প্রতিদিন Whatsapp খোলা একটা নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটি না খুললে মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠে! কেউ মেসেজ করুক বা না করুক এটি না খুললে মনটা চঞ্চল হয়ে উঠে। আগে ছিল ফেসবুক ফ্রেন্ড এখন হবে Whatsapp ফ্রেন্ড। এর ফ্রেন্ড রা ফেসবুক ফ্রেন্ড এর মতো নয়। ইনস্ট্যান্ট মেসেজিংর ক্ষেত্রে এটি নিয়মিত এক নম্বর। এক সময় ব্যবহারকারীদেড় মেসেজ পাঠাতে পয়সা খরচ করতে হতো কিন্তু Whatsapp আসাতে সবাই বিনামূল্যে মেসেজ করতে পারে। এখন আপনি ভেবে দেখেন এটাকে দিয়ে আপনার সকাল শুরু হয় কিন্তু কখন ও ভেবে দেখেছেন কি! এর সম্পর্কে আপনি কিছুই জানেন না। জানতে যদি চান, তাহলে আসুন!
২০০৭ সালে ইয়াহু ছেড়ে যাওয়ার পরে, ব্রায়ান অ্যাক্টন এবং জান কৌম বিরতি নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ভ্রমণ থেকে ফিরে, এই দুজনই আইফোনের অ্যাপ স্টোরটিতে এমন নতুন মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনগুলির সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করেছিল যা কিছু ব্যক্তিগতকরণের অনুমতি দেয়। তারা একজন আইওএস ডেভেলপার, আইগর সোলোমেনিকভকে এনেছিল এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ এ ক্যালিফোর্নিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
হোয়াটসআপের প্রতিষ্ঠাতা যুগল সবসময় চেয়েছিলো এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে যেটি মূল বৈশিষ্টে ধ্যান দেয়, আর তাতে কোনো বিজ্ঞাপণ থাকবে না। এই কারণে জান কৌম ব্রায়ানের ডেস্কে একটি নোট রেখেছিলেন এবং তাতে লেখা ছিলো " কোনো বিজ্ঞাপণ না! কোনো খেলা এবং কোনো চমক না! "
জান কৌম এবং ব্রায়ান এক্টন প্রথম থেকেই বিজ্ঞাপণের উপর শুন্য টাকা খরচ করেছে। এমনকি কোম্পানি বিপণন এবং জনসংযোগের জন্য কোনো কর্মচারী নিযুক্ত করেনি। হোয়াটসঅ্যাপ সর্বদা সরলতা এবং সোজা প্রকৃতির যা ব্যবহারকারীদের কাছে সহজ বলে মনে হয়। তারা বিপণনের উপর বিলিয়ন ডলার খরচা করার পরিবর্তে, তারা উন্নয়নের উপর খরচা করেছে শুধু মাত্র বিশ্বের সবচেয়ে পছন্দের মেসেজিং প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য।
বেশিরভাগ মানুষ ভাবেন একটি কোম্পানির যেখানে ১ বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে সেখানে হাজারখানেক কর্মচারী তো হওয়া উচিত, কিন্তু হোয়াটসআপ আপনাদের অবাক করে দিয়েছে। এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি পরিচালনা করতে সবার অগোচরে ৫০ জন ইঞ্জিনিয়ার এবং ৫৫ জন কর্মচারী কাজ করছে।
এক বছরের ছুটির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, ব্রায়ান অ্যাক্টন ফেসবুক এবং টুইটার উভয় ক্ষেত্রেই চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন তবে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। তারপরে তিনি এবং জান কৌম তাদের প্রায় ৪০০০০০ ডলার সঞ্চয় করে লাতিন আমেরিকা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।
হোয়াটসআপ ২০১৪ সালে গুগলের অধিগ্রহনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু মাত্র কয়েক মাস পরে, কোম্পানিটি ফেসবুকের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো এবং গুগল যেই দামে কিনতে চেয়েছিলো তার থেকে দ্বিগুন দামে ফেসবুক কিনেছিলো।
ফেসবুক ১৯ বিলিয়ন ডলারে হোয়াটসএপ অধিগ্রহণ করেছিল যেটি এখনো পর্যন্ত বৃহত্তম অধিগ্রহণ।
ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপকে স্বতন্ত্র রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা সর্বোত্তম সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল, বিশেষত এই বিষয়টি বিবেচনা করে যে কিছু ব্যবহারকারী ফেসবুক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সম্ভাব্যভাবে ব্যবসায়িকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং হোয়াটসঅ্যাপের সাথে তাদের এতদিনের অভিজ্ঞতা নষ্ট করে দিয়েছেন। ভাগ্যক্রমে তাদের জন্য, হোয়াটসঅ্যাপ এর টার্নওভার কেবল বাড়ছে, পাশাপাশি অ্যাপটির জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপকে লাভের মুখ দেখতে হলে বিজ্ঞাপণ দিতে হতো কিন্তু প্রতিষ্ঠাতারা সেটার বিরুদ্ধে ছিল। পরবর্তী যৌক্তিক পদক্ষেপটি ছিল কোনওভাবে ব্যবসায়িকদের জড়িত করা, যা ২০১৮ সালের শুরুতে সম্পন্ন হয়েছিল।
একসাথে পাঁচজন ব্যবহারকারী বা গ্রূপকে মেসেজ ফরোয়ার্ড করার সীমা কমানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি মেসেজ ৫ দিন সময় নেয় পুরো নেটওয়ার্কে পৌঁছাতে, তাহলে এই সীমা কোনো মেসেজ কে ছড়াতে ৫০ দিন সময় নেয়।
আপনাকে ভুল পথে চালিত করার জন্য ফটো, ভিডিও এবং অডিও সম্পাদন করা যায়। বিশস্ত সূত্র থেকে খবর নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং দেখবেন অন্য পত্রিকায় খবরটি প্রকাশিত হয়েছে কিনা! যদি অন্য কোথাও প্রকাশিত হয়ে থাকে তাহলে মনে করবেন খবরটি সত্যি।
অনেক মেসেজ আছে যেগুলি ধাপ্পাবাজি এবং ভুল তথ্য থাকে সেগুলির বানান ভুল থাকে। এই চিহ্নগুলি সন্ধান করুন যাতে আপনি তথ্যটি সঠিক কিনা তা পরীক্ষা করতে পারেন।
আপনার পূর্ব নির্ধারিত বিশ্বাসগুলিকে নিশ্চিত করে এমন তথ্যের উপর নজর দিন এবং তথ্যগুলি পর্যালোচনা করুন। যেগুলি খবর বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় সেগুলি প্রায় মিথ্যা হয়।
এমনকি যদি কোনও মেসেজ বহুবার পাঠানো হয়, জরুরি না এটা সত্যি। কোনও মেসেজ ফরোয়ার্ড করবেন না কারণ প্রেরক আপনাকে তা পাঠাতে অনুরোধ করছে। যদি আপনি ভুল কিছু দেখতে পান তবে যিনি আপনাকে এটি পাঠিয়েছেন তাকে বলুন এবং তথ্য কাউকে পাঠানোর আগে তাকে যাচাই করতে বলুন।
আপনি যদি এখনও কোনও মেসেজ সত্য কিনা তা নিশ্চিত না হন, তাহলে তথ্যের জন্য অনলাইনে অনুসন্ধান করুন এবং তথ্যটি কোথা থেকে এসেছে তা দেখতে বিশ্বস্ত নিউজ সাইটগুলি পরীক্ষা করুন।
হোয়াটসঅ্যাপ আসাতে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং বিনামূল্যে হয়েছে এবং ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মে একটি শক্তিশালী যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি হয়েছে। সামাজিকতার দিক থেকে দেখতে গেলে অনেক বেশি সহায়ক। এর কোনো তুলনা নেই। কারণ একটি বিজ্ঞাপণ মুক্ত অ্যাপ কোথায় পাবেন আপনি? কিন্তু সবকিছুর ভালো এবং খারাপ দিক থাকে। খারাপ দিক হলো " ফেক নিউজ " র বাড়াবাড়ি। যদিও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তথাপি আপনাকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে হলে উপরের পরামর্শগুলো অনুসরণ করুন।
WhatsApp এর বিকল্প অ্যাপটি র নাম কি? বলতে পারবেন কি!
আমি অভিজিত চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 30 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 9 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 6 টিউনারকে ফলো করি।
লিখতে চাই ,নিজেকে প্রকাশ করতে চাই।লেখার মাধ্যমে অন্যকে জানাতে চাই।
Thanks for sharing the information with us. Its helps lot to get this info. Keep up your good worl bro.