সবাইকে আবারও স্বাগতম। আশা করি সবাই খুবই ভাল আছেন। আমি আমার আগের পর্ব MP3 ফরম্যাট সম্পর্কে লিখেছিলাম। আজ আমি আপনাদের জন্য এনেছি মোবাইল ফোন সম্পর্কে একটি ছোট্ট টিউন। সবাই পড়ুন ও ভাল থাকবেন...
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান প্রায় আমাদের সকল চাওয়াকেই পাওয়া করে দিয়েছে। বিজ্ঞান আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জিনিস হচ্ছে ‘মোবাইল ফোন”। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের দৈনিন্দিন জীবনকে পুরোপুরি পরিবর্তন করেছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এটি কীভাবে কাজ করে?
মোবাইল ফোনকে বর্তমানে মোবাইল বললে ভুল হবে। কারণ এর বিস্তার এতো বেশি হয়ে গেছে যে তা বলে শেষ করা যাবে না। এর অনেক রকম ব্যবহার রয়েছে। তারমধ্যে কিছু আপনাদের জন্য তুলে ধরলামঃ
তাছাড়া নিত্য নতুন আরো ফিচার নিয়ে আসছে বিভিন্ন মোবাইল।
মোবাইলের জন্ম কখন হয়েছে, তার হিসেব করা কঠিন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, টেলিফোন ও রেডিও এর সংমিশ্রণর মোবাইল ফোন তৈরি করা হয়েছে। তবে টেলিফোন আবিষ্কার করেন গ্রাহাম বেল (১৮৭৬) এবং রেডিও আবিষ্কার করেন মার্কনী (১৮৯৪)। পূর্বে রেডিও এর ট্রান্সমিশনের ক্ষমতা ছিল সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ মাই্ল। তার উপর সমস্যা হল চ্যানেল সংখ্যা নিয়ে। চ্যানেল সংখ্যা একে তো ছিল কম, তার উপর এক সাথে অনেক লোক ব্যবহার করতে পারতো না। যা আসলেই ঝামেলাদায়ক ছিল। কিন্তু বর্তমান অবস্থা ঠিক এর উল্টোটা। বর্তমানে রেডিও চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু তবুও এক সঙ্গে অনেকে ব্যবহার করতে পারছে না।
এবার আসুন মোবাইল ফোনে চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক। মোবাইল নেটওয়ার্ক খুবই দ্রুত গতি সম্পূন্ন। এছাড়াও মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো তাদের নেটওয়ার্ক শহর বা গ্রামে বিভিন্ন সেলে বিভক্ত করেছে। সাধারণত প্রতিটি সেল ১০ বর্গমাইলের সমান ও ষষ্ঠভূজ হয়ে থাকে আর প্রতিটি সেলে একটি বেস ষ্টেশন থাকে। আর প্রতিটি সেলে ৮০০ টি Frequency তে কথা বলা যায়৷ এজন্য একটি শহর বা গ্রামে অনেকগুলো টাওয়ার প্রয়োজন। যাই হোক মোবাইল ফোনে খরচ কমে ও দ্রুত গতি সম্পন্ন হওয়ার কারনে এটির চাহিদা দিনদিন বেড়ে চলছে। প্রতিটি শহরে একটি সেন্ট্রাল অফিস থাকে যা বেস ষ্টেশন বা টাওয়ার গুলির সাথে যোগাযোগ রাখে৷ এই সেন্ট্রাল অফিসগুলিকে Mobile Telephone Switching Office (MTSO) বলে৷ সেল মোবাইল ফোন ও বেস ষ্টেশন Low powere transmissins ব্যবহার করে৷ ফলে মোবইল ফোন অল্পক্ষমতা সম্পনড়ব ব্যাটারি দিয়ে চলতে পারে, যার ফলেই আজকের মোবাইল ফোন এত ছোট আকার হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে আরো ছোট হবে৷
