বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছেন। স্মার্টফোন এর ব্যাটারি প্রায় যায় যায় অবস্থা। ভাবলেন একটু চার্জ করে নেবেন। চার্জে লাগালেন কিন্তু যখন দেখলেন ২০ মিনিট পরও চার্জ ১% ও বাড়েনি তখন মেজাজ টা কেমন লাগে!
বাসায় যে ইউএসবি(USB) কেবল আছে ঐটা দিয়ে খুব দ্রুত ডেটা আদান-প্রদান করতে পারছেন কিন্তু বাইরে কোথাও অন্য কেবলে এত দ্রুত হচ্ছে না; আবার কোনো কোনো কেবল পোর্ট এর সাথে ম্যাচ করলেও সাপোর্ট করছে না!
এমনটা হয় ইউএসবি(Universal Serial Bus) প্রযুক্তির বিভিন্নতার কারণে। ইউএসবি এর বিভিন্ন ধরন(Type) এবং সংস্করণ(Version) রয়েছে। একেক ধরন ও সংস্করণ এর একেক ক্ষমতা, সুবিধা-অসুবিধা ও ব্যবহার আছে।
আসুন জানি। আগে আমাদের কয়েকটা বিষয় একটু ক্লিয়ার হয়ে নেয়া উচিত; পোর্ট, কানেক্টর, পিন।
ইউএসবি পোর্ট:
পোর্ট হচ্ছে যে hole টিতে আমরা কেবল টি প্রবেশ করাই। একে ইউএসবির Female Port ও বলে। ছবিতে দেখুন।
USB Port
ইউএসবি কানেক্টর:
কেবল এর যে অংশ আমরা পোর্ট এ প্রবেশ করাই সেটাই কানেক্টর। ছবিতে দেখুন।
USB Connector
পিনঃ
কানেক্টর বা পোর্টের ভিতরে ডেটা বা চার্জ ফ্লো হবার জন্য কয়েকটা তার রয়েছে। এগুলোই পিন। নিচে ছবিতে দেখুন।
Pin
আসুন এক ঝলকে আইডিয়া নেই একবার।
ধরন (Type):
সাধারনত ইউএসবি ৩ধরনের হয়ে থাকে।
সংস্করণ (Version):
ইউএসবি প্রযুক্তির এ পর্যন্ত ৪টি সংস্করণ হয়েছে।
একটা বিষয় অনেকেই ভুল করে সংস্করনের সাথে সাথে ধরনগুলকে মিলিয়ে! যেমনঃ USB 3.0 সাপোর্টেড হতে হলে অবশ্যই Type-C হতে হবে! আসলে এমন কোনো কথা নেই। টাইপ আর ভার্সন পুরো আলাদা দুটি বিষয়!
আসুন এবার বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সাধারনত আমাদের ইউএসবি কেবল এর যে কানেক্টরটি ফোনের সাথে কানেক্ট করি সেগুলো Micro B / Mini B হয়। Type B এর বহুল ব্যবহার দেখা যায় আধুনিক স্মার্টফোন গুলিতে।
এটি খুবই আধুনিক একটি ইউএসবি টাইপ। এর কোনো রকমফের হয় না; মানে এর কোন ফুল টাইপ বা মাইক্রো/ মিনি বলে কিছু নাই। সব ধরনের ডিভাইসের জন্য এটি একই রকম হয়ে থাকে। এটি সাইজে ছোট এবং পিনের সংখ্যাও বেশি হওয়াতে বর্তমানে প্রায় সকল কোয়ালিটিফুল ডিভাইসে USB Type C ব্যবহার করা হয়। পিনের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারনে এটি সবগুলো ইউএসবি ভারশনই সাপোর্টেড। যেমনঃ অ্যাপলের নতুন ম্যাকবুক, স্যামসাং এর ফ্লাগশিপ স্মার্টফোন ইত্যাদিতে USB Type C এর ব্যবহার দেখা যায়।
এখন কথা হচ্ছে কোন টাইপের ইউএসবি কোন ভার্সনের জন্য কম্প্যাটিবল? এটা নির্ভর করে পিনের উপরে। যত উপরের দিকের ভার্সনের দিকে যাওয়া যায় ততই বেশি পিন সংখ্যার দরকার হয়। বুঝলেন না? আসেন উদাহরন দিয়ে বুঝি।
ইউএসবি ভার্সন ৩.০ এর জন্য কানেক্টরে ৯টি পিন দরকার, ইউএসবি ভার্সন ২.০ এর জন্য কানেক্টরে ৫টি পিন দরকার। আবার ইউএসবি টাইপ A তে ৫ পিন বিশিষ্ট কানেক্টর ও আছে আবার ৯ পিন বিশিষ্ট কানেক্টর ও আছে। তাহলে USB 3.0 ব্যবহার করতে হলে আপনার ৯ পিন বিশিষ্ট Type A কেবল/কানেক্টর দরকার এবং অবশ্যই USB 3.0 কম্প্যাটিবল ডিভাইস দরকার। কিন্তু USB 3.0 কম্প্যাটিবল ডিভাইসে যদি আপনি ৫ পিন বিশিষ্ট কেবল/কানেক্টর ব্যবহার করেন তাহলে আপনি USB 2.0 এর মতই স্পীড পাবেন।
USB Type C তে রয়েছে ১৮টি পিন। এটি USB 3.1 সাপোর্টেড। তাই বলে এই না যে যেকোনো ডিভাইসে USB Type C ব্যবহার করলেই USB 3.1 এর মত স্পীড পাওয়া যাবে! USB 2.0 সাপোর্টেড ডিভাইসে ব্যবহার করলে USB 2.0 এর স্পীড ই পাওয়া যাবে।
মোট কথা দুটি ডিভাইস কানেক্ট করার পর সবচে কম ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাপারটার উপরই স্পীড নির্ভর করবে। একটা দৃশ্যপট দিয়ে বুঝাই। আপনি আপনার ফোনকে পিসির সাথে কানেক্ট করলেন। আপনার ফোনটি USB 3.0 কম্প্যাটিবল, পিসির যে পোর্টে লাগিয়েছেন সেটা USB 2.0 এবং যে কেবল্টি ব্যবহার করেছেন সেটি Type C to A USB 3.0 কম্প্যাটিবল। এখন আপনি স্পীড কেমন পাবেন? হ্যা USB 2.0 এর স্পীড পাবেন কারন এখানে সবচে লো প্রোফাইলের হল পিসির USB 2.0 পোর্ট।
USB Type C to A
না জেনে উল্টাপাল্টা ইউএসবি ব্যবহার করে অনেককেই নিজের সাধের ডিভাইসটি হারাতে হয়। আর স্মার্টফোন ব্লাস্টের ঘটনা তো এখন প্রায়ই শোনা যায়। এগুলোর বেশির ভাগ ই হয় না জানার কারনে। এখন থেকে আশাকরি ইউএসবি নিয়ে কোন কনফিউশন আর থাকবে না। যদি কোন কনফিউশন থাকে টিউমেন্ট এ জানাতে ভুলবেন না।
© Md. Abdun Nahid
17 September 2017
আমি মোঃ আবদুন নাহিদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
onek sundor hoyce vay