-------------------------- بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ --------------------------
সুপ্রিয় টেকটিউন কমিউনিটি, সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউন।
আজ থেকে শুরু হয়েছে নতুন একটি বছর, আমাদের সবার প্রাণে জেগে উঠেছে নতুন উচ্ছাস! নতুন বছরে আমাদের নতুন কতো পরিকল্পনা থাকে। পরিকল্পনা থাকে নিজেকে নতুন ভাবে সাজানোর, নতুন ভাবে উপস্থাপন করার। টিউনের শুরুতেই টিউনারের মনের হতাশার কথা বলে সবার মন খারাপ করতে ইচ্ছে করছেনা। তবুও অফটপিক একটি কথা বলি, আজ এই টিউনটি করার কথা ছিলোনা। নতুন বছরের জন্য নতুন ভাবে বিশাল একটা টিউন গত ১মাস থেকে অল্প অল্প করে লিখছিলাম কিন্তু অলসতার কারনে শেষ করতে পারিনি। আজ শেষ মুহুর্তে এসে মনে হলো এটা নতুন বছরের প্রথম টিউন হিসাবে পাবলিশড করা অসম্ভব। তাই মনে একরাশ হতাশা নিয়ে এই টিউনটি শুরু করলাম কারন গত কয়েকদিন থেকে এ বিষয়ে একটি টিউন করার জন্য অনেকেই অনুরোধ করছিলো। নিজের আশা পুরণ হয়নি তো কী হয়েছে, আপনাদের চাহিদার কিছুটা বাস্তবায়ন করতে পারাটাই অনেকখানি স্বার্থকতা।
বর্তমানে বাজারে স্মার্টফোনগুলোর ফিচার যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে নতুন স্মার্টফোন কেনার মাস খানেক পরেই মনে হয় কী কিনলাম আগেরটা! নতুন ফোনটাই তো অনেক ভালো, দামও কম কাজেও বেশি। এরকম অনুভূতি আমাদের প্রায় সকলেরই হয়। বলতে লজ্জা নেই যে এরকম একটা কারনে আমি নিজেই কয়েক মাস আগে নতুন আরেকটি ফোন কিনেছি শুধুমাত্র USB OTG সুবিধার কারনে। আজকের টিউনে আমি USB OTG সম্পর্কে অল্প বিস্তর ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো। চলুন তাহলে শুরু করি।
OTG শব্দের মানে হলো On The Go। যদি দুটি ডিভাইস এমন হয় যে তারা উভয়েই USB OTG সাপোর্টেড তাহলে আপনি এই দুটি ডিভাইসের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান এবং যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন এবং অবশ্যই কিছু সুনির্দিষ্ট ফাংশন ব্যবহার করতে পারবেন। সবচেয়ে সাধারন উদাহরণটি হলো যখন আমরা পিসি ব্যবহার করি তখন পিসি একটি হোস্ট হিসাবে কাজ করে এবং আমরা এর সাথে আমাদের স্মার্টফোন কিংবা USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ব্যবহার করি। আমরা যখন স্মার্টফোনের সাথে OTG ক্যাবল ব্যবহার করবো তখন আমাদের স্মার্টফোনটিও পিসির মতো একটি হোস্ট হিসাবে কাজ করবে। এরফলে আমরা চাইলেই আমাদের স্মার্টফোন থেকে OTG ক্যাবলের মাধ্যমে প্রিন্টার, মাউস, কিবোর্ড কিংবা USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভের সাথে কানেক্ট করতে পারবো। বুঝতে পারলেন তো ডিভাইস টু ডিভাইস কমিউনিকেশন এর জন্য OTG কতোটা গুরুত্বপূর্ণ? এখন কথা হলো বুঝবেন কীভাবে যে আপনার ডিভাইসটি USB OTG সাপোর্টেড কিনা? এটা বুঝা এতোটা কঠিন কিছু না, কারন আপনি যদি ডিভাইস স্পেসিফিকেশনে নিচের মতো লোগো দেখেন তাহলে নিশ্চিত হবেন যে আপনার ডিভাইসটি USB OTG সাপোর্টেড।
