হেলভেটিকা ফন্ট বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অনেকগুলোর মধ্যে একটি। গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ডকুমেন্ট লেখার ক্ষেত্রে ফন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমরা খালি চোখে যাকে অক্ষর হিসেবে জানি, তা-ই হলো ফন্ট। দুনিয়াতে লাখো ফন্ট আছে। আকার, আকৃতি ও প্রকৃতির বৈচিত্রতায় ভরপুর এসব ফন্টের ব্যবহার ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা জানবো হেলভেটিকা ফন্ট সম্পর্কে।
এই ফন্টটি কেন ব্যবহার করবেন? কি কাজে ফন্টটি বেশি দৃষ্টিনন্দন এবং ফন্টটি কিভাবে কোথা থেকে ডাউনলোড করবেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। হেলভেটিকার ইতিহাস সম্পর্কে আপনি জানেন কি? চলুন এক ঝলকে এই ফন্টের সবকিছু জেনে নিই।
হেলভেটিকা হলো স্যান-সেরিফ শ্রেণীভু্ক্ত একটি টাইপফেস। স্যান সেরিফ টাইপফেসের অনেক ফন্ট রয়েছে হেলভেটিকা ফন্ট তার মধ্যে অন্যতম। হেলভেটিকা তার আদি নাম নিও হ্যাস গ্রোটেস্ক নামেও বেশ সুপরিচিত।
ঊনিশ শতকে জার্মান ও সুইস ডিজাইনের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় এই ফন্টটি। সে সময় হেলভেটিকা ছিলো অত্যন্ত জপ্রিয় ফন্ট। ফন্ট এবং টাইপফেস শব্দ দুটি সমার্থক মনে হলেও রয়েছে ভিন্নতা। হেলভেটিকা হলো মূলত একটি ফন্ট যার টাইপফেস হলো স্যান সেরিফ।
দুনিয়ার যে দিকেই তাকাবেন বিলবোর্ড সাইনবোর্ডে যা দেখতে পাবেন বেশিরভাগই স্যান সেরিফ টাইপফেস। দেখতে স্পষ্ট, সহজে বোধগম্য এবং পড়া যায় এমন ফন্টই আমরা সবচেয়ে বেশি থাকি। আর এগুলোই হলো স্যান সেরিফ টাইপফেসের ফন্ট।
হেলভেটিকা ফন্টের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বোল্ডনেস। সহজ করে বললে এটি খুব সহজে পড়া যায় এবং চোখে ক্লান্তিবোধ আসে না। সে কারণে পাঠক এই ফন্টের কোন লেখা পড়ে অস্বস্থিবোধ করে না। অক্ষরগুলোর দূরত্ব খুব টাইট হওয়ায় এই ফন্টের লেখা খুব বেশি বোধগম্য।
এছাড়াও এই ফন্টের ফ্যামিলি অনেক বড়। ফন্টের ফ্যামিলি বলতে যা বুঝায় তা হলো ফন্টের ভেরিয়েশন। পাতলা, মোটা, ইটালিক, বেশি পাতলা কিংবা বেশি মোট বিভিন্ন স্টাইলের ভেরিয়েশন রয়েছে হেলভেটিকার। প্রায় ৩৬টি ভেরিয়েশনে পায়া যায় হেলভেটিকা ফন্ট।
বিষয় | বিবরণ |
নাম | হেলভেটিকা |
ডিজাইনার | ম্যাক্স মিডিঙ্গার, এডুয়ার্ড হফম্যান |
ফাইল ফরম্যাট | OTF, TTF |
স্টাইল | স্যান সেরিফ |
ফাউন্ড্রি | লিনোটাইপ |
প্রকাশকাল | ১৯৫৭ |
লাইসেন্স | বাণিজ্যিক ফন্ট |
ডাউনলোডের ধরন | ফ্রি |
হেলভেটিকার বিকল্প হিসেবে অনেকেই অনেক ফন্টের কথা বলবেন। তবে ডিজাইন করার ক্ষেত্রে বুঝায় যায় আসল পার্থক্য। আপনি যদি একজন ডিজাইনার হয়ে থাকেন তবে কাজের ক্ষেত্রে হেলভেটিকা ও অন্যান্য ফন্টের মিল ও অমিলগুলো খুঁজে পাবেন।
