বিভিন্ন পণ্যের রিভিউ নিয়ে কিছু লেখার চিন্তা করছি, বিশেষত যেগুলো নিজে ব্যবহার করেছি। আজ রিভিউ দেব ক্যামকর্ডার নিয়ে।
ছবিতোলার জন্য টুকটাক ক্যামেরা সবাই ব্যবহার করি তবে ক্যামকমর্ডার বা ভিডিও রেকর্ডার নিয়ে সবার আগ্রহ তেমনটা নেই। এর প্রধান কারণ দাম। ভালমানের সনি হাইডেফ (HD) ক্যামেরার দাম শুরু হয় ৪৫,০০০ থেকে। গত দেড় বছর থেকে আমি ব্যবহার করছি ছোট একটা স্যামসাং পকেট হাইডেফ (HD) ক্যামেরা। সেসময় দাম পড়েছিল মাত্র ১৫,০০০ টাকা (বর্তমানে ১৩,৭০০ টাকা)। মডেল Samsung HMX-W200.
শুরুতেই আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ্য বিবেচনা করুন। প্রফেশনাল ডিডিও কাভার করতে আপনাকে হাই অপটিক্যাল জুমের ক্যামেরা নিতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সনির বাজার একচেটিয়া। ব্যক্তিগতভাবে আমি পোর্টেবল ক্যামেরা খুঁজছিলাম, পকেটে নিয়ে ঘোরা যাবে এমনকিছু। ঢাউস সাইজের ক্যামেরা বহণ বা বিরাট অ্যামাউন্ট ইনভেস্ট করা দুটোর কোনটার ইচ্ছেই আমার ছিলনা।
বিয়ের অনুষ্ঠানে আগে সাধারণ হ্যান্ডিক্যাম ব্যবহার করা হত, ইদানীং HD হ্যান্ডিক্যাম ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। Sony DCR SR21E ক্যামেরাটি সাধারণ VGA হ্যান্ডিক্যাম, দাম পড়বে ২০,০০০ টাকা। কোয়ালিটি CD/DVD এর মত। অপটিক্যাল জুম আছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে এককালে প্রচুর ব্যবহার করা হত এই ক্যামেরা। যাদের হ্যান্ডিক্যামে আগ্রহ আছে নিতে পারেন, তবে যুগের সাথে মানানসই না। বাজেট বাড়িয়ে সনির HDR-XR260VE হাইডেফ (HD) হ্যান্ডিক্যাম নিতে পারেন ৪৫,০০০ টাকায়।
HD মানে হাইডেফিনেশন। এর দুটো ভাগ আছে 720p বা সেমি HD এবং 1080p বা ফুল HD. এইচডি ক্যামেরাগুলোর ভিডিও ধারণ কোয়ালিটি ইংরেজী মুভিগুলোর প্রিন্টের মত। আজ যে ক্যামেরাটি নিয়ে রিভিউ দেব সেটি ছোট হলেও 1080p পকেট ক্যামেরা।
দামঃ ১৩,৭০০ টাকা
ক্যামেরাটির আকার ছোট মোবাইলের মত (4.5 x2.5x 0.8 ইঞ্চি) , এটি পকেট ক্যামকর্ডার। কোন অপটিক্যাল জুম নেই। ভিডিও ক্যামেরায় ফ্লাস থাকেনা এটা আলাদা করে বলার কিছু না। তবে কিছু ফিচার ক্যামেরাটিকে ইউনিক করে তুলেছে।
ভাল দিকঃ
1080p ভিডিও রেকডিং। প্রিন্ট কোয়ালিটি সার্প। আলোর উপর নির্ভর করে এর তিনটি মুড অটো অ্যাকটিভ হয়। আলো কম থাকলে নাইট মুভ, ঘরে থাকলে ইনডোর, বাইরে গেলে স্মার্টমুড। স্মার্টমুডে ক্যাপচার করা ভিডিওগুলোর কোয়ালিটি ইংরেজী মুভির সাথে পাল্লা দিতে পারবে নিঃসন্দেহে।
ক্যামেরাটি ওয়াটারপ্রুফ। শুধু ওয়াটারপ্রুফ নয় এটিকে মূলত বানানো হয়েছে পানির নিচে ভিডিও করার যোগ্য করে। সুইমিং পুলে ক্যামেরাটি নিয়ে নেমে যেতে পারেন অনায়াসে আর ভিডিও করতে পারবেন পানির উপরে এবং নিচে দুটোই। জল-স্থল দুটো এমন ক্যামেরা বাজারে খুব একটা মেলেনা।
ক্যামেরাটি শকপ্রুফ। হাত থেকে পড়ে গেলেও চিন্তর কোন কারণ নেই। এর লেন্সটি এন্টিফ্রগ, অর্থাৎ শীতের দিনে বাইরে ভিডিও করতে গেলে লেন্স ঝাপসা হয়ে যাবেনা। এর লেন্সের ফোকাল লেংথ 35mm অর্থাৎ টিভি ক্যামেরার কমকক্ষ।
বেশ কিছু জিনিষ আপনাকে ইম্প্রেস করবে। প্রথমত, এর ভিডিও কোয়ালিটি। পকেটে থাকা ছোট এই ক্যামেরার ভিডিও কোয়ালিটি অবাক করবার মত, দ্বিতীয়ত কম আলোয় ভিডিও করবার ক্ষমতা। কোন আলো ছাড়াই রাতে আপনি রাস্তায় বেরুলেন। অন্য ক্যামেরায় রাতে ভিডিও করলে সবুজ, লাল ছোপ ছোট গ্রেইন আসে কিন্তু এটাতে তা হয়না। টিভি ক্যামেরাগুলোর মতই চকচকে শট নেয় রাতেও।
মাইক্রোফোনে সম্ভবত আলাদা কোন সেন্সর রয়েছে যা লো ভয়েস ডিটেক্ট করতে পারে। ক্যামেরাকে স্থির রেখে ৪ ফুট দূরে দাড়িয়ে আমি এতহাতের তালু দিয়ে অন্যহাতের তালুতে হালকা ঘষা দিয়েছি যা নিজেও শুনতে পারিনাই কিন্তু ক্যামেরায় ঠিকই ধরা পড়েছে। এর ভয়েস রিকর্ডিং এর আলাদা মাত্রা আপনাকে ইম্প্রেস করবে।
ভিডিও করবার পাশাপাশি এটি দিয়ে আপনি ছবি তুলতে পারবেন। ছবি তোলার সর্বোচ্চ রেজুলেশন 5 megapixels. তবে মানভাল নয়।
আর ক্যামেরাটির সাথেই USB পোর্ট দেয়া আছে। আলাদা কোন কেবল বা কার্ডরিডার লাগেনা। অর্থাৎ কামেরাটিকে প্রয়োজনে পেন ড্রাইভ হিসাবেও ব্যবহার করা চলে।
টেকটিক্যাল ডিটেইলসঃ
খারাপ দিকঃ
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
-- নেট মাস্টার।
Author: Dr. Tanzil
আমি নেট মাস্টার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 64 টি টিউন ও 1834 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 9 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সুন্দর রিভিউ। ধন্যবাদ।