আসসালামালাইকুম, আশা করি আল্লাহ্র রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমি সবার মতো টিউনের শুরুতে সম্ভাষণ বা বক্তৃতা দিতে পারি না। তাই সরাসরি মূল উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছি। আজ যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হলোঃ ব্লগ কি এবং কোথায় ব্যবহার উপযোগী, ব্লগার কি বা কে, ব্লগিং কি এবং কীভাবে ব্লগিং করবেন। সেই সাথে ব্লগিং করার জন্য সেরা ১২ টি ব্লগিং সাইট যাতে করে আপনি নিজেও ব্লগিং করতে পারেন এবং একজন সফল ব্লগার হতে পারেন। আলোচনার শুরুতে কি কি আলোচনা হবে তা একনজরে দেখে নিতে পারেন।:D
এক নজরে বিস্তারিত
বিশ্বের প্রতিটি মানুষের রয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা তা হতে পারে সংবাদপত্রে বা ইন্টারনেট অথবা বিভিন্ন মাধ্যমে। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট এর সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান হল ব্লগ। ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন অথচ ব্লগ এর নাম শোনেননি এমন লোক পৃথিবীতে খুব কমই আছে। ব্লগ শব্দটি ইংরেজি blog শব্দ থেকে এসেছে। এটি মূলত weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভার্চুয়াল ডায়েরী ও বলা যেতে পারে কেননা, ব্লগের লেখকগণ তাদের দৈনন্দিন কথাগুলো ব্লগে প্রকাশ করে থাকেন। * ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে জোম বার্গার সর্বপ্রথম weblog শব্দটির অবতারণা করেন। * পরবর্তীতে পিটার মেরহোলজ শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ blog প্রকাশ করেন তার একটি ওয়েবসাইটে। পরবর্তীতে এই শব্দটি বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং ধীরে ধীরে মানুষ ব্লগের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে এবং ধীরে ধীরে মানুষজন কাগুজে পাতায় লিখার চেয়ে ব্লগে লিখতে শুরু করে। এভাবেই শুরু হয় ব্লগ এর যাত্রা এবং আজ এই সময়েও প্রায় প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে নিত্য নতুন ব্লগ।
ব্লগ সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকেঃ
এই ধরনের ব্লগসমূহ সাধারনত ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়ে থাকে যেখানে একজন ব্লগার তার মতামত, ধ্যান-ধারণা এবং তার নিজস্ব লেখা প্রকাশ করে থাকেন। ব্যক্তিগত ব্লগে এডমিন অন্যকে তার ব্লগে লেখার সুযোগ দিতে পারেন।
এই ধরনের ব্লগসমূহ সাধারনত ব্যক্তিগত উদ্যোগ অথবা একই মতের কয়েকজন এর উদ্যোগে হয়ে থাকে। এসকল ব্লগ পাবলিক ব্লগ নামেও পরিচিত যেখানে সকলে অংশগ্রহন করতে পারে এবং সেই ব্লগের নীতিমালা মেনে তাদের নিজস্ব লেখা প্রকাশ করতে পারে। এসকল ব্লগের লেখাসমুহ বিভিন্ন বিভাগের হয়ে থাকে এবং লেখাগুলোর দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে ঐ লেখার লেখকের হয়ে থাকে।
যারা মূলত ব্লগে তাদের লেখা প্রকাশ করে থাকেন তাঁরা-ই ব্লগার নামে পরিচিত। * ব্লগার শব্দটি সর্বপ্রথম ইভান উইলিয়ামস তার পাইরা ল্যাবস এর মাধ্যমে প্রকাশ করেন। * পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ইভান উইলিয়ামস ও মেগ হুরিহান চালু করেন blogger.com যা পরবর্তীতে গুগল কিনে নেয়। এবং এভাবেই ব্লগার শব্দটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে থাকে। একজন ব্লগার সাধারনত তাদের নিজস্ব কথাগুলোই একটি ব্লগের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। এটি হতে পারে সামাজিক সমস্যা,প্রযুক্তির নিত্যনতুন তথ্য,গল্প,কবিতা,গান,প্রবন্ধ,ধর্মীয়,পন্যের প্রচার ইত্যাদি। অর্থাৎ একজন ব্লগার তার নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতেই লিখে থাকেন এবং তার লেখার জন্য সে-ই এর দায়িত্ব বহন করে। বিভিন্ন ব্লগার এর চিন্তা ভাবনা যার যার নিজস্ব। একজনের সাথে অপরজনের মতের মিল নাও হতে পারে।
