বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামুআলাইকুম । সবাইকে আমার আন্তরিক প্রীতি, সম্মান, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি। আশাকরি আল্লাহ্র অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।
টিউনটি টেকটিউনস এর সম্মানিত মডারেটরদের উৎসর্গ করা হল।
যে যতো প্রভাবশালী, আধুনিক, জনপ্রিয় ও শক্তিমান তার অগনিত শুভাকাঙ্খী থাকবে আর সাথে থাকবে একঝাক অশুভাকাঙ্খী ও শত্রু আসুর। এই সিস্টেম সৃষ্টির শুরুতে ছিলো আজও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে।
টেকটিউনস এমন একটি প্লাটফর্ম যা আমরা যারা সত্যিকারের (এখন “সত্যিকার” শব্দটা ব্যবহারের প্রয়োজন হচ্ছে) টেকটিউনস কমিউনিটি আমরা একে অন্যের সাথে একটি সুতোয় বাঁধা। আমাদের এক জনের সাথে অন্যজনের শ্রদ্ধাবোধ থাকা বাঞ্চনীয়। টেকনিক্যাল প্লাটফর্ম ও কিছু কিছু প্রেজেন্টেশনের কারণে এক আধটু মতের অমিল থাকা স্বাভাবিক। যার সমাধান টিউমেন্ট নামক স্থানে গঠন মূলক সমালোচনা মাধ্যমে সম্ভব।
আলোচনা ভালো, সমালোচনা আরও ভালো, যোগ্য কাজের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন ভালো, অকপটে ও নির্দ্ধিদায় জানতে চাওয়া ভালো, প্রসংশা করা ভাল এবং এগুলো না পাড়লে চুপ থাকাও ভালো। কিন্তু নিজের বিবেক, নৈতিকতা ও শালিনতাকে পায়ে ঠেলে এবং কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করে কোনো মন্তব্য করা ভালো নয়।
একটি টিউন পছন্দ হওয়া ভাল, একটি টিউন অপছন্দ হওয়াও ভাল, অবহেলা ভালো, কিঞ্চিত পছন্দ করা ভালো, একমত না হওয়া ভালো। কিন্তু অপমান করা ভালো নয়, অপদস্ত করা ভালো নয়, অবমাননা করা ভালো নয়।
আপনারা ভাবতে পারেন আজ আমি এমন করে লিখছি কেনো?
উত্তর : আপনাদের দ্বারা আমাকে গ্রহন করে নেয়া ও আপনাদের প্রতি আমার ভালোবাসা ও দ্বায়িত্ববোধ থেকে লিখছি। এক কথায় লিখতে বাধ্য হচ্ছি। আপনাদের একটু সতর্ক করে দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি।
একটি ঘটনা বলছি:
কয়েকদিন রাতে পোষ্টের সাথে সাথে টিউমেন্ট এসে হাজির। আমি তো মহাখুশি উত্তর দেয়ার প্রত্যয়ে টিউমেন্টি দেখতে ছুটে গেলাম। একি? দেখলাম অনেক লিংক সমৃদ্ধ বিশাল এক টিউমেন্ট। টিউমেন্ট না বলে এ্যাডমেন্ট বলা ভালো। সাথে সাথে স্পাম করে দিলাম। এগুলো কি ভালো বলেন?
আরও অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে বলতে চাচ্ছি না।
মডারেটরবৃন্দ সহ টেকটিউনস কমিউনিটির সবার প্রতি বলছি:
১. টিউমেন্টে গঠনমূলক আলোচনা ও সমালোচনা করুন।
২. টিউনের বিষয় বস্তুর সাথে অসংগতিপূর্ণ কোনো প্রকার লিংক দিবেন না।
৩. বিশেষ করে রাত দু’টোর পর একটি বিশেষ শ্রেণীর কিছু টিউন লক্ষ্য করা যায়। যা মডারেটর সরিয়ে দেন। কিন্তু তার আগে কমপক্ষে ১০০বার পাঠিত হয়ে যায়। মডারেটরদের কাছে জানতে চাচ্ছি এত সময় কেনো লাগে উদ্দ্যেশ মূলক পোস্ট আন-পাবলিশ করতে?
৪. আপনার টিউন কিংবা টিউমেন্টের জের ধরে অযাচিত কোনো টিউমেন্ট পড়লে দয়াকরে মন খারাপ করবেন না। মনে রাখবেন ঐ টিউমেন্টকারী আমাদের কেউ না বরং টেকটিউনস কমিউনিটির সাফল্য ওদের সহ্য হচ্ছে না তাই ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন করছে।
৫. আমি অনেক সময় কিছু কিছু টিউন দেখে ভাবি এখনই রিপোর্ট করে দেবো কিন্তু মায়া লাগে ভাই। একজন নতুন টিউনারের টিউন লেখার মাঝে কতো আগ্রহ উদ্দিপনা ও কৌতহল তার মনজুড়ে খেলা করে তা আমার চেয়ে ভালো করে কেউ জানে কিনা সন্দেহ। যখন দেখি যাকে আমি আন্তরিক ভাবে সেকরিফাইজ করেছি সে ভুয়া তখন মনের অবস্থা কি হয় বলুন তো!!!!
