আসসালামু আলাইকুম।
😆 সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। 😆 🙄 আশা করি সবাই ভাল আছেন। 🙄 হার্ডওয়্যার টিউটোরিয়াল পর্ব হিসাবে আজকে আলোচনা করব হার্ডডিস্ক বিষয়ে যথারুপঃ হার্ডডিস্ক/হার্ডড্রাইভ কি, হার্ডড্রাইভ ক্যাটাগরী, কোন ব্যান্ডের হার্ডড্রাইভ ব্যবহার করবেন, হার্ডড্রাইভ ক্রয়ের নির্দেশিকা সহ অন্যান্য তথ্যাবলী। সুতরাং আর কথার কলেবর বৃদ্ধি না করে মূল আলোচনাতে ফিরছি।
হার্ড ডিস্ক হলো তথ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত এক প্রকারের চৌম্বকীয় চাকতি-ভিত্তিক যন্ত্রাংশ। হার্ডড্রাইভ সমকেন্দ্রিক একাধিক চাকতি থাকে, এবং তথ্য পড়ার জন্য একাধিক Head (হেড) থাকে।
আইবিএম সর্ব প্রথম ১৯৫৭ সালে হার্ড ডিস্ক উদ্ভাবন করে। বর্তমানে অধিকাংশ কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের স্থায়ী (non-volatile) ব্যবস্থা হিসাবে হার্ড ডিস্ক ব্যবহৃত হয়। হার্ড ডিস্ক ছাড়াও বর্তমানে ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার, মিউজিক প্লেয়ার প্রভৃতি যন্ত্রে হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। শুরুর দিকের হার্ড ডিস্ক গুলো ছিলো অপসারনযোগ্য মাধ্যম, কিন্তু বর্তমানের হার্ড ডিস্ক গুলো সাধারণত ধাতব বাক্সে আবদ্ধ থাকে।
তথ্য জমা রাখার জন্য ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। এই ডিস্ককে কম্পিউটারের সাথে যা দিয়ে লাগানো হয় সেটাই ডিস্ক ড্রাইভ। তাহলে সিডি/ডিভিডি ড্রাইভ, ফ্লপি ড্রাইভ, জিপ ড্রাইভ – সবই ডিস্ক ড্রাইভ। এমনকি যে ড্রাইভ নিয়ে আজকের টিউন, সেটাও একধরণের ডিস্ক ড্রাইভ। তবে কাজের দিক দিয়ে ডিস্ক ড্রাইভ আলাদা আলাদা ধরণের। সিডি/ডিভিডি ড্রাইভ আলোকীয় পদ্ধতিতে কাজ করে বলে সেটাকে আমরা অপটিক্যাল ড্রাইভ বলি। আর ফ্লপি আর জিপ ড্রাইভ এর যুগ তো শেষ। তাই বিশাল ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বাকি ডিস্ককে আমরা হার্ডডিস্ক বা হার্ডড্রাইভ বলি। এই ড্রাইভ শক্ত আবরণে ঢাকা থাকে বলে এমন নাম। মজার ব্যাপার হল হার্ডডিস্ক আর হার্ডড্রাইভ এক না। যেসব ড্রাইভ তথ্য রাখার জন্য ডিস্ক বা চাকতি ব্যবহার করে তাদের হার্ডডিস্ক বলে। আর যারা ফ্ল্যাশ বা অন্য উপায়ে তথ্য রাখে কিন্তু শক্ত আবরণে আবৃত তাদের হার্ড ড্রাইভ বলে। যেমন – SSD বা সলিড স্টেট ড্রাইভ একটি হার্ডড্রাইভ।
আরপিএম কথাটির কয়েক ধরণের প্রয়োগ রয়েছে। এর মাঝে একটি হল - Revolutions per minute। এটা বোঝায় কোন জিনিস মিনিটে কতবার ঘোরে। যেমন কোন হার্ডডিস্ক ৭২০০ আরপিএম বলতে বোঝায় তার ডিস্ক বা প্লেটার মিনিটে ৭২০০ বার ঘুরে। ৫০ আরপিএম মানে সেটি প্রতি মিনিটে ৫০ বার ঘোরে। হার্ডডিস্কের আরপিএম যত বেশী হবে সেই হার্ডডিস্কের ঘূর্ণন গতি তত বেশী। বাজারে প্রচলিত হার্ডডিস্কের আরপিএম হচ্ছে ৫৪০০, ৭২০০, ১০০০০ RPM যতো বেশি হবে, মানে সেটি ভালো এবং দামও ততো বেশি হয়।
হ্যা প্রসেসরের মত হার্ডডিস্কে ক্যাশ মেমোরি সংযুক্ত থাকে। হার্ডডিস্কের ক্যাশ মেমোরির উপর ভিত্তি করে হার্ডডিস্কের দাম পরিলক্ষিত হয়। তথাপি ক্যাশ মেমোরি বেশী হলে হার্ডডিস্কের পারফরম্যান্স সুনিশ্চিত করে। হার্ডডিস্কের আরপিএম ও ক্যাশ মেমোরি যথোপযুক্ত হলে কাজের একসেস হবে ফাটাফাটি/অসাধারন। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত হার্ড ড্রাইভের ক্যাশ মেমোরি হচ্ছে ১৬, ৩২, ৬৪, ১২৮, ২৫৬ এমবি। হার্ডডিস্ক নির্মাণকারী কোম্পানির সংখ্যা অল্প। সবার আগে যার নাম না নিলেই নয় সে হল ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল। আইডিই ড্রাইভ তৈরিতে এদের টেকনোলজি অনেকদিন স্থায়ী ছিল। এই কোম্পানি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