স্মার্টফোনে এই সুবিধাটা নতুন আসলেও OTG কিন্তু নতুন কোন ফিচার না। এটা আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে স্মার্টফোনের কল্যাণে এই জিনিসটার নাম অন্তত আমি প্রথম শুনেছি। আপনাদের অবস্থা অনুমান করার দুঃসাহস নাইবা দেখালাম। যদি আমরা এই USB OTG এর ব্যবহার বিষয়ে কথা বলতে চাই তাহলে দেখবো এটার ব্যবহার আপনার ডিভাইসের ভিন্নতার কারনে ভিন্ন হয়ে যাবে। আপনি যদি স্মার্টফোনে কিংবা ট্যাবলেটে USB OTG ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনি এর সাহায্যে মাইক, কিবোর্ড, মাউস, হার্ড ড্রাইভ কিংবা USB স্টিকস ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হাই কোয়ালিটি মাইক বা অন্য এরকম কোন ডিভাইস যার ফাংশনালিটি অনেক বেশি, সেগুলো ব্যবহারে একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো যখন বাজার প্রথম টাচ স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবলেট আসলো তখন মানুষ ধরেই নিয়েছিলো যে ফোনে কিবোর্ডের ব্যবহার আসতে আসতে বিলুপ্তির পথেই যাচ্ছে। কিন্তু USB OTG সুবিধা দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট আবারো সখ্যতা গড়তে যাচ্ছে কিবোর্ডের সাথে।
প্রশ্নটা করেছি আসলে মজা করার জন্য, কারন এতো কিছু বলার পর এই প্রশ্ন করা মানে হলো, “সারা রাত গীতা পাঠ করে সকালে প্রশ্ন করা সীতা কার বাপ?” এর মতো। যাহোক আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন কীভাবে USB OTG ব্যবহার করতে হয়। এখন একটু জেনে নেই কিছু এক্সট্রা সুবিধা। এর সাহায্যে কোন ফ্ল্যাশ ড্রাইভকে যদি আপনি ফোনের সাথে কানেক্ট করেন তাহলে অতিরিক্ত কোন ফাইল এক্সপ্লোরার ব্যবহার না করেই সরাসরি আপনি আপনার ফোন থেকে ফ্ল্যাশ ড্রাইভে এক্সেস করতে পারবেন। এর জন্য কোন আলাদা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে হবেনা। যেকোন ফাইলকে আপনার ফোনে কপি না করেও আপনি সেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আসলে এটা দিয়ে কোন ড্রাইভকে কানেক্ট করলে সেটা একটা এক্সটার্নাল স্টোরেজ হিসাবে কাজ করবে।
যাহোক অনেক কথা বলে ফেলেছি, জানিনা আপনারা বিরক্ত হয়েছেন কিনা তবে আরো কিছু বলতে মন চাচ্ছে। চলুন একটু এক নজরে দেখে নিই কোন ডিভাইসগুলো USB OTG সাপোর্ট করছে।
এখন তাহলে শেষ না করে উপায় নাই। তবে বরাবরের মতোই কিছু কথা রয়েছে এখনো বাকি.............
নতুন বছরের প্রথম দিনেই প্রত্যাশা থাকলো টেকটিউন পরিবার এবং পৃথিবীর সকল প্রযুক্তিপ্রেমীদের পথচলা হোক আরো সুন্দর এবং আনন্দময়। পৃথিবীর সব ভালো কিছু যেন তাদের জন্যই জন্যই হয় এটাই হোক আজ সকলের প্রত্যাশা। যাহোক, টিউনটি বুঝতে যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর আপনাদের যাদের টেকটিউনসে একাউন্ট নেই তারা আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ লিংক থেকে আমার টিউনে কমেন্ট করতে পারবেন। পেজে লাইক দিয়ে আমার সকল টিউন বিষয়ে আপডেট থাকুন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো সেটা হলো, আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।
আপনাদের সাহায্যার্থে আমি আছি........
ফেসবুক | টুইটার | গুগল-প্লাস
আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।
Firmware যদি OTG supported হয় আর Hardware যদি unsupported হয় তাহলে OTG ইউজ করার কোন ওয়ে আছে?
“মনে হয় নাই♩থাকলে ভাল হত♩” আপনি কি বলেন?@ফাহাদ