আরে ভাই, খবর কি আপনাদের? আছেন কেমন? আমার টিউনে স্বাগতম ।কিছু দিন busy ছিলাম তাই sorry ।এইবার কাজের কথাতে আসি।
আজকে আমার আলোচনার বিষয় গ্রাফিক্স কার্ড। আজকে আমি চেষ্টা করবো যে গ্রাফিক্স কার্ড নিয়ে আপনাদের যে সকল ভুল ধারনা আছে তা শুধরে দিতে। গ্রাফিক্স কার্ড একটি জটিল বিষয় অনেকের কাছে। সত্যি বলতে কি বেপারটা আসলে একটু জটিলই। তবে চিন্তা করিয়েন না, আমি আছি না। সব সহজ করে দিব। খালি একটু মন দিয়ে পোস্ট টা পড়বেন। ( যদি আপনার জানার আগ্রহ থাকে )
গ্রাফিক্স কার্ড কে ভিডিও কার্ড, ডিসপ্লে কার্ড, এক্সসেলারেটর কার্ড নামেও ডাকা হয়। গ্রাফিক্স কার্ড নিয়ে কম-বেশি সকলেই ঝামেলায় পড়েন। কোনটা ছেড়ে কোনটা নিবো তা নিয়ে মহা ঝামেলা। ATi বর্তমানে ( AMD Radeon) না NVidia নিবো তা নিয়ে মাথা পুরা নষ্ট। আগে আমি আপনাদের গ্রাফিক্স কার্ড এর বিস্তারিত আলোচনা করি, তারপর ATi ও NVidia এর সকল ফিচার নিয়ে আলোচনা করবো। ভালো গ্রাফিক্স কার্ড চিনতে হলে প্রথমে আপনাকে নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে
@ চিপসেট
@ ক্লক স্পিড
@ অনবোর্ড মেমোরি
@ মেমোরি ব্যান্ডউইথ
@ ডিসপ্লে আউটপুট
@ ফিল রেট
@ রেনডারিং
@ পিক্সেল শ্রেডার
আমি যতটুকু সম্ভব আপনারদের কাছে বিস্তারিত বলব
চিপসেট মুলত ২ বা ততোধিক চিপ এর সমষ্টি যা কমপিউটারের সাথে গ্রাফিক্স কার্ড এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ও মেমরির মাঝে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে তার কাজ সম্পাদন করে থাকে। চিপসেট তৈরিকারক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চিপ তৈরি করছে যার ক্ষমতা পূর্বের চিপ থেকে অনেক বেশি হয়। এই চিপ সিলিকন সেমিকনডাকটর ও ট্রানজিসটর এর সমন্নয়ে গঠিত। গ্রাফিক্স কার্ড এর জন্য চিপ এর বাজারে দুটি কোম্পানি রাজত্ব করে আসছে। একটি হল ATi technologies ltd. যা AMD (Advance Micro Device) কিনে নেয়। অপরটি হল গ্রাফিক্স সম্রাট NVidia।গ্রাফিক্স কার্ড এর চিপ এর ফ্যান এর নিচে থাকে ঠিক প্রসেসসর যেমন থাকে।
প্রসেসর এর মত গ্রাফিক্স কার্ড এর ও রয়েছে জিপিইউ যা গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট নামে পরিচিত যা ক্লক স্পিড দ্বারা মেগাহার্টজ এককে মাপা হয়। সহজ কথায়, জিপিইউ প্রতি চক্রে(সেকেন্ডে নয়) কতগুলো পিক্সেল প্রসেস করতে পারে তার পরিমাণকে বোঝায়। তাই ক্লক স্পিড যত বেশি হবে, গ্রাফিক্স কার্ড এর ক্ষমতা তত বেশি হবে। অনেকে মনে করেন যে মডেল আপডেট হলেই গ্রাফিক্স কার্ড এর জিপিইউ/ক্লক স্পিড বেশি হবে। একটা উদাহারন দেই। ৫৮০০ মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড থেকে যে ৬০০০ মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড এর গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট বেশি হবে তার নিশ্চয়তা নেই। যেমন ৬৬৫০ মডেল থেকে ৫৮৫০ এর গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট এর ক্ষমতা বেশি।