একটি মোবাইল ফোন নিয়ে চালু করুন। চালু করার সাথে সাথে আপনার সিমটিও চালু হয় এবং আপনিও সাথে সাথে কোথাও কল করতে পারেন, তাই না? আপনি মোবাইল চালু করার সাথে সাথে এটি ন্ট্রোল চ্যানেলের মাধ্যমে SID (System Indentification Code) গ্রহণ করে এবং তা মোবাইল ফোনের ভিতরের এর সাথে মিলিয়ে দেখে। এছাড়া এটি MTSO এর সাথেও যোগাযোগ রাখে৷ সেন্ট্রাল অফিস মোবাইল ফোনের অবস্থান একটি ডাটাবেস এ রাখে৷ অর্থাৎ আপনি শহরের ভিতরে কখন কোন সেলে থাকছেন তা সেন্ট্রাল অফিস এর ডাটাবেসে থাকে৷ যখনই কেউ আপনাকে ফোন করে, তখন এই সেন্ট্রাল অফিস তার ডাটাবেস থেকে বাহির করে আপনি কোন টাওয়ারের কাছাকাছি আছেন, এবং সেই টাওয়ার থেকে আপনার মোবাইলের ফ্রিকিয়েন্সিতে যোগাযোগ করে দুইজনের সাথে যোগাযোগ করে দেয়৷ এবং আপনি কথা বলতে পারেন৷
মোবাইল ফোনের সুবিধার কথা বলে কি আর শেষ করা যাবে। ও, মোবাইল ফোনের আরো একটি সুবিধার কথা বলি। আপনি গাড়িতে কিংবা অন্য কিছুতে চলমান থাকলেও কথা বলতে পারবেন৷ যা আগের দিনে ছিল না। আপনি যখন কথা বলতে বলতে একটি সেল থেকে অন্য একটি সেলের দিকে এগুতে থাকেন, তখন বর্তমানে ব্যাবহার করা টাওয়ারটি থেকে দূরত্ব বেড়ে যাবার কারণে অন্য টাওয়ারটির সাথে সংযোগ স্থাপন করে, এর ফলে আপনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে গেলেও নির্বিঘনে আপনার কথা চালিয়ে যেতে পারেন৷ মোবাইল দেখতে ছোট হলেও এতে মুহুর্তের মধ্যে এত কিছু করে ফেলতে পারে কেননা এর ভিতরে DSP(Digital Signal Processor) এর কারণেই আজকের মোবাইল এত স্মার্ট হয়েছে!
ডুপ্লেক্স চ্যানেল বলতে দু’মুখি চ্যানেল, মানে দু’দিক থেকে এক সাথে কথা বলা। আপনি হয়তো দেখে খাকবেন পুলিশ সার্জেন্টরা এক ধরনের ওয়ারলেস ব্যবহার করে। এটি দিয়ে কথা বলা ও শুনা যায়। তবে এক সাথে দু’জন কথা বলতে পারে না। দেখবেন যখন সাজেন্টরা কথা বলে, তখন একজনের বলা শেষ হলে বলে Over. কেন বলে? কারণ, ওভার বলার সাথে সাথে অপর পুলিশ সার্জেন্ট বুঝে নেয় যে তার বলা শেষ। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি আনন্দিত হবেন যে, আপনার ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে এরকম কোন সমস্যা নেই। মানে আপনার দু’জনেই একসাথে কথা বলতে পারবেন। এটিই হল ডুপ্লেক্স চ্যানেল।
GSM হল একটি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড। এটি ইউরোপ, এশিয়া, আমেরিকা, আফ্রিকা ও অষ্ট্রেলিয়াতে বেশি পরিমাণে ব্যাবহৃত হয়৷ আমাদের দেশে এর প্রচলন অত্যান্ত বেশি। আমাদের দেশের প্রায় সকল মোবাইল অপারেটর কোম্পানী এই জিএসএম ব্যাবহার করে৷ জিএসএম ইউরোপ ও এশিয়াতে ৯০০ মেগাহার্জ থেকে ১৮০০ মেগাহার্জ এ চলে এবং আমেরিকাতে ১৯০০ মেগাহার্জ এ চলে৷ জিএসএম ফোন কিনে আপনি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে শুধু সিম কার্ড SIM (Subscriber indenification module) কিনতে হবে৷ এই সিম কার্ড মূলত ছোট একটা পাতলা চিপ এর মত দেখতে। দেখতে ছোট্ট লাগলেও এর ভিতরেই সকল কাহিনী। এর ভিতরে মোবাইল কম্পানির সংযোগ আইডি ও ব্যাবহারকারীর তথ্য থাকে৷ ফলে যে কোন সেটে আপনার সিম কার্ডটি ঢুকান, দেখবেন কাজ করবে।
সবাই ভাল থাকবেন................. ধন্যবাদ।
আমি দি ডিজিটাল জোন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 148 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
“যে পারে সে নিজে নিজে করে, আর যে পারে না সে শিখায়” “অভিজ্ঞতা তাই শিখায়, যা আমাদের শিখা উচিত”
বেশ তথ্যবহুল টিউন করেছেন ধন্যবাদ টিউনকারীকে।