আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালোই আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
বর্তমানে বেশির ভাগই আমাদের ল্যাপটপ ব্যাটারির স্থায়ীত্ব কমে যায় আর আপনি যদি ল্যাপটপে এমন অনেক কিছুই আছে যা বন্ধ করার মাধ্যমে ল্যাপটপের ব্যাটারির সময়কাল বৃদ্ধি করা সম্ভব। আপনি যখন বাড়ির বাইরে আপনার ল্যাপটপটি-কে নিয়ে যাচ্ছেন তখন আপনি নিশ্চয়ই চান যে ল্যাপটপটি সাধ্যমত বেশি সময় ধরে চলুক। তাই আজ আমি আপনাদের কিছু টিপস নিয়ে আসলাম যা মেনে আপনার ল্যাপটপকে বেশিক্ষন কাজের উপযোগী করে চালু রাখা যায়। ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলো-
১. যদি আপনার তাৎক্ষনিক ভাবে ল্যাপটপে আর ইন্টারনেট চালানোর পরিকল্পনা না থাকে তাহলে ল্যাপটপ এর Wireless Card টি বন্ধ করে দিন।
২. যদি আপনার সাউন্ড এর প্রয়োজন না হয় তাহলে ভলিউম কমিয়ে দিন অথবা স্পিকার মুট (Mute) করে রাখুন।
৩. আপনি যদি কোনো আলোকিত স্থানে থাকেন তাহলে আপনার ল্যাপটপ এর LCD এর উজ্জলতা কমিয়ে দিতে পারেন।
৪. ব্লুটুথ তাৎক্ষনিকভাবে ব্যাবহারের ইচ্ছা না থাকলে আপনার ল্যাপটপের ব্লুটুথ ডিভাইসটিকেও ডিজেবল করে দিন।
৫. যে কোনো প্রোগ্রাম বারবার লোড করার চেয়ে প্রোগ্রামটিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে সচল রেখে অন্য কাজ করে পুনরায় আগের প্রোগ্রামটিকে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারেন। এতে ল্যাপটপের ম্যামরি ব্যাবহৃত হবে। কারন বার বার কেনো প্রোগ্রাম লোড করলে তা প্রতিবারই সমান পরিমান বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, তাই এভাবে কিছুটা এনার্জি সঞ্চয় সম্ভব।
৬. যথাসম্ভব কম গ্রাফিক্স এর সফটওয়্যার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
৭. সাধারন তাপমাত্রায় বসে কাজ করার চেষ্টা করুন। তাপমাত্রা কমবেশি হলে ল্যাপটপ এর ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।
৮. উইন্ডোজ এর পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট সেটিংস টি ব্যাবহার করুন। এটি উইন্ডোজ এক্সপি এর কন্ট্রোল প্যানেলের “Power Options” এ রয়েছে এবং উইন্ডোজ সেভেন এ Control panel>System and security> power options এ গিয়ে Power saver সেটিংস টি সিলেক্ট করুন।
৯. অতিরিক্ত ডিভাইস গুলো খুলে ফেলুন যেমন: USB Mouse, External drive, Pen Drive ইত্যাদি।
১০. যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য ল্যাপটপটি ব্যাবহার না করতে চান তাহলে Standby করার চেয়ে ল্যাপটপটিকে Hibernate বা Shut down করে রাখবেন। কারন Standby করে রাখলে ল্যাপটপের এনার্জি তখনও খরচ হতে থাকে।
১১. ব্যাটারির সংযোগস্হলগুলো ভালো ভাবেপরিষ্কার করবেন। সম্ভব হলে এলকোহল যুক্ত কাপড় দ্বারা পরিষ্কার করবেন। এতে বিদ্যুৎ চলাচল সহজ হবে।
