[ এটি মূলত একটি ভিডিও টিউন, তাই টিউন টি পড়ার আগে ভিডিও টি দেখে নিলে বুঝতে কোন কষ্ট হবে না। ]
আপনি হয়তো কাউকে বলতে শুনেছেন, "আমার কম্পিউটারে না ভাইরাস ঢুকেছে, এখন কিচ্ছু করতে পারছি না, কি যে করি!" আরেকজন হয়তো বলছে, "ভাইরাস আমার সব ফাইল ডিলিট করে দিয়েছে, কি করবো এখন?
যেই ভাইরাস আমাদের প্রতিনিয়ত এতো যন্ত্রনা দেয় সেই ভাইরাস টি আসলে কি জিনিস? সাধারণ অর্থে ভাইরাস হলো একটি ক্ষতিকারক বস্তু যার কাজই হলো ক্ষতি করা। তো এটি কিভাবে ক্ষতিসাধন করে? আমাদের দেহের ভেতর যখন ভাইরাস ঢুকে তখন এটি দেহের স্বাভাবিক কাজে বাঁধা দেয়, ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। একইভাবে যখন কোন কম্পিউটারের ভেতর ভাইরাস ঢুকে তখন সেই কম্পিউটারের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়, এমনকি অনেক সময় কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ভাইরাস নিজের হাতে নিয়ে নেয়, ফলে কম্পিউটারটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই সেই কম্পিউটার দিয়ে আপনি কোন কাজ করতে পারেন না।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে আমাদের আরো গভীরে যেতে হবে, বুঝতে হবে কম্পিউটার কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে। একটি কম্পিউটারে সাধারণত দুইটি অংশ থাকে, যন্ত্র ও নির্দেশগুচ্ছ। যন্ত্রকে ডাকা হয় হার্ডওয়্যার এবং নির্দেশগুচ্ছকে ডাকা হয় সফটওয়্যার। হার্ডওয়্যার এর কাজ হলো সফটওয়্যার এর নির্দেশগুলো পালন করা। আপনি কম্পিউটার এর সাহায্যে যত ধরণের কাজ করেন তা কম্পিউটার সম্পন্ন করে একটির পর একটি নির্দেশ পালনের মাধ্যমে। কিন্তু এই নির্দেশগুলোর কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ তা বুঝার ক্ষমতা কম্পিউটারের নেই। অর্থাৎ কম্পিউটার বুঝতে পারে না কোন সফটওয়্যার টি ভালো আর কোনটি খারাপ।
আর কম্পিউটারের এই দুর্বল দিকটি কাজে লাগিয়ে একদল দুষ্ট সফটওয়্যার লেখক নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কিংবা স্রেফ দুষ্টোমি করার জন্য এমন ধরণের সফটওয়্যার লিখেন যার ভেতরে থাকে ক্ষতিকারক নির্দেশ, কিন্তু বাইরের চেহারায় ভালোমানুষি। এভাবে আপনার চোঁখে ধোকা দিয়ে এটি যখন ইমেইল অ্যাটাচমেন্ট কিংবা পেনড্রাইভ থেকে আপনার কম্পিউটারের ভেতর ঢুকে পড়ে আর না জেনে আপনি নিজেই এটি চালনা করেন তখন আপনি বুঝতেও পারলেন না যে নিজের অজান্তেই আপনি কম্পিউটারকে বলে দিলেন এই ক্ষতিকারক নির্দেশগুলো পালন করার জন্য।
আর যখনই নির্বোধ কম্পিউটার একটির পর একটি ক্ষতিকারক নির্দেশ পালন করা শুরু করলো আপনার কম্পিউটারও অসুস্থ হতে লাগলো। এই ক্ষতিকারক সফটওয়্যারটিকেই ডাকা হয় ভাইরাস। নানান ধরণের ভাইরাস রয়েছে আর এদের ক্ষতির ধরণও নানান রকম। কোন কোন ভাইরাস ফাইল ডিলিট করে দেয়, কোনটি কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় যাতে আপনি কোন কাজ করতে না পারেন। আবার অনেক ভাইরাস নিজেকে লুকিয়ে রেখে তথ্য চুরি করে।
ভাইরাস যে কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার একটি ধারণা পাবেন গত মে মাসের বিশ্বব্যাপি সাইবার আক্রমন থেকে। গত মে মাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাস গোটা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার এর ফাইল তালাবদ্ধ করে ফেলে এবং এসকল ফাইল পুনরোদ্ধারের জন্য তিনশো ডলার চাঁদা দাবি করে।ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক, এটিএম বুথ এবং যোগাযোগ ব্যাবস্থা অচল হয়ে পড়ে।
ভাইরাস আমাদের জীবনে কতোটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে তা আপনি এতোক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন। তাই পরের পর্বে আমরা দেখবো ভাইরাসের হাত থেকে আমাদের কম্পিউটারকে কিভাবে রক্ষা করতে হয়।
আমি তাসনুভা রায়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 92 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আপু , অনেকদিন পর আপনার দেখা পেলাম 🙂