আমি হাই স্কুলে পড়ার সময় প্রথম এপেন্ডিসাইটের কথা জানতে পারি। আমি পড়তাম চালনা কেসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আমার বাসা থেকে ২কিমি দূরে চালনা খালের পাশে অবস্থিত এই স্কুলে আমরা প্রতিদিন হেঁটেই যেতাম। স্কুলের সেই স্মৃতিময় মধুর দিনগুলোর কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে। স্কুলে পড়ার সময়ে একদিন জানতে পারি আমার নানীজানের এক বোনের এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে। কয়রা থানার জায়গীরমহলে অবস্থিত হাসপাতালে তাকে অপারেশন করানো হলো। নানীজানের সাথে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। গ্রামের লোকজন এপেন্ডিসাইটিস কে বলত এপেন্ডিক্স হয়েছে। কোনটা শুদ্ধ উচ্চারণ তাই নিয়ে আমরা বন্ধুরা আলোচনা করতাম। সমাধান পাওয়া গেলো প্রশান্ত কুমার নাথ স্যারের কাছে। স্যার জানালেন রোগটার নাম এপেন্ডিক্স নয়, এটা হবে এপেন্ডিসাইটিস। আজ আমি আপনাদেরকে এপেন্ডিক্স এবং এপেন্ডিসাইটিসের পার্থক্য বলার চেষ্টা করব। সময় থাকলে এবং জানা না থাকলে জেনে নিন।
এপেন্ডিক্সঃ মন আমার দেহঘড়ি, সন্ধান করি বানাইয়াছেন কোন মেস্তরি............... জনম ভইরা চলিতেছে......... আমাদের দেহঘড়ি বা শরীর নানাবিধ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সমন্বয়ে গঠিত। আমাদের দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই কি সক্রিয় এবং প্রয়োজনীয়? না। কিছু অঙ্গ আছে যা বিবর্তনের ফলে আমাদের শরীরে রয়ে গেছে কিন্তু সেগুলোর কোন শারীরিক ভূমিকায় অবদান রাখেনা। আমাদের শরীরের তেমনি এক নিস্ক্রিয় এবং অপ্রয়োজনীয় অংগের নাম এপেন্ডিক্স। পরিপাকতন্ত্র আমাদের খাদ্য হজম এবং রেচনে সাহায্য করে। পরিপাকতন্ত্রের দুইটা অংশ, ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদান্ত্র। ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদান্ত্র এর মাঝে অবস্থিত একটি বড় সিকামই হলো এপেন্ডিক্স। যদি কোন কারণে এই সিকামটি পঁচে যায় তবে তীব্র ব্যাথাসহ নানান রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এপেন্ডিসাইটিসঃ আমি আগেই বলেছি এপেন্ডিসাইটিস একটি রোগের নাম। এপেন্ডিক্সে তীব্র ব্যাথার কারণে সৃষ্ট এই রোগের নাম এপেন্ডিসাইটিস। মল, কৃমি বা অন্য কিছু দ্বারা এপেন্ডিক্সের নালীমুখ বন্ধ হয়ে গেলে এতে পঁচন ধরে। আর পঁচনের ফলে তীব্র ব্যাথার সৃষ্টি হয়। অনেকসময় ভাইরাস অথবা আন্ত্রিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের ফলে সৃষ্ট প্রদাহের কারণে এপেন্ডিক্সের গাত্র ফুঁলে উঠে এবং রক্ত প্রবাহে বাঁধার সৃষ্টি করে। এতে এপেন্ডিক্সে পঁচন ধরে ব্যাথার সৃষ্টি হতে পারে। প্রদাহজনিত এই ব্যাথা প্রথমদিকে নাভীর গোঁড়ার দিকে অনুভব করা যায়। পরে তলপেটের ডানদিকে সরে যায়। আপনার নাভীর গোঁড়ায় কোন রকমের ব্যাথা অনুভূত হলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। যেহেতু এপেন্ডিক্স মানবশরীরের একটি অপ্রয়োজনীয় অংশ। তাই অপারেশন করে কেটে ফেলতে একটুও ভয় পাবেন না।
আমি সরদার ফেরদৌস। Asst Manager, Samuda chemical complex Ltd, Munshiganj। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 94 টি টিউন ও 463 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফেরদৌস। জন্ম সুন্দরবনের কাছাকাছি এক জনপদে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে লেখাপড়া করেছি এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এরপরে চাকরি করছি সামুদা কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডের উৎপাদন বিভাগে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে। এছাড়া আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার একজন প্রশাসক।
বরাবরের মতই সুন্দর হয়েছে। চালিয়ে যান, আমরা সবাই আপনার সাথে আছি।