ক্যারিয়ারের ৫টি নেতিবাচক দিক যা আপনাকে শারীরিক এবং মানষিকভাবে অসুস্থ করে তুলতে পারে!

Level 7
সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা

- بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ -

সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি সবাইকে আমার সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউন।

আজকের টিউনটা একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা যাক। বলুন দেখি পৃথিবীতে কোন জিনিসটা সব চেয়ে বেশি বৈচিত্রপূর্ণ, যার একটার সাথে অন্যটার কোন মিল দেখা যায় না? সুপার ব্রিলিয়েন্টরা নিশ্চয় উত্তর দিয়েছেন আঙ্গুলের ছাপ, তাইনা? কিন্তু আমি যেহেতু কারও উত্তর শুনতে পাইনি সেহেতু আমি আমার মতো করে উত্তর দিলাম- মানুষের চেহারা! সচরাচর জমজ ছাড়া একজন মানুষের সাথে অন্য মানুষের চেহারা এক রকম হয় না। এই বিচিত্র মানুষগুলোর মধ্যে আচার-আচরন, কথা-বার্তা, চাল-চলনের বৈচিত্র এবং বৈসাদৃশ্য হিসাব করতে গেলে আপনার সারাটা জীবন লেগে যাবে। কিন্তু আপনি যদি এই বিচিত্র রঙের বিচিত্র মানুষগুলোকে নিয়ে সাদৃশ্যের চিন্তা করেন তাহলে খুব অল্প সময়ে তাদের সবার মাঝে যে সাদৃশ্য খুঁজে পাবেন সেটা হলো তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা। প্রত্যেকটা মানুষ একটা সুন্দর সুখের ভবিষ্যৎ কল্পনা করে। প্রত্যেকেই চিন্তা করে জীবনের কোন একটা পর্যায়ে তারা কোন চাকরী করবে এবং সুন্দর সুখের জীবন কাটাবে। কিন্তু বাস্তব চিন্তা করে বলুন তো, এই শতকোটি মানুষ যারা জীবনের কোন একটা পর্যায়ে তাদের কাঙ্খিত স্বপ্নের দেখা পেয়ে সেটাকে কতোটা সাফল্যমন্ডিত করতে পারে? সুখ এবং সাফল্যের পাশে তাদের জীবনে হতাশাও কি কম যুক্ত হয় না? আজকের টিউনে আমরা আলোচনা করবো ক্যারিয়ারের এমন ৫টি বিপর্যস্ত দিকের কথা যেগুলো শুধু মানুষিক নয় শারীরিকভাবেই ক্ষতির কারন হয়ে দাড়ায়।

সাধারনত কী হয় একটা জব পাওয়ার পরে?

সব সময় মানুষের ভবিষ্যৎ চিন্তাগুলো থাকে খুব সুন্দর! একটা দুঃচিন্তামুক্ত সুন্দর সুখের চিন্তায় মানুষকে আচ্ছন্ন করে রাখে। যেখানে অসম্ভব বলতে কিছু নেই, ডানা মেললেই উড়ে যাওয়া যায় পাখির মতোন। কিন্তু বাস্তব আর মানুষের কল্পনায় অনেক ফারাক থাকে। চাকরী পাওয়া নিয়ে আমরা যতো স্বপ্নই মনের ভেতর আঁকিনা কেন চাকরী পাওয়ার পরে তার অনেক অংশই বদলে যায়। আমরা কখনোই কল্পনা করিনা কেউ আমাদেরকে দিয়ে তাদের কাজ করানোর জন্যই আমাদেরকে চাকরীতে নিয়োগ দেয়। আমাদের কাজের বিনিময়েই জোটে আমাদের বেতন। সাধারনভাবে প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমতা না থাকলেও মনে জমাট বাঁধে হতাশা। কাজের প্রতি অনিহা। আজ এরকম ৫টি কারন আপনাদের সাথে বর্ণনা করবো।

