আমার নিজের প্রচুর আগ্রহ আছে আমাদের চারপাশের পরিবেশ নিয়ে। বিশেষ করে মহাকাশের প্রতি। হইত আমার মতই অনেক টিউনার ভাই রা আছেন যারা সবসমই সব কিছুর প্রতি আগ্রহি। যারা মহাকাশপ্রেমি এবং জানতে ভালবাসেন তাদের জন্য আমার সংরহ করা।
ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর
যেকোনো গ্রহের জন্য একটি মুক্তিবেগ নির্ধারিত থাকে এর ভর ও ব্যাসার্ধের অনুপাতে। পৃথিবী থেকে কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে বেরোতে হলে তার মুক্তিবেগ সেকেন্ডে ১১.২ কিলোমিটারের বেশি হতে হবে। যদি এমন হয়, কোনো গ্রহ বা নক্ষত্রের ভর এত বেশি আর ব্যাসার্ধ এত কম যে তার মুক্তিবেগ আলোর বেগের চেয়ে বেশি, তাহলে কী দাঁড়াবে? এর ফল দাঁড়াবে, গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে আলোর কণাও ছুটে বেরোতে পারবে না। আর যদি কোনো কিছু থেকে আলো না আসে তাহলে তাকে আমরা কিভাবে দেখব? এখানেই রহস্যের শুরু।
ব্ল্যাক হোল দেখার কোনো উপায় নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মোটামুটি কতগুলো পদ্ধতি বের করে ফেলেছেন, যা দিয়ে বোঝা যায় আশপাশে ব্ল্যাক হোল আছে কি না। যদি দেখা যায় আশপাশের গ্যাসের মেঘ বা গ্রহ কোনো অন্ধকার অঞ্চলের দিকে সর্পিলাকারে ধাবিত হচ্ছে তাহলে বুঝে নিতে হবে সেখানে একটা ব্ল্যাক হোল আছে। অনেকটা নদীর মোহনায় ঘূর্ণির মতো। আমাদের নিকটতম কৃষ্ণগহ্বরটি (ভি৪৬৪১ এসজিআর) ছিল ১৬০০ আলোকবর্ষ দূরত্বে ধনু নক্ষত্রমণ্ডলীতে। তবে কৃষ্ণগহ্বরের একটা ভালো দিক হলো তার চারদিকে একটা নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধ থাকে, যার বাইরের কাউকে সে টানাটানি করে না। এই অঞ্চলকে বলে ওই কৃষ্ণগহ্বরের ইভেন্ট হরাইজন। ভাগ্য ভালো, আমরা আছি সে অঞ্চলের বাইরে।
নেবুলার সন্তান ও তার বামন বন্ধুরা
আমরা সূর্যকে আজ যেমন দেখছি, সে কি চিরকালই এমন ছিল বা থাকবে? বিজ্ঞান সব সময় পরিবর্তনের কথাই বলে এসেছে। এখন আমরা জানি, সূর্য বা তারকা কিভাবে গঠিত হয় এবং এদের পরিণতি কী? বলা হয়ে থাকে, মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা গ্যাস ঘনীভূত হয়ে সৃষ্টি করে বিশাল মেঘ। সঙ্গে কার্বন আর সিলিকনের ধূলিকণাও থাকে। এসব মিলে তৈরি হয় নেবুলা। অনুমান করা হয়, পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে আমাদের সূর্যও একটি নেবুলা ছিল। এতে হাইড্রোজেন থাকে প্রায় ৯৭ শতাংশ আর হিলিয়াম ৩ শতাংশ। এরপর ঘনীভবনের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ে। যদি যথেষ্ট পরিমাণে তাপশক্তি সঞ্চিত হয় তবে এটিই জন্ম দেয় নক্ষত্রের ভ্রূণ 'প্রোটোস্টার'। আর যদি যথেষ্ট তাপমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তবে পাওয়া যায় বাদামি বামন। এই প্রোটোস্টার ফিউশন বিক্রিয়ায় শক্তি বিকিরণ করে সূর্যের জন্ম দেয়। কিন্তু এরপর একসময় এর শক্তি শেষ হবে। শেষ হলে কী হবে তা নির্ভর করে তার ভরের ওপর। ভর যদি একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি হয় তবে তা শক্তি বিকিরণের একপর্যায়ে চুপসে সুপারনোভা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে নিউট্রন স্টার বা ব্ল্যাক হোলে রূপান্তরিত হতে পারে। আর যদি ভর ওই নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে কম হয় তবে তা সুপারনোভা হতে পারবে না। বিকাশের একপর্যায়ে তা রক্তিম দৈত্য থেকে প্লানেটারি নেবুলা হয়ে সাদা বামনে রূপ নেবে। আমাদের সূর্য কিন্তু কম ভরের নক্ষত্র, এটা কখনোই সুপারনোভা হবে না।
ডার্ক ম্যাটার
আঁধারে শক্তি না শক্তির আধার?
