সবাইকে আবারও স্বাগতম। আশা করি সবাই খুবই ভাল আছেন। আমি আমার আগের পর্বে MP3 ফরম্যাট ও মোবাইল ফোনের আদ্যোপ্রান্ত সম্পর্কে লিখেছিলাম। আজ আমি আপনাদের জন্য এনেছি ওয়েব সার্ভার সম্পর্কে একটি ছোট্ট টিউন। সবাই পড়ুন ও ভাল থাকবেন...
আজকের জীবনে আমাদের সবচেয়ে কাছের জিনিস হচ্ছে ইন্টারনেট। আর ইন্টারনেটে বিশ্বকে জানতে ওয়েবসাইটে যেতে হয়। ওয়েব সাইটে যে পেইজ দেখা যায়, তাকে ওয়েব পেইজ বলে। যাক, আমরা একটি ওয়েব সাইটে প্রবেশ করলাম আর তা থেকে তথ্যগুলো দেখলাম। কিন্তু আমরা কি কখনও চিন্তা করেছি যে পেইজটি কিভাবে আসলো?
আপনি নিশ্চয়ই বলবেন, আমি ঠিকানা লিখেছি তাই এসেছে এবং যে পেইজটি চেয়েছি তা যে কম্পিটারে ছিল তারা আপনার কম্পিউটারে পেইজটি পাঠিয়ে দিয়েছে। তাই না কি বলেন? আর আপনারা ওয়েবসাইটে যাওয়ার জন্য একটি ব্রাউজার সফটওয়্যার ব্যবহার করেন। আমরা বিভিন্ন রকম ব্রাউজার ব্যবহার করি যেমন- মজিলা ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, নেটস্কেইপ, অপারা, গুগল ক্রোম ইত্যাদি।
আপনি আপনার ওয়েব ব্রাউজারের এড্রেসবারে কোন URL (uniform resource locator) লিখে Enter চাপলে পেইজটি চলে আসে। প্রথমে আপনার ব্রাউজারটি ওয়েবসাইটটির সার্ভার তা খুঁজে বের করে ও তার সাথে যোগাযোগ করে। আর তাকে বলে যে আপনার পেইজটি দরকার বা আপনি চাচ্ছেন পেইজটি দেখতে। তখন সার্ভার তার পেইজটি উক্ত ক্লায়েন্টের কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেয়। আর আপনি তা আপনার ব্রাউজারে দেথতে পান। এই যে সার্ভার আপনার কাছে তার ডেটা পাঠিয়ে দিচ্ছে তা কত তাড়াতাড়ি করছে, কিন্তু হিসাব খুবই জটিল। জটিল এই ঘটনাতে যাওয়ার আগে কিছু জিনিস সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করি।
ইন্টারনেট হলো নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কম্পিউটারগুলো নিজেদেরকে প্রথমত বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করে থাকে। স্থানীয় কম্পিউটারের এই নেটওয়ার্কগুলো পরবর্তীতে আরেকটি নেটওয়ার্কের সাহায্যে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয় এবং সেই নেটওয়ার্কটিই হলো ইন্টারনেট। সাধারনত, বাসায় অবস্থিত একটি কম্পিউটার নিজস্ব মডেমের মাধ্যমে কোন একটি আইএসপি বা ইন্টারনেটের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে এবং সেই আইএসপির মাধ্যমে সে নিজেকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে। অপরদিকে, অফিসে ব্যবহৃত কম্পিউটারগুলো আরেকটু ঘুর পদ্ধতিতে ইন্টারনেটের সংযোগ লাভ করে। অফিসের কম্পিউটার গুলো প্রথমত নিজেদের মাঝে LAN বা Local Area Network এর মাধ্যমে যোগাযোগ প্রতিষ্টা করে। পরবর্তীতে এই LAN কেই স্থানীয় কোন ISP'র সাথে সংযুক্ত করে ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণ করা হয়। সাধারণত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চতর গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে; যেমন T1। T1 প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১.