চাকরী পাওয়ার আগের জীবন এবং পরের জীবনের মাঝে খুব বেশি পার্থক্য করে ফেললেও আপনার স্বাভাবিক জীবন অস্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। সব কিছুকেই সহজভাবে গ্রহণ করার মানুষিকতা সব সময় প্রয়োজন। আপনাদের স্বাভাবিক জীবন ধারা বজায় রাখা এবং আপনাদের জীবনকে আরও সুন্দর করায় আমার টিউনের আজকের প্রত্যাশা।

নির্দিষ্ট সময়ের কাজ শেষ করতে না পারা

সমস্যাঃ

যেকোন কাজের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে কাজ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। একজন চাকরীজীবির সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, সে তার কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে শেষ করতে পারছে কিনা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে আমরা অধিকাংশরাই সময়ের কাজ সময়ের ভিতরেই শেষ করতে পারিনা। এর পরিণামে আমাদের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা এবং কার্মদক্ষতার প্রতি হীণমন্যতাবোধ। আশ্চর্যজনক ভাবে আপনার এই সীমাবদ্ধতা আপনার ভেতরে একটা মারাত্বক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যা আপনাকে শুধু মানুষিকভাবে নয় শারীরিকভাবেও অনেকটা কাবু করে ফেলতে পারে। এর ফলে আপনার মাথা ব্যাথা, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, উচ্চ রক্তচাপ সহ আরও অনেক রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া চাকরীর ক্ষেত্রে এটা আপনার হাইয়ার অথোরিটির প্রতি আপনার মনে এমন এক ধারনার জন্ম দিতে পারে যে, তারা আপনাকে অতিরিক্ত কাজের চাপ দিচ্ছে। যারফলে কাজের প্রতি আপনার ভালোবাসা লোপ পেয়ে কাজের প্রতি অনিহা সৃষ্টি হয়।

সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ

সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আপনার মনোবলকে চাঙ্গা করুন। আপনার সহযোগিদের সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন করুন। যেকোন সমস্যা আপনার উর্ধ্বতন অথোরিটিকে বলুন। প্রয়োজনে তাদের সাথে আলোচনায় বসে আপনার সমস্যাগুলো খুলে বলুন। মনে রাখবেন, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং নিজের মনোবল আপনাকে যেকোন সমস্যা থেকে মুক্ত করার ক্ষমতা রাখে।

নেতৃস্থানীয়দের মাঝে চিন্তার দ্বন্দঃ

সমস্যাঃ

আপনি আধা গ্লাস পানি নিয়ে দুজন মানুষকে বিষয়টা আলাদা আলাদা ভাবে ব্যাখ্যা করতে বলুন। তাদের একজন বলবে গ্লাসটা অর্ধেক পানিতে ভরা এবং অন্যজন বলবে গ্লাসটি অর্ধেক খালি। আসলে প্রত্যেকটা মানুষের চিন্তা অন্যজনের কাছে থেকে আলাদা। এখন কথা হলো আপনার অফিসে উর্ধ্বতন দুজন কর্মকর্তা আছেন। অফিসের প্রয়োজনে মনে করুন একটা ওয়েব পেইজ ডিজাইন করতে হবে। একজন কর্মকর্তা বললো পেইজে যেন লাল রঙ্গের আধিক্য বেশি থাকে এবং অন্যজন বললো পেইজে যেন সবুজ রঙ্গের আধিক্য বেশি থাকে। এখন আপনি কোনটা করবেন? এরকম পরিস্থিতি আপনাকে খুব তীব্র মানুষিক চাপের মধ্যে ফেলে দিবে। এর ফলে আপনার মাথা ব্যাথা, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, উচ্চ রক্তচাপ সহ আরও অনেক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ

সব সময় চেইন অব কমান্ড মেনে চলার চেষ্টা করুন। সিনিয়র কর্মকর্তার পছন্দ যাই থাকনা কেন আপনি আপনার ইমিডিয়েট সিনিয়রকে মেনে চলুন। তাহলে দেখবেন যে আপনি ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন। সাথে আপনার ইমিডিয়েট সিনিয়র কর্মকর্তার সাথে আপনার সম্পর্কেরও উন্নতি হতে পারে।

অপ্রাসঙ্গিকঃ ইমিডিয়েট সিনিয়র যে কী জিনিস এটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন প্রথম পা দেই সেদিন বুঝতে পারছিলাম। অরিয়েন্টেশন ক্লাসে গিয়ে ক্লাসমেটদের সাথে পরিচিত হওয়ার পরিবর্তে সকলেই বড় ভাইদের নাম মুখস্ত করার প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছিলো। কারন যেকোন বিষয়ে ইমিডিয়েট সিনিয়র ছাড়া নাকি কাউকে কিছু বলা যাবে না। আর ভাইদের তো তোর নাম ছাড়া ডাকা যাবে না। (যদিও নাম মুখস্ত করতে বাধ্য করা হয়েছিলো) আজও সেই চেইন অব কমান্ড মেনে চলছি আমরা, আমাদের জুনিয়র, তার জুনিয়র, তার জুনিয়র।

সহযোগিদের আচরনের সাথে নিজেকে মানিয়ে চলতে না পারা

সমস্যাঃ

একসাথে একের অধিক মানুষ থাকলেই একের সাথে অন্যের আচরনের অমিল পরিলক্ষ্যিত হবে। আপনি হয়তো চুপ-চাপ থাকতে ভালোবাসেন কিন্তু আপনার পাশের কলিগ ক্রমাগত কথা বলে। অথবা আপনি নীরিবিলি পছন্দ করেন কিন্তু আপনার সহকর্মী অনেক শব্দ করে কথা বলে কিংবা ফুল ভল্যিয়মে গান শুনে। ভদ্রতার খাতিরে কিছু না বললেও আপনার মনে এই ব্যাপারে একটি খারাপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।

সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ

আমাদের বাস্তব জীবনে আমরা যে কাউকে যদি আমাদের পছন্দ না হয় তাহলে তাকে এড়িয়ে চলতে পারি। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ অসম্ভব। আপনি চাইলেই অফিসের কোন কর্মকর্তাকে বা কলিগকে এড়িয়ে চলতে পারেন না। আপনার যদি তাদের আচরনগত কারনে সমস্যা হয় তাহলে তাদের সাথে একটু কৌশলি হতে হবে। তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং বিনীতভাবে আপনার সমস্যা তার সামনে তুলে ধরুন। আমার বিশ্বাস অবশ্যই কাজ হবে। যদি না হয় সেক্ষেত্রে আপনাদের তত্ত্বাবধায়কের সাথে যোগাযোগ করুন।

অত্যাধিক কাজের চাপ

সমস্যাঃ

এটাতো আর নতুন কিছু নয়, প্রত্যেকটা কাজের জন্য চাপ তো অবশ্যই থাকবে। তবে সেই চাপ যদি আপনার শারীরিক এবং মানুষিক ক্ষতির কারন হয় তবে সেটাই আলোচনার বিষয়। অত্যাধিক কাজের চাপ আপনাকে শারীরিক এবং মানুষিকভাবে প্রবল সমস্যার ভেতর ফেলতে পারে। অফিশিয়াল কর্মকর্তাদের মাঝে ৭০% এর বেশি শুধুমাত্র অধিক কাজের চাপের কারনে শারীরিক এবং মানুষিকভাবে বিভিন্ন রোগের শিকার হয়।

সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ

যদি সম্ভব হয় বেশি কাজের মূহুর্তে অন্য কারও সাহায্য নিতে পারেন। অধিক কাজের চাপ তখনই হয় যখন কোন কাজের ক্ষেত্রে আপনি অলসতা করে সময় ক্ষেপন করে ফেলেন। এক্ষেত্রে টেকটিউনস CEO & CTO মেহেদী হাসান আরিফ ভাইয়ের একটি কথা আমি সব সময় মনে রাখি। তিনি বলেছিলেন, “কাজের ক্ষেত্রে আপনার প্রত্যেকটা কাজের প্রায়োরিটি ঠিক করুন। অনেকগুলো কাজ যদি একসাথে সাথে তাহলে তার মাঝে গুরুত্ব অনুসারে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে শেষ করুন। তাহলেই দেখবেন সব সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে”।

নিয়ম এবং কাজ ব্যাপারে অস্পষ্টতা

সমস্যাঃ

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা। আপনি যখন কোন কাজ শুরু করেছিলেন তখন হয়তো কী ধরনের কাজ করতে হবে তার সঠিক ব্যাখ্যা আপনার কাছে দেওয়া হয়নি। আপনি কাজ শুরুর পূর্বে ভেবেছিলেন একটা আর কাজ পরে দেখলেন অন্যটা। এই ক্ষেত্রে মেজাজের ভারসাম্য রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে এবং কাজের প্রতি আপনার মনযোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর সব সময় মনে রাখবেন মানষিক সমস্যা থেকেই অধিকাংশ শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ

আগের কথা ভুলে যান। আপনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনায় বসুন। ভালোভাবে জেনে নিন আপনার কাজ কী আর কোম্পানি আপনার কাছ থেকে আসলে কী প্রত্যাশা করে। তারপর কোম্পানির প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করুন এবং আপনার লক্ষ্যে পৌছে যান।

আশা করি টিউনে উল্লেখিত প্রত্যেকটা বিষয় আপনারা সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন। এখন সমস্যা গুলোকে এড়িয়ে চলে সম্ভবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে শুধু এগিয়ে যাওয়ার পালা। আপনার পথ চলা আরও সুন্দর হোক। তবে যারা এখনো চাকরী শুরুই করেননি তাদের জন্য রয়েছে আমার ইন্টারভিউ রিলেটেড এক্সক্লুসিভ টিউন, আশা করি নিচের লিংক থেকে একনজর দেখে আসবেন।

শেষ কথা

টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো সেটা হলো, আশাকরি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।

আপনাদের সাহায্যার্থে আমি আছি.

ফেসবুক | টুইটার | গুগল-প্লাস

Level 7

আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

দারুন লিখেছে ভাই

সুন্দর টিউন ,এখন হয়তো কাজে আসবে না টিউনটি পরবর্তীতে কাজে আসবে বলে মনে হচ্ছে। মেহেদি ভাইয়ের কথা কথাটি খুব ভালো লাগলো “কাজের ক্ষেত্রে আপনার প্রত্যেকটা কাজের প্রায়োরিটি ঠিক করুন। অনেকগুলো কাজ যদি একসাথে থাকে তাহলে তার মাঝে গুরুত্ব অনুসারে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে শেষ করুন। তাহলেই দেখবেন সব সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে”।

    ভালো বলেছেন রিদম দত্ত 🙂
    টেকটিউনস পরিবার থেকে যে সেরা জিনিসগুলো পেয়েছি তার মাঝে অন্যতম হলো টেকটিউনস প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী ভাইয়ের দিক নির্দেশনা। মেহেদী ভাইয়ের সহযোগিতা না পেলে হয়তো এতোদুর আসা সম্ভব হতো না। মেহেদী ভাইয়ের প্রত্যেকটি কথা যত্ন করে মনে রাখার মতো, তার যতোটা পেরেছি স্মৃতিতে আটকে রাখার চেষ্টা করেছি। সামনের দিনগুলোতে মেহেদী ভাইয়ের প্রত্যাশিত টেকটিউনস গড়ার কাজে যেন কিছুটা অবদান রাখতে পারি সেটাই সব সময়ের প্রত্যাশা। তবে আপনারা পাশে না থাকলে সেটা অবশ্য কোনদিন সম্ভব হবে না। আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন।