আধুনিক পদার্থবিদ্যায় মহাবিশ্বের মোট ভর বা শক্তির যে পরিমাপ করা হয় তাতে দৃশ্যমান সব গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ও ধুলাবালির মিলিত ভর দাঁড়ায় মাত্র ৪ শতাংশ। আর বস্তুজগতের দৃশ্য-অদৃশ্য মিলে মোট ভর দাঁড়ায় ২৩ শতাংশ। ফলে বাকি জায়গায় কী আছে_এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যে উত্তর দেওয়া হচ্ছে তা হলো মহাবিশ্বজুড়ে ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্ব। এই ডার্ক ম্যাটার পরীক্ষণের কোনো উপায় আজও আবিষ্কৃত হয়নি। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত এমন উপায় খুঁজছেন, যার সাহায্যে এর অস্তিত্ব নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
সুপারনোভা বিস্ফোরণ
সুপারনোভা বিস্ফোরণ একবার দেখার জন্য মিল্কিওয়েবাসীকে (অর্থাৎ আমাদের ছায়াপথে) অপেক্ষা করতে হবে প্রায় ৫০ বছর। যখন কোনো নক্ষত্র তার সব জ্বালানি শেষ করে ফেলে এবং ভর হয় ১.৪ সৌর ভরের বেশি, তখন তা প্রথমে একটু চুপসে গিয়ে নিজের চাপে নিজেই বিস্ফোরিত হয়। এই বিস্ফোরণের ফলে তার বাইরের আবরণ উড়ে যায় এবং আলোকিত করে বিশাল অংশের ছায়াপথকে। সপ্তাহখানেক ধরেই এ আলো দেখতে পাওয়া যায়। খুব অল্প সময়েই এটি এত শক্তি বিকিরণ করে, যা আমাদের সূর্য তার সারা জীবন ধরে দিয়ে থাকে।
দুই সূর্য এক গ্রহ
ধরুন, সূর্যোদয়ের পর আপনি কাজে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সময় যদি আরেকটি সূর্য ওঠে তবে আপনার কেমন লাগবে? নাসার সেপ্টেম্বর মাসের বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জ্যোতির্বিজ্ঞানী লরেন্স ডয়েল ও তাঁর দল একটি নতুন আবিষ্কৃত গ্রহের বর্ণনা দিয়েছেন। গ্রহটি আকারে শনি গ্রহের সমান এবং এর অর্ধেক পাথর ও অর্ধেক গ্যাস। গ্রহটি দুটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, যাকে বলা হচ্ছে 'সারকুম্বাইনারি' কক্ষপথ। এটি গ্রহ খোঁজায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটাতে যাচ্ছে, কারণ ওই দূরত্বে অবস্থিত নক্ষত্রগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই 'দুই সূর্য' ব্যবস্থার।
ভালো লেগে থাকলে আমি সার্থক।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ
আমি মাহমুদ শরফুদ্দিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 203 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
''সহজতার মনোভাব আমরা প্রকৃতি থেকে শিখে নেই। তবে এমনই কপাল খারাপ যে আমরা সবসময় তা এড়িয়ে চলি...!!!!
সুন্দর টিউন। আমার মনে হয় আরেক টু তথ্য দিয়ে আরও কিছু বিস্তারিত লিখলে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।