১২. ব্যাটারি চার্জ দেওয়া পর দীর্ঘ সময় ধরে(বেশ কয়েক দিন) ব্যবহার না করলে ব্যাটারির চার্জ এমনিতেই ফুরিয়ে যেতে পারে।
১৩. হার্ডডিস্ক এর ডিফ্র্যাগমেন্টেশন করবেন। কারন হার্ডডিস্ক যত ফ্র্যাগমেন্টেড থাকবে তত বেশি কাজ করবে।
১৪. সিডি বা ডিভিডি ড্রাইভ ব্যবহার করলে অনেক এনার্জি খরচ হয়। কারন এসব ড্রাইভ ঘুরাতে অনেক এনার্জির প্রয়োজন তাই যথাসম্ভব এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো।
১৫. অব্যবহৃত পোর্টগুলো বন্ধ করার মাধ্যমে এনার্জি বাঁচানো সম্ভব যেমন VGA, Ethernet, PCMCIA,USB,Wirless ইত্যাদি পোর্টগুলো ডিভাইস ম্যানেজার এর সাহায্যে সহজেই ডিজেবল করে দেওয়া যায়।
১৬. আপনি বিভিন্ন পরিস্থিতির জন্য ল্যাপটপের বিভিন্ন পাওয়ার সেভিং প্রোফাইল তৈরি করে রাখতে পারেন : কফিশপ, অফিস ইত্যাদি।
১৭. ল্যাপটপটিকে আপনার কোলের ওপর ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে কুলিং প্যাড ব্যাবহার করুন।
১৮. যেসব যায়গায় রাখলে ল্যাপটপটি গরম হতে পারে সেসব যায়গায় রাখা পরিহার করুন।
১৯. বাইরে থাকাকালিন গেম খেলা বা ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ রাখুন। এটি অনেক বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।
২০. ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার না করলে বন্ধ করে রাখাই শ্রেয় কারন কাজ না থাকলেও এটি অনেক ইনফরমেশন আদান প্রদান করে এবং এনার্জি ব্যবহার করে।
টিপস:
১। ল্যাপটপের ভেতর ময়লা ঢুকলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে তাই ল্যাপটপের টেবিলটি সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
২। বাইরে যাওয়ার আগে ল্যাপটপটিকে ফুল চার্জ দিয়ে নিন।
৩। ব্যাটারি লো দেখালে বেশ কিছুক্ষন ল্যাপটপ ব্যবহার বন্ধ রাখুন। চার্জ দিন, পরে ব্যবহার করুন।
৪। কোনো ডিভাইস ব্যবহারের সময় বন্ধ করবেন না।
৫। ব্যাটারি লো হওয়া অবধি ব্যবহার করুন এবং তারপর চার্জ দিন। চার্জ শেষ হলে প্লাগ খুলে ব্যবহার করুন। এতে ব্যাটারি অনেকদিন টিকবে এবং ভালো কাজ করবে।
সাবধানতা:
*কম্পিউটার দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার হলে তা অতিরিক্ত গরমের ফলে যন্ত্রপাতির আয়ু কমে যেতে পারে।
*ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কিছু বন্ধ করবেন না। এতে ডাটা হারানোর ভয় থাকে।
*ব্যাটারি চার্জ হওয়ার পরও সবসময় বিদ্যুতের সাথে সংযুক্ত করে ফেলে রাখবেন না। এতে ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।
*ব্যাটারি পরিষ্কারের সময় সাবধানতার সাথে পরিষ্কার করবেন।
Android ফোন।
স্মার্টফোন হাতে থাকলে, সব সময়ই কিছু না - কিছু করে থাকি ,তা চ্যাটই হোক, ভিডিও কলিং বা মেল চেক করা। ফলে ফোনের ব্যাটারিও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এমন কিছু উপায় আছে , যার সাহায্যে ফোনের ব্যাটারি লাইফ বাড়াতে পারবেন। কী ভাবে?
