সম্প্রতি ফেসবুকের অন্যতম জনপ্রিয় একটি গ্রুপে আমার পরিচিত এক ফেসবুক ফ্রেন্ড এসইও সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করে। আমি যথারীতি সেগুলোর উত্তর দিয়েছিলাম। যারা এসইও নিয়ে কাজ করছেন আশা করি তাদের উত্তর গুলো কাজে লাগবে। এই বিষয়টি বিবেচনা করেই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো একত্র করে টেক টিউনসে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। সুতরাং আসুন দেখে নেই সেই প্রশ্ন এবং উত্তর গুলো।
উত্তর : পেঙ্গুইন পরবর্তী লিংকবিল্ডিং সম্পর্কে বলার আগে বুঝতে হবে কেন এই আপডেট করলো গুগল। এটার প্রাথমিক কারন হচ্ছে অটোমেটেড ব্ল্যাকহ্যাট ট্রিক্স সম্বলিত স্প্যামি লিংকবিল্ডিং প্রসেসকে এনকাউন্টার করা এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন ন্যাচারাল ও ফ্রেস লিংক গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া। আরেকটা কথা নিশ্চই মনে আছে সবার, quality matters more than quantity। সুতরাং লিংক বিল্ডিং প্রসেস কোন মতেই যেন আনন্যাচারাল নয়, গুগলের জন্য লিংক হবে ন্যাচারাললিংক। যাই হোক, পেঙ্গুইন এর যুগে যেই বিষয়গুলো এভোয়েড করবেনঃ
আরও গুরুত্বপূর্ন দুটি ব্যাপার যা অবশ্যই এভোয়েড করে চলতে হবেঃ
(ক) র্যাপিড লিংকবিল্ডিং পরিহার করা (link velocity – দ্রুত লিংকবিল্ডিং করা যাবেনা, আস্তে আস্তে করতে হবে। দিনে সর্বোচ্চ ৪/৫টার বেশি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে তা না হলে পেনাল্টি খাওয়ার সম্ভভবনা বেশি থাকবে যা হিতে বিপরীত হওয়ার সামিল, বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে যারা এসইও'র কাজ করে তাদের দেখা যায় তারা ১দিনেই ১০০/১৫০ লিংক বিল্ডিং করে, তারা জানেনা এর পরিণাম কি!)
(খ) লিংক বিল্ডিং এর সময় এক্সাক্ট মেচ কিওয়ার্ড ইউজ না করা (মানে হচ্ছে Anchor Texts কে যথা সম্ভব ডাইভার্সিফাই করতে হবে যাতে করে এটা ন্যাচারাল লাগে গুগল যাতে কোন ক্রমেই না বুঝতে পারে এটা আনন্যাচারাল, এক্ষেত্রে শুধু ইউআররেল বা প্রেসাল কিওয়ার্ড অথবা আপনার ব্রান্ডনেম ইউজ করলেই চলবে অথবা আপনি চাইলে শুধুমাত্র আপনার নামই ইউজ করতে পারেন)।
*** গুগল পেঙ্গুইন এর পেনাল্টির হাত থেকে বাঁচতে চাইলে পাশাপাশি এই কাজগুলোকেও এভোয়েড করবেন Content Marketing /Article Marketing with spun articles, Forum Profile Link building, Link Exchanges, low Quality Press Release & social bookmarking Submissions, Mass Directory Submissions (except niche based specific directories)।
গুগল অনেক আগেই ওয়েব সাইট রেংক করানোর ক্ষেত্রে ঘোষণা দিয়েছে “Social Signals” এর ব্যাপারে তাই সোশ্যাল মিডিয়া এখন খুবি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং অন্যান্য লিংকবিল্ডিং প্রসেস চালু রাখার পাশাপাশি সাইটের কন্টেন্টকে নিয়ম করে গুগল প্লাস, ফেসবুক/লাইক, টুইটার, পীন্টারেস্ট এ শেয়ার করবেন যাতে ২/৩টা করে লাইক শেয়ার হয় দৈনিক। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সাইটে ভাইরাল কন্টেন্ট লিখার কোন জুড়িই নাই, যা ইউজারই নিজের ইচ্ছায় শেয়ার করে দিবে। এইতো, তবে আমি পার্সোনালি আরেকটা কথা বলতে চাই উপরোক্ত নিয়ম মেনে ইথিকাল ওয়েতে সব ধরনের লিংক বিল্ডিং চালিয়ে যেতে পারবেন আপনি, তাহলেই আসবে সফলতা।
