিক্রম করতে পারে না ও দেয়ালের মতো বাধা পেরোতে পারে না। এ জন্য লাখো মিনি টাওয়ার বসানো দরকার হবে।
কবে আসবে ৫জি
৫জি নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর বাকি। তাই শিগগিরই ৫জি আসছে না। গবেষকেরা ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় উইন্টার অলিম্পিকসের সময় ৫জি নিয়ে পরীক্ষা চালাবেন। ২০২০ সাল থেকে এটি বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করতে পারে। অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল অপারেটর ভেরিজন বলছে, ২০১৭ সালের মধ্যেই তারা ৫জি আনতে পারবে। তবে ৫জি আসার আগে এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পরিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি স্মার্টফোন নির্মাতাদের সাশ্রয়ী খরচে ৫জি সংকেত গ্রহণ ও পাঠানোর উপযোগী চিপ তৈরি করতে হবে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো
ফেইসবুকে আমি
আমি বিল্লাল হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 15 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার মাথায় ত 7G র চিন্তাভাবনা কাজ করছে। হা হা হা
শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।