হার্ডডিস্ক নির্মাণকারী কোম্পানির সংখ্যা অল্প। সবার আগে যার নাম না নিলেই নয় সে হল ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল। আইডিই ড্রাইভ তৈরিতে এদের টেকনোলজি অনেকদিন স্থায়ী ছিল। এই কোম্পানি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর আসে সিগেট। আমেরিকান এই কোম্পানি ১৯৭৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়। হার্ডডিস্কের বিবর্তনে এদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। প্রচলিত ম্যাক্সটর হার্ডডিস্ক গুলো মূলত: সিগেটের তৈরী। তোশিবা বেশ পুরনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী কোম্পানি। তবে এরা ফুজিৎসু’র সালে মিলে FDE বা এনক্রিপটেড ডিস্ক বানায়। এরা ১৯৩৯ সালের জাপানি কোম্পানি।
গ্যালাক্সি ট্যাবের জনক স্যামসাং এর নাম সবাই জানেন। আমাদের প্রায় সকলেই হয়ত এই কোম্পানির হার্ডডিস্ক ব্যবহার করি। ১৯৬৯ সালের পুরনো এই কোম্পানি আসলে কোরিয়ান। তবে এরা এবছর সিগেটের কাছে হার্ডডিস্ক তৈরির স্বত্ত বিক্রি করে দিয়েছে। হিটাচি গ্রুপ হল সবচেয়ে পুরনো, ১৯১০ সালের জাপানি কোম্পানি। এরাও হার্ডডিস্ক তৈরি করে থাকে। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত যে সকল হার্ডডিস্ক বিদ্যমানঃ Seagate, Western Digital, Hitachi, Toshiba, Samsung (স্যামসাং বর্তমানে প্রডাকশন বন্ধ রেখেছে, তবে হার্ডড্রাইভ ক্রয়ে ১ম দুটিকে তালিকাতে রাখতে পারেন)
বাজারে ২ ধরনের হার্ডড্রাইভ পাওয়া যায় তথাঃ
External হার্ডড্রাইভ হল এক কথায় বাইরে রেখে কাজ করা। অর্থাৎ এটি কোন প্রকার ক্যাসিং কিংবা ল্যাপটপের হার্ডওয়্যারে সংযোগের প্রয়োজন নাই। একে অনেকে পকেট ড্রাইভ বলে আখ্যায়িত করেন। এটি ওজনে হালকা, পকেটে বহন করা যায় এবং সময় উপযোগী হিসাবে যে কোন কম্পিউটার ও ল্যাপটপে ইউএসবির মত কানেক্ট রেখে কাজ করা যায়। বাজারে ১৬০ জিবি থেকে ৪ টিবি পর্যন্ত এক্সটার্নাল ড্রাইভ পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য এর দাম কিছুটা হলেও বেশী। Adata, Transcend, Twinmos, Toshiba, WD, Samsung, Sony, Hitachi কোম্পানী External HD বাজারজাতকরন ও প্রডাকশন করে থাকে।
অপরদিকে Internal ড্রাইভ হল ক্যাসিংয়ের ভিতর সংযোগ রেখে কাজ করা। এটা ওজনে ও আকারে বেশ ভারি/বৃহৎ। এক্সটার্নাল ড্রাইভ হতে এর দাম অনেকটা কম। এবং বহুল ব্যবহৃত হার্ডড্রাইভ হচ্ছে ইন্টারনাল ক্যাটাগরী। বাজারে ১৬০ জিবি থেকে ৪ টিবি পর্যন্ত ইন্টারনাল ড্রাইভ পাওয়া যাচ্ছে
আলোচনার একদম শেষ পর্যায়ে। উপরোক্ত টিউটোরিয়াল অনুসরনের মাধ্যমে হার্ডডিস্ক সঠিকভাবে চিনতে ও ক্রয় করতে গাইড লাইন হিসাবে কাজ করবে। আজ এই পর্যন্তই। আগামী পর্বে অন্য কোন টপিক নিয়ে আলোচনা হবে। এবং এই টিউন সম্পর্কে কোন অভিমত. পরামর্শ থাকলে টিউমেন্ট পাবার প্রত্যাশা রইল। 😆 😳 -আল্লাহ্ হাফেয-
আমি এএমডি আব্দুল্লাহ্। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 157 টি টিউন ও 1046 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
সম্মানীয় ভিজিটর বন্ধুগন! সবাইকে আন্তরিক সালাম ও ভালবাসা। আশা করি ভাল আছেন। পর সংবাদ যে, আমরা একটি ব্লগ সাইট তৈরি করেছি। সাইটটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম শিক্ষা ও প্রযুক্তি নির্ভর। প্রযুক্তি, শিক্ষা, কম্পিউটার বিষয়ক যেমনঃ অনলাইন ইনকাম, ফ্রিল্যান্স, টিউটোরিয়াল, মুভি, গেমস, সফটওয়্যার, ভ্রমন, ইতিহাস, ভূগোল, কার্টুন, ধর্ম, টেক সংবাদ, এবং সংবাদপত্র ফিউচার...
Poroborti post er jonno opekhay roilam…