প্রায়ই কোরবানির পশু নিয়ে নানা ধরনের বিপত্তির মুখোমুখি পড়তে হয় ক্রেতাদের। বিশেষ করে পশুটি সুস্থ কিংবা স্টেরয়েড ব্যবহার করে গরুটিকে মোটাতাজা করা হয়েছে কিনা। কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থেকে সুস্থ পশু ক্রয় করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রাণিবিশেজ্ঞরা। তারা জানান, দেশে চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে কোরবানির উপযোগী পশু রয়েছে। যা দিয়ে কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
কোরবানির সুস্থ পশুর চেনার উপায় সম্পর্কে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. মো. মোফাজ্জল হোসাইন বলেন, গরুর চোখ বড় ও উজ্জ্বল থাকবে, লেজ দিয়ে মাছি তাড়াবে, কান নাড়বে, অবসরে পান চিবানোর মতো সবসময় চিবাবে। গরু বিরক্ত করলে সহজেই রেগে যাবে। গোবর স্বাভাবিক থাকবে, পাতলা পায়খানা করবে না। আর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় এবং নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরু সুস্থ। অসুস্থ গরু খাবার খেতে চায় না।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় কোরবানির পশু বা গরুকে মোটাতাজাকরণ ওষুধ খাইয়ে স্বাভাবিকের চাইতে অতিরিক্ত মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে নিয়ে আসে। এসব গরু অন্য সব গরুর চাইতে ফোলা থাকে। তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. মোফাজ্জল হোসাইন বলেন, স্টেরয়েড ব্যবহারে অল্প সময়ে পশুর শরীরে পানি জমে ফুলে উঠে। এ গরু খাবার কম খেয়ে পানির প্রতি আগ্রহ দেখায়। শরীরের মাংসালো অংশে জোরে চাপ দিলে দেবে যায়। মাছি তাড়ানোর জন্য ঘন ঘন লেজ নাড়াবে না। তাছাড়া উপরোক্ত লক্ষণগুলো পাওয়া গেলে হাটে অবস্থিত প্রাণি চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে বলে তিনি মত দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে ট্রাকে, ট্রলারের সাহায্যে গরু হাটে নিয়ে আসেন। ফলে একজন ক্রেতা যখন হাট থেকে গরু কিনে বাড়ি নিয়ে যায়, তখন সেই গরু একবার বসলে আর দাঁড়াতে চায় না বা কোন কিছু খেতেও আগ্রহ প্রকাশ করে না। তখন অনেকেই মনে করে পশু বোধ হয় মারাত্মক অসুস্থ। এ সম্পর্কে অধ্যাপক ড. মো. মোফাজ্জল হোসাইন বলেন, ট্রাক, ট্রলারে গরুকে বাঁধা অবস্থায় আনার ফলে বেশ ক্লান্ত থাকে। তাই পশুকে বিরক্ত না করে ৮-১০ ঘণ্টা বিশ্রাম দিয়ে তারপর খাবার দিতে হবে। এ সময় পশুর সামনে শুধু ঘাস ও পানি রাখা যেতে পারে, প্রয়োজনে পশু তা গ্রহণ করবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, সারাবছর প্রায় দুই কোটি ৩১ লাখ ১৩ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাই হয়। এর প্রায় ৫০ ভাগ জবাই হয় কোরবানির ঈদের সময়। সে হিসেবে কোরবানির সময় এক কোটি ১৫ লাখের মতো গবাদিপশু দরকার হবে। এ পরিমাণ গবাদিপশু দেশের খামারি ও গৃহস্থের ঘরে রয়েছে।
আমি মোঃ হাফিজুর রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 11 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।