প্রযুক্তি দিন দিন সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এর সাথে এগিয়ে চলেছে প্রযুক্তির পার্শ প্রতিক্রিয়া। হেডফোন এবং ইয়ারফোন এমন এক প্রযুক্তি যা ছোট বড়,যুবক, যুবতী সবাই ব্যবহার করে কিন্তু কেও এর পার্শ প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর দিক সমুহ জানেই না। আবার অনেকে জেনেও অবাধে সেটি ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন ছোট্ট এই গেজেটটি আপনার সাস্থের উপর কি কি প্রভাব ফেলে? যদি না জানেন তাহলে এই লিখাটি শুধু মাত্র আপনার জন্য।
আপনি সর্বত্র হেডফোনের ব্যবহার দেখতে পাবেন, বাস,ট্রেন, রাস্তায় ইত্যাদি। কিন্তু আপনি জানেন কি; এই হেডফোন ব্যবহার করে আপনি যে শুধু নিজের ক্ষতি করছেন তাই না। আপনার পাশের লোকজন দেরও ক্ষতি করছেন। কি বিশ্বাস হচ্ছেনা তাইতো? লিখাটা পুরোপুরি পড়ুন বিশ্বাস হয়ে যাবে।
যখন আপনি হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করেন তখন সরাসরি অডিও আপনার কানে যায়। ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি মাত্রার আওাজ যদি আপনার কানে যায় তাহলে শ্রবণ জটিলতা ঘটাতে পারে এবং এমনকি আপনি চিরতরে আপনার কানের কিছু ক্ষমতা হারাতে পারেন। যদি কেউ ১৫ মিনিটের জন্য ১০০ ডেসিবেলের বেশি শোনে, তবে সে বধির হয়ে যেতে পারে। তাই আপনি যদি হেডফোনের ব্যবহার করতেই চান, তবে আপনার কানের কিছু বিশ্রাম দিতে ভুলবেন না এবং কখোনই উচ্চ ভলিউমে গান শুনবেন না।
আপনার হেডফোন বা ইয়ারফোন কি আপনার ব্যক্তিগত? আপনি কি অন্য কারো সাথে ভাগ করে নিচ্ছেন? ওয়েল, আমরা সব সময় একবার আমাদের বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে আমাদের হেডফোন এবং ইয়ারফোন ভাগ করে শুনি। এই ভাগ করা সহজেই কানে সংক্রমণের ফলে হতে পারে। বিভিন্ন মানুষের কান থেকে ব্যাকটেরিয়া সহজেই আপনার হেডফোন মাধ্যমে আপনার কানে আসতে পারে। তাই পরবর্তী সময়ে আপনি যখন আপনার ইয়ারফোন বা হেডফোন শেয়ার করবেন, তখন নিশ্চিত করুন যে আপনি তাদের স্যানিটাইজ করেছেন বা পরিষ্কার করে নিয়েছেন।
বর্তমান সময়ে হেডফোন কম্পানি গুলো তাদের হেডফোনের অডিও এক্সপেরিয়েন্স এর দিকে ঠিকই নজর দিয়েছে। যার ফলে আপনি খুব ভাল কুয়ালিটির গান শুনতে পারছেন। কিন্তু আপনি আপনার কানে এমন স্থানে হেডফোন লাগান যাতে করে আপনার কানের ছিদ্র পুরোপরি বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে কোন বাতাস প্রবেশ করতে পারেনা (আপনি হয়ত বা জানেন কানে বাতাস প্রবেশ করা কতটা জরুরি। যদি না জানেন তাহলে টিউমেন্ট করুন)। যার ফলে আপনার কানে ইনফেকশন, টিটিনাস, শ্রবন জটিলতার রিস্ক থেকেই যায়।
এক গবেষনায় দেখা গেছে যারা অনেক সময় ধরে উচ্চ ভলিউমে গান শুনেন তারা হেডফোন খোলার পরেও অনেক্ষন ভালো ভাবে কানে শোনেনা। এটি সাময়িক হলেও এর ক্ষতি কিন্তু অনেক। এমন করতে করতে কবে যে আপনি চিরতরে বধির হয়ে জাবেন তা আপনি নিজেও জানেন না।
যারা অতিরিক্ত হেডফোণ ব্যবহার করেন তারা সাধারনত এর সমস্যায় ভুগেন। মাঝে মাঝে কানের ভেতরে ভোঁ ভোঁ আওাজ হয়ে থাকে। এটিও কিন্তু ক্ষতির লক্ষন।
হেডফোনের দ্বারা সৃষ্ট ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক তরঙ্গ আপনার মস্তিষ্কের জন্য গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর জারা ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করেন তারা আরো অত্যাধিক ঝুকিতে ভুগেন। কান সরাসরি মস্তিষ্কের সাথে যুক্ত। তাই হেডফোণ খুব বাজে ভাবে আপনার মস্তিষ্কে আঘাত হানে।
সম্প্রতি, হেডফোনের ব্যবহারের ফলে রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। গাড়ি দুর্ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা এবং এমনকি ট্রেন দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। হেডফোন কানে দিয়ে রাস্তায় হাটার সময় তারা অনেক আওাজ শুনতে পায়না এইভাবে কিছু দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য অনেক সময় বিপদ আসে। আবার দেখা যায় তাকে বাচানোর জন্য যে ছুটে আসে দুর্ভাগ্যবশত সে নিজেই মারা পরে। এভাবেই আপনার জন্য অন্য মানুষ বিপদে পরতে পারে।
এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে তাহলে কি আমরা হেডফোনের ব্যবহার করবনা? আমি তো হেডফোন ছাড়া থাকতেই পারিনা ইত্যাদি।যদি আপনার এই সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে নিচের অংশ টুকু পরুন।
আপনারা হয়ত জানেন না যে এই আর্টিকেল টি লিখার সময় আমি কানে ভালোমত শুনতে পাচ্ছিনা। কেন জানেন? কারনটা হোল এই লিখাটি শুরু করার এক ঘন্টা আগে আমি হেডফোনে উচ্চ ভলিউমে গান শুনছিলাম;। সেখান থেকেই লিখার ইচ্ছে জাগলো। তাই অনেক খুজা খুজি করে এই তথ্যগুলো বের করলাম।
আমি নিশ্চিত আমার আগের লিখাটাই পরে অনেকেই একটু ভয় পেয়েছেন। কিন্তু এর পরেও যদি আপনি হেডফোনের ব্যবহার কমাতে না পারেন আবার নিজের কানটাও ভালো রাখতে চান/ অবাধে নিজের পছন্দের গান শুনতে চান তাহলে এই লিখাটি শুধু মাত্র আপনার জন্য।
তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
সতর্কতাঃ
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করার কাজে ব্যাবহৃত হয়, জীবনকে ধবংস করার জন্য নয়। সুতরাং;আমরা সবাই সতর্ক হই এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করি।
ক্রেডিটঃ BanglaTrick.Com
আমি সজীব শাহরিয়ার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।