Smart Pricing নামে একটি ব্যাপার আমাদের কাছে খানিকটা শঙ্কার বিষয়। এটা বিজ্ঞাপনদাতার সুবিধার্থে বানানো হয়েছে। স্মার্ট প্রাইসিং হলে ক্ষতি আমাদের, লাভ বিজ্ঞাপনদাতার। এটা মূলত Google AdWords ব্যবহারকারীদের জন্য, অর্থাৎ বিজ্ঞাপনদাতারা এর সুবিধা পাচ্ছেন এবং আমরা অনেকেই এর অসুবিধা ভোগ করছি।
বিজ্ঞাপনদাতা কেন বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন? তিনি একটি পণ্যের প্রচার করছেন, এতে তার ব্যবসায়িক লাভ নির্ভর করছে। ঠিক যেমন আমরা ব্লগ বানিয়ে তার প্রচারে নেমে পড়ি, ঠিক তেমনই। ইন্টারনেটে লাখ লাখ সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে গেলে সেইসব সাইটের মালিকদেরকেও কিছুটা মূল্য দিতে হয় যা গুগলের মারফৎ আমরা পাই, এডসেন্স চেক হয়ে তা আমাদের কাছে আসে। আমাদের সাইটে ভিজিটার আসেন, বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন, বিজ্ঞাপনদাতা এতে করে ক্রেতা খুঁজে পান, গুগল এতে লাভ পায় এবং আমরাও এর শেয়ার পাই। মূল ব্যাপারটা এইভাবেই ঘটে চলেছে।
কিন্তু, জানেন তো, টিভিতে বিজ্ঞাপন চলার সময়ে আমরা অনেকেই টিভি মিউট করে ফেলি, কারন বিজ্ঞাপনগুলি শুনতে/দেখতে চাইনা বলে। ইন্টারনেটেও এমন প্রচুর মানুষ আছেন যারা বিজ্ঞাপনের দিকে ফিরেও তাকাবেন না, কিম্বা, সাময়িকভাবে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে সেখানে কাজে কিছু না পেলে বিজ্ঞাপনদাতা ক্রেতা হারিয়ে ফেলেন। ক্লিকগুলি হচ্ছে আমাদের সাইট থেকে। প্রতি ক্লিকে যেহেতু বিজ্ঞাপনদাতা টাকা দিচ্ছেন এবং সব ক্লিক থেকে তেমন ক্রেতা তিনি পাচ্ছেন না, তাই তার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে গুগল বিভিন্ন পরীক্ষানীরিক্ষার মাধ্যমে Smart Pricing নামে ব্যাপারটা প্রণয়ন করেছে।
স্মার্ট প্রাইসিং হচ্ছে একটি সাইট থেকে যখন পেজ ইম্প্রেশান বেশি হয়ে কিছু ক্লিক হয়েও বিজ্ঞাপনদাতা সেইভাবে ক্রেতা পেলেন না, তখন সেই সাইটের জন্য প্রতি ক্লিকের মূল্য হ্রাস করে ফেলা হয়। অর্থাৎ, আপনি সাইট বানিয়েছিলেন দামী কীওয়ার্ড দিয়ে, অথচ দেখছেন যে প্রতি ক্লিকে মূল্য পাচ্ছেন কম। একটু লক্ষ্য করবেন, এক্ষত্রে অনেকের প্রশ্ন আছে, অনেকেই জানতে চান যে বেশি দামী কীওয়ার্ড দিয়ে ব্লগ বানিয়েও কেন ক্লিকের মূল্য তারা কম পাচ্ছেন। এটা কিন্তু স্মার্ট প্রাইসিংয়েরই একটা ফল।
একটি সাইট থেকে যখন ভালো ব্যবসা পাননা বিজ্ঞাপনদাতা, তখন গুগল নিজেই তার স্মার্ট প্রাইসিং পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিজ্ঞাপনদাতার বাড়তি খরচ কমিয়ে দেয়, তাতে আমাদের বেশ কিছুটা ক্ষতি হয়। কারন, যে ক্লিকে ১ ডলার পাওয়ার কথা ছিল, স্মার্ট প্রাইসিং হলে হয়তো আমরা পাই ০.১০ ডলার।
এই স্মার্ট প্রাইসিং একবার প্রয়োগ হলেই যে সেটা চিরকাল স্থায়ী হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। যদি ভবিষ্যতে সাইটে ভালো পাঠক আসে, সেই পাঠকের ক্লিকে বিজ্ঞাপনদাতাও ভালো ব্যবসা করতে পারেন, তবে স্মার্ট প্রাইসিং আবার প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে এবং ১ ডলারের ক্লিকে আপনি ১ ডলারই পাবেন। বিজ্ঞাপনদাতা চাইলে সেটিকে বাড়িয়ে ১.৫ ডলারও করতে পারেন!
স্মার্ট প্রাইসিং হচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতার স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যেই। তাই, আমাদের লক্ষ্য হবে আমরা যেন এই স্মার্ট প্রাইসিংয়ের মধ্যে না পড়ি। এটা কিভাবে এড়ানো যায়, সেই পদ্ধতিটি অত্যন্ত জটিল। সেটা কেবলই সাইট ডিজাইন, এসইও, সাইটের প্রচার ইত্যাদি করে পাওয়া যাবেনা; এটা পেতে হলে নিজের ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টার যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। ব্লগ লেখার কায়দার মধ্যে দিয়ে সেটা করে নিতে হবে। নিপূণ লেখার গুনে এটা সম্ভব। লেখার মধ্যে দিয়ে পাঠকের আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলে এবং সঠিক কীওয়ার্ডের ব্যবহারে সঠিক বিজ্ঞাপন এনে আগ্রহী পাঠককে দিয়ে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করিয়ে বিজ্ঞাপনদাতাকে ভালো ব্যবসায়িক লাভ দিতে পারলে তবেই স্মার্ট প্রাইসিং থেকে বাঁচা যেতে পারে।
স্মার্ট প্রাইসিং সম্বন্ধে বিশদে জানার জন্য গুগলের বিশ্লেষণ জেনে নিন - [লিঙ্ক]
আমি রিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 362 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
জীবনের সব ভুল, যদি ফুল হয়ে যায়... জীবনের সব কালো, যদি আলো হয়ে যায়...
আসলেই ঠিক। ব্যাপারটা একটু এদিক ওদিক হলেই পাবলিশারদের ক্ষতি। 🙁