আসালামুয়ালাইকুম প্রিয় টেক টিউনার বাসীরা। আশা করি মহান আল্লাহের রহমতে ভালই আছেন। হঠাৎ করে মনে হল যে আমরা কম্পিউটার সম্পর্কে মোটামুটি জানলেও নতুন অনেকেরই কম্পিউটার এর হার্ডওয়্যার সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা নেই। তাই আপনাদের জন্য আজকে আমার ছোট এই প্রয়াস।
আমি আবারও বলছি যে আমি টেক টিউনা এ নতুন। এই জাতিয় পোস্ট হয়তবা কেও আগেও করতে পারে। তবে আমি চেষ্টা করবো আপনাদের কম্পিউটারের প্রতিটি হার্ডওয়্যার সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারনা দিতে যা আপনার কাজে আসবে।
একটি কম্পিউটার মূলত নিম্নোক্ত হার্ডওয়্যার দ্বারা গঠিত হয়,
১* প্রসেসর
২* মাদারবোর্ড
৩* র্যাম (RAM)
৪* হার্ডডিস্ক
৫* অপটিকাল ড্রাইভ
৬* গ্রাফিক্স কার্ড
৭* মনিটর
৮* পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট
৯* ক্যাসিং
১০* মাউস/কি-বোর্ড
আর আমি প্রসেসর ,র্যাম ও opticall dics drive
ধাপে ধাপে সবগুলো নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
প্রসেসররের সাথে থাকা মেমোরি কে ক্যাশ মেমরি বলে। প্রসেসর যখন কাজ করে তখন ডাটা এই মেমোরি তে সংরক্ষিত থাকে। তাই ক্যাশ মেমরি যত বেশি হবে, প্রসেসর তত দ্রুত কাজ করবে। ক্যাশ মেমরি প্রধানত ৩ রকম। L1, L2, L3.
L1 আকারে ছোট কিন্তু খুব দ্রুত কাজ করে।
L2 মাঝারি আকারের এবং মোটামুটি দ্রুত কাজ করে।
L3 খুব বড় আকারের কিন্তু দ্রুত কাজ করতে পারে না। ইদানীং L4 নামে নতুন একটি মেমোরি বের হয়েছে। ল্যাপটপে L3 মেমোরি ব্যাবহার হয়। প্রসেসররের প্যাকেট/বিবরনিতে ক্যাশ মেমরির নাম ও পরিমান দেয়া থাকে।
হাইপার থ্রেডিং হচ্ছে ইন্টেল এর একটি যুগান্তকারী আবিস্কার যা সিঙ্গেল কোর কে দুই কোরের সমান কাজ করার ক্ষমতা দান করে। এএমডির প্রসেসর এ এর নাম হাইপার ট্রান্সপোর্ট। এই প্রযুক্তির কারনে একসাথে অনেকগুলো কাজ করলেও সিস্টেম এর গতি ধীর হয় না। হাইপার থ্রেডিং/ট্রান্সপোর্ট সমর্থনকারী প্রসেসর এর ক্ষমতা সাধারন থেকে ভাল হয়।
যা দ্বারা Random Access Memory কে নির্দেশ করা হয় অথবা আপনি একে RAM এর পূর্ণরুপ বলতে পারেন। একে আমরা অস্থায়ী স্মৃতি বলতে পারি। কেননা অপারেটিং সিস্টেম চলার সময় RAM বেশকিছু প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করে যা অপারেটিং সিস্টেম কে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু কমপিউটার বন্ধ করে দিলে বা RAM এ বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে RAM এ থাকা সকল তথ্য মুছে যায়। তাই তো একে অস্থায়ী স্মৃতি বা ভোলাটাইল মেমোরি বলা হয়। তাহলে তো বুঝতেই পারলেন, RAM যত বেশি হবে, সিস্টেম তত গতিশীল হবে।
আমাদের বাজারে মূলত ২ ধরনের RAM পাওয়া যায়
১* SD (Synchronous Dynamic)
২* DDR (Double Data Rate)
এদের মধ্যে DDR (Double Data Rate) সবচেয়ে ভাল। DDR1, DDR2, DDR3 RAM বাজারে পাওয়া যায়। DDR3 RAM এর কাজের গতি সবচেয়ে বেশি। নিচের দিকে খেয়াল করুন
এইবার আমি আর একটু ভেঙ্গে বলি। আপনি যে কোন RAM এর Module দেখে RAM এর সবকিছু বুঝতে পারবেন। যেমন PC3 নির্দেশ করে যে এটি একটি DDR3 Memory এর RAM। আর 8500 নির্দেশ করে যে এর ব্যান্ডউইথ হচ্ছে 8.5GB/Sec. প্রতিটি RAM এর প্যাকেট এ এই Module নাম্বার দেয়া থাকে।