১. যা যা অফ রাখতে হবে : ব্লুটুথ, ওয়াই ফাই - ব্যবহার করার থাকলেই ওয়াই - ফাই অন করবেন। রেঞ্জের বাইরে গিয়েও ওয়াই - ফাই অন থাকলে, ফোন ওয়াই - ফাইর জন্য সিগন্যাল খুঁজতে থাকে , ফলে ব্যাটারি খরচ হয়। প্রয়োজন না - হলে জিপিএস - ও বন্ধ রাখুন। ওয়াই - ফাই অফ করার পদ্ধতি : Settings-Wireless Settings- WiFi- off অ্যানিমেশান: সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের অ্যানিমেশন অফ করে দিন। স্টাইল কমলেও ,ব্যাটারির লাইফ বাড়বে। কী ভাবে অফ করবেন ? Settings-Developer Options- Drawing- এ গিয়ে সমস্ত অ্যানিমেশান অফ করে দিন , না - হলে অ্যানিমেশান স্কেল কম করে দিন।
মোবাইল ডাটা- লো ব্যাটারির জেরে মোবাইল বন্ধ হতে চলেছে এবং চার্জ করাও সম্ভব নয়, এমন পরিস্থিতিতে মোবাইল ডাটা বন্ধ করে দিন। ইন্টারনেট কাজ না - করলেও ফোন চালু থাকবে। লোকেশান সার্ভিসেস - প্রয়োজনের সময়েই লোকেশান সার্ভিস অন করুন। কারণ তা অন থাকলে, ব্যাটারি খরচও হবে বেশি। Settings- Locations Services - এ গিয়ে সমস্ত বক্স থেকে টিক মার্ক সরিয়ে দিন।
২ . যা যা কম করে দিতে হবে : স্ক্রিনের ব্রাইটনেস- সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি স্ক্রিনে খরচ হয়। স্ক্রিন যত বড় উজ্জ্বল এবং হাই - রেজোলিউশনের হবে , ব্যাটারি ততই খরচ হবে। আপনার ফোনে স্ক্রিন ব্রাইটনেসের জন্য অটো- মোড থাকলে, তা ব্যবহার করুন। না -হলে ব্রাইটনেসকে ৫০ শতাংশের ধারেকাছে রাখুন। স্ক্রিন টাইমআউট - ফোনের স্ক্রিন টাইম আউট যত কম হবে , ব্যাটারি তত লম্বা চলবে।Settings- Sound & Display - Screen timeout - এ গিয়ে তা কমাতে পারেন। ক্যামেরা এবং ভিডিও- র ব্যবহার- ফোনের ব্যাটারি কম থাকলে ভেবেচিন্তে ক্যামেরা এবং ভিডিও- র ব্যবহার করুন। ফোন বেশি গরম হলে বুঝবেন,ব্যাটারি দ্রুত খরচ হচ্ছে এবং তার বিশ্রাম প্রয়োজন।
৩. যা থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন : ভাইব্রেশান- ভাইব্রেশানে বেশি ব্যাটারি খরচ হয়। তাই একে Disable রাখুন। Settings-Sound and Display - PhoneVibrate - এ গিয়ে ভাইব্রেশান বন্ধ রাখতে পারেন। লাইভ ওয়ালপেপার - লাইভ ওয়ালপেপারের পরিবর্তে ডার্ক কালারের ওয়ালপেপার ব্যবহার করা ভালো।
উইজেটস: সামান্যর তুলনায় বড় আইকনগুলিই উইজেটস। এটি আপনার স্ক্রিনে অনেক জায়গা নেয়। যেমন- আবহাওয়ার বা ফেসবুক বা টুইটারের উইজেটস। এগুলি নিজে থেকেই অপডেট হয়, তাই খুব ব্যাটারি খরচ হয়। ফোনের হোম স্ক্রিনে ভিড় করে অ্যাপ রাখবেন না। কম ব্যবহার করেন এমন অ্যাপ মেনুর ভিতরে রাখুন। দু ' টি অ্যান্টিভাইরাস - ফোনে দু 'টি অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন না। অনেকে মনে করেন , দু 'টি অ্যান্টিভাইরাস ফোনকে বেশি সুস্থ রাখবে। কিন্তু এর ফলে ব্যাটারিও বেশি খরচ হবে।