আমার দেখা সেরা দশটি ফন্ট যা আপনি অনায়াশেই হেলভেটিকা ফন্টের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে হেলভেটিকার ব্যাপারটি অন্য কোন ফন্ট দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়।
হেলভেটিকা ফন্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। বিশেষত ডকুমেন্ট এবং গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে এই ফন্টের জুড়ি নেই। একটি অতীব সুন্দর গ্রাফিক্স অপূর্ণ থাকে যথার্থ ফন্টের অভাবে। দৃশ্যমান চিত্রের ভাষা খুব বেশি সুনির্দিষ্ট করে প্রকাশের মাধ্যম হলো টেক্সট।
শুধু টেক্সট হলেই হবে না তা হতে হবে বোধগম্য। এছাড়াও হেলভেটিকা ফন্ট বোধগম্য হওয়ার পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন হয়ে থাকে।
ব্র্যান্ডিংয়ে জন্য হেলভেটিকা ফন্টের কোন ভালো বিকল্প নেই। অনেক বড় বড় ব্র্যান্ড, প্রতিষ্ঠান তাদের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য হেলভেটিকাকেই পছন্দ করেছে।
ইতালীয় কোম্পানি ক্যাসিনো এসপিএ তাদের লোগো হিসেবে এই ফন্টটি ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও আমেরিকা সরকার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে হেলভেটিকা ফন্ট। ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য নাসার স্পেস শাটল অরবিটারেও হেলভেটিকা ব্যবহার করা হয়েছে।
সর্বোপরি অনলাইনে সার্চ করলে লাখ লাখ ফন্ট পাওয়া যায়। তবু যথাস্থানে যথাযথ ফন্ট ব্যবহার না করা হলে গ্রাফিক্স কিংবা ডকুমেন্ট দুই ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় জন্মদিনের ব্যানারে থিন ফন্ট ব্যবহার করলে ব্যানারটি তার উদ্দেশ্য হারাবে। একইভাবে সবক্ষেত্রে ফন্ট নির্বাচনে সেই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
হেলভেটিকা বহুল জনপ্রিয় এ ফন্টটি প্রায় সবক্ষেত্রেই মানানসই। এর 36টি ভেরিয়েশনে কোন একটি অবশ্যই আপনার ডিজাইনের ক্ষেত্রে অবশ্যই মানাবে।
আশাকরি হেলভেটিকার সম্পর্কে আপনি যথাযথ ধারণা পেয়েছেন। তবুও যদি আমি কোন কিছু বাদ দিয়ে থাকি তবে অবশ্যই টিউমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
হেলভেটিকা ফন্ট ফ্যামিলি ফ্রি ডাউনলোড করতে আশাকরি কোন সমস্যা হবে না। ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে ফ্রি ফন্ট কোন সমস্যা নয়। তবে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ফ্রিতে ব্যবহার করা একদম উচিত নয়। সেক্ষেত্রে অথরের/ডিজাইনারের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।
আরও কোন এক্সক্লুসিভ ফন্ট ফ্রিতে ডাউনলোড করতে রিমোট কগেরফ্রি আর্টিকেল ভিজিট করতে পারেন। এখানে এক্সক্লুসিভ ফন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। আমার পরবর্তী কিছু টিউনে আমি চেষ্টা করবো আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় ফন্ট সম্পর্কে লিখতে।
আমি সারোয়ার আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
শুন্য থেকে যাত্রা শুরু, শুন্যেই হবে শেষ...