৫ মিলিয়ন বা ১৫ লক্ষ বিট ডাটা প্রেরন করা সম্ভব। অপরদিকে বাসার কম্পিউটারে যে মডেম ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ৫৬ হাজার বিট ডাটা প্রেরণ করা সম্ভব। যাই হোক, একটি পিসি বা LAN যে ISP'র সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে, সেই ISP টি আবার বৃহত্তর কোন ISP'র সাথে সংযুক্ত। এবং ISP'র এ ধারাবাহিকতায় কোন দেশ বা অঞ্চলের বৃহত্তম যে ISPটি পাওয়া যাবে তা সাধারনত কোন ফাইবার অপটিক ব্যাকবোনের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই ধরনের ব্যাকবোনগুলো উচ্চতম গতির অপটিক্যাল-ফাইবার তার(যা কিনা সমুদ্র তলদেশে অবস্থিত!) বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত। এবং এভাবেই দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর দুই বিপরীত প্রান্তে অবস্থিত দুটি বা ততোধিক কম্পিউটার অনায়াসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো সার্ভার (সেবা প্রদানকারী) কম্পিউটার এবং অপরটি হলো ক্লায়েন্ট(সেবাগ্রহণকারী) কম্পিউটার। আবার একটি কম্পিউটার একই সাথে সেবা দিচ্ছে এবং সেবা নিচ্ছে। একটি সার্ভার কম্পিউটারে আবার বিভিন্ন ধরনের সফট্ওয়্যার থাকে, যা তাকে বিশেষ ধরনের কাজে পারদর্শী করে তোলে। যেমন, ই-মেইল সার্ভার একটি কম্পিউটারকে ই-মেইল আদান-প্রদানের উপযোগী করে; অন্যদিকে এফটিপি(FTP) সার্ভার একটি কম্পিউটারকে ফাইল আদান-প্রদানে উপযোগী করে তোলে। যেমন- মনে করেন আপনি জিমেইল থেকে আপনার এক বিদেশি বন্ধুকে মেইল করেছেন; আর সে সাথে সাথে পেয়ে যাচ্ছে, তাই না? হ্যাঁ, কিন্তু কাজটা এত সহজ নয়, এই মেইলটি বিভিন্ন সার্ভার ঘুরেই আপনার বন্ধুর মেইলে পোঁছায়। আর এই কাজে প্রতিটি সার্ভারই তার ই-মেইল সার্ভার সফরওয়্যারকে ব্যবহার করে। অনুরূপভাবে, আপনি যখন LimeWire বা Kazaa এধরনের কোনো পি-টু-পি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আরেকজনের কম্পিউটার থেকে গানের ফাইল বা বই ডাউনলোড করেন তখনও কিন্তু আপনি অন্য একটি সার্ভার কম্পিউটারের এফটিপি(FTP) সার্ভারের সাহায্য নিচ্ছেন।
ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের একটি নির্দিষ্ট ও একক নম্বর থাকে। একেই আইপি (IP) এ্যাড্রেস বা Internet Protocol address বলা হয়। এই নম্বরকে চার ভাগে বা ‘অক্টেকে' প্রকাশ করা হয় এবং প্রতিটি ভাগে বা ‘অক্টেকে' ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত যেকোন সংখ্যা থাকতে পারে। ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের একটি নির্দিষ্ট ও একক নম্বর থাকে(যদিও প্রতিবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার পর এই নম্বর পরিবর্তীত হয়ে যায়)। একেই আইপি (IP) এ্যাড্রেস বা Internet Protocol address বলা হয়। এই নম্বরকে চার ভাগে বা ‘অক্টেকে' প্রকাশ করা হয়। এবং প্রতিটি ভাগে বা ‘অক্টেকে' ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত যেকোন সংখ্যা থাকতে পারে। যেমন, একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেস 205.46.117.104 হতে পারে। আইপি(IP) এ্যাড্রেসের এই প্রতিটি ভাগের ডেসিমেল)সংখ্যাকে কম্পিউটার আবার ৮ বিটের বাইনারী)সংখ্যায় রুপান্তরিত করে বলে চার ভাগ বা অক্টেক বিশিষ্ট একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেস কম্পিউটারের কাছে ৩২ বিটের একটি সংখ্যার আকার ধারন করে। স্বাভাবিকভাবেই দেখা যাচ্ছে, এই প্রতিটি ভাগে ০ আর ১ দিয়ে আটটা স্থানের জন্য সর্বোচ্চ ২৮ টি সংখ্যা বা ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত ২৫৬ টি সংখ্যা গঠন করা সম্ভব।
