ঢাকাসহ সারাদেশে ৬.৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ঢাকায় রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, গাইবান্ধা, রংপুর, লক্ষ্মীপুর, বান্দরবান, সিলেট, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ফেনী, লালমনিরহাট, খুলনা, নাটোর, বাগেরহাট, ভোলা, ফরিদপুর ও রংপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও প্রায় একই সময় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এই ভূমিকম্পই হচ্ছে এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়...
ভূমিকম্প বলতে পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশবিশেষের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন বা আন্দোলনকে বোঝায়।
হঠাৎ বুঝতে পারলেন আপনার ঘরের কোনো জিনিস নড়ছে, দেয়ালের ঘড়ি, টাঙানো ছবিগুলো নড়ছে, আপনিও ঝাঁকুনি অনুভব করছেন, তখন বুঝতে হবে ভূমিকম্প হচ্ছে।
ভূমিকম্প বা ভূকম্পনঃ ভূ মানে পৃথিবী আর কম্পন হলো কাঁপা; সোজাভাবে ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর কেঁপে ওঠা। তার মানে পৃথিবী যখন কাঁপে তখন আমরা তাকে ভূমিকম্প বলি।
পৃথিবীতে বছরে গড়ে কত ভূমিকম্প হয়, শুনলে কপালে উঠতে পারে চোখ। বছরে গড়ে ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। তবে এগুলোর অধিকাংশই মৃদু যেগুলো আমরা টের পাই না। সাধারণত তিন ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে- প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু।
আবার উৎসের গভীরতা অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- অগভীর, মধ্যবর্তী ও গভীর ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠের ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে অগভীর, ৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে হলে মধ্যবর্তী এবং ৩০০ কিলোমিটারের নিচে হলে গভীর ভূমিকম্প বলে।
ছোটবেলায় গল্প শুনতাম, পৃথিবীটা একটা বড় ষাঁড়ের শিংয়ের মাথায়। ষাঁড়টা যখন এক শিং থেকে অন্য শিংয়ে পৃথিবীটা নিয়ে যায় তখন সবকিছু কেঁপে ওঠে। আর ভাবতাম, এজন্যই ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের কারণ এটা নয় বটে, তবে পৃথিবীর গভীরে ঠিকই একটা পরিবর্তন হয়।
সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে…
১. ভূপৃষ্ঠজনিত
২. আগ্নেয়গিরিজনিত
৩. শিলাচ্যুতিজনিত
সিসমোগ্রাফ আবিষ্কারের আগে মানুষ শুধু বলতে পারত ভূমিকম্প হয়ে গেছে। কিন্তু কোন মাত্রায় হলো, বলা সম্ভব ছিল না। আধুনিক সিসমোগ্রাফের বয়স প্রায় ১৫০ বছর। ভূমিকম্প মাপা হয় দুইভাবে- তীব্রতা এবং প্রচণ্ডতা বা ব্যাপকতা। ভূমিকম্পের মাত্রা মাপা হয় রিখটার স্কেলে। স্কেলে এককের সীমা ১ থেকে ১০ পর্যন্ত। রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫-এর বেশি হওয়া মানে ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা।
মনে রাখতে হবে, ভূমিকম্প এক ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলেই এর মাত্রা ১০ থেকে ৩২ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
৫ - ৫.৯৯ মাঝারি
৬ - ৬.৯৯ তীব্র
৭ - ৭.৯৯ ভয়াবহ
৮ - এর ওপর অত্যন্ত ভয়াবহ
১। ভূমিকম্পের সময় অনেকে টেবিল, চেয়ার, বিছানা ইত্যাদির নীচে আশ্রয় নেন- যা অবশ্যই পরিহার করা উচিত। কিন্ত কিছুদিন আগেও এটা ভূমিকম্পের সময় বহুল প্রচলিত একটি পদ্ধতি ছিল, যা ‘Duck and Cover’ পদ্ধতি নামে পরিচিত। পৃথিবীর বড় বড় ভূমিকম্পে উদ্ধারকর্মী হিসেবে যারা কাজ করেছেন তারা বলছেন- ভূমিকম্পের সময় ‘Duck and Cover’ পদ্ধতি যারা অনুসরণ করেছে, তাদের বেশিরভাগকেই তারা নিহত অবস্থায় পেয়েছে। ডাগ কপ নামক একজন অভিজ্ঞ উদ্ধারকর্মী ১৯৮৫ সালে মেক্সিকো সিটির ভূমিকম্পে উদ্ধার কাজে অংশ নেন। প্রথম যে দালানটিতে তিনি ঢোকেন, সেটি ছিল একটি স্কুল। ভূমিকম্পের সময় স্কুলের বাচ্চাদের বলা হয়েছিল Desk-এর নীচে আশ্রয় নেবার জন্য। তারা প্রতিটি শিশুকেই Desk-এর নীচে গুঁড়িয়ে যাওয়া অবস্থায় পান। এক্ষেত্রে ভূমিকম্পের সময় যেটা হয়- দালান ভেঙ্গে পড়ার সময় Ceiling-এর সম্পূর্ণ ভার এসব Object-এর ওপর পড়ে, তাতে এর নীচে আশ্রয়গ্রহণকারীর বেঁচে থাকার কোন উপায় থাকে না। তাই, ভূমিকম্পের সময় Desk, টেবিল ইত্যাদি কোন কিছুর নীচে ঢুকে আশ্রয় নেয়া ঠিক না।
২। উদ্ধার কর্মীরা আরো লক্ষ্য করেছেন- দালান ভেঙ্গে পড়ার সময় Ceiling যখন কোন Object-এর ওপর পড়ে একে গুঁড়িয়ে দেয়, ঠিক তার পাশেই ছোট্ট একটি খালি জায়গা বা Void-এর সৃষ্টি হয়। একে তারা বলছেন ‘Safety Zone’ বা ‘Triangle Of Life’। তাই ভূমিকম্পের সময় বড় কোন আসবাব বা বড় কোন Object যেটা কম Compress করবে- এরকম কিছুর পাশে আশ্রয় নিলে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ছোট্ট একটু Void-ই যথেষ্ট। বিপন্ন অবস্থায় কুকুর, বিড়াল এবং শিশুদের একটা সহজাত প্রবৃত্তি হল কুন্ডলি করে গুটিশুটি হয়ে যাওয়া। ভূমিকম্পের সময় মানুষেরও এটা অনুসরণ করা উচিত। তাহলে বিভিন্ন অবজেক্টের পাশে গুটিশুটি করে আশ্রয় নিলে এগুলো ভূমিকম্পের সময় যে ছোট Void-এর সৃষ্টি করবে তাতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
৩। রাতের বেলা ঘুমানোর সময় ভুমিকম্প হলে কোন হুড়াহুড়ি করার দরকার নেই। গড়িয়ে মেঝেতে কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে পড়ুন বিছানাকে ঢাল বানিয়ে। তার মানে আবার বিছানার নীচে যেন ঢুকবেন না, বিছানার পাশে আশ্রয় নিন। তেমনি ভূমিকম্পের সময় জানালা বা বারান্দা দিয়ে লাফ দেয়া এসবও করবেন না। সোজা কোন সোফা বা ২নং Point-এ যেভাবে বলেছি সেভাবে ঘরের মধ্যেই কোন Object-এর পাশে আশ্রয় নিন।
৪। অনেককে বলতে শুনেছি ভূমিকম্পের সময় দরজার নিচে আশ্রয় নিলে নাকি বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে! দরজার নিচে বা পাশে থাকলে নির্ঘাত মারা পড়বেন। যদি দরজার নিচে থাকেন তবে Ceiling-এর নিচে চাপা পড়ে মারা পড়বেন আর যদি পাশে থাকেন দরজা আপনাকে দু’ভাগ করে কেটে ভেঙ্গে পড়বে।
৫। ভূমিকম্পের সময় কখনই সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। সিঁড়ির ‘Moment Of Frequency’ দালানের চাইতে ভিন্ন হয় এবং অনেক সময় দালান ভেঙ্গে না পড়লেও সিঁড়ি দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে।
৬। চেষ্টা করুন বাসার একেবারে ভিতরের দিকের রুমে না থেকে বাইরের দেয়ালের কাছাকাছি আশ্রয় নিতে। দালানের ভেতরের দিকে থাকলে সবকিছু ভেঙ্গে পড়ার পর আপনার ‘Escape Route’ বা ‘উদ্ধার পাবার রাস্তা’ Block হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাইরের দেয়ালের কাছাকাছি থাকলে Block কম থাকবে, তাড়াতাড়ি উদ্ধার পাবার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
৭। ভূমিকম্পের সময় যদি গাড়িতে থাকেন, তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির পাশে বসে বা শুয়ে পড়ুন। গাড়ির ভেতরে থাকলে রাস্তার ওপরের বিভিন্ন Object গাড়ির ওপর পড়ে গাড়িকে চূর্ণ করার ফলে মারা যাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৮। যারা পত্রিকা অফিসে কাজ করেন তাদের জন্য সুসংবাদ। উদ্ধারকর্মী যাদের পত্রিকা অফিসে উদ্ধার কাজের অভিজ্ঞতা আছে, তারা বলেছেন- পত্রিকা অফিস বা যেসব অফিসে বড় বড় কাগজের স্তুপ আছে, সেগুলো কখনো Compact করে না। কাজেই এসব কাগজের স্তুপের পাশে তারা বড় বড় Void খুঁজে পেয়েছেন। যারা এসব অফিসে কাজ করেন, তারা নিশ্চিন্তে কাগজের স্তুপের পাশে আশ্রয় নিন।
৯। সব বড় ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যেটাকে ‘After Shock’ বলে। এটার জন্যও সতর্ক থাকুন, না হলে পচা শামুকেই শেষমেষ পা কাটতে হতে পারে।
১০। প্রথম ভূমিকম্পের পর Utility Line-গুলো (গ্যাস, বিদ্যুৎ ইত্যাদি) একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন Damage দেখলে Main Switch বন্ধ করে দিন।
১। পরিবারের সবার সাথে বসে এ ধরণের জরুরী অবস্থায় কি করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে- মোট কথা আপনার পরিবারের Emergency Plan কি সেটা ঠিক করে সব সদস্যদের জানিয়ে রাখুন।
২। বড় বড় এবং লম্বা Furniture-গুলোকে যেমন- শেলফ ইত্যাদি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখুন যেন কম্পনের সময় গায়ের উপর পড়ে না যায়। আর ভারী জিনিষগুলো মাটিতে নামিয়ে রাখুন।
৩। বিছানার পাশে সবসময় টর্চলাইট, ব্যাটারী এবং জুতো রাখুন।
১। ধুলাবালি থেকে বাঁচার জন্য আগেই সাথে রুমাল বা তোয়ালে বা চাদরের ব্যবস্থা করে রাখুন।
২। ম্যাচ জ্বালাবেন না। দালান ধ্বসে পড়লে গ্যাস Lick হয়ে থাকতে পারে।
৩। চিৎকার করে ডাকাডাকি শেষ Option হিসেবে বিবেচনা করুন। কারণ, চিৎকারের সময় মুখে ক্ষতিকারক ধুলাবালি ঢুকে যেতে পারে। পাইপে বা দেয়ালে বাড়ি দিয়ে বা মুখে শিস বাজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করতে পারেন। তবে ভাল হয় সাথে যদি একটা রেফারির বাঁশি থাকে, তার Preparation নিয়ে রাখুন আগেই।
আর কথায় তো আছেই- “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো”
এই Software-টি আপনাকে পূর্বাভাস দিয়ে ভূমিকম্প থেকে বাঁচাতে পারবে না, তবে এইমাত্র ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পটি সম্পর্কেও Latest তথ্য জানিয়ে দেবে- যেমন এর মাত্রা, কেন্দ্রস্থল ইত্যাদি। তবে এর জন্য আপনার Internet Connection থাকতে হবে। Software-টির নাম EQuake3D…
নিচের Recent Screenshot-টি দেখুন…
Software-টি Portable…
এটি Download করতে নিচের Mediafire Link-এ Click করুন (Size: 857.26 KB)…
যতটা সম্ভব সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন…
আর বিপদ থেকে বাঁচতে হিতাহিত জ্ঞান না হারিয়ে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগান...
আর কিছুদিন পরেই বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুর হতে যাচ্ছে, তাই নিচের Tune-টি আপনাদের কাজে আসতে পারে...
এবার আপনার প্রিয় Blogspot Blog থেকেই Cricket-এর Live Score দেখুন…
ধন্যবাদ সবাইকে…
তথ্যসূত্র: সতর্কতা বিষয়ক নিয়মগুলো কোনও এক বাংলা ব্লগ থেকে নেওয়া (নামটা মনে নেই, প্রয়োজনীয় বিধায় Note করে রেখেছিলাম), আর বাকিটুকু Wikipedia...
আমি C/O D!pu...। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 1031 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
It's simply me & that's all I need to be...
((( vALo )))