পাইরেসি নিয়ে টেকি মহলে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। আসলে বর্তমানে এটা সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়। এর শেষ কখন হবে তা জানিনা। আসুন এবার জানার চেষ্টা করি সফট্যয়ার পাইরেসি সম্পর্কে।
সাধারনত কোন সফট্যয়ার কোম্পানি নিজে বা নিজস্ব অনুমোদিত এজেন্ট ছাড়া অন্য কেউ বিক্রী করলে তা সফট্যার পাইরেসির পর্যায়ে পড়ে। কোন কোম্পানির সফট্যয়ার যদি অন্য কেউ crack বা অন্য কিছু করে মুনাফা অর্জন করে তখন কোম্পানিটির এত শ্রম ও অর্থ দিয়ে তৈরী করা পন্য অন্যরা অন্যায়ভাবে ব্যবহার ও বিক্রী করে। এতে কোন একটি সৃষ্টির মূল্যায়ন থাকে না এবং এরকম হতে থাকলে মেধা বিকশিত হবে না। তাই মেধার মূল্যায়ন করা সকলের কর্তব্য। এজন্য সফট্যয়ার পাইরেসি এক্ট প্রনয়ন করা হয়। উন্নত বিশ্বে কেউ সফট্যয়ার পাইরেট করলে তাকে জেলে পাঠানো হয় এবং তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়।
অনেকে সফট্যয়ার পাইরেটরদের চোর বলে অভিহিত করে থাকেন। কিন্ত অনেকে বলেন যাদের অর্থ নেই তারা কি করবে? এখানে একটি বিষয় বিবেচ্য যে বেশির ভাগ সফট্যয়ার কোম্পানি উন্নত বিশ্বের ইউজারদের জন্য সফট্যয়ার তৈরী করে যা অনুন্নত বিশ্বের মানুষেরা কিনতে হিমশিম তো খায়ই তার উপর যদি কয়েকটা সফট্যয়ার কিনে তাহলে যে ভিটে-বাড়ি সব বিক্রী করতে হবে। তারা অনুন্নত বিশ্বের দিকে তেমন নজড় দেয় না যদিও দেয় তা অতি নগন্য। তাই আমাদের দেশের মত অনুন্নত বিশ্বে সফট্যয়ার পাইরেসির সংখ্যা বেশি। এর জন্য প্রথমে দায়ি করা যায় এসব কোম্পানিদের। কারন, একটা উদাহরন দিই, এক গ্রামে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিল। একজন অতি সম্পদশালী লোক (তার আশেপাশে সবাই গরিব) একটা টিউবয়েল বসাল অনেক টাকা খরচ করে যাতে সুপেয় পানি পায়। এখন সে নিষেধ করে দিল যে এই টিউবয়েলের পানি অন্য কেউ খেলে (তার অনুমোদিত সদস্য ছাড়া) তার কঠিন শাস্তি হবে, তো গ্রামের লোকদের তেমন কোন টাকা নেই যে এরকম একটা টিউবয়েল বসায়। ধনি লোকটি যখন ঘুমাতে যায় তখন এই গরিব মানুষেরা চুরি করে পানি নিয়ে যায়। এখন ধনি লোকটির কি করা উচিত। এখন কি সে সবাই কে জেল-হাযতে পাঠাবে নাকি সবার কাছ থেকে টাকা তুলে এবং নিজের কাছ থেকে আরও কিছু টাকা দিয়ে কম দামি হলেও একটা টিউবয়েল বসিয়ে দিবে যাতে সে আরামে পানি পান করতে পারে। মোবাইল ফোন কোম্পানি নোকিয়া ও স্যামসাং অনুন্নত দেশের জন্য আলাদা পন্য বের করে ঠিক তেমনি সফট্যয়ার কোম্পানিগুলোও এরকম পন্য বের করতে পারে। আমি দোকানে জেনুইন windows 7 এবং windows xp2 এর দরদাম করে দেখলাম ৯,০০০ আর ১৩,০০০ টাকা। আর এই দামে একটা ভাল মডেলের নোকিয়া বা স্যমসাং মোবাইল পাব অথবা দুইটা xp2 সিডির টাকায় একটা ভাল মানের কম্পিউটার পাব। আর তারা যদি এসব পন্য ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রী করত তাহলে অনেকে আর পাইরেটেড সফট্যয়ার ব্যবহার করত না। ক্যস্পারস্কাই ২০১০ এর দাম এখন ১৩০০শত টাকার মত তাও আমার মত অনেকে কিনে নিয়েছে যদিও দাম বেশি। তাই সফট্যয়ার পন্যগুলো অনুন্নত দেশগুলোর মানুষের সহজলভ্য করা উচিত যদি পাইরেসি বন্ধ করতে চাই।
ধরুন কোন একটি ডাকাত বা ছিনতাইকারীকে জনগন পিঠিয়ে হত্যা করল। এখন আইন হাতে তুলে নেওয়া সত্তেও কেউ এর বিচার করতে পারবেনা কারন জনগন সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। এইজন্য যতই এন্টি পাইরেসি এক্ট হোক না কেন কোন ফলপ্রসূ হবেনা।
আমি CA। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 140 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
😀 আসল কথা হচ্ছে হাতের সামনে সহজেই পাওয়া যায়, শাস্তির ভয় নেই। যদি বাসায় র্যাব এসে তুলে নিয়ে যেতো, উত্তম মধ্যম ধোলাই দিতো, বাড়াবাড়ি করলে ক্রশফায়ার করে উড়িয়ে দিতো – তাহলে দেখা যেতো কয়জনের বুকের পাটা আছে পাইরেসি করার! শুধু সফটওয়্যার পাইরেসি নয়, সেইসাথে সিনেমা ও গানের পাইরেসি চূড়ান্ত আকার ধারন করেছে।
(একটু মজা করলাম, লেখক কিম্বা পাঠকরা কেউ আহত হবেন না দয়া করে)