গ্রাফিক্স অপারেশনের সময় কিছু মেমরির প্রয়োজন হয় যা Built-in ভাবে গ্রাফিক্স কার্ডে দেয়া থাকে। একেই অনবোর্ড মেমোরি বলে। আমাদের অনেকের মাঝে একটা ভুল ধারনা আছে যে অনবোর্ড মেমোরি যত বেশি হবে, গ্রাফিক্স কার্ড এর ক্ষমতা তত ভালো হবে। আসলে অনবোর্ড মেমোরির উপর গ্রাফিক্স কার্ড এর ক্ষমতা নিরভর করে না। এ ক্ষমতা নির্ভর করে চিপসেট ও জিপিইউ এর উপর। তাই এ মেমরির পরিমান কম হলে যদি গেম খেলার সময় আরও মেমরির দরকার হয় তাহলে গ্রাফিক্স কার্ড তা RAM থেকে শেয়ার করে। তাই অনবোর্ড মেমোরি ৫১২ থাকলেই যথেষ্ট। যেমন 2GB 6550 থেকে 1GB 5850 এর ক্ষমতা বেশি কেননা 1GB 5850 ক্লক স্পিড 2GB 6550 থেকে বেশি।
জিপিইউ এর সাথে অনবোর্ড মেমোরির যোগাযোগ করার গতির পরিমাণকে মেমোরি ব্যান্ডউইথ বলে। নিচের ছকে লক্ষ করুন
Memory Type | Clock Rate | Bandwidth |
DDR | 166-950GHz | 1.2-30.4GB/s |
DDR2 | 533-1000GHz | 8.5-16GB/s |
GDDR3 | 700-1800GHz | 5.6-54.4GB/s |
GDDR5 | 3000-3800GHz | 130-230GB/s |
আপনি যত বেশি Clock Rate/ Bandwidth সম্পন্ন গ্রাফিক্স কার্ড কিনবেন, তার ক্ষমতাও ততো বেশি হবে।
মনিটরের সাথে গ্রাফিক্স কার্ড যে বিভিন্ন পোর্ট দ্বারা যুক্ত হয় তা সাধারনত ডিসপ্লে আউটপুট নামে পরিচিত। এটি মুলত তিনটি পোর্ট দ্বারা যুক্ত হতে পারে।
VGA অনেক আগের পোর্ট যা ডিজিটাল সিগনাল কে অ্যানালগে রুপান্তর করে তা আবার ডিজিটাল হিসাবে প্রদর্শন করে। এর ফলে ছবির সঠিক মান থাকে না। DVI হচ্ছে ডিজিটাল ভিডিও ইন্টারফেস যা ডিজিটাল সিগনাল কে ডিজিটাল হিসাবেই প্রদর্শন করে। এর ফলে ছবির সঠিক মান অক্ষুণ্ণ থাকে। আর HDMI (High Defination Multimedia Interface) হচ্ছে বর্তমানের সবচেয়ে আধুনিক পোর্ট যা একই সাথে অডিও ও ভিডিও কে কোনরুপ পরিবর্তন না করেই প্রদর্শন করতে পারে। এখনকার প্রায় সকল গ্রাফিক্স কার্ডে তিনটি পোর্টই থাকে।
পিক্সেল দিয়ে মনিটরের পর্দা ভরাট করার গতির হারকে ফিল রেট বলে। সাধারন গ্রাফিক্স কার্ড গুলতে ফিল রেট মাপা হয় মিলিয়ন পিক্সেল পার সেকেন্ড হিসাবে। কিন্তু উচ্চগতির শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ড এর ফিল রেট সর্বচো ১৫ বিলিয়ন পিক্সেল পার সেকেন্ড !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! তাই পিক্সেল রেট বেশি এমন গ্রাফিক্স কার্ড কিনবেন।
গেম তৈরিকারক কোম্পানিগুলো তাদের গেম ইঞ্জিন দ্বারা গেমে এমন কিছু ত্রিমাতরিক ফিচার যেমন অ্যান্টি-অ্যালাইসিং, বাম্প-ম্যাপিং, অ্যানাইসত্রপিক, পিক্সেল শ্রেডার, ব্যাবহার করে যাতে গেমের পরিবেশ কে নিখুঁত ও বাস্তব করে তোলা যায়। আর এই প্রত্যেকটি ফিচার কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক রেনডারিং ইফেক্ট সমর্থন করে। আপনার গ্রাফিক্স কার্ড বেশি সংখ্যক 3D রেনডারিং ইফেক্ট সমর্থন করবে, আপনার গেমের গ্রাফিক্স এর পরিবেশ ততো নিখুঁত হবে ও আপনি নিত্যনতুন সব গেম খেলতে পারবেন। ইন্টারনেট এ খুজলেই আপনি যে কোন গ্রাফিক্স কার্ড এর 3D রেনডারিং ইফেক্ট এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