টিউনের সাবলীলতা দেখে মনে হচ্ছে একেবারে “জীবন থেকে নেয়া”…..অবশ্য আমার ক্ষেত্রে সেটা হবে “জীবন দিয়ে শেখা” 🙄
হুম, এটা সত্য যেই যেই সময়ের বাস্তবতা সেই সেই সময় না আসলে উপলব্ধি করা মুশকিল হি নেহি নামুমকিন ভি :mrgreen: , তবুও আপনার বর্ণনাটা সবার বোধগম্য হবে আশা করছি। আমিতো শুরুতে কাজ কী এবং এইটা কত প্রকার বুঝতেই ধরা খেয়ে যেতাম…..ইমিডিয়েট সিনিয়রদের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারটা আসলেই খুব দরকারী, Internal Politics সমস্যা না করলে অফিসে সমস্যার সাগরে তাৎক্ষনিক উদ্ধারকারী একমাত্র ইনিই 😆

তবে আমি দু’টো বিষয় নিয়ে একটু ত্যানা প্যাঁচাতে চাই- যেমন:
=> সহযোগিদের আচরণের সাথে যেমন মানিয়ে চলা জরুরি, তেমনি সহযোগিদের সামনে নিজের উপস্থাপনটাও অত্যধিক জরুরি….আমি সবার সামনে কেমন- বুদ্ধিদীপ্ত না ভোম্বল, ভাষা কি মার্জিত না ক্ষ্যাত, কিংবা সর্বদা কাজে ব্যস্ত না সর্ববিষয়ে মনযোগী, অথবা সবরকম মুহূর্তে মানিয়ে চলতে পারদর্শী না সময়ে ঠেকে যাই- এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ……..সবাইকে একইসাথে সব পারতে হবে তা না- কিংবা সবাই সব হতে পারবে তাও না- কিন্তু একেকজনের এই ন্যাচারও কিন্তু জবের পরিবেশে নিজের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে তার উপরে ন্যস্ত কাজের দ্বারা……কখনো আপাত অপছন্দনীয় আচরণও কিন্তু সুফল বয়ে আনে- সুতরাং খিয়্যাল কইরা 😉

=> দ্বিতীয়টা হল- অফিসে সারাদিন নিজের জন্য কিছু সময় অবশ্যই বের করে নেয়া…. ৮-১০ ঘন্টার অফিসে শুধু বাথরুমে দৌড়াদৌড়ি করলেই নিজেকে সময় দেয়া হয় না, বরং একান্তে চুপ করে নিজেকে নিয়ে বেশ ক’বার ৫ মিনিট করে থাকাই হল আসল– না হয় আপনার দুনিয়াকে নিয়েই ভাবলেন, কিন্তু ভাবাটা জরুরি…….ও হ্যাঁ, এটা ক্যারিয়ারের স্বাস্থ্যের জন্যই কিন্তু ভাল 🙂

সেরা টিউনার হবার জন্য ধইন্যার ডালা উপহার দিলাম 🙂

***টাইপো: তত্যাবধায়ক-> তত্ত্বাবধায়ক

    সত্যিকার অর্থেই টিউনের কিছু অংশ জীবন থেকে নেওয়া! তবে আমার নিজের টিউনের চেয়ে আপনার টিউমেন্ট অনেক বেশি ভালো লেগেছে! প্রত্যেকটা বিষয় ভবিষ্যতে কাজে লাগানোর মতো!

    *** সুন্দর টিউমেন্টের জন্য ধইন্যার বন্যায় ভাসায়ে দিলাম 🙂 আর সেরা টিউনার হওয়াটার সব কৃতিত্ব কিন্তু আপনাদেরই, যারা আমাকে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা যোগিয়েছে তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি!!