৬. হাসি, ঠাট্টা, ইয়ার্কির বিপক্ষে আমি না। হাসি, ঠাট্টা, ইয়ার্কির একটা মান আছে কোনটা সস্তা কোনটা দামি। আমরা বিশ্বের সর্বপ্রধান বাংলা ওয়েবের বাসিন্দা হয়ে সস্তা হাসি, ঠাট্টা, ইয়ার্কির ও মজা কেনো করবো?
৭. আমাদের বুঝতে হবে টেকটিউনসের যারা মডারেটর আছেন তারা নিজ যোগ্যতায়ই ওখানে আছেন। যদি কোনো কারনে আপনার টিউন কিংবা টিউমেন্ট সরিয়ে নেয়া হয়। তাদের অবহিত করুন আপনার স্বপক্ষে যুক্তি দেখান। সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু তাদের গালাগালি করার অধীকার আপনাকে কে দিয়েছে? যদি গালাগালি করে থাকেন সেটা আপনার নিজের দুর্বলতার প্রকাশ।
দয়া করে কেউ ভাববেন না আমি আপনাদের উপদেশ দিচ্ছি। একটি অযাচিত টিউমেন্টের জন্য আমি গতদিন অনুপস্থিত ছিলাম। মনে কষ্ট পেয়েছিলাম। পরে ভেবে দেখলাম কার উপর অভিমান? যে টিউমেন্টকারী টিউমেন্টটি করেছে আমি চুপ করে থাকলে তার/তাদের উদ্দ্যেশ্য সফল। আপনাদের এত ভালোবাসার সামনে একটি ক্ষুদ্র টিউমেন্ট পুরো পৃথিবীর মুখোমুখি একটি ধুলিকনার সমতুল্য।
যাই হোক, একটা গল্প মনে পড়ে গেল-
শের-এ-বাংলা এ, কে, ফজলুল হক তার ভক্তবৃন্দের কাছে একটি গল্প বললেন। শের-এ-বাংলার গল্পটি শুনুন।
“এক গ্রামে এক দরবেশ এলেন। দরবেশের গায়ে সবুজ রঙের এক চাদর ছিলো। দরবেশের কাছে কেউ এলে আরোগ্য কিংবা সমস্যার সমাধান হয়েই যায়। তিনি কারো কাছ থেকে কোনো হাদিয়া নেন না। এই দরবেশের সাফল্যে গ্রামের আগের মোল্লা ও ভন্ড ফকিরগণ ঈর্ষায় জ্বলতে থাকলো কারণ তাদের কাছে এখন আর কেউ আসে না। দিন দিন দরবেশের কেরামতী বাড়তে থাকলো। দরবেশ ভুলেও কখনও তার গায়ের চাদরটি ছাড়া চলেন না। মোল্লা ও ভন্ড ফকিরগণ ভাবলেন দরবেশের কেরামতি তার চাদরের মধ্যে। তাই তারা তার ঐ সবুজ রঙের চাদরটির দিকে লোভ দিলো। তারা দরবেশের কাছে অনুরোধের সুরে চাদরটি চাইলেন। দরবেশ না করলেন। তাতে ভন্ডদের চাদরের জন্য আরও আগ্রহী হয়ে উঠলেন। তারা কেরামতী করার আশায় একদিন দরবেশের চাদরটি চুরি করলেন। দরবেশ ঐ গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন। ভন্ডরা ঐ চাদরের দোহাই দিয়ে পুর্ণউদ্দ্যমে কাজ করে গেলেন। কিন্তু রোগী ভাল হওয়া তো দুরের কথা আরও খারাপ হতে লাগলো। আসলে কেরামতী ঐ চাদরে ছিলো না ছিলো দরবেশের মধ্যে ”
শের-এ-বাংলা এই গল্পটি বলেছিলেন তাকে যখন মুসলিম লিগ থেকে বেড় করে দেয়া হয় তখন। কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ তখন মুসলিম লিগের বড় নেতা ছিলেন। আর পাকিস্তানের জাতীর পিতার করা দল মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছিলো এই বাংলায়, ঢাকার নবাব বাড়ীতে।
এই গল্পটি বর্তমান সময়ও প্রসঙ্গিক। যারা ভাবেন টেকটিউনস নামটা বাংলা টেকনোলজির ১নং ওয়েবসাইট তারা ভুলে যান একঝাক অকুতভয় নির্লোভ মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম, বুদ্ধিদীপ্ত টিউন, সময়ের চাহিদার কথা চিন্তা ও মানের ক্ষেত্রে আপসহীন থাকাই আজকের এই পর্যায়ে আমাদের নিয়ে এসেছে। দয়া করে চাদরের দিকে না তাকিয়ে দরবেশের দিকে তাকান।
কষ্ট করে আমার এই টিউনটি দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের ভালবাসায় সিক্ত ও পরিতৃপ্ত। আপনাদের ব্যাপক সাড়া আমার নিত্যদিনের প্রেরণা।
আমি মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 1147 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মা ও বাংলা ভাষার কাঙ্গাল
জটিল লিখছেন । আর শেরে বাংলার বলা গল্পটা জানতে পেরে ভাল লাগল ।