যদি আপনার নিত্যনতুন সব গেম খেলার সখ থাকে তাহলে পিক্সেল শ্রেডার আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পিক্সেল শ্রেডার হচ্ছে গ্রাফিক্স প্রসেসসিং ইউনিট এর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যার সাহায্যে গেম এর মাঝে প্রতিটি পিক্সেলে, বাস্তবতা ও উপযুক্ত ইফেক্ট ফুটিয়ে তুলে গেমকে প্রানবন্ত করে তুলে। নতুন গেমগুলয়ে আজকাল অনেক উচ্চ ক্ষমতার গ্রাফিক্স ইঞ্জিন ব্যাবহার করা হয়। তাই এইসব গেমের ক্ষেত্রে পিক্সেল শ্রেডার এর কাজ হল লাইটিং ইফেক্ট, সারফেস ইফেক্ট, কালার, টেএক্সার, শেপ কে সঠিকভাবে জেনারেট করে গেমের মাঝে সত্যিকারের বাস্তব অনুভূতি ফুটিয়ে তোলা যা আপনার গেম খেলার মজা কে দ্বিগুণ করে তুলবে। পিক্সেল শ্রেডার মোটামুটি নতুন প্রযুক্তি। তাই যাদের গ্রাফিক্স কার্ড একটু পুরনো তারা এই ফিচার টি পাবেন না। নিত্যনতুন গেম খেলার জন্য কমপক্ষে পিক্সেল শ্রেডার ৩.০ সাপোর্টেড গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে। আপনার গ্রাফিক্স কার্ড এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনি CPU-Z নামক একটি সফট ব্যবহার করতে পারেন যা আপনি এখান থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
আজকাল মোটামুটি কমদামে ভাল গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এরা আলাদা পাওয়ার সাপ্লাই এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। যদি গ্রাফিক্স কার্ড যে পরিমান পাওয়ার সাপ্লাই চায়, আপনারটা তার থেকে কম হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাওয়ার সাপ্লাই পরিবর্তন করতে হবে। এটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন যদি আপনার পাওয়ার সাপ্লাই এর ক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনাতে কম হয় তখন আপনি গ্রাফিক্স কার্ড এর সম্পূর্ণ শক্তিকে কাজে লাগাতে পারবেন না। তাছাড়া আপনার গ্রাফিক্স কার্ড নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই যদি ভালমানের গ্রাফিক্স কার্ড কিনেন তাহলে অবশ্যই পাওয়ার সাপ্লাই এর কথা মাথায় রাখবেন। আপনার গ্রাফিক্স কার্ড এর জন্য কততুকু ক্ষমতার পাওয়ার সাপ্লাই প্রয়োজন তা এর প্যাকেটের গায়ে লেখা আছে।
গ্রাফিক্স কার্ড একটি বিশাল ইতিহাস যা একটি পোস্টে শেষ করা কঠিন। আমি আজকে যা নিয়ে আলোচনা করলাম তা মূলত একটি ভালমানের গ্রাফিক্স কার্ড এর মুল ভিত্তি যা মোটামুটি সকল কোম্পানির গ্রাফিক্স কার্ডে থাকে। তাহলে ATi / NVidia আলাদা কেন এরুপ একটি প্রশ্ন আসে যার উত্তর আপনাদেরকে আমি পরবর্তী পোস্টে দেবার চেষ্টা করব। তবে এইটুকু বলে রাখি যে ATi / NVidia এর সকল ফিচার প্রায় একই যা ভিন্ন নামে ব্যাবহার হচ্ছে। যেমন ATi technologies ltd. এর ক্রসফায়ার NVidia তে SLI নামে পরিচিত। কিন্তু এদের কাজ ও কার্যক্ষমতা হুবুহু এক। তবে কমদামে ATi technologies ltd. যা AMD (Advance Micro Device এর অধীনে) ভালমানের গ্রাফিক্স কার্ড দেবার কারনে ও নিত্যনতুন সব উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চিপসেট এর কারনে বর্তমান বাজারে ATi technologies ltd. এর দখল, NVidia এর থেকে বেশি।
শুভ …কা……ম……না………. ( আপনার মনমত শব্দ বসিয়ে নিন )
আমি অ্যান্ড্রয়েড গেমওয়ালা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 183 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
hi