৪ . যা যা চেক করবেন : ব্যাটারি ইউজ - ফোনের সেটিংসে গিয়ে দেখুন যে , কোনও অ্যাপ্লিকেশান কত ব্যাটারি খরচ করছে। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশান বেশি ব্যাটারি খরচ
করলে তা আনইনস্টল করে দিন। 2 G বা 3 G মোড- 3 G প্ল্যান না - নিয়েই কি ফোনে তা ব্যবহার করছেন ? 3 G প্ল্যান না -থাকলে Settings - More Settings - Mobile Networks- Network Mode / Preferred network type - এ গিয়ে তা 2 G মোডে নিয়ে আসুন। না - হলে 3 G সিগন্যাল খুঁজতে গিয়ে ফোনের ব্যাটারি খরচ হবে।
৫ . অ্যাপসে বিশেষ নজর দিন : অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস ডিসঅ্যাবেল করুন - ইনস্টল করেছেন অথচ ব্যবহার করেছেন এমন অ্যাপ ডিসঅ্যাবেল করে দিন। অ্যান্ড্রয়েড ৪ . ০ এবং তার ওপরের ভার্জনে অ্যাপ ডিসঅ্যাবল করার সুবিধা রয়েছে। Settings- Application Manager - All - এ যান। যে অ্যাপ কখনও ব্যবহার করেন না , তা খুলে Disable করার বোতাম টিপুন। Disable করার অপশান না - দেখলে তার সমস্ত আপডেট আনইনস্টল করুন। এর পর ফের Disable করার চেষ্টা করুন। ঠিক করে অ্যাপ বন্ধ করুন - হোম বোতাম টিপলেই অ্যাপ বন্ধ হয় না। তা শুধুই ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে যায় এবং ব্যাটারি খরচ করে। যতক্ষণ না অ্যাপটি থেকে এগজিট করছেন ততক্ষণ ব্যাক বোতাম টিপতে থাকুন। না - হলে এগজিট বোতাম টিপুন। অটো আপডেট নৈব নৈব চ - অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপ প্রায় রোজই আপডেট হয়। এর ফলে ডেটা খরচ তো হয়ই বরং ব্যাটারিও খরচ হয়। অটো আপডেট বন্ধ করার জন্য Menu – Play Store - Settings - Autoupdate apps - এ গিয়ে Do not auto update সেট করুন। বুকমার্কের ব্যবহার- কোনও লক্ষ্য করেছেন, আপনার ফোনে কত সার্ভিস লাগাতার সিঙ্ক হয়? ফেসবুক , টুইটার , জিমেল , অফিস মেল , গুগল প্লে - - এ সব ব্যাটারি খরচ করে। সম্ভব হলে ফেসবুক বা এ সবের জন্য অ্যাপ ডাউনলোড না - করে ব্রাউজারে বুকমার্ক করে ব্যবহার করুন।
পূর্বে প্রকাশিত এখানে
ভালো লাগলে টিউমেন্ট করতে ভুলবেন না, আজ এই পর্যন্ত।
আমি হোছাইন আহম্মদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 485 টি টিউন ও 2510 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 14 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি হোছাইন আহম্মদ, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে আছি শিক্ষক হিসাবে। ভালবাসি ব্লগিং, ডিজাইনিং এবং তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত যে কোন কিছু, খুবই সামান্য যা জানি শেয়ার করি এবং কিছু শেখার চেষ্টা করি।
অনেক কিছু জানলা। পোর্টগুলো বন্ধ করবো কিভাবে একটু বলবেন?