তাই সকল ব্লগারকে এক পাল্লায় মাপা উচিত নয়। কেউ হয়ত ইন্টারনেট সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখে সে তাই এই বিষয়েই লিখার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু তাই বলে যে কবিতা লিখবে তাকেও প্রজুক্তি নিয়ে লিখতে হবে এমন কোন বাধা-ধরা নিয়ম নেই। কোন ব্লগার কি বিষয়ে লিখবে এটা নিতান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যপার। একজনের লিখার জন্য অন্যজন কোন দায় গ্রহন করবেন না বা ঐ একজনের কারনে সকল ব্লগার এর উপর কোন দায় বর্তাবেনা। বর্তমান এই কঠিন সময়ে কিছু কিছু মানুষ এর মনে ব্লগার সম্পর্কে কিছু ভ্রান্তি দেখা দিয়েছে যা নিতান্তই ভিত্তিহীন। একজন লেখক কোন ব্লগে লিখলেই ব্লগার হয়ে যায়না বরং তার গ্রহণযোগ্যতার ও প্রয়োজন হয়ে থাকে আর এই কারনেই বিভিন্ন দেশে ব্লগারদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়ে থাকে। তাই একজন ব্লগার তার লিখনীর দ্বারা বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে। বর্তমানে ব্লগাররাও এক ধরনের সেলিব্রিটি হিসেবে আমাদের মনে তাদের আসন গ্রহন করেছেন এবং করে চলেছেন। যাদের লেখনীর দ্বারা মানুষ প্রতিনিয়ত উপকৃত হচ্ছে। তাই একজন ব্লগার হয়ে উঠা বেশ কষ্টসাধ্য এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য,সত্য বলার সাহসীকতা,মানুষের জন্য সৎ চিন্তা এবং ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি তবেই কেবল আপনি হতে পারবেন সফল ব্লগার এবং সেই সাথে আপনার আলোয় আলোকিত হতে পারে অন্যকারো জীবন।
কোন একটি ব্লগে ব্লগার যে মতামত বা লিখা প্রকাশ করেন একে বলা হয় ব্লগিং। ব্লগিং এর জন্য দেশ-বিদেশে রয়েছে অনেক ধরনের ব্লগ যেমন টেকপ্রিয়.নেট কোন কোন ব্লগে যে কেউ নিবন্ধন করে তাদের দৈনন্দিন জীবন/প্রযুক্তির তথ্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন এবং সারা বিশ্বের মানুষজন তাদের সেই লিখা পড়তে পারেন বিনামূল্যে। বর্তমানে ব্লগিং এর মাধ্যমে উপার্জন এর ধারনাটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যেমন কোন পন্যের রিভিঊ লিখে বা প্রচার এর মাধ্যমে আপনি পণ্যটির প্রসার ঘটাতে সাহায্য করার কারনে আপনিও কিছু টাকা উপার্জন করতে পারবেন। ব্লগিং এর নির্দিষ্ট কোন বিষয় হয়না বরং এটি একজন ব্লগার এর ইচ্ছের উপর নির্ভর করে থাকে। সবশেষে একটি কথাই বলা যায় যে, ব্লগ এর পরিধি যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে একসময় ফেসবুক ও পিছিয়ে পড়তে পারে। চারিদিকে আজ ব্লগের জয়ধবনি যা একদিনে হয়নি, তেমনি একজন ব্লগার ও একদিনে হয়না, প্রয়োজন সময়। কিছু টিপস মেনে চললে আপনিও হতে পারেন একজন সফল ব্লগার এবং মানুষের মনে করে নিতে পারেন আপনার স্থান।
১. ব্লগ লিখতে অবশ্যই সর্বজনবোধ্য ভাষারীতি ব্যবহার করতে হবে।
২. ব্লগিং এর মাধ্যমে অবশ্যই আত্মঘাতী কোন লেখা প্রকাশ করা উচিত নয়।
৩. কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন লেখা প্রকাশ করা ঠিক নয় এতে বিবাদের সৃষ্টি হতে পারে।
৪. কোন টিপস লিখার আগে অবশ্যই নিজে চেষ্টা করে দেখতে হবে টিপসটি কার্যকরী কিনা।
৫. টিঊটোরিয়াল লিখার সময় প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সম্ভব হলে সচিত্র টিউটোরিয়াল লিখুন।
৬. ব্লগে লিখার সময় কপি/পেস্ট পদ্ধতি আপনার জনপ্রিয়তার পথে বাধা হতে পারে তাই এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং যদি প্রকাশ করেন তবে অবশ্যই সে লেখাটির যথাযথ রেফারেন্স টিউনের সাথে সংযুক্ত করুন।
৭. অন্যের লেখা চুরি করা বা নিজের নামে চালিয়ে দেয়াটা কোন বুদ্ধিমান ব্লগার ভাইয়ের কাজ হতে পারেনা। আর একজন চোরকে পাঠক সমাজ কখনোই ব্লগার হিসেবে মেনে নেবেন না। তাই ব্লগ ভর্তি করার জন্য বা পেজ ভিউ বাড়ানোর জন্য ভুলেও অন্যের লেখা চুরি করবেননা। অন্যের লেখা চুরিকে সাধারনত প্লাগিরিজম (plagirism) নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। তবে সম্ভব হলে অন্যের লেখা অনুমতি সাপেক্ষে শেয়ার অথবা রেফারেন্স উল্লেখ করে আপনার ব্লগে যুক্ত করতে পারেন।
৮. প্রতিদিন ব্লগে নিত্যনতুন প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করুন এতে আপনার ব্লগ এবং ব্লগার হিসেবে আপনিও দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করবেন।
ওয়েবসাইট : http://www.hubpages.com সকল ধরনের কন্টেন্ট এবং আর্টিকেল নেটওয়ার্কের . সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে হাবপেইজ জনপ্রিয়। নতুনদের জন্য হাবপেইজ অনন্য।
টিউনটি ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করতে ভুলবেন না প্লিজ।
আমি মোঃ মানিক হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টিউনটি সুন্দরই চলছিল, কিন্তু পুরো টিউন পড়তে অন্যখানে যেতে বলা হয়েছে। যা নীতিবিরুদ্ধ। অতএব, লেখকের উদ্দেশ্যে অনুরোধ সংশোধন করে নিন এবং এডমিনদের উদ্দশ্যে অনুরোধ সংশোধন না করা হলে ব্যান করা হোক।