আলবার্ট আইনস্টাইনের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। উনাকে নিয়ে মানুষ এখন গবেষণা করে পিএইডডি ডিগ্রি অর্জন করছে। আলবার্ট আইনস্টাইন জামার্নিতে ১৮৭৯ সালের ১৪ই মার্চে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন একজন থিউরিটিক্যাল ফিজিক্স। তার জীবনের সবচেয়ে বড় থিউরিটি হলো Theory of Relativity যেটা মর্ডান ফিজিক্সের দুটি মূল ভিক্তির মধ্যে একটি। এছাড়াও তার কাজগুলোকে বর্তমান যুগের ফিলোসফি অফ সাইয়েন্স বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি তার E = mc2 ফমুর্লার জন্য জনপ্রিয়ভাবে পরিচিত। তিনি ১৯২১ সালে ফিজিক্সে নোবেল পুরস্কার পেয়ে ছিলেন। আইনস্টাইন তার জীবনে প্রায় ৩০০টির বেশি সাইন্টেফিক পেপার এবং ১৫০টির বেশি নন-সাইন্টেফিক পেপার পাবলিশ করে গিয়েছেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিউক্লিয়ার অস্ত্রের ক্ষতির উপর গবেষণারত ছিলেন। তিনি ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
আজ আমি টেকটিউনসে আলবার্ট আইনস্টাইন কে নিয়ে এমন ১৫টি তথ্য নিয়ে এসেছি যেগুলো হয়তো আমি আগে জানতেন না! তো রিল্যাক্স হয়ে বসুন আর টিউনের মূল অংশটি পড়ে মজা নিন!
বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ছাত্রজীবনে অনান্য সাধারণ ছাত্রদের মতোই ছিলেন। তখন তার বিশেষত্ব বলে কিছু ছিলো না। এভারেজ মানে সাধারণ! তিনি তার স্কুল এবং কলেজ লাইফের সকল সাবজেক্টে সাধারণ ছাত্রদের মতোই ছিলেন কিন্তু একটি সাবজেক্টে ছিলেন সবার সেরা! আর সেটা হলো ম্যাথমেটিকস! তবে অনান্য বিষয়ে তিনি ফেইল করেছিলেন এইরকম গুজব শোনা যায় তবে এর সত্যতা নিশ্চিত করা যায় নি।
আলবার্ট আইনস্টাইন একজন দক্ষ ফিজিক্সটের পাশাপাশি ছিলেন একজন টেলেন্টেড মিউজিশিয়ানও! কারণ তার মা ছিলেন একজন দক্ষ ও প্রফেশনাল পিয়ানো বাদক তাই তিনিও মায়ের পথ ধরেই মিউজিকের প্রতি দক্ষতা এসে যায়। বলা হয়ে থাকে যে বিজ্ঞানী জীবন যদি তাকে গ্রহন না করতো তাহলে তিনি একজন মিউজিশিয়ানের ক্যারিয়্যার বেছে নিতেন! বিশেষ করে পিয়ানো বাজক হিসেবে আমরা আজ আইনস্টাইনকে দেখতে পেতাম!
আইনস্টাইনের একটি বিশেষ দুবর্লতা ছিলো মহিলাদের উপর। আইনস্টাইন ২ বার বিয়ে করেছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রায় ৬ জন মহিলার সাথে ভালোবাসতেন! তিনি একজন ফিজিক্স মহিলাকে ১৯০৩ সালে বিয়ে করেন, তার প্রথম বিয়ে ছিলো এটি। ১৯১২ সাল থেকে তিনি তার কাজিনের সাথে রোমান্স করে আসছিলেন। এবং ১৯১৯ সালে তিনি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তার কাজিনের সাথে বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন। তার দ্বিতীয় বিয়ে। তবে তার কোনো ছেলে বা মেয়ে এখন দুনিয়াতে জীবিত নেই।
আইনস্টাইনের মহিলা প্রীতি তাকে একজন নাজায়েজ পিতাও বানিয়েছিলো। তিনি একটি অবৈধ সন্তানের পিতাও ছিলেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত আইনস্টাইনের এই বিষয়টি পাবলিকের কাছ থেকে গোপন করে রাখা হয়েছিলো। ১৯০২ সালের প্রথম বিয়ের আগেই তার একটি অবৈধ কন্যা সন্তান ছিলো। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার অবৈধ মেয়েটির কোনো খবর পাওয়া যায় নি।
আইনস্টাইনের নেট মূল্য ছিলো ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৫৫ সালে তার মৃত্যুর সময় তিনি এই পরিমান নেট মূল্যের মালিক ছিলেন। যেটি বর্তমান যুগের প্রায় ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্য হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এখন আপনার কাছে এক লাখ মার্কিন ডলার কমই মনে হতে পারে একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানীর জন্য। কিন্তু তখনকার সময়ে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে আইনস্টাইন রাজার মতো তার পরবর্তী জীবনযাপন করতে পারতেন এবং তার ভবিষ্যৎতের সকল এক্সপেরিমেন্ট এর জন্য আর্থিক ভাবে কোনো সমস্যায় পড়তেন না।
