সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি।
একটি সৃষ্টিশীল চিন্তা, পরিশ্রম, হার না মানা চেষ্টা একজনকে অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব ও বিখ্যাত করে তুলতে পারে। সমকালে যেটাকে নগণ্য, পাগলামি কিংবা ফালতু বলে মনে হয় মহাকালে তা স্থায়ী আসন লাভ করতে সক্ষম হতে পারে। আমাদের দেশ ও দেশের মানুষ অনেক সম্ভাবনাময়।
জাপানীজরা বনসাই করতো শখের বশে। আজ বনসাই সখের গন্ডি পেড়িয়ে বিশ্বজুড়ে শিল্পতে পৌঁছে গেছে সেই সাথে অনেক মানুষের আয়ের রাস্তা তৈরী করে দিয়েছে।
গাছ নিয়ে অন্যরকম কিছু করার উদ্দেশ্যে সুইডিশ বংশভূত আমেরিকান চাষি অ্যাক্সেল আরলন্ডসন কাজ শুরু করেন। গাছকে কেটে, ছেঁটে, বাঁকিয়ে, জোড়া দিয়ে আকার-আকৃতি এমন করেছেন যাতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন এক শিল্পের। যা আজও মানুষের কাছে বিশ্ময় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অ্যাক্সেল আন্ডারসন গাছগুলোর নাম দিয়েছিলেন 'সার্কাস ট্রি'।
অ্যালেক্স এন্ডারসন একবার ছয়টি একই প্রজাতির গাছের চারা এক জায়গায় বৃত্তাকারে একটু দূরে দূরে লাগালেন। চারাগুলো বাড়তে শুরু করলে তিনি পাশাপাশি দু’টো চারাকে টেনে কাছাকাছি নিয়ে এলেন। মাটি থেকে একটু ওপরে গাছের বাকল চেঁছে গাছ দুটি একসঙ্গে বেঁধে রাখলেন। এভাবে ছয়টি গাছ তিনটি জোড়ায় বাঁধলেন। গাছগুলোর মাথা কিন্তু আলাদাই থাকল। কিছুদিন পর দেখলেন, বেঁধে দেওয়া অংশটুকু এমনভাবে জোড়া লেগে গেছে যে ওই অংশটুকু একটি গাছই মনে হচ্ছে। এভাবেই গাছগুলো বাড়তে থাকল এবং সৃষ্টি হলো সত্যিকারের সার্কাস ট্রি।
এরপর এন্ডারসন আবার জোড়া লাগানোর কাজ শুরু করলেন। তবে একটু অন্যভাবে। এবার প্রতি জোড়া লাগানো গাছ থেকে একটি গাছ টেনে পাশেরটির সঙ্গে আগের মতো একইভাবে বেঁধে দিলেন। এভাবে ধাপে ধাপে বিপরীতক্রমে একই কাজ করে তিনি পাঁচ ধাপে সম্পন্ন করলেন। এভাবে বাঁধতে বাঁধতে একসময় দেখলেন, সব গাছ মিলে এক অসাধারণ শিল্পে রূপ নিয়েছে। ছয়টি গাছকেই একটি গাছ মনে হচ্ছে। মানুষ অবাক নয়নে গাছের এই শিল্প দেখে টাসকি খেয়ে গেলেন।
যতটুকু জোড়া বাঁধা, সে অংশটুকু ডায়মন্ড আকারের ফাঁকা সমৃদ্ধ একটি ঝুড়ির মতো হয়েছে। তাই তিনি সে গাছগুলোর নাম দিয়ে দিলেন সার্কাস বাস্কেট ট্রি ।
দুটি গাছকে জুড়ে করলেন 'সার্কাস টু-লেগড ট্রি' এবং চারটি গাছকে বেঁধে সৃষ্টি করলেন সার্কাস ফোর-ফুটেড ট্রি। পাশাপাশি দুটি গাছ লাগিয়ে একটির সঙ্গে অন্যটির ডাল জোড়া দিয়ে তৈরি করলেন সার্কাস ল্যাডার ট্রি। দেখতে একদম মইয়ের মতো যা সত্যিই অকল্পনীয়।
১৯৪৭ সালে এক্সেল এন্ডারসন এগুলো দর্শনার্থীর জন্য উম্মুক্ত করে দিলেন। এন্ডারসনের ম্যাজিক ট্রি গুলোর কথা যুক্তরাষ্ট সহ অন্যান্য দেশে ও বৃক্ষ পাগলদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল ।
সার্কাস ট্রি দেখার জন্য দিনে দিনে লোকসমাগম বাড়তে লাগলো। তবে মজার ব্যাপার হল এন্ডারসন সার্কাস ট্রি সম্বন্ধে তেমন মুখ খুললেন না। ১৯৬৪ইং সালে এলেক্স এন্ডারসন চলে গেলেন কিন্তু রহস্য রহস্যই থেকে গেলো। এখনও এগুলোর পুরো রহস্য পুরোপুরি জানা হয়নি।
১৯৮৫ সালে বোনফেন্টি অনেক দাম দিয়ে সার্কাস ট্রি গুলো কিনে নিয়ে লাগিয়ে দিলেন তার বোনফেন্টি গার্ডেনে। গিলরয়ের সে উদ্যানে গাছগুলো আজও বেঁচে আছে। কিন্তু রয়ে গেছে রহস্য।
আমাদের শখ ও সাধ্যকে কাজে লাগিয়ে আমরা কি এমন কিছু করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে পারি না? আসুন আমরা আমাদের শিষ্টিশীলতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে শিখি।
আরো জানতে এই লিংকগুলো দেখতে পারেন।
http://www.gilroygardens.org/learn/circus-trees.cfm
http://ezinearticles.com/?Axel-N-Erlandsons-Tree-Circus&id=4199707
আমি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।
আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল
jotil tune…..আপনার টিউন গুলা আসলেই অসাম!!