বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
নিজেদের প্রয়োজনে আমরা অফিস, হাসপাতাল, শপিং মলে লিফট ব্যবহার করে থাকি। এসব জায়গায় আমরা অনেকে মাঝেমধ্যে এমন সব আচরণ করি যা অন্যের বিরক্তের কারণ হয়। অনেক সময় ভুল আচরণের কারণে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই লিফটে ওঠা-নামার সময় কিছু আদবকেতা মেনে চলা উচিত। লাইফস্টাইল-বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ক এটিকেট এবং হংকং টেটলারে লিফট ব্যবহারের আদবকেতার কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
জেনে নিন লিফট ব্যবহারের সময় কী কী আদবকেতা মেনে চলবেন।
একতলা থেকে ৭ তলা বা ১০ তলায় যাবে, লিফটের ভেতর ঢুকেই ৭ লেখা বাটনে চাপ দিলে, আর ওমনি লিফট চলা শুরু হয়ে গেলো। উঠছে তো উঠছেই, একদম ঠিক ৭ তলায় এসেই থামলো। কিন্তু, আসলে কীভাবে এই পুরো ব্যাপারটা ঘটে কখনো ভেবে দেখেছো? কেন লিফট ৭ তলায় না গিয়ে ৯ তলায় বা ১০ তলায় গেলো না? বাটনটা আসলে কীভাবে লিফটকে নির্দেশনা দেয়? এসো, আজ আমরা এসব নিয়েই আলোচনা করি।
লিফট পুরোটা তৈরি হয় ষ্টীল দিয়ে এবং এটি উঠানামা করাতে একটি বিশাল কপিকল ব্যবহার করা হয়। কপিকলটি কাজ করে একটি ইলেকট্রিক মোটর দিয়ে। লিফট ঝুলানো থাকে ইয়া মোটা একটি ষ্টীলের রশি দিয়ে। ভেবে দেখোতো, রশিটি যদি একবার ছিঁড়ে যায়, তাহলে কি হবে! ভয় পাবার তেমন কিছু নেই, লিফটের রশি এতই শক্ত হয় যে এটি ছিঁড়ে যাবার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও লিফট ছিঁড়ে পড়ে যাবার ঘটনা যে ঘটে না, তা নয়। তবে এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে খুবই স্বল্পসংখ্যক।
লিফটের ভেতর একটি কম্পিউটার সেন্সর স্থাপিত থাকে, এই সেন্সরই আসলে লিফটের চালিকাশক্তি। লিফট ডাকার জন্য যে বাটন থাকে, তাতে চাপ দিলে সেন্সরে খবর পৌঁছে যায় এবং লিফট বুঝতে পারে যে তাকে কোন তলা থেকে ডাকা হচ্ছে। তবে সেন্সর অনুযায়ী এর কাজ করার ব্যাপারটা যথেষ্টই জটিল। লিফট ডাকার দু’টি বাটন থাকে এবং এ অনুসারে লিফট দু’টি পর্যায়ে কাজ করে। কখনো কখনো দেখবে যে তুমি ৭ তলায় দাঁড়িয়ে নিচে নামার জন্য বাটনে চাপ দিলে, কিন্তু লিফট উপরে উঠতে উঠতে ৭ তলায় না থেমে সোজা ১০ তলায় গিয়ে নিচে নামার সময় ৭ তলায় থামল। এর মানে হল লিফট ৭ তলায় আসার আগে ১০ তলায় কেউ একজন বাটনে চাপ দিয়েছে, আর যেহেতু তুমিও নিচে যাবে, তাই ৭ তলায় থেমে সময় নষ্ট না করে ১০ তলায় গিয়ে একেবারে নামার সময় ৭ তলায় থামল। ব্যাপারটা একটু মজার, তাই না? যেন লিফটেরও মানুষের মতো সময়জ্ঞান আছে!
এ তো গেলো লিফট ডাকার কথা, এবার চলো লিফটে ওঠা যাক। লিফটে প্রবেশ করার পরপরই দেখবে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু লিফট কীভাবে জানে যে তুমি প্রবেশ করেছো কিনা? আসলে লিফটের দরজাতেও একটি ছোট সেন্সর বসানো থাকে, যেটি বুঝতে পারে দরজার মাঝে কেউ দাঁড়িয়ে আছে কিনা। যদিও এই সেন্সরটি তেমন শক্তিশালী না, তাই মাঝেমধ্যেই অনেকে লিফটে ঢুকতে দেরী করে দরজাতে ছোটোখাটো একটা চাপা খেয়ে থাকেন। লিফটে প্রবেশ করার পর ভেতরে অনেকগুলো বাটন দেখা যায়। লিফটটি যে বিল্ডিং-এ আছে, সেই বিন্ডিং-এর যতগুলো ফ্লোর, ততগুলো নাম্বার বাটন থাকে। তুমি যদি G-তে চাপ দাও, তার মানে তুমি একদম গ্রাউন্ড ফ্লোরে যেতে চাইছো, তখন লিফটের সেন্সর এই নির্দেশনা গ্রহণ করে এবং মোটরকে চালিত করে। গ্রাউণ্ড ফ্লোরে পৌঁছানোর পর সেন্সর বুঝতে পারে যে গন্তব্যে পৌঁছানো হয়েছে। ফ্লোর বাটনগুলোর পাশাপাশি লিফটে আরও কিছু বাটন দেখতে পাবে। এর মধ্যে ফ্যান, স্টপ ছাড়াও অ্যালার্ম লেখা একটি বাটন আছে। কোন কারণে হঠাৎ লিফট বন্ধ হয়ে গেলে বা কারেন্ট চলে গেলে এই বাটনে চাপ দিলেই নিচে লিফট কন্ট্রোল রুমে খবর পৌঁছে যায় যে লিফট আটকা পড়েছে। তখন তাঁরা চাবি দিয়ে লিফট খোলার ব্যবস্থা করেন। তাই কখনো লিফটে আটকা পড়লে অযথা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার না করে অ্যালার্ম বাটন খুঁজে নিয়ে তাতে চাপ দেবে।
বাসাবাড়িতে থাকা লিফটগুলো নিয়ে অনেক সময় অনেক দুষ্ট বাচ্চারা খেলা করে। অযথা লিফট ডাকার বাটনে চাপ দিয়ে অন্যদের সময় নষ্ট করে, বা শুধু শুধু অ্যালার্ম বাটনে চাপ দিয়ে সবাইকে হয়রানির শিকার করে। আসলে এসব একদমই করা উচিত নয়। লিফট অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস, বিশেষ করে বহুতল ভবনের জন্য। তাদের দুষ্টুমির জন্য হয়তো অনেকের চলাচলে অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে। আর অনেকে লিফট ডাকার বাটনে বারবার চাপ দেন এটা ভেবে যে লিফট হয়তো তাড়াতাড়ি চলে আসবে। আসলে এটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। লিফটকে যে কমান্ডগুলো দেয়া হয়, সে সেই অনুসারেই কাজ করে। একটি কমান্ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য একটি কমান্ড পূরণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বাটনে একবার চাপ দিয়ে ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করবে, এবং আগে লিফট থেকে লোকজনকে নামতে দিয়ে ধাক্কাধাক্কি না করে ধীরেসুস্থে প্রবেশ করবে।
লিফটে ওঠা-নামার সময় একটু সতর্ক থাকতে হবে। হাউ স্টাফ ওয়ার্কস
নিজেদের প্রয়োজনে আমরা অফিস, হাসপাতাল, শপিং মলে লিফট ব্যবহার করে থাকি। এসব জায়গায় আমরা অনেকে মাঝেমধ্যে এমন সব আচরণ করি যা অন্যের বিরক্তের কারণ হয়। অনেক সময় ভুল আচরণের কারণে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই লিফটে ওঠা-নামার সময় কিছু আদবকেতা মেনে চলা উচিত। লাইফস্টাইল-বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ক এটিকেট এবং হংকং টেটলারে লিফট ব্যবহারের আদবকেতার কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
জেনে নিন লিফট ব্যবহারের সময় কী কী আদবকেতা মেনে চলবেন-
• যদি আপনি লিফটে ওঠার পর লিফটের দরজা বন্ধ হওয়ার আগে অন্য কাউকে আসতে দেখেন তাহলে দরজা খোলার বাটন চেপে ধরে রাখুন। এটা এক ধরনের ভদ্রতা। অথবা দরজা বন্ধ হওয়ার সময় সে ঢুকতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে।
• লিফটের মধ্যে কথা কম বলুন। উচ্চস্বরে কথা তো একদমই বলবেন না।
• লিফটে ফোনের নেটওয়ার্ক থাকে না। তাই কথা না শোনা গেলে অযথা চিৎকার করে কথা বলতে যাবেন না।
• পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে লিফটে দেখা হয়ে গেলে তার সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা বলুন। অতিরিক্ত কথা বলে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবেন না।
• লিফটে ওঠার জন্য তাড়াহুড়া করবেন না। লাইনে দাঁড়ান, ধীরেসুস্থে লিফটে উঠুন এবং নামুন।
• এক বা দোতলায় যাওয়ার সময় চেষ্টা করুন যাতে লিফট ব্যবহার না করতে।
• দৌঁড়ে এসে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া লিফটে উঠতে যাবেন না। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
• লিফটে চড়ার আগে নামতে দিন পরে উঠুন। এতে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা কম থাকবে।
• লিফটে যখন মানুষ কম থাকবে তখন মালপত্র ওঠানামার কাজ সেরে ফেলুন।
• ভদ্রভাবে সংকুচিত হয়ে লিফটে দাঁড়ান। যাতে অন্য কারোর অস্বস্তির কারণ না হন।
• লিফটের মধ্যে শব্দ করে খাবেন না। যতটা সম্ভব লিফটে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
• লিফটে কাউকে ধাক্কা দিয়ে, কারো মাথা ডিঙিয়ে বাটন প্রেস করতে যাবেন না। ভদ্রভাবে নিজের ফ্লোর-বাটনে প্রেস করুন।
• লিফটের মধ্যে জোরে হাঁচি কিংবা কাশি এলে মুখে রুমাল চাপা দিন।
• লিফটম্যানদের সঙ্গে অযথা দুর্ব্যবহার করবেন না। তাদের সঙ্গে যথাসম্ভব ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
• কোনো কারণে লিফট মাঝপথে আটকে গেলে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। অযথা চেচামেচি করবেন না।
• হাসপাতালের লিফটে আগে রোগীকে উঠতে দিন। তারপর নিজে উঠুন।
• শপিং ব্যাগ যেন কারো ঝামেলা না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
• বয়স্কদের আগে লিফটে উঠতে দিন। অযথা তাড়াহুড়া করে তাঁদের সমস্যা করবেন না।
• শিশুদের নিয়ে সাবধানে লিফটে চলাচল করুন। যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
গুগোল থেকে সংগ্রিহিত
আগামীতে আবার দেখা হবে, আজকে আসি আল্লাহ হাজিফ।
আমি মামুন। COO, Injaazh Private Limited, Pabna। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 122 টি টিউন ও 134 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 50 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
{জানিয়ে দাও} (,) {না হয় জেনে নাও}