উত্তর : কিওয়ার্ড রিসার্স ছাড়া একটা সাইটের পরিপূর্ন এসইও প্লান করা যায় না। কিওয়ার্ড রিসার্স করার হয় সাইটের জন্য উপযুক্ত টার্গেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে পেতে পাশাপাশি এ টু জেড এসইও স্ট্রেটেজি ঠিক করতে। টার্গেটেড কিওয়ার্ড ছাড়া ওয়েবসাইট পালবিহীন নৌকার মত। আর আপনার গোল/উদ্দ্যেশ্য (প্রডাক্ট বিক্রি করবেন নাকি সার্ভিস দিবেন নাকি অন্য কিছু) কি সেটার উপর ভিত্তি করেই কিওয়ার্ড রিসার্স করা হয়। এখন কথা হচ্ছে বায়ার যদি কিওয়ার্ড ছাড়াই আপনাকে সাইট দিয়ে বলে এসইও করতে/বায়ারের যদি টার্গেটেড কিওয়ার্ড না থাকে, তখন আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে ওর গোলটা জেনে বা ভালো মত বুঝে নিয়ে – ওর নির্দিষ্ট পেজ অনুযায়ী কিওয়ার্ড রিসার্স করে দেওয়া (এখানেও আপনার অনেক ডাটার প্রয়োজন পরবে, যেমন তার এই সাইট থেকে ফিডব্যাক পাওয়ার চাহিদা কেমন! আরও অনেক কিছু) যাতে ঐ সাইটের জন্য উপযুক্ত বা পারফেক্ট কিওয়ার্ড পাওয়া যায়। এরপর আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ড নিয়েই প্লান করতে হবে অনপেজ এবং অফপেজ এসইও স্ট্রেটেজি।
উত্তর : একটা সাইটকে রেংক করতে হলে মুখস্ত বলা যায় না যে এটা কত সময় লাগবে রেংক করতে। আসলে এটার জন্য অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে, তাও এক্সাক্ট বলা যায় না জাস্ট গেস করতে হয়। এটা হচ্ছে একটা প্রতিযোগিতার মত। ওয়েট উদাহরণ দিচ্ছি… আপনি যদি কিছু সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে এমন রেসে জিততে চান তাহলে বলুন কি করতে হবে আপনাকে? ক) আপনাকে আগে বুঝতে হবে কতজন এই রেসে অংশ গ্রহণ করেছে জুস্ট বুঝার জন্য এক্সাক্ট কতজন আপনার প্রতিদ্বন্দি এবং পাশাপাশি কারা তারা? খ) তারা কে কেমন শক্তিশালী, কেমন গতিতে দৌড়াচ্ছে, এবং এত গতিতে দৌড়ানোর জন্য কি কি করছে? গ) অবশেষে ওদের গতিবিধি বুঝে নিয়ে আপনার কর্মপদ্ধতি ঠিক করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। তাহলেই সম্ভব রেসে জেতা। ডেটস ইট… ত কি বুঝলেন এই উদারহণ থেকে? আশা করি আর ভেঙে বলতে হবে না, বুঝে নিতে পারবেন…
উত্তর : এই প্রশ্নটা যদিও আমার কাছে ক্লিয়ার না। কারন আপনার প্রশ্নের প্রথম অংশে বুঝা গেলো যে আপনি কোণ নির্দিষ্ট দেশ থেকে আপনার সাইটের ট্রাফিক আনতে চান, আবার শেষের অংশে বুঝা যাচ্ছে আপনি লিংক বিল্ডিং করার জন্য নির্দিষ্ট দেশের সাইট খুঁজার স্টাইল জানতে চাচ্ছেন। এখন কি উত্তর দিবো, আমি কনফিউসড। তারপরও উত্তর দিচ্ছি… যদি আপনার প্রথম অংশটা প্রশ্ন হয় তবে, এক্ষেত্রে আপনি প্রথম যে কাজটা করতে পারেন তা হচ্ছে জিওগ্রাফিক কিওয়ার্ড (যেমন Atlanta divorce lawyer) টার্গেট করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী অনপেজ অপটিমাইজেশন করতে পারেন, তারপর কান্ট্রিওয়াইজ (যেমন বাংলাদেশের জন্য .bd এক্সটেনশন) সাইট খুঁজে বের করে যেসব যেসব ওয়ে আছে ওগুলো ইউজ করে লিংকবিল্ডিং করুন, আরেকটা কথা লিংকবিল্ডিং এরক্ষেত্রে ভালো সুফল পেতে দেশভিত্তিক ডোমেইন আইপি এবং হোস্টিং সার্ভার এর কথা মাথায় রাখা জরুরী। যদি আপনার দ্বিতীয় অংশটা প্রশ্ন হয় তবে, উত্তর হচ্ছে কিওয়ার্ড সংযোজন করে ডোমেইন এক্সটেনশন শেষে দিয়ে সার্চ করুন তাহলেই পেয়ে যাবেন (আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের গ্রুপের ডক গুলো দেখুন)
মূল লিংকঃ http://goo.gl/YHrB4
আমি আবু তাহের সুমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 1212 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি তাহের অনলাইন উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং স্ট্রেটেজিস্ট হিসাবে কাজ করছি দীর্ঘ ১দশক যাবত। ২০১৭'তে প্রতিষ্ঠা করি ' আওয়ামাহ টেকনোলজিস লিমিটেড ' বর্তমানে এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইংরেজি ব্লগ 'ক্লিক করুন' । ধন্যবাদ।
সুমন ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এমন একটা পোস্ট ই দরকার ছিল আমার গুগল পাণ্ডা এর ব্যাপারে জানার জন্য। ধন্যবাদ