যদিও কেউ নিজের লজ্জার কথা জন সম্মুখ্খে বলতে চা্য় না, তার পরও না বলে পারছি না। পত্র পত্রিকা, রেডিও টিভি থেকে জেনেছি বর্তমান সরকার এই দেশকে ডিজিটাল দেশ হিসাবে গড়ে তুলবে। আবার সেই লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে আমরা এখন Qubee, Bangla Lion আর Ollo নামক তখা কথিত ওয়াইম্যাক্স সুবিধা। সম্প্রতি পেয়েছি টেলিটকের ৩জি প্রযু্ক্তি। আরো আছে- ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সরকার খুলেছে তথ্য সেবা কেন্দ্র যেখানে আমি দেখেছি – ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ফটোকপি, প্রজেক্টর আর ইন্টারনেট সেবা সহ আরো বহুবিধ সুবিধা। সত্যি ধন্য আমরা, ধন্য আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের কারিগর।
গতকাল সন্ধ্যার পর ইটালীর মিলানো তে থাকা আমার এক বন্ধু, তার ল্যাপটপের সমস্যার সমাধানের সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আমাকে ফোন করে। আমি Team Viewer নামক সফটওয়্যার দিয়ে তার ল্যাপটি বাংলাদেশ থেকে চালাই। তথন একটা ২০মেগাবাইট এর মতো একটা ফাইল ডাউনলোড দিয়ে তো আমি অবাক। আমি দেখলাম ডাউনলোড এর গতি প্রতি সেকেন্ডে ১.৬৭মেগাবাইট। মাত্র কয়েক সেকেন্ড লাগলো ফাইলটা ডাউনলোড হতে। দেখে আমি আমার চোখকেই বিশ্বাস করতে পারি নাই। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম যে এই স্পিডের ইন্টারনেট এর জন্য কতো বিল দিতে হয়। তখন সে যে উত্তর দিল তাতে আমি আকাশ থেকে পরলাম। সে বলল- এটা তার কম্পিউটারের ওয়াইফাই দিয়ে একাই কানেক্ট হয়। এটা তার নাকি সর্বনিম্ন স্পিড। আর সর্ব নিম্ন এই কারনে যে, এটা একদম ফ্রি। যদি বিল দিয়ে ব্যবহার করতো তাহলে আরো বেশী স্পিড পেত।
এখন আসি আমাদের দেশের উচ্চ গতির ইন্টারনেট এর কথা। বর্তমানে উচ্চতম গতি হলো ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট এর। তা দিয়ে ডাউনলোড দেবার আশা করলে ব্রাউজ করার আশা ছেড়ে দিতে হবে। তারপর আরো যে কত সুবিধা-অসুবিধা আছে তা হয়তো এতদিনে আপনারা সবাই জেনে গেছেন। কিন্তু একটা ব্যাপার হয়তো কেউ লক্ষ করে দেখেন নাই। সরকার এই বিষয়ে যে সমস্ত টুক-টাক আশার আলো দেখায় তা কিন্তু দেশের সবার জন্য নয়। শুধুমাত্র ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য, ঢাকার বাইরে যারা এই সুবিধা আপাদত ভোগ করছে তারা কিন্তু জেলা সদরও নয় বিভাগীয় সদর বলতে পারেন। তাহলে কি দাড়ালো , যারা বঞ্চিত তারা বঞ্চিতই রয়ে যাচ্ছে। আর যারা সুবিধা ভোগী তাদের কাছে আরো সুবিধা নিয়ে নতুন প্রযুক্তিবিদরা এগিয়ে যাচ্ছে। তার অর্থ হলো – গ্রাম বাচলে দেশ বাচবে এই কথার চাইতে সত্য হলো রাজধানী বাচলে দেশ বাচবে।
আমি ভাই নির্দিষ্ট কোন দলের লোক নয়, আর আমি শুধু এই সরকারের বিরুদ্ধে বলছি তা নয় কোন সরকারই আমাদের গ্রামের সাধারন জনগণের উন্নতি কামনা করেছে বলে আমার মনে হয় নাই। শুধু নির্বাচনে জিততে এই গ্রামের সাধারন জনগণের ভোটটা সব নেতাদের কাছে দামি বলেই এখনো হয়তো এই জনগোষ্টী বাংলাদেশের নাগরিক বলে পরিচয় দিতে পারছি। আর যদি ভোটের দরকার না হতো তাহলে যে কি হতো তা শুধু সৃষ্টি কর্তাই জানেন।
আমাদের সরকার চায় এই দেশ থেকে বেকার সমস্যা দুর করতে আর সেই লক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তলছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। কিন্তু ফ্রি ল্যান্সিং করে একজন শিক্ষিত মানুষ তার বেকারত্ব দুর করতে পারে। আর একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার দেশের প্রচলিত চাকরীর বেতনের দ্বিগুন আয় করতে পারে। তাহলে এই বিষয়টাতে কোন সরকার কেন জোর দিচ্ছে না। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ আগাতে চাইলে তাকে পড়তে হয় না না রকম সমস্যায়। আর সব চাইতে বড় যে সমস্যা তা হলো – ইন্টারনেট এর গতি। ঘৃণা করার মতো গতি আমাদের।
আমার মনে আরো অনেক ক্ষোভ আর লজ্জার কথা ছিল কিন্তু আর ভাল লাগতেছে না। তাই নিচের লাইনগুলো শুন্য করে রাখলাম। আশা করি আপনারা আমার চাইতে বেশি বুদ্ধিযুক্ত মানুষ। তাই এই শুন্যস্থান টা আপনারা ইচ্ছেমতো পুরণ করে নিবেন।
আমি dhruba। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 63 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
এটাই আমাদের দেশের অবস্থা । আর কবে যে আমরা এ সমস্যার সমাধান পাব একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা ।