ইন্টারনেট কি ভাবে কাজ করে

আমাদের দৃষ্টিতে ইন্টারনেট কি ! আমরা ইন্টারনেট দিয়ে ওয়েবপেজ দেখি, ইমেইল পাঠাই , চ্যাট করি । তাহলে ইন্টারনেটা আসলে কি !
ইন্টারনেটা আসলে বিশ্বব্যাপী ছরিয়ে থাকা সবচে বড় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক , যাতে আমদের কম্পিউটার সধারনত শুধু যুক্ত হয়ে ভাচুয়ালি কিছু কাজ করার অনুমতি দেয় ।
মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ইন্টারনেট যদি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তাহলে ওয়েব কি !
ওয়েব হছে একটি পদ্ধতি যা সধারনত কোন কিছু প্রকাশনার কজে ব্যাবহারিত হয় ।

Internet

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হচ্ছে দুই বা তার বেশি কম্পিউটারের একত্রে সংযোগ যেন কম্পিউটার গুল একে অপর মধ্যে বার্তা পাঠাতে পারে । বৃহত্তর নেটওয়ার্ক’এ কম্পিউটার গুলকে সুসজ্জায়নে একত্রে সংযোগ করা হয়, যেখানে কিছু মধ্যস্থতাকারী কম্পিউটারের রয়েছে যা অন্যান্য কম্পিউটার গুলকে সংযোগ হতে সাহায্য করে, যেন একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারকে খুব সহজে খুজে নিতে পারে ,আর সংযোগের
সময় মধ্যস্থতাকারী কম্পিউটার গুল নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে ।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক আমাদের রাস্তার সিগ্নাল আর ট্রেন এর জংশন মোত অনেকটা কাজ করে, রাস্তা আর ট্রেনে জনগণ পরিবহণ করে এর পরিবর্তে কম্পিউটার নেটওয়ার্কে পরিবহণ করে তথ্য ।
একটি ট্রেনের গতিপথে জংশনে রয়েছে দিক নির্দেশ, রাস্তার মোরে রয়েছে সিগ্নাল, অন্যথায় এগুলো কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে না ।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কেও এই প্রথা রয়েছে, এদেরকে বলা হয় প্রটকলস(protocols) ।

আজ অনেক ধরনের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক আছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক হচ্ছে এথারনেট (Ethernet) নেটওয়ার্ক, যা সাধারণত আমরা
বাড়ি, স্কুল,অফিসে/দপ্তব়তে এর কম্পিউটারে সংযোগ করে ব্যাবহার করে থাকি । ক্রমবর্ধমানভাবে ওয়াইফাই(WiFi) ডিভাইসের নেটওয়ার্কের সংযোগ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কারন কেবল/তার দিয়ে আমাদের সমস্ত চাহিদা মিটছে না ।

ইন্টারনেটে সংযোগ

আপনি যখনি কম্পিউটার ইন্টারনেটে সংযোগ করেন, তখনি আপনি নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, এতটুক বলেই এর বিশেষত শেষ হয় না ।
ইংরেজিতে একটি কথা আছে "Rome wasn't built in a day" " রোম এক দিনে নির্মাণ করা হয়নি " তেমনি ইন্টারনেটও এক দিনে এ পর্যায়ে আসেনি । তবে বিশ্ববেপি ইন্টারনেটর এত শীঘ্র সহজলভ্য হয়ার পেছনে কারন হচ্ছে ইতিপূর্বে আমরা এরকম আরেকটি নেটওয়ার্কের প্রযুক্তি ব্যাবহার করছিলাম, তা আমাদের ফোন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ।

সাধারণ ভাবে আমরা যখন বাড়ির ফোন নেটওয়ার্কের প্রি-এক্সটেন(pre-existence) এর ব্যাবহার শুরু করি তার পূর্বের বছরি সামরিক বাহিনিতে একটি বিশেষ নেটওয়ার্কের উধভাবন হয়, যা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য পেরন করতে সক্ষম ছিল, তৎকালীন এটার নাম ছিল হাই-টেক (high-tech) নেটওয়ার্ক । এর জন্য শুধু প্রয়োজন হয়েছিল মডেমের( modems) টেকনোলজি ।
মোডেম, যা ফোন লাইনকে বদলে একটি বিশেষ কম্পানি ISP(Internet service provider )র মধ্যে ছোট নেটওয়ার্কের সৃষ্টি করে ইন্টারনেট পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করে । যেমন একটি দ্বীপে সেতু যুক্ত করা হলে তা সারা বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে যায় ।

প্রথম ইন্টারনেট সংযোগ করা হয় '(A)DSL (Digital Subscriber Line)' এর মধ্যমে, যার সাথে ফোন লাইনের কোন প্রার্থক ছিল না , যে প্রযুক্তিতে ইতিপূর্বেই আমরা পরস্পর-সংযুক্ত ছিলাম ।
ব্রিটিশ সায়েন্স ফিকশান লেখক যেমনটি বলেছিলেন - 'any sufficiently advanced technology is indistinguishable from magic'

ইন্টারনেট

এবার ইন্টারনেটের সম্বন্ধে ভেবে দেখুন, এখন ইন্টারনেটকে এতটা আশ্চর্যকর প্রযুক্তি বলে মনে হবে না । যার বড় নেটওয়ার্ক প্রকৃতপক্ষে পূর্বেই আমাদের ছিল । আমরা শুধু নতুন করে এর 'The Internet' ব্যাবহার জেনেছি । আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে কোন সরকারি গুরুতভাবয়ে ব্যতীত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরী হয়ে উঠেছিল ।
যুক্তরাষ্টে ১৯৯৮ সালে ২০ই ফেব্রুয়ারী প্রথম ইন্টারনেট কে পরিচালনার কাজে হাত দেয় একটি অলাভজনক আধাসরকারী সংস্থা 'ICANN' (Internet Corporation for Assigned Names and Numbers), যদিয় তাদের ক্রিয়াকলাপ প্রচন্ডভাবে সীমিত ছিল ।

ইন্টারনেটের প্রযুক্তি মাইক্রোসফ্ট এর অপারেটিং সিস্টেম নির্ভর করে নির্মাণ করা হয়নি, তা ছিল মাইক্রোসফ্ট অপারেটিং সিস্টেম থেকে অপেক্ষাকৃত পুরনো অপারেটিং সিস্টেম “UNIX” । তা সত্ত্বেও, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি সহজভাবে তুলে ধরায় উইন্ডোজ ব্যাবহারকারিদের সমর্থনের উপরে উঠে আসে ।

ইন্টারনেটে সমস্ত কম্পিউটার সমান ভাবে নেটওয়ার্ক গঠন করে না । কিছু কম্পিউটার পরিষেবা জোগান দিতে থাকে,এসব সমস্ত কম্পিউটারকে বলা হয় সার্ভার(servers) । আর কিছু কম্পিউটার পরিষেবা নেয়ার জন্য থাকে, এই সমস্ত কম্পিউটারকে বলা হয় ক্লায়েন্ট(clients) ।
টেকনিক্যালি সব কম্পিউটারের নেটওয়ার্কে সমান অবস্থা রয়েছে, কিন্তু সার্ভার ক্লায়েন্টের চেয়ে বেশি ভাল সংযোগ ব্যাবহার করে যা বাণিজ্যিক ভাবে কিছু কোম্পানি পরিচালনা করে । সাধারনত কোন ওয়েব সাইট দেখতে আপনাকে কোন খরচ প্রদান করতে হয় না, কিন্তু এই পরিষেবার জন্য কেওনা কেও খরচ প্রদান করেন ।
ওয়েব সাইটের মালিক সাধারণত ওয়েব হস্ট(web host)কে তার ওয়েব সাইটের অবস্থান নির্ণয় করার জন্য খরচ প্রদান করেন ।

যোগাযোগ তৈরি করা

ইন্টারনেট যদি কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক হয়, তাহলে বিশ্বর দুই প্রান্তের দুটি কম্পিউটার ইন্টারনেটে কিভাবে যোগাযোগ করে !

ধরুন , আপনি পরিচিত কেউকে চিঠি লিখেছেন, কিন্তু খামে শুধু তার নাম লিখেছন , এ চিঠি কি কক্ষনো পোছবে ? কারন এ’নামে কত মানুষই থাকতে পারে ! তাই আমরা যোগাযোগ করতে ঠিকানা ব্যবহার করি: নাম, বাড়ির নাম্বার, রাস্তার নাম, শহরের নাম, কখনও কখনও দেশর নামও । তারপর চিঠি’টি দেই ডাক বাস্কে, সেখান থেকে পোস্ট অফিস, পোস্ট অফিস থেকে হেড পোস্ট অফিস, সেখান থেকে প্রাপকের পোস্ট অফিস হয়ে প্রাপকের কাছে । এটাওতো একটি নেটওয়ার্ক !

আমারা ডাক সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে ঠিকানা মূখ্যত দুই ভাগে লিখি, প্রথমত পেরকের ঠিকানা(homing in), দ্বিতিয়ত প্রাপকের ঠিকানা(broadens out) । কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক অনেকটা এভাবেই কাজ করে, যদিও কম্পিউটার আরো অনেক কিছু বিশ্লেষণ করে, তবে প্রকৃতপক্ষে কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক এই নিয়মটি অনুসরণ করে ।

ইন্টারনেটে প্রত্যেক কম্পিউটারের একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা দেওয়া হয় (IP address),এগুলো হচ্ছে আমাদের কম্পিউটারের পেরক বা প্রাপকের ঠিকানা ।

এবার দেখি প্রাপকের ঠিকানা( IP address),যার সাথে কিছু শর্তাবলী যোগ থাকে,
প্রাপক কম্পিউটার যখন এই বর্তা পায় তখন প্রাপক কম্পিউটার শর্তাবলী দেখে নিয়ে উত্তর পেরন করে । যা বিভিন্ন কম্পিউটার(Host,Servers,ISP…)হয়ে পেরক কম্পিউটারে ফিরে আসে ।
এই পক্রিয়াই বারবার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে , এভাবেই ইন্টারনেটে এক কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে ত্যথ বা বার্তা বিনিময় করে ।

ইন্টারনেটে বার্তা বিনিময়র সমস্ত অংশকে প্যাকেট(Packets) বলে, আর এই প্যাকেটের অভ্যন্তরি বস্তুগুলো অনুসরন করে কম্পিউটারের ঠিকানা বা IP কে (Internet Protocol) ।

নাম,সংখ্যায় নয়

আমরা যখন কোন ইন্টারনেট অ্যাডেস লিখি তা অনেকটা হয় এ রকম techtunes.io , 64.13.255.20 এ ভাবে কিন্তু লেখি না , কারন নাম্বার গুলো থেকে নাম’টা মনে রাখা অনেক সহজ এবং অর্থবহ, ইন্টারনেটে এর জন্য এক বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে , যাকে বলা হয় DNS (domain name system) ।
ইন্টারনেটে প্রতিটি কম্পিউটার IP দ্বারা যুক্ত , আমরা কম্পিউটারে যখন লিখি techtunes.io , তখন আমাদের কম্পিউটার যুক্ত হয় DNS সার্ভার কম্পিউটারের সাথে , DNS সার্ভার বলে দেয় এই নামে জন্য কোন IPতে যেতে হবে , এতেই আমাদের কম্পিউটার পেয়ে যায় 64.13.255.20 IP ।

Level 0

আমি আলফা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 10 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Comments are closed.