তিনি নোবলে পুরস্কার জিতে নেবার আগেই তার এই পুরস্কারের প্রাইজ মানি তার স্ত্রীকে দিয়ে দেবার জন্য অঙ্গিকার করেছিলেন! তার প্রথম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের সময় আইনস্টাইন তার নোবেল পুরস্কারের অর্থটি তার স্ত্রীকে দিয়ে দেবার জন্য অঙ্গীকার করেছিলেন। তবে মজার ব্যাপার হলো এই অঙ্গীকারের আরো ২ বছর পর তিনি নোবলে পুরস্কার জিতে নেন। এবং নোবেল পুরস্কারের অর্থটি তিনি তার প্রথম স্ত্রীকে দিয়ে দিয়েছিলে।
আইনস্টাইন ১৯২১ সালে ফিজিক্সের উপর নোবেল পুরস্কার জিতে নেন। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তিনি রিলেটেশনের উপর তার থিউরির জন্য নোবেল পুরস্কার পাবেন। বরং তিনি তার ফটো ইলেক্ট্রিক ইফেক্টের উপর নোবেল পুরস্কার পান।
তিনি তার বিখ্যাত Theory of Relativity বানাতে গিয়ে তার স্ত্রীর সহযোগীতা নিয়েছিলেন বলে প্রমাণস্বরুপ ডকুমেন্টারি পাওয়া গিয়েছে। যদি এটার সত্যিই হয়ে থাকে তাহলে তার স্ত্রীকে নোবেল প্রাইজ মানি দিয়ে দেবার কারণটাও আমাদের কাছে আরো পরিস্কার হয়ে উঠে। আমি টিউনে আগেই বলেছিলাম যে তার প্রথম স্ত্রীও একজন ফিজিক্স বিজ্ঞানী ছিলেন।
আলবার্ট আইনস্টাইন তার জীবনে দুবার তার সিটিজেনশীপ পরিবর্তন করেছিলেন। তিনি জার্মানিতে জন্মগ্রহন করেন এবং ১৯১৬ সালে সুইজারল্যান্ডে চলে আসেন। এবং পরবর্তীতে হিটলার পাওয়ারে চলে আসায় তিনি বুঝতে পারলেন যে তিনি আর জার্মানিতে ফিরে যেতে পারবেন না। তাই ১৯৪০ সালে তিনি আমেরিকান সিটিজেনশীপ নিয়ে নেন।
তিনি তার জীবনে নিউ ইর্য়কের বড় বড় নেতা এবং মানুষদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিলো। তিনি প্রথম যখন নিউ ইর্য়কে আসেন তখন উক্ত সময়ের নিউইয়র্ক মেয়র তাকে ঘটা করে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। এমনকি তার মৃত্যুর পর নিউইয়র্কে তার নামে একটি মেডিক্যাল করে খোলা হয়েছিল।
আইনস্টাইন খুব মেধাবী ছিলেন কিন্তু অফিসিয়ালী তার ব্রেইনের আকারটাও বড় ছিলো! শুনতে হাস্যকর হলেও এটি সত্যি! সাধারণ মানুষের ব্রেইনের থেকে আইনস্টাইনের ব্রেইন প্রায় ১৫% বড় ছিলো! তাই এখন আমরা বলতে পারি যে মাথা মোটা মানেই যে বলদ না!
আপনি চাইলে এখনো আইনস্টাইনের ব্রেইনের সাথে দেখা করে আসতে পারেন। বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীদের এবং কৌতুহলি সাধারণ জনতা চাইলেই আইনস্টাইনের ব্রেইনের দর্শন পেতে পারেন। আমেরিকার একটি জাদুঘরে তার ব্রেইনের কয়েকটি অংশ আপনি খুঁজে পাবেন। কারণ তার মৃত্যুর পর টিউনমর্টেমে তার ব্রেইনকে অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল।
তিনি ছিলেন একজন ছিমছাম মানুষ! তার কাজগুলোকে তিনি লাইব্রেরিতে গুছিয়ে রাখতেন। এমনি করে তার লাইব্রেরির সংখ্যা বিশাল হয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে তিনি প্রায় ৩০ হাজারের বেশি ডকুমেন্টের অধিকারী ছিলেন!
আইনস্টাইন পরমাণূ বোমার বিরুদ্ধে ছিলেন। অনেকেই আইনস্টাইনকে নিউক্লিয়ার বোমার প্রস্তুতকারক হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন কিন্তু বাস্বতে তিনি পরমাণু অস্ত্রের ঘোর বিরুদ্ধে ছিলেন। কারণ পরমানু বোমার সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে তিনি জানতেন। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পরমাণূ বোমার বিরুদ্ধে ছিলেন এবং অবস্থান করে গেছেন।
তিনি চাইলেই ইসরাইল প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন! ইসরাইলের প্রথম প্রেসিডেন্ট মারা যাবার পর ১৯৫২ সালে ইসরাইলের প্রেসিডেন্টের পদটি আইনস্টাইনে প্রস্তাবিত করা হয়েছিল। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট মারা যাবার আগে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আইনস্টাইনকে প্রস্তাবিত করে গিয়েছিলেন। কিন্তু আইনস্টাইন এই পদের জন্য নিজেকে অযোগ্য মনে করে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তো এই হলো আইনস্টাইন সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য! তবে টিউনটি শেষ করবার আগে আরেকটি মজাদার তথ্য দিতে চাই আপনাদেরকে! আইনস্টাইন তার জীবনে কখনোই মোজা পরেননি এবং তিনি চুল কাটতে অপছন্দ করতেন! একবার বিষয়টা ভাবুন!
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
নতুন কিছু জানলাম