সাধারণত, একটি সার্ভারের আইপি এ্যাড্রস পরিবর্তিত হয়না। কেননা মুল সার্ভারকে সবসময়ই পালাক্রমে অনেকগুলি কম্পিউটার চালু রাখে, সেজন্য দুর্ঘটনা বা বিশেষ কোন কারন না ঘটলে সার্ভার বন্ধ হয়না বা ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়না। কিন্তু, একটি পিসি যখন মডেমের মাধ্যমে আইএসপি হয়ে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয় তখন ঐ আইএসপি তাকে একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেস দেয়, যা শুধুমাত্র ততোক্ষণই অপরিবর্তিত থাকে যতোক্ষণ পর্যন্ত ঐ কম্পিউটার ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়। তাই বোঝা যাচ্ছে একটি পিসি ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার ইন্টারনেটে সংযুক্ত হলে নতুন একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেস লাভ করে। তবে একই সময় একটি মডেমের শুধুমাত্র একটি আইপি(IP) এ্যাড্রেসই থাকতে পারে।
আপনার অপারেটিং সিস্টেমটি যদি উন্ডোজের হয়ে থাকে তাহলে এই মুহুর্তেই(ইন্টারনেট সংযোগ থাকা অবস্থায়) ‘কমান্ড প্রম্পট' এ গিয়ে WINIPCFG.EXE বা 2000/XP'র ক্ষেত্রে IPCONFIG.EXE কমান্ড প্রয়োগ করে আপনার IP address জেনে নিতে পারেন। ওয়েব সাইটের আইপি এ্যাড্রেস জানতে PING techtunes.io লিখে এন্টার চাপুন। আর UNIX'র ক্ষেত্রে আইপি(IP) এ্যাড্রেস জানার জন্য ‘nslookup techtunes.io' লিখে দেখতে পারেন বা ‘hostname' কমান্ড প্রয়োগ করে দেখুন কি ঘটে। 64.13.255.20
আইপি(IP) এ্যাড্রেস সম্পর্কে আপনি আরও ভালোধারনা পাবেন যদি আপনি আপনার ব্রাউজারের এ্যাড্রেস বারে https://www.techtunes.io এর পরিবর্তে ‘http:// 64.13.255.20' লিখে এন্টার চাপেন। দেখবেন ঠিকই আমাদের প্রিয় টেকটিউনস এসে হাজির! হা!হা!হা!
আপনাদের জন্য আরো সহজ পদ্ধতি আছে ওয়েব সাইটের আইপি এড্রেস জানার জন্য। তা হল মজিলা ফায়ারফক্সের একটি এড-অন্স ইন্সটল করা। এর নাম ShowIP । এড-অন্সটি ইন্সটল করে ফায়ারফক্স রিস্টার্ট করুন। এখন একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। ফায়ারফক্সের স্ট্যাটাসবারের ডানদিকে দেখবেন ঐ সাইটের আইপি এড়্রেস দেখা যাচ্ছে।
সহজ কথায় ডোমেইন নেইম বলতে আমরা কোনো সংগঠনের নামকে বুঝি, যে নাম ব্রাউজারের এ্যাড্রেস বারে লিখে এন্টার চাপলে আমরা সেই সংগঠনের ওয়েবপেইজটি দেখতে পাবো। যেমন ‘টেকটিউনস' একটি সংগঠন এবং https://www.techtunes.io হলো এর ডোমেইন নাম। ইতিপূর্বে আমরা আইপি এ্যাড্রেস সম্পর্কে জেনেছি এবং ডোমেইন নাম আসলে এই আইপি এড্রেসেরই পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এটা খুবই অস্বাভাবিক যে পৃথিবীব্যাপি হাজার হাজার সার্ভারের সাথে যোগাযোগের জন্য মানুষ আলাদা আলাদা করে হাজার হাজার আইপি(IP) এ্যাড্রেস মনে রাখবে, যা কিনা শুধুমাত্র কতগুলো সংখ্যার সমন্বয়(আমরা নিশ্চই কম্পিউটার না?)। তাই এই ডোমেইন নেইমের ব্যবস্থা; যা আইপি(IP) এ্যাড্রেসকে মানুষের বোধগম্য ভাষায় যেমন, ইংরেজীতে প্রকাশ করে। এজন্যই সাধারনত আমরা এ্যাড্রেস বারে ‘http:// 64.13.255.20' ' না লিখে https://www.techtunes.io লিখে থাকি। https://www.techtunes.io মুলত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত।
হোস্ট নেইম ডোমেইন নেইমের একধরনের ঐচ্ছিক একটা অংশ। যেকোনো কম্পানী ইচ্ছে করলে হোস্ট নেইম তৈরী করতে পারে বা নাও পারে। আগে হোস্ট নেইম হিসেবে www'র বহুল ব্যবহার থাকলেও ইদানিং অনেকেই হয় এটিকে ব্যবহারই করেননা বা করলেও অন্যধরনের নাম ব্যবহার করেন। যেমন, টেকটিউনস'র আগে কোনো হোস্ট নেইম নেই। আবার মাইক্রোসফট এনসাইক্লোপেডিয়া এনকার্টার ওয়েবসাইট encarta.msn.com এ হোস্ট নেইম হিসেবে www'র পরিবর্তে encarta ব্যবহার করা হয়। হোস্ট নেইমকে অনেক সময় তৃতীয় মাত্রার ডোমেইন নাম বা third-level domain name ও বলা হয়। সংগঠনের পরিচিতিমূলক নাম বা top-level domain name দ্বারা একটি সংগঠনের ধরন বা প্রকৃতি বোঝানো হয়। যেমন ‘com' দিয়ে company; ‘org' দিয়ে ‘organization'; ‘edu' দিয়ে ‘education'; ‘gov' দিয়ে ‘government' প্রভৃতি বোঝানো হয়। যখন সংগঠনের মুল নাম কে (যেমন ‘techtunes') তার প্রকৃতির (যেমন ‘com.bd') সাথে যুক্ত (.) করে পড়া হয় তখন সেই পুরো অংশটিকে (techtunes.io) সংগঠনের দ্বিতীয় মাত্রার নাম বা second-level domain name বলা হয়। সংগঠনের এই দ্বিতীয় মাত্রার নাম বা second-level domain nameটিই হলো IP address এর পরিপূরক।
DNS হলো Domain Name Servers এর একটি সংক্ষিপ্তরূপ। এটি এক ধরনের ডাটাবেজ বা তালিকা যা প্রতিটি IP এ্যাড্রেসের বিপরীতে সংরক্ষিত ডোমেইন নামসমূহের তালিকা সংরক্ষণ করে এবং এ তালিকা ইন্টারনেটের কোন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় (সার্ভার) সংরক্ষিত নয় বরং ধাপে ধাপে পৃথিবীব্যপী বিস্তৃত। আপনি যখন আপনার ব্রাউজারের এ্যাড্রেস বারে কোনো ঠিকানা বা ডোমেইন নাম লিখে এন্টার চাপেন তখন (ভৌগলিকভাবে) আপনার কাছাকাছি অবস্থিত কোনো DNS সার্ভার আপনার এই ডোমেইন নেইমকে সংশ্লিষ্ট আইপি এ্যাড্রেসে পরিবর্তিত করে তার সাথে আপনার যোগাযোগের ব্যবস্থা করে। যদি দেখা যায় যে আপনার লেখা ডোমেইন নামটি আপনার কাছাকাছি অবস্থিত সেই DNS সার্ভারটি তার তালিকায় খুঁজে পাচ্ছে না তখন সে সেই ডোমেইন নামটি তার উপরের ধাপের কোনো DNS সার্ভারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এবং এভাবে উপরে যেতে যেতে কোন না কোন সময় আপনার চাওয়া ডোমেইনটি খুঁজে বের করে সেটিকে সংশ্লিষ্ট আইপি এ্যাড্রেসে পরিবর্তিত করা হয়। এই কাজে প্রতিটি নেটওয়ার্কিং অপারেটিং সিস্টেম এক ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে যাকে বলা হয় DNS resolver, যা IP এ্যাড্রেস খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
পোর্টের বাংলা ‘বন্দর' বলতে যা বোঝায় পোর্ট আসলে ঠিক তাই। যে স্থান দিয়ে অসংখ্য জিনিস আসছে আবার যাচ্ছে। কম্পিউটারের বেলায় এই পোর্ট আবার সাধারনত দুটো ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়। একটি হলো হার্ডওয়্যার সম্পর্কিত। যেমন, কম্পিউটারে পেছনের যে জায়গাটিতে আপনি আপনার মাউস বা পেন ড্রাইভ বা প্রিন্টারের সংযোগ দেন, সেটি একধরনের পোর্ট। এই পোর্ট আবার দু ধরনের হতে পারে। যেমন সিরিয়াল যার সাহায্য যেকোন এক মুহূর্তে শুধুমাত্র এক বিট পরিমান তথ্য আদান প্রদান করা যায়। আবার প্যারালাল পোর্টের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে একাধিক তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভভ। এতো গেলো হার্ডওয়্যারের পোর্ট। এবার আসার যাক, কল্পনিক পোর্টের ক্ষেত্রে, যা কিনা প্রোগ্রামিং করার সময় তৈরী করা হয়। এই পোর্টগুলো IP এ্যাড্রসের সাথে এক ধরনের এক্সটেনশনের মতো; যা কিছু সুনির্দিস্ট সেবা নিশ্চিত করে। আমরা যেমন কোনো কোম্পানীতে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে সুনির্দিষ্ট সেবা পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট এক্সটেনশন ব্যবহার করি পোর্টও ঠিক তেমনি। যেকোন সার্ভার মেশিন তার বিভিন্ন ধরনের সেবা (FTP, Web) দিয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন নম্বরের ভিন্ন ভিন্ন পোর্ট দিয়ে। সাধারনত, যদি এমন হয় যে একটি সার্ভার মেশিন একই সাথে ওয়েব সার্ভার ও FTP সার্ভারের সেবা দিচ্ছে তাহলে দেখা যাবে ওয়েব সার্ভারকে ২১ নং পোর্ট ও FTP সার্ভারকে ৮০ নং পোর্টে পাওয়া যাচ্ছে। ক্লায়েন্টরা সাধারনত একটি নির্দিষ্ট আইপি এ্যাড্রেসের একটি নির্দিষ্ট পোর্টে যোগাযোগ করে। যদিও পোর্টের সংখ্যা ০ থেকে ৬৫৫৩৬ পর্যন্ত হতে পারে; কিন্তু সাধারণত দেখা যায় বহূল ব্যবহৃত পোর্টগুলো ছোট সংখ্যা ব্যবহার করে থাকে। বহুল ব্যবহৃত পোর্ট নম্বর ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট সেবাগুলোর তালিক নিম্নে দেয়া হলো:
সাধারনত কোন পোর্ট যদি ফায়ারওয়াল দ্বারা সংরক্ষিত না থাকে তবে ঐ পোর্টের সাথে যেকোন স্থান থেকে যে কোন সময় যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব (যদি ঐ সার্ভার কম্পিউটার অনুমতি দেয়)। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন যে ওয়েব সার্ভারকে ৮০ নং পোর্টেই assign করতে হবে এমনকোন বাধ্যবধকতা নেই। আপনি আপনার ওয়েব সার্ভারকে ৯১৮ নং পোর্টেও লোড করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার এ্যাড্রেস যদি xxx.yyy.com হয় তাহলে http://xxx.yyy.com:918-এই URL এ ইন্টারনেট থেকে যেকেউ আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।যদি আপনি কোন পোর্ট নম্বর এ্যাসাইন না করেন তবে ব্রাউজার ধরে নেবে বহুল ব্যবহৃত ৮০ নং পোর্টই আপনি ব্যবহার করছেন।
তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে কোনো সার্ভার কম্পিউটারের কাছে আপনার ব্রাউজারের কোন একটি নির্দিষ্ট ওয়েবপেইজ চাওয়া এবং তা পাওয়ার মাঝে যে ধাপগুলো কাজ করে সেগুলো হলো:
প্রথমত, আপনার ব্রাউজার আপনার টাইপ করা(যদি করে থাকেন) URL-টিকে তিন ভাগে ভাগ করে নেয়।
1. প্রটোকল("http")
2. সার্ভারের নাম(ধরুন, ‘techtunes.io’)
3. ফাইলের নাম(যে ফাইলটি আপনি চেয়েছেন, যেমন, ‘digitalzone.htm, welcome.php' প্রভৃতি)
দ্বিতীয়ত, আপনার ব্রাউজার ‘techtunes.io ' কে একটি আই.পি এ্যাড্রেসে রুপান্তরিত করার জন্য একটি DNS সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করে।
তৃতীয়ত, প্রাপ্ত এই আই.পি এ্যাড্রেস দিয়ে আপনার ব্রাউজার সার্ভার কম্পিউটারের সাথে তার একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করে। এবং এই যোগাযোগ সাধারনত সার্ভার কম্পিউটারের ৮০ নং পোর্ট দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
চতুর্তথ, যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবার পর আপনার ব্রাউজার সার্ভার কম্পিউটারের কাছে ‘https://www.techtunes.io/digitalzone.htm’ (যদি তা চেয়ে থাকেন) পেইজটি চায়। উল্লেখ্য, সার্ভারের কাছে আপনার ব্রাউজারের ‘চাওয়া'র এ প্রক্রিয়ার পারিভাষিক শব্দটি হলো ‘GET request'। মূলত: আপনার ব্রাউজার একটি ‘GET request' পাঠায় সার্ভারের কাছে।
পঞ্চমত, সার্ভার তখন ঐ পেইজটিকে ‘এইচটিএমএল টেক্সট' আকারে ব্রাউজারের কাছে পাঠায়।
সবশেষে, আপনার ব্রাউজার ‘এইচটিএমল টেক্সট'টি পড়ে এবং সেই অনুযায়ী পেইজটিকে সাজিয়ে আপনাকে প্রদর্শন করে।
সকল ধরনের ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থী। দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন। সবাইকে ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ...
আমি দি ডিজিটাল জোন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 148 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
“যে পারে সে নিজে নিজে করে, আর যে পারে না সে শিখায়” “অভিজ্ঞতা তাই শিখায়, যা আমাদের শিখা উচিত”
Thank u………