আপনি আপনার মাদারবোর্ডে যতটুকু Bus Speed এর RAM সাপোর্ট করে, আপনি ততটুকু Bus Speed এর RAM কিনুন। কারন আপনি যদি তার থেকে বেশি Bus Speed এর RAM কিনেন তাহলে তা সম্পূর্ণ কাজ করবে না। একটা উদাহারন দিয়ে সহজ করে দেই। আপনার মাদারবোর্ড যদি DDR3-1066 Bus Speed এর RAM সাপোর্ট করে, কিন্তু আপনি যদি DDR3-1333 Bus Speed এর RAM কিনেন তাহলে তা কাজ করবে DDR3-1066 Bus Speed এ। ফলাফল কি হল। টাকা খরচ হল কিন্তু সেই অনুপাতে Performance পেলেন না। তবে চিন্তা করার কিছু নাই। আজকাল ইন্টেল ছাড়া প্রায় সকল মাদারবোর্ড DDR3-2200 এর মত Bus Speed সাপোর্ট করে। আর কম Latency এর RAM কিনার চেষ্টা করবেন। Latency হচ্ছে RAM এ ডাটা এক্সেস করার সময়। Latency কম হলে RAM এ কম সময় ডাটা অবস্থান করবে। ফলে তা দ্রুত কাজ করবে। আর ডুয়াল চ্যানেল এর মাদারবোর্ডে একই মডেলের দুটি জমজ RAM ব্যাবহার করলে ডাটা ট্রান্সফার এর গতি দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
অপটিকাল ড্রাইভ বলতে সিডি/ডিভিডি/ব্লু-রে ড্রাইভ কে বোঝানো হয়। এটি নিয়ে তেমন কিচু বলার নেই। তবে কিছু কথা জানা থাকলে ভাল। ডিভিডি এর ক্ষেত্রে ডাটা রিড স্পিড ১৬-২৮এক্স পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই সর্বচ্চ স্পিড এর টা কেনার চেষ্টা করবেন। তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে ব্লু-রে ড্রাইভ কিনতে পারলে ভাল। কেননা আর কিছুদিনের মধ্যে আমরা ব্লু-রে এর জগতে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। তাই সবসময় আপডেট টা কেনাই ভালো হবে। আর আমার মতে ASUS থেকে SAMSUNG/LITEON ভালো হবে। কারন আমি নিজে ৩ বার ও আমার প্রায় বেশিরভাগ বন্ধুরা একাধিকবার ASUS এর ওয়াররেনটি নিয়ে অনেক সমস্যাতে পড়েছি। তবে ব্লু-রে ড্রাইভ কিনলে ASUS এর বিকল্প নাই। কারন তারা এতে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্লু-রে ড্রাইভ রিডিং লেসার ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে।
আজকে এখানেই শেষ করতে হবে। প্রচুর খিদা লেগেছে। আর একটি কত্থা
বিশ্বজুড়ে ডেস্কটপ কম্পিউটার এর বাজার আশঙ্কাজনক হারে মার খেয়ে যাচ্ছে। বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান আইডিসির সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথম তিন মাসে সারা বিশ্বে কম্পিউটার বিক্রি হয়েছে সাত কোটি ৬৩ লাখ, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৪ শতাংশ কম। প্রতিষ্ঠানটির মতে, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম বাজারে তেমনজনপ্রিয়তা না পাওয়ায় বিষয়টি কম্পিউটার বিক্রিতেও চূড়ান্ত প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা ডেস্কটপ কম্পিউটারের বাজার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে আইডিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট বব ও’ডোনেল জানান, অপ্রত্যাশিতভাবে উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের বাজার বৃদ্ধিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ কারণে বিক্রির গতিও কমে গেছে। আইডিসির বিশ্লেষকদের মতে, কম্পিউটার বিক্রি কমার পেছনে শুধু উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম বা স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটই দায়ী নয়, বিশ্বের চলমান অর্থনৈতিক সংকটও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।এভাবে চলতে থাকলে হয়তো অচিরেই হারিয়ে যাবে ডেস্কটপ কম্পিউটার গুলো।
আমি অ্যান্ড্রয়েড গেমওয়ালা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 183 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুন্দর টিউন ।আমার অনেক কাজে লাগবে